অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

লূক 7 কিতাবুল মোকাদ্দস (BACIB)

ঈসা মসীহ্‌ শতপতির গোলামকে সুস্থ করেন

1. লোকদের কাছে তাঁর সমস্ত কথা বলা শেষ করে তিনি কফরনাহূমে প্রবেশ করলেন।

2. তখন এক জন শতপতির এক জন গোলাম অসুস্থ হয়ে মৃতপ্রায় হয়েছিল; সে তার প্রিয়পাত্র ছিল।

3. তিনি ঈসার সংবাদ শুনে ইহুদীদের কয়েক জন প্রাচীনকে দিয়ে তাঁর কাছে নিবেদন করে পাঠালেন, যেন তিনি এসে তার গোলামকে বাঁচান।

4. তারা ঈসার কাছে এসে আগ্রহপূর্বক ফরিয়াদ করে বলতে লাগলেন, আপনি যে তার জন্য এই কাজ করেন, তিনি তার যোগ্য;

5. কেননা তিনি আমাদের জাতিকে মহব্বত করেন, আর আমাদের মজলিস-খানা তিনি নিজে নির্মাণ করে দিয়েছেন।

6. ঈসা তাদের সঙ্গে গমন করলেন, আর তিনি বাড়ির অনতিদূরে থাকতেই শতপতি কয়েক জন বন্ধুর মধ্য দিয়ে তাঁকে বলে পাঠালেন, প্রভু, নিজেকে কষ্ট দেবেন না; কেননা আমি এমন যোগ্য নই যে, আপনি আমার ছাদের নিচে আসেন;

7. সেজন্য আমি নিজেকেও আপনার কাছে আসার যোগ্য মনে করি নি; আপনি মুখে বলুন, তাতেই আমার গোলাম সুস্থ হবে।

8. কারণ আমিও কর্তৃত্বের অধীনে নিযুক্ত লোক, আবার সৈন্যরা আমার অধীন; আর আমি তাদের এক জনকে ‘যাও’ বললে সে যায় এবং অন্যকে ‘এসো’ বললে সে আসে, আর আমার গোলামকে ‘এই কাজ কর’ বললে সে তা করে।

9. এসব কথা শুনে ঈসা তার বিষয়ে আশ্চর্য জ্ঞান করলেন এবং যে লোকেরা তাঁর পিছনে পিছনে আসছিল, তিনি তাদের দিকে ফিরে বললেন, আমি তোমাদেরকে বলছি, ইসরাইলের মধ্যেও এত বড় ঈমান দেখতে পাই নি।

10. পরে যাদেরকে পাঠান হয়েছিল, তারা বাড়িতে ফিরে গিয়ে সেই গোলামকে সুস্থ দেখতে পেলেন।

বিধবার একমাত্র পুত্রকে জীবন দান

11. কিছু কাল পরে তিনি নায়িন্‌ নামক নগরে যাত্রা করলেন এবং তাঁর সাহাবীরা ও অনেক লোক তাঁর সঙ্গে যাচ্ছিল।

12. যখন তিনি নগর-দ্বারের নিকটবর্তী হলেন তখন লোকেরা একটি মৃত মানুষকে বহন করে বাইরে নিয়ে যাচ্ছিল; সে তার মায়ের একমাত্র পুত্র এবং সেই মা এক জন বিধবা; আর নগরের অনেক লোক তার সঙ্গে ছিল।

13. তাকে দেখে প্রভু তার প্রতি করুণাবিষ্ট হলেন এবং তাকে বললেন, কেঁদো না।

14. পরে কাছে গিয়ে খাট সপর্শ করলেন; তাতে বাহকেরা দাঁড়ালো। তিনি বললেন, হে যুবক, তোমাকে বলছি, উঠ।

15. তাতে সেই মৃত মানুষটি উঠে বসলো এবং কথা বলতে লাগল; পরে তিনি তাকে তার মায়ের হাতে তুলে দিলেন।

16. তখন সকলে ভয়ে ভীত হল এবং আল্লাহ্‌কে মহিমান্বিত করে বলতে লাগল, ‘আমাদের মধ্যে এক জন মহান নবীর উদয় হয়েছে’, আর ‘আল্লাহ্‌ আপন লোকদের তত্ত্বাবধান করেছেন’।

17. পরে সমুদয় এহুদিয়াতে এবং চারদিকে সমস্ত অঞ্চলে তাঁর বিষয়ে এই কথা ছড়িয়ে পড়লো।

ঈসা মসীহের কাছে হযরত ইয়াহিয়ার সাহাবীরা

18. আর ইয়াহিয়ার সাহাবীরা তাঁকে এসব বিষয়ে সংবাদ দিল।

19. তাতে ইয়াহিয়া তাঁর দু’জন সাহাবীকে ডেকে তাদের দ্বারা প্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা করে পাঠালেন, ‘যাঁর আগমন হবে, সেই ব্যক্তি কি আপনি? না, আমরা অন্যের অপেক্ষায় থাকব?’

20. পরে সেই দুই ব্যক্তি তাঁর কাছে এসে বললো, বাপ্তিস্মদাতা ইয়াহিয়া আমাদের দ্বারা আপনার কাছে এই কথা বলে পাঠিয়েছেন, যাঁর আগমন হবে, সেই ব্যক্তি কি আপনি? না, আমরা অন্য জনের অপেক্ষায় থাকব?

21. সেই সময় তিনি অনেক লোককে রোগ, ব্যাধি ও দুষ্ট রূহ্‌ থেকে সুস্থ করলেন এবং অনেক অন্ধকে দেখবার ক্ষমতা দিলেন।

22. পরে তিনি ঐ দুই জনকে এই জবাব দিলেন, তোমরা যাও, যা দেখলে ও শুনলে তার সংবাদ ইয়াহিয়াকে দাও। তাঁকে বলো, অন্ধেরা দেখতে পাচ্ছে, খঞ্জেরা চলছে, কুষ্ঠ রোগীরা পাক-পবিত্র হচ্ছে, বধিরেরা শুনতে পাচ্ছে, মৃতেরা উত্থাপিত হচ্ছে, দরিদ্রদের কাছে সুসমাচার তবলিগ করা হচ্ছে;

23. আর ধন্য সেই ব্যক্তি, যে আমাকে নিয়ে মনে কোন বাধা না পায়।

24. ইয়াহিয়ার দূতেরা প্রস্থান করলে পর তিনি লোকদেরকে ইয়াহিয়ার বিষয়ে বলতে লাগলেন, তোমরা মরুভূমিতে কি দেখতে গিয়েছিলে? কি বাতাসে কেঁপে ওঠা নল?

25. তবে কি দেখতে গিয়েছিলে? কি কোমল পোশাক পরা কোন ব্যক্তিকে? দেখ, যারা জাঁকাল পোশাক পরে এবং বিলাসিতায় কাল যাপন করে, তারা তো রাজপ্রাসাদে থাকে।

26. তবে কি দেখতে গিয়েছিলে? কি এক জন নবীকে? হ্যাঁ, আমি তোমাদেরকে বলছি, নবীর চেয়েও শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিকে।

27. ইনি সেই ব্যক্তি, যাঁর বিষয়ে লেখা আছে, “দেখ, আমি আমার দূতকে তোমার আগে প্রেরণ করি, সে তোমার আগে তোমার পথ প্রস্তুত করবে।”

28. আমি তোমাদেরকে বলছি, স্ত্রীলোকের গর্ভজাত সকলের মধ্যে ইয়াহিয়া থেকে মহান কেউই নেই; তবুও আল্লাহ্‌র রাজ্যে অতি ক্ষুদ্র যে ব্যক্তি, সে তাঁর চেয়েও মহান।

29. (আর সমস্ত লোক ও কর-আদায়কারীরা এই কথা শুনে আল্লাহ্‌কে ধর্মময় বলে স্বীকার করলো, কেননা তারা ইয়াহিয়ার বাপ্তিস্ম গ্রহণ করেছিল;

30. কিন্তু ফরীশীরা ও আলেমেরা তাঁর দ্বারা বাপ্তিস্ম না নেওয়াতে তাদের বিষয়ে আল্লাহ্‌র উদ্দেশ্যকে বিফল করেছিল।)

31. অতএব আমি কার সঙ্গে এই কালের লোকদের তুলনা করবো? তারা কিসের মত?

32. তারা এমন বালকদের মত, যারা বাজারে বসে এক জন আর এক জনকে ডেকে বলে, ‘আমরা তোমাদের কাছে বাঁশী বাজালাম, তোমরা নাচলে না; আমরা মাতম করলাম, তোমরা কাঁদলে না।

33. কারণ বাপ্তিস্মদাতা ইয়াহিয়া এসে রুটি খান নি, আঙ্গুর-রসও পান করেন নি, তাই তোমরা বল, তাকে বদ-রূহে পেয়েছে।

34. ইবনুল-ইনসান এসে ভোজন পান করলেন, আর তোমরা বল, ঐ দেখ, এক জন পেটুক ও মদ্যপায়ী, কর-আদায়কারীদের ও গুনাহ্‌গারদের বন্ধু।

35. কিন্তু প্রজ্ঞা তাঁর সকল সন্তান দ্বারা নির্দোষ বলে গণিত হলেন।

অনুতাপিনী স্ত্রীর প্রতি ঈসা মসীহের রহম

36. আর ফরীশীদের মধ্যে এক জন তাঁকে তার সঙ্গে ভোজন করতে দাওয়াত করলো। তাতে তিনি সেই ফরীশীর বাড়িতে প্রবেশ করে ভোজনে বসলেন।

37. আর দেখ, সেই নগরে এক জন গুনাহ্‌গার স্ত্রীলোক ছিল। সে যখন জানতে পারল, তিনি সেই ফরীশীর বাড়িতে ভোজনে বসেছেন, তখন একটি শ্বেত পাথরের পাত্রে সুগন্ধি তেল নিয়ে আসল।

38. পরে পিছনের দিকে তাঁর পায়ের কাছে দাঁড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে চোখের পানিতে তাঁর পা ভিজাতে লাগল এবং তার মাথার চুল দিয়ে তা মুছে দিল, আর তাঁর পা চুম্বন করতে করতে সেই সুগন্ধি তেল মাখাতে লাগল।

39. তা দেখে, যে ফরীশী তাঁকে দাওয়াত করেছিল, সে মনে মনে বললো, এ যদি নবী হত তবে জানতে পারতো, একে যে স্পর্শ করছে সে কে এবং কি রকম স্ত্রীলোক, কারণ সে গুনাহ্‌গার।

40. তখন জবাবে ঈসা তাঁকে বললেন, শিমোন, তোমাকে আমার কিছু বলবার আছে।

41. সে বললো, হুজুর, বলুন। এক মহাজনের দু’জন ঋণী ছিল; এক জন ঋণ নিয়েছিল পাঁচ শত সিকি, আর এক জন পঞ্চাশ সিকি।

42. তাদের পরিশোধ করার সঙ্গতি না থাকাতে তিনি উভয়কেই মাফ করলেন। ভাল, তাদের মধ্যে কে তাঁকে বেশি মহব্বত করবে?

43. শিমোন জবাবে বললো, আমার মনে হয়, যার বেশি ঋণ মাফ করলেন, সেই। তিনি তাকে বললেন, যথার্থ বিচার করলে।

44. আর তিনি সেই স্ত্রীলোকের দিকে ফিরে শিমোনকে বললেন, এই স্ত্রীলোকটিকে দেখছো? আমি তোমার বাড়িতে প্রবেশ করলাম, তুমি আমার পা ধোবার পানি দিলে না, কিন্তু এই স্ত্রীলোকটি চোখের পানিতে আমার পা ভিজিয়েছে ও নিজের চুল দিয়ে তা মুছে দিয়েছে।

45. তুমি আমাকে চুম্বন করলে না, কিন্তু যখন থেকে আমি ভিতরে এসেছি, সে আমার পা চুম্বন করছে, ক্ষান্ত হয় নি। তুমি তেল দিয়ে আমার মাথা অভিষিক্ত করলে না,

46. কিন্তু সে সুগন্ধি দ্রব্যে আমার পা অভিষিক্ত করেছে।

47. এজন্য তোমাকে বলছি, সে অনেক গুনাহ্‌ করলেও তা মাফ করা হয়েছে; কেননা সে বেশি মহব্বত করলো; কিন্তু যাকে অল্প মাফ করা যায়, সে অল্পই মহব্বত করে।

48. পরে তিনি সেই স্ত্রীলোককে বললেন, তোমার গুনাহ্‌ মাফ হয়েছে।

49. তখন যারা তাঁর সঙ্গে ভোজনে বসেছিল, তারা মনে মনে বলতে লাগল, এ কে যে, গুনাহ্‌ মাফ করে?

50. কিন্তু তিনি সেই স্ত্রীলোককে বললেন, তোমার ঈমান তোমাকে নাজাত দিয়েছে; শান্তিতে প্রস্থান কর।