অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

লূক 18 কিতাবুল মোকাদ্দস (BACIB)

মুনাজাতের বিষয়ে শিক্ষা

1. নিরুৎসাহিত না হয়ে তাঁদের সব সময়ই যে মুনাজাত করা উচিত, এই বিষয়ে তিনি সাহাবীদের কাছে এই দৃষ্টান্তটি বললেন,

2. তিনি বললেন, কোন নগরে এক জন বিচারকর্তা ছিল, সে আল্লাহ্‌কে ভয় করতো না, মানুষকেও মানতো না।

3. আর সেই নগরে এক বিধবা ছিল, সে তার কাছে এসে বলতো, অন্যায়ের প্রতিকার করে আমার বিপক্ষের হাত থেকে আমাকে উদ্ধার করুন!

4. বিচারকর্তা কিছুকাল পর্যন্ত সম্মত হল না; কিন্তু পরে মনে মনে বললো, যদিও আমি আল্লাহ্‌কে ভয় করি না, মানুষকেও মানি না,

5. তবুও এই বিধবা আমাকে কষ্ট দিচ্ছে, এজন্য অন্যায় থেকে একে উদ্ধার করবো। তা নাহলে সে সব সময় এসে আমাকে জ্বালাতন করবে।

6. পরে প্রভু বললেন, শোন, ঐ অধার্মিক বিচারকর্তা কি বলে।

7. তবে যারা দিনরাত আল্লাহ্‌র কাছে কান্নাকাটি করে, আল্লাহ্‌ কি তাঁর সেই মনোনীতদের পক্ষে অন্যায়ের প্রতিকার করবেন না, যদিও তিনি তাঁদের বিষয়ে ধৈর্য ধরে আছেন?

8. আমি তোমাদেরকে বলছি, তিনি শীঘ্রই তাদের পক্ষে অন্যায়ের প্রতিকার করবেন। কিন্তু ইবনুল-ইনসান যখন আসবেন, তখন কি দুনিয়াতে ঈমান দেখতে পাবেন?

ফরীশী ও খাজনা-আদায়কারীর দৃষ্টান্ত

9. যারা নিজেদের উপরে বিশ্বাস রাখতো, মনে করতো যে, তারাই ধার্মিক এবং অন্য সকলকে হেয় জ্ঞান করতো, এমন কয়েক জনকে তিনি এই দৃষ্টান্তটি বললেন।

10. দুই ব্যক্তি মুনাজাত করার জন্য বায়তুল-মোকাদ্দসে গেল; এক জন ফরীশী আর এক জন কর-আদায়কারী।

11. ফরীশী দাঁড়িয়ে নিজে নিজে এরকম মুনাজাত করলো, হে আল্লাহ্‌, আমি তোমাকে শুকরিয়া জানাই যে, আমি অন্য সব লোকের মত জুলুমবাজ, অন্যায়কারী ও জেনাকারী নই কিংবা ঐ কর-আদায়কারীর মতও নই;

12. আমি সপ্তাহের মধ্যে দুই বার রোজা রাখি, সমস্ত আয়ের দশ ভাগের এক ভাগ দান করি।

13. কিন্তু কর-আদায়কারী দূরে দাঁড়িয়ে বেহেশতের দিকে চোখ তুলতেও সাহস পেল না, বরং সে বুকে করাঘাত করতে করতে বললো, হে আল্লাহ্‌, আমার প্রতি, এই গুনাহ্‌গারের প্রতি রহম কর।

14. আমি তোমাদেরকে বলছি, এই ব্যক্তি ধার্মিক গণিত হয়ে নিজের বাড়িতে নেমে গেল, ঐ ব্যক্তি নয়; কেননা যে কেউ নিজেকে উঁচু করে, তাকে নত করা যাবে; কিন্তু যে নিজেকে নত করে, তাকে উঁচু করা যাবে।

ঈসা মসীহ্‌ ছেলেমেয়েদের দোয়া করেন

15. আর লোকেরা তাঁদের ছোট শিশুদেরকেও তাঁর কাছে আনলো, যেন তিনি তাদেরকে স্পর্শ করেন। সাহাবীরা তা দেখে তাদেরকে ভর্ৎসনা করতে লাগলেন।

16. কিন্তু ঈসা তাদেরকে কাছে ডাকলেন, বললেন, শিশুদেরকে আমার কাছে আসতে দাও, বারণ করো না, কেননা আল্লাহ্‌র রাজ্য এদের মত লোকদেরই।

17. আমি তোমাদেরকে সত্যি বলছি, যে কেউ শিশুর মত হয়ে আল্লাহ্‌র রাজ্য গ্রহণ না করে, সে কোন মতে তাতে প্রবেশ করতে পারবে না।

ধনাসক্তির বিষয়ে শিক্ষা

18. এক জন নেতা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলো, হে সৎ হুজুর, কি করলে আমি অনন্ত জীবনের অধিকারী হব?

19. ঈসা তাকে বললেন, আমাকে সৎ কেন বলছো? এক জন ছাড়া সৎ আর কেউ নেই, তিনি আল্লাহ্‌।

20. তুমি হুকুমগুলো জান, “জেনা করো না, খুন করো না, চুরি করো না, মিথ্যা সাক্ষ্য দিও না, তোমার পিতা-মাতাকে সমাদর কোরো”।

21. সে বললো, বাল্যকাল থেকে এসব পালন করে আসছি।

22. এই কথা শুনে ঈসা তাকে বললেন, এখনও একটি বিষয়ে তোমার ত্রুটি আছে; তোমার যা কিছু আছে সমস্ত বিক্রি কর, আর দরিদ্রদেরকে বিতরণ কর, তাতে বেহেশতে ধন পাবে; আর এসো, আমার পশ্চাৎগামী হও।

23. কিন্তু এই কথা শুনে সে অতিশয় দুঃখিত হল, কারণ সে অতিশয় ধনবান ছিল।

24. তখন তার প্রতি দৃষ্টিপাত করে ঈসা বললেন, যাদের ধন আছে, তাদের পক্ষে আল্লাহ্‌র রাজ্যে প্রবেশ করা কেমন দুষ্কর!

25. বাস্তবিক আল্লাহ্‌র রাজ্যে ধনবানের প্রবেশ করার চেয়ে বরং সূচের ছিদ্র দিয়ে উটের প্রবেশ করা সহজ।

26. যারা শুনলো, তারা বললো, তাহলে কে নাজাত পেতে পারে?

27. তিনি বললেন, যা মানুষের অসাধ্য, তা আল্লাহ্‌র সাধ্য।

28. তখন পিতর বললেন, দেখুন, আমাদের নিজেদের সবকিছু পরিত্যাগ করে আপনার অনুসারী হয়েছি।

29. তিনি তাঁদেরকে বললেন, আমি তোমাদেরকে সত্যি বলছি, এমন কেউ নেই, যে আল্লাহ্‌র রাজ্যের জন্য নিজের বাড়ি বা স্ত্রী বা ভাই-বোন বা পিতা-মাতা বা সন্তান-সন্ততি ত্যাগ করলে,

30. ইহকালে তার বহুগুণ এবং আগামী যুগে অনন্ত জীবন না পাবে।

তৃতীয়বারের মত মৃত্যু ও পুনরুত্থানের বিষয়ে ঈসা মসীহের ভবিষ্যদ্বাণী

31. পরে তিনি সেই বারো জনকে কাছে নিয়ে তাঁদেরকে বললেন, দেখ, আমরা জেরুশালেমে যাচ্ছি; আর নবীদের দ্বারা ইবনুল-ইনসানের বিষয়ে যা যা লেখা হয়েছে, সেসব সিদ্ধ হবে।

32. কারণ তাঁকে অ-ইহুদীদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হবে এবং লোকেরা তাঁকে বিদ্রুপ করবে, তাঁকে অপমান করবে, তাঁর গায়ে থুথু দেবে;

33. এবং কশাঘাত করে তাঁকে হত্যা করবে; পরে তৃতীয় দিনে তিনি পুনরায় উঠবেন।

34. সাহাবীরা কিন্তু এই সমস্ত বিষয়ের কিছুই বুঝতে পারলেন না। প্রকৃত পক্ষে তিনি তাঁদের কাছে যা যা বলেছিলেন তার অর্থ তাঁদের থেকে গুপ্ত রইলো, তা তাঁরা বুঝে উঠতে পারলেন না।

এক জন অন্ধকে চোখ দান

35. আর যখন তিনি জেরিকোর নিকটবর্তী হলেন, এক জন অন্ধ পথের পাশে বসে ভিক্ষা করছিল;

36. সে লোকদের চলার আওয়াজ শুনে জিজ্ঞাসা করলো, এর কারণ কি?

37. লোকে তাকে বললো, নাসরতীয় ঈসা এই পথ দিয়ে যাচ্ছেন।

38. তখন সে চিৎকার বললো, হে ঈসা, দাউদ-সন্তান, আমার প্রতি করুণা করুন।

39. যারা আগে আগে যাচ্ছিল, তারা চুপ চুপ বলে তাকে ধমক্‌ দিল, কিন্তু সে আরও বেশি চেঁচিয়ে বলতে লাগল, হে দাউদ-সন্তান আমার প্রতি করুণা করুন।

40. তখন ঈসা থেমে তাকে তাঁর কাছে আনতে হুকুম করলেন; পরে সে কাছে আসলে তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন,

41. তুমি কি চাও? আমি তোমার জন্য কি করবো? সে বললো, প্রভু, যেন দেখতে পাই।

42. ঈসা তাকে বললেন, দেখতে পাও; তোমার ঈমান তোমাকে সুস্থ করলো।

43. তাতে সে তৎক্ষণাৎ দেখতে পেল এবং আল্লাহ্‌র গৌরব করতে করতে তাঁর পিছনে পিছনে গমন চললো। তা দেখে সকল লোক আল্লাহ্‌র প্রশংসা করলো।