অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

লূক 19 কিতাবুল মোকাদ্দস (BACIB)

সক্কেয়ের মন পরিবর্তন

1. পরে তিনি জেরিকোতে প্রবেশ করে নগরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন।

2. আর দেখ, সক্কেয় নামে এক ব্যক্তি ছিল, আর সে ছিল এক জন প্রধান কর-আদায়কারী এবং ধনবান।

3. আর ঈসা কে, সে তা দেখতে চেষ্টা করছিল, কিন্তু ভিড়ের দরুন পারল না, কেননা সে খর্বকায় ছিল।

4. তাই সে আগে দৌড়ে গিয়ে তাঁকে দেখবার জন্য একটি ডুমুর গাছে উঠলো, কারণ তিনি সেই পথে যাচ্ছিলেন।

5. পরে ঈসা যখন সেই স্থানে উপস্থিত হলেন, তখন উপরের দিকে চেয়ে তাকে বললেন, সক্কেয়, শীঘ্র নেমে এসো, কেননা আজ তোমার বাড়িতে আমাকে থাকতে হবে।

6. তাতে সে শীঘ্র নেমে আসল এবং আনন্দের সঙ্গে তাঁর মেহমানদারী করলো।

7. তা দেখে সকলে বচসা করে বলতে লাগল, ইনি এক জন গুনাহ্‌গারের ঘরে রাত যাপন করতে গেলেন।

8. তখন সক্কেয় দাঁড়িয়ে প্রভুকে বললো, প্রভু দেখুন, আমার সম্পত্তির অর্ধেক আমি দরিদ্রদেরকে দান করছি; আর যদি অন্যায়পূর্বক কারো কিছু হরণ করে থাকি, তার চারগুণ ফিরিয়ে দিচ্ছি।

9. তখন ঈসা তাকে বললেন, আজ এই বাড়িতে নাজাত উপস্থিত হল; যেহেতু এই ব্যক্তিও ইব্রাহিমের সন্তান।

10. কারণ যা হারিয়ে গিয়েছিল, তার খোঁজ ও নাজাত করতে ইবনুল-ইনসান এসেছেন।

দশটি মুদ্রার দৃষ্টান্ত

11. যখন, তারা এসব কথা শুনছিল, তখন তিনি একটি দৃষ্টান্তও বললেন, কারণ তিনি জেরুশালেমের কাছে উপস্থিত হয়েছিলেন; আর তারা অনুমান করছিল যে, আল্লাহ্‌র রাজ্যের প্রকাশ তখনই হবে।

12. অতএব তিনি বললেন, ভদ্র-বংশীয় এক ব্যক্তি দূরদেশে গেলেন, অভিপ্রায় এই যে, নিজের জন্য রাজপদ নিয়ে ফিরে আসবেন।

13. আর তিনি তাঁর দশ জন গোলামকে ডেকে দশটি মুদ্রা দিয়ে বললেন, আমি যে পর্যন্ত না আসি, তুমি তা দিয়ে ব্যবসা কর।

14. কিন্তু তাঁর লোকেরা তাঁকে ঘৃণা করতো, তারা তাঁর পিছনে দূত পাঠিয়ে দিল, বললো, আমাদের ইচ্ছা নয় যে, এই ব্যক্তি আমাদের উপরে রাজত্ব করেন।

15. পরে তিনি রাজপদ লাভ করে যখন ফিরে আসলেন, তখন যাদেরকে টাকা দিয়েছিলেন, সেই গোলামদেরকে তাঁর কাছে ডেকে আনতে বললেন, যেন তিনি জানতে পারেন, তারা ব্যবসা করে কে কত লাভ করেছে।

16. তখন প্রথম ব্যক্তি কাছে এসে বললো, প্রভু, আপনার মুদ্রা দিয়ে আরও দশটি মুদ্রা লাভ করেছি।

17. তিনি তাকে বললেন, ধন্য! উত্তম গোলাম, তুমি অতি অল্প বিষয়ে বিশ্বস্ত হলে; এজন্য দশটি নগরের উপরে কর্তৃত্ব কর।

18. দ্বিতীয় ব্যক্তি কাছে এসে বললো, প্রভু, আপনার মুদ্রা দিয়ে আরও পাঁচটি মুদ্রা লাভ করেছি।

19. তিনি তাকেও বললেন, তুমিও পাঁচটি নগরের উপরে কর্তৃত্ব কর।

20. পরে আর এক জন এসে বললো, প্রভু, দেখুন, এই আপনার মুদ্রা।

21. আমি এটি রুমালে বেঁধে রেখে দিয়েছিলাম, কারণ আপনার সম্বন্ধে আমার ভয় ছিল, কেননা আপনি কঠিন লোক, যা রাখেন নি, তা তুলে নেন এবং যা বুনেন নি, তা কাটেন।

22. তিনি তাকে বললেন, দুষ্ট গোলাম, আমি তোমার নিজের মুখের কথা দিয়েই তোমার বিচার করবো। তুমি না জানতে যে, আমি কঠিন লোক, যা রাখি নি, তা-ই তুলে নেই এবং যা বুনি নি, তা-ই কাটি?

23. তবে আমার টাকা মহাজনদের কাছে রাখ নি কেন? তা করলে আমি এসে সুদের সঙ্গে তা আদায় করতে পরতাম।

24. আর যারা কাছে দাঁড়িয়েছিল, তিনি তাদেরকে বললেন, এর কাছ থেকে ঐ মুদ্রা নিয়ে নেও এবং যার দশটি মুদ্রা আছে তাকে দাও।

25. তারা তাঁকে বললো, প্রভু এর যে দশটি মুদ্রা আছে।

26. তিনি তাদেরকে বললেন, আমি তোমাদেরকে বলছি, যার আছে, তাকে আরও দেওয়া যাবে; কিন্তু যার নেই, তার যা আছে, তাও তার কাছ থেকে নিয়ে নেওয়া যাবে।

27. এছাড়া, আমার এই যে দুশমনেরা ইচ্ছা করে নি যে, আমি তাদের উপরে রাজত্ব করি, তাদেরকে এই স্থানে আন, আর আমার সাক্ষাতে হত্যা কর।

ঈসা মসীহের জেরুশালেমে প্রবেশ

28. এসব কথা বলে তিনি তাদের আগে আগে চললেন, জেরুশালেমের দিকে উঠতে লাগলেন।

29. পরে যখন জৈতুন নামক পর্বতের পাশে অবস্থিত বৈৎফগী ও বৈথনিয়ার নিকটবর্তী হলেন, তখন তিনি দু’জন সাহাবীকে পাঠিয়ে দিলেন,

30. বললেন, ঐ সম্মুখস্থ গ্রামে যাও; সেখানে প্রবেশ করামাত্র একটি গাধার বাচ্চা বাঁধা দেখতে পাবে, যাতে কোন মানুষ কখনও বসে নি; সেটি খুলে আন।

31. আর যদি কেউ তোমাদেরকে জিজ্ঞাসা করে, এটি কেন খুলছ, তবে এরকম বলবে, এতে প্রভুর প্রয়োজন আছে।

32. তখন যাঁদেরকে পাঠানো হল, তাঁরা গিয়ে, তিনি যেমন বলেছিলেন, তেমনই দেখতে পেলেন।

33. যখন তাঁরা গাধার বাচ্চাটি খুলছিলেন, তখন মালিকেরা তাঁদেরকে বললো, গাধার বাচ্চাটি খুলছ কেন?

34. তাঁরা বললেন, এতে প্রভুর প্রয়োজন আছে।

35. পরে তাঁরা সেটিকে ঈসার কাছে নিয়ে আসলেন এবং তার পিঠে তাদের কাপড় পেতে তার উপরে ঈসাকে বসালেন।

36. পরে যখন তিনি যেতে লাগলেন, লোকেরা নিজ নিজ কাপড় পথে পেতে দিতে লাগল।

37. আর তিনি নিকটবর্তী হচ্ছেন, জৈতুন পর্বত থেকে নামবার স্থানে উপস্থিত হয়েছেন, এমন সময়ে, সমস্ত সাহাবীরা যেসব কুদরতি-কাজ দেখেছিল, সেই সব কাজের জন্য আনন্দ-পূর্বক চিৎকার আল্লাহ্‌র প্রশংসা করে বলতে লাগল,

38. “ধন্য সেই বাদশাহ্‌, যিনি প্রভুর নামে আসছেন;বেহেশতে শান্তি এবং ঊর্ধ্বলোকে মহিমা।”

39. তখন লোকদের মধ্য থেকে কয়েক জন ফরীশী তাঁকে বললো, হুজুর, আপনার সাহাবীদেরকে ধমক দিন।

40. জবাবে তিনি বললেন, আমি তোমাদেরকে বলছি, এরা যদি চুপ করে থাকে, তবে পাথরগুলো চেঁচিয়ে উঠবে।

জেরুশালেমকে দেখে ঈসা মসীহের কান্না

41. পরে যখন তিনি কাছে আসলেন, তখন নগরটি দেখে তার জন্য কাঁদলেন,

42. বললেন, তুমি, তুমিই যদি আজ যা যা শান্তিজনক, তা বুঝতে! কিন্তু এখন সেসব তোমার দৃষ্টি থেকে গুপ্ত রইলো।

43. কারণ তোমার উপরে এমন সময় উপস্থিত হবে, যে সময়ে তোমার দুশমনেরা তোমার চারদিকে জাঙ্গাল বাঁধবে, তোমাকে বেষ্টন করবে, তোমাকে সমস্ত দিক দিয়ে অবরোধ করবে,

44. এবং তোমাকে ও তোমার মধ্যবর্তী তোমার সন্তানদেরকে ভূমিসাৎ করবে, তোমার মধ্যে পাথরের উপরে পাথর থাকতে দেবে না; কারণ তোমার তত্ত্বাবধানের সময় তুমি চিনে নাও নি।

বায়তুল মোকাদ্দস পরিষ্কার করা

45. পরে তিনি বায়তুল-মোকাদ্দসে প্রবেশ করলেন এবং বিক্রেতাদেরকে বের করতে আরম্ভ করলেন,

46. তাদেরকে বললেন, লেখা আছে,“আমার গৃহ মুনাজাতের গৃহ হবে,”কিন্তু তোমরা তা “দস্যুদের গহ্বর” করে তুলেছ।”

47. আর তিনি প্রতিদিন বায়তুল-মোকাদ্দসে উপদেশ দিতেন। আর প্রধান ইমামেরা ও আলেমরা এবং লোকদের নেতৃবর্গরা তাঁকে বিনষ্ট করতে চেষ্টা করতে লাগল;

48. কিন্তু কিভাবে তা করবে তার কোন উপায় তারা খুঁজে পেল না, কেননা লোকেরা সকলে একাগ্র মনে তাঁর কথা শুনত।