অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

লূক 24 কিতাবুল মোকাদ্দস (BACIB)

ঈসা মসীহের পুনরুত্থান

1. বিশ্রামবারে তাঁরা বিধিমতে বিশ্রাম করলেন। কিন্তু সপ্তাহের প্রথম দিন খুব ভোরে তাঁরা কবরের কাছে আসলেন এবং যে খোশবু মলম প্রস্তুত করেছিলেন তা নিয়ে আসলেন।

2. তারা দেখলেন কবর থেকে পাথরখানা সরানো রয়েছে,

3. কিন্তু ভিতরে গিয়ে ঈসার লাশ দেখতে পেলেন না।

4. তাঁরা এই বিষয় ভাবছেন, এমন সময়ে দেখ, উজ্জ্বল পোশাক পরা দুই জন পুরুষ তাঁদের কাছে দাঁড়ালেন।

5. তখন তাঁরা ভয় পেয়ে ভূমির দিকে মুখ নত করলে সেই দুই ব্যক্তি তাঁদেরকে বললেন, মৃতদের মধ্যে জীবিতের খোঁজ কেন করছো? তিনি এখানে নেই, কিন্তু উঠেছেন।

6. গালীলে থাকতে থাকতেই তিনি তোমাদেরকে যা বলেছিলেন, তা স্মরণ কর;

7. তিনি তো বলেছিলেন, ইবনুল-ইনসানকে গুনাহ্‌গার মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হবে, ক্রুশারোপিত হতে হবে এবং তৃতীয় দিনে উঠতে হবে।

8. তখন তাঁর সেই কথাগুলো তাঁদের স্মরণ হল;

9. আর তাঁরা কবর থেকে ফিরে গিয়ে সেই এগারো জনকে ও অন্য সকলকে এই সব সংবাদ দিলেন।

10. এঁরা মগ্দলীনী মরিয়ম, যোহানা ও ইয়াকুবের মা মরিয়ম; আর এঁদের সঙ্গে অন্য স্ত্রীলোকেরাও প্রেরিতদেরকে এসব কথা বললেন।

11. কিন্তু এসব কথা তাঁদের কাছে গল্পের মত মনে হল; তাঁরা তাঁদের কথায় বিশ্বাস করলেন না।

12. তবুও পিতর উঠে কবরের কাছে দৌড়ে গেলেন এবং হেঁট হয়ে দৃষ্টিপাত করে দেখলেন, কেবল কাপড় পড়ে রয়েছে; আর যা ঘটেছে, তাতে আশ্চর্য জ্ঞান করে স্বস্থানে চলে গেলেন।

ইম্মায়ূ নামক গ্রামের পথে

13. আর দেখ, সেদিন তাঁদের দু’জন জেরুশালেম থেকে চার মাইল দূরবর্তী ইম্মায়ূ নামক গ্রামে যাচ্ছিলেন,

14. এবং তাঁরা ঐ সমস্ত ঘটনার বিষয়ে পরস্পর কথোপকথন করছিলেন।

15. তাঁরা কথাবার্তা বলছেন ও পরস্পর জিজ্ঞাসাবাদ করছেন, এমন সময়ে ঈসা নিজে কাছে এসে তাঁদের সঙ্গে সঙ্গে গমন করতে লাগলেন;

16. কিন্তু তাঁদের চোখ যেন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, তাই তাঁকে চিনতে পারলেন না।

17. তিনি তাঁদেরকে বললেন, তোমরা চলতে চলতে পরস্পর যেসব কথা বলাবলি করছো, সেসব কি? তাঁরা বিষণ্নভাবে দাঁড়িয়ে রলেন।

18. পরে ক্লিয়পা নামে তাঁদের এক জন জবাবে তাঁকে বললেন, আপনি কি একা জেরুশালেমে প্রবাস করছেন, আর এই কয়েক দিনের মধ্যে সেখানে যেসব ঘটনা হয়েছে, তা জানেন না?

19. তিনি তাঁদেরকে বললেন, কি কি ঘটনা ঘটেছে? তাঁরা তাঁকে বললেন, নাসরতীয় ঈসা বিষয়ক ঘটনা, যিনি আল্লাহ্‌র ও সব লোকের সাক্ষাতে কাজে ও কথায় পরাক্রমী নবী ছিলেন;

20. আর কিভাবে প্রধান ইমামেরা ও আমাদের নেতৃবর্গরা প্রাণদণ্ড দেবার জন্য তুলে দিলেন ও ক্রুশে হত্যা করালেন।

21. কিন্তু আমরা আশা করছিলাম যে, তিনিই সেই ব্যক্তি, যিনি ইসরাইলকে মুক্ত করবেন। আর এসব ছাড়া আজ তিন দিন চলছে, এসব ঘটেছে।

22. আবার আমাদের কয়েক জন স্ত্রীলোক আমাদেরকে চমৎকৃত করলেন; তাঁরা খুব ভোরে তাঁর কবরের কাছে গিয়েছিলেন।

23. তারা তাঁর লাশ দেখতে না পেয়ে এসে বললেন, ফেরেশতাদের দর্শন পেয়েছি, তাঁরা বলেন, তিনি জীবিত আছেন।

24. আর আমাদের সঙ্গীদের মধ্যে কেউ কেউ কবরের কাছে গিয়ে, সেই স্ত্রীলোকেরা যেমন বলেছিলেন, তেমনি দেখতে পেলেন, কিন্তু তাঁকে দেখতে পান নি।

25. তখন তিনি তাঁদেরকে বললেন, তোমরা কত অবোধ! এবং নবীরা যে সমস্ত কথা বলেছেন, সেই সকল কথা বিশ্বাস করতে তোমাদের চিত্ত কত শিথিল!

26. মসীহের কি আবশ্যক ছিল না যে, এ সব দুঃখভোগ করেন ও আপন প্রতাপে প্রবেশ করেন?

27. পরে তিনি মূসার শরীয়ত ও সমস্ত নবীদের কিতাব থেকে আরম্ভ করে সমস্ত কিতাবে তাঁর নিজের বিষয়ে যেসব কথা আছে, তা তাঁদেরকে বুঝিয়ে দিলেন।

28. পরে তাঁরা যেখানে যাচ্ছিলেন, সেই গ্রামের কাছে উপস্থিত হলেন; আর তিনি আগে যাবার লক্ষণ দেখালেন।

29. কিন্তু তাঁরা সাধ্য সাধনা করে বললেন, আমাদের সঙ্গে অবস্থান করুন, কারণ সন্ধ্যা হয়ে আসল, বেলা প্রায় গেছে। তাতে তিনি তাঁদের সঙ্গে অবস্থান করার জন্য বাড়িতে প্রবেশ করলেন।

30. পরে যখন তিনি তাঁদের সঙ্গে ভোজনে বসলেন, তখন রুটি নিয়ে দোয়া করলেন এবং ভেঙ্গে তাঁদেরকে দিতে লাগলেন।

31. অমনি তাঁদের চোখ খুলে গেল, তাঁরা তাঁকে চিনতে পারলেন; আর তিনি তাঁদের থেকে অন্তর্হিত হলেন।

32. তখন তাঁরা পরস্পর বললেন, পথের মধ্যে যখন তিনি আমাদের সঙ্গে কথা বললেন, আমাদের কাছে পাক-কিতাবের অর্থ খুলে দিচ্ছিলেন, তখন আমাদের অন্তর কি আমাদের ভিতরে উত্তপ্ত হয়ে উঠছিল না?

33. আর তাঁরা সেই দণ্ডেই উঠে জেরুশালেমে ফিরে গেলেন; এবং সেই এগারো জনকে ও তাঁদের সঙ্গীদেরকে সমবেত দেখতে পেলেন;

34. তাঁরা বললেন, প্রভু নিশ্চয়ই উঠেছেন এবং শিমোনকে দেখা দিয়েছেন।

35. পরে সেই দু’জন পথের ঘটনার বিষয় এবং রুটি ভাঙ্গবার সময়ে তাঁরা কিভাবে তাঁকে চিনতে পেরেছিলেন, এসব বৃত্তান্ত বললেন।

সাহাবীদের সংগে ঈসা মসীহের সাক্ষাৎ

36. তাঁরা পরস্পর এসব কথাবার্তা বলছেন, ইতোমধ্যে তিনি নিজে তাঁদের মধ্যস্থানে দাঁড়ালেন ও তাঁদেরকে বললেন, তোমাদের শান্তি হোক।

37. এতে তাঁরা ভীষণ ভয় পেয়ে ও আতঙ্কিত হয়ে মনে করলেন, রূহ্‌ দেখছি।

38. তিনি তাঁদেরকে বললেন, কেন ভয় পাচ্ছ? তোমাদের অন্তরে বিতর্কের উদয়ই বা কেন হচ্ছে?

39. আমার হাত ও আমার পা দেখ, এ আমি স্বয়ং; আমাকে স্পর্শ কর, আর দেখ; কারণ আমাকে যেমন দেখছো, রূহের এরকম অস্থি-মাংস নেই।

40. এই কথা বলে তিনি তাঁদেরকে হাত ও পা দেখালেন।

41. তখনও তাঁরা এত আনন্দিত হয়েছিলেন যে, বিশ্বাস করতে পারছিলেন না এবং তখনও আশ্চর্য জ্ঞান করছিলেন, তাই তিনি তাঁদেরকে বললেন, তোমাদের কাছে এখানে কি কোন খাবার আছে?

42. তখন তাঁরা তাঁকে একখানি ভাজা মাছ দিলেন।

43. তিনি তা নিয়ে তাঁদের সাক্ষাতে ভোজন করলেন।

44. পরে তিনি তাঁদেরকে বললেন, তোমাদের সঙ্গে থাকতে থাকতে আমি তোমাদেরকে যা বলেছিলাম। আমার সেই কথা এই, মূসার শরীয়তে ও নবীদের কিতাবে এবং জবুর শরীফে আমার বিষয়ে যা যা লেখা আছে, সেসব অবশ্য পূর্ণ হবে।

45. তখন তিনি তাঁদের বুদ্ধির দ্বার খুলে দিলেন, যেন তাঁরা পাক-কিতাব বুঝতে পারেন;

46. আর তিনি তাঁদেরকে বললেন, এরকম লেখা আছে যে, মসীহ্‌ দুঃখভোগ করবেন এবং তৃতীয় দিনে মৃতদের মধ্য থেকে উঠবেন;

47. আর তাঁর নামে গুনাহ্‌ মাফের মন পরিবর্তনের কথা সর্বজাতির কাছে তবলিগ হবে— জেরুশালেম থেকে আরম্ভ করা হবে।

48. তোমরাই এই সকলের সাক্ষী।

49. আর দেখ, আমার পিতা যা ওয়াদা করেছেন, তা আমি তোমাদের কাছে প্রেরণ করছি; কিন্তু যে পর্যন্ত উপর থেকে শক্তি না পাও, সেই পর্যন্ত তোমরা এই নগরেই থেকো।

ঈসা মসীহের বেহেশতে চলে যাওয়া

50. পরে তিনি তাঁদেরকে বৈথনিয়ার সম্মুখ পর্যন্ত নিয়ে গেলেন এবং হাত তুলে তাঁদেরকে দোয়া করলেন।

51. পরে এ রকম হল, তিনি দোয়া করতে করতে তাঁদের থেকে পৃথক হলেন এবং ঊর্ধ্বে, বেহেশতে নীত হতে লাগলেন।

52. আর তাঁরা তাঁকে সেজ্‌দা করে মহানন্দে জেরুশালেমে ফিরে গেলেন;

53. এবং সব সময় বায়তুল-মোকাদ্দসে থেকে আল্লাহ্‌র প্রশংসা করতে থাকলেন।