অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

লূক 2 কিতাবুল মোকাদ্দস (BACIB)

ঈসা মসীহের জন্ম

1. সেই সময়ে সম্রাট অগাস্টাসের এই হুকুম বের হল যে, সারা দুনিয়ার লোকের নাম লেখাতে হবে।

2. সিরিয়ার শাসনকর্তা কুরীণিয়ের সময়ে এই প্রথম নাম লেখানো হয়।

3. সকলে নাম লেখাবার জন্য নিজ নিজ নগরে যেতে লাগল।

4. আর ইউসুফও গালীলের নাসরত নগর থেকে এহুদিয়ায় বেথেলহেম নামক দাউদের নগরে গেলেন, কারণ তিনি দাউদের কুল ও গোষ্ঠীজাত ছিলেন;

5. তিনি তাঁর বাগ্‌দত্তা স্ত্রী মরিয়মের সঙ্গে নাম লেখাবার জন্য গেলেন; তখন ইনি গর্ভবতী ছিলেন।

6. তাঁরা সেই স্থানে আছেন, এমন সময়ে মরিয়মের প্রসবকাল সমপূর্ণ হল।

7. আর তিনি তাঁর প্রথমজাত পুত্র প্রসব করলেন; এবং তাঁকে কাপড়ে জড়িয়ে যাবপাত্রে রাখলেন, কারণ পান্থশালায় তাঁদের জন্য কোন স্থান ছিল না।

ফেরেশতারা ভেড়ার রাখালদের দেখা দেন

8. ঐ অঞ্চলে ভেড়ার রাখালরা মাঠে অবস্থান করছিল এবং রাতের বেলায় নিজ নিজ পাল পাহারা দিচ্ছিল।

9. আর প্রভুর এক জন ফেরেশতা তাদের কাছে এসে দাঁড়ালেন এবং প্রভুর মহিমা তাদের চারদিকে উজ্জ্বল হয়ে দেখা দিল; তাতে তারা ভীষণ ভয় পেল।

10. তখন ফেরেশতা তাদেরকে বললেন, ভয় করো না, কেননা দেখ, আমি তোমাদেরকে মহানন্দের সুসমাচার জানাচ্ছি; সেই আনন্দ সমস্ত লোকেরই হবে;

11. কারণ আজ দাউদের নগরে তোমাদের জন্য নাজাতদাতা জন্মেছেন; তিনি মসীহ্‌, প্রভু।

12. আর তোমাদের কাছে এ-ই হল তার চিহ্ন— তোমরা দেখতে পাবে একটি শিশু কাপড়ে জড়ানো ও যাবপাত্রে শোয়ানো রয়েছে।

13. পরে হঠাৎ বেহেশতী বাহিনীর একটি বড় দল ঐ ফেরেশতার সঙ্গী হয়ে আল্লাহ্‌র প্রশংসা-গান করতে করতে বলতে লাগলেন,

14. ঊর্ধ্বলোকে আল্লাহ্‌র মহিমা,দুনিয়াতে [তাঁর] প্রীতিপাত্র মানুষেরমধ্যে শান্তি।

15. ফেরেশতারা তাদের কাছ থেকে বেহেশতে চলে গেলে পর ভেড়ার রাখালরা পরস্পর বললো, চল, আমরা একবার বেথেলহেম পর্যন্ত যাই এবং এই যে ব্যাপার প্রভু আমাদেরকে জানালেন তা গিয়ে দেখি।

16. পরে তারা তাড়াতাড়ি গিয়ে মরিয়ম ও ইউসুফ এবং সেই যাবপাত্রে শোয়ানো শিশুটিকে দেখতে পেল।

17. দেখে বালকটির বিষয়ে যে কথা তাদেরকে বলা হয়েছিল তা জানালো।

18. তাতে যত লোক ভেড়ার রাখালদের মুখে ঐ সব কথা শুনলো, সকলে এসব বিষয়ে আশ্চর্য জ্ঞান করলো।

19. কিন্তু মরিয়ম সেসব কথা হৃদয়ের মধ্যে আন্দোলন করতে করতে মনে সঞ্চয় করে রাখলেন।

20. আর ভেড়ার রাখালদেরকে যেমন বলা হয়েছিল, তারা তেমনি সবকিছু দেখে শুনে আল্লাহ্‌র গৌবর ও প্রশংসা-গান করতে করতে ফিরে আসলো।

21. আর যখন বালকটির খৎনা করাবার জন্য আট দিন পূর্ণ হল, তখন তাঁর নাম ঈসা রাখা হল; এই নাম তাঁর গর্ভস্থ হবার আগে ফেরেশতার দ্বারা রাখা হয়েছিল।

বায়তুল মোকাদ্দসে শিশু ঈসা

22. পরে যখন মূসার শরীয়ত অনুসারে তাঁদের পাক-পবিত্র হবার কাল সম্পূর্ণ হল, তখন তাঁরা তাঁকে জেরুশালেমে নিয়ে গেলেন, যেন তাঁকে প্রভুর কাছে উপস্থিত করেন,

23. যেমন প্রভুর শরীয়তে লেখা আছে, ‘গর্ভ উন্মোচক প্রত্যেক পুরুষ সন্তান প্রভুর উদ্দেশে পবিত্র বলে আখ্যাত হবে’;

24. আর যেন কোরবানী দান করেন, যেমন প্রভুর শরীয়তে উক্ত হয়েছে, ‘এক জোড়া ঘুঘু কিংবা দু’টি কবুতরের বাচ্চা।’

25. আর দেখ, শামাউন নামে এক ব্যক্তি জেরুশালেমে ছিলেন। তিনি ধার্মিক ও আল্লাহ্‌ভক্ত ছিলেন এবং ইসরাইলের সান্ত্বনার অপেক্ষা করছিলেন ও পাক-রূহ্‌ তাঁর উপরে ছিলেন।

26. আর পাক-রূহ্‌ দ্বারা তাঁর কাছে প্রকাশিত হয়েছিল যে, তিনি প্রভুর মসীহ্‌কে দেখতে না পেলে মৃত্যু দেখবেন না।

27. তিনি সেই রূহের আবেশে বায়তুল-মোকাদ্দসে আসলেন এবং শিশু ঈসার পিতা-মাতা যখন তাঁর বিষয়ে শরীয়তের নিয়ম অনুযায়ী কাজ করার জন্য তাঁকে ভিতরে আনলেন,

28. তখন তিনি তাঁকে কোলে নিলেন, আর আল্লাহ্‌র গৌরব করলেন ও বললেন,

29. হে মালিক, এখন তুমি তোমারকালাম অনুসারে তোমারগোলামকে শান্তিতে বিদায় করছো,

30. কেননা আমার নয়নযুগল তোমারনাজাত দেখতে পেল,

31. যা তুমি এসব জাতির সম্মুখে প্রস্তুতকরেছ,

32. অ-ইহুদীদের প্রতি প্রকাশিত হবার নূর,ও তোমার লোক ইসরাইলের গৌরব।

33. শিশুটির বিষয়ে এসব কথা শুনে তাঁর পিতা-মাতা আশ্চর্য জ্ঞান করতে লাগলেন।

34. আর শিমিয়োন তাঁদেরকে দোয়া করলেন এবং তাঁর মা মরিয়মকে বললেন, দেখ, ইনি ইসরাইলের মধ্যে অনেকের পতন ও উত্থানের জন্য এবং যার বিরুদ্ধে কথা বলা যাবে, এমন চিহ্ন হবার জন্য স্থাপিত,

35. —আর তোমার নিজের প্রাণও তলোয়ারে বিদ্ধ হবে— যেন অনেক হৃদয়ের চিন্তা প্রকাশিত হয়।

36. আর হান্না নাম্নী এক জন মহিলা-নবী ছিলেন, তিনি পনূয়েলের কন্যা, আশের বংশজাত; তাঁর অনেক বয়স হয়েছিল, তিনি কুমারী অবস্থার পর সাত বছর স্বামীর সঙ্গে বাস করেন,

37. আর চুরাশি বছর পর্যন্ত বিধবা হয়ে থাকেন, তিনি বায়তুল-মোকাদ্দস থেকে প্রস্থান না করে রোজা ও মুনাজাত সহকারে রাত দিন এবাদত করতেন।

38. তিনি সেই সময়ে উপস্থিত হয়ে আল্লাহ্‌র শুকরিয়া আদায় করলেন এবং যত লোক জেরুশালেমের মুক্তির অপেক্ষা করছিল, তাদেরকে ঈসার কথা বলতে লাগলেন।

ঈসা মসীহ্‌কে নিয়ে নাসরতে ফিরে আসা

39. আর প্রভুর শরীয়ত অনুসারে মরিয়ম ও ইউসুফ সমস্ত কাজ করার পর গালীলে, তাঁদের নিজের নগর নাসরতে ফিরে গেলেন।

40. পরে বালকটি বেড়ে উঠতে ও বলবান হতে লাগলেন, জ্ঞানে পূর্ণ হতে থাকলেন; আর আল্লাহ্‌র রহমত তাঁর উপরে ছিল।

বায়তুল-মোকাদ্দসে বারো বছরের বালক ঈসা মসীহ্‌

41. তাঁর পিতা-মাতা প্রত্যেক বছর ঈদুল ফেসাখের সময়ে জেরুশালেমে যেতেন।

42. তাঁর বারো বছর বয়স হলে তাঁরা ঈদের রীতি অনুসারে জেরুশালেমে গেলেন;

43. এবং ঈদের সময় সমাপ্ত করে যখন ফিরে আসছিলেন, তখন বালক ঈসা জেরুশালেমে রয়ে গেলেন; আর তাঁর পিতা-মাতা তা জানতেন না,

44. কিন্তু তিনি সহযাত্রীদের সঙ্গে আছেন মনে করে তাঁরা এক দিনের পথ গেলেন; পরে জ্ঞাতি ও পরিচিত লোকদের মধ্যে তাঁর খোঁজ করতে লাগলেন;

45. আর তাঁকে না পেয়ে তাঁর খোঁজ করতে করতে তাঁরা আবার জেরুশালেমে ফিরে গেলেন।

46. তিন দিন পর তাঁরা তাঁকে বায়তুল-মোকাদ্দসে খুঁজে পেলেন; তিনি আলেমদের মধ্যে বসে তাঁদের কথা শুনছিলেন ও তাঁদেরকে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করছিলেন;

47. আর যারা তাঁর কথা শুনছিল, তারা সকলে তাঁর বুদ্ধি ও উত্তরে অতিশয় আশ্চর্য জ্ঞান করলো।

48. তাঁকে দেখে তাঁরা চমৎকৃত হলেন এবং তাঁর মা তাঁকে বললেন, বৎস, আমাদের প্রতি এরকম ব্যবহার কেন করলে? দেখ, তোমার পিতা এবং আমি কাতর হয়ে তোমার খোঁজ করছিলাম।

49. তিনি তাদেরকে বললেন, কেন আমার খোঁজ করলে? আমার পিতার বাড়িতে আমাকে থাকতেই হবে, এই কথা কি জানতে না?

50. কিন্তু তিনি তাঁদেরকে যে কথা বললেন, তা তাঁরা বুঝতে পারলেন না।

51. পরে তিনি তাঁদের সঙ্গে নেমে নাসরতে চলে গেলেন ও তাঁদের বাধ্য হয়ে থাকলেন। আর তাঁর মা সমস্ত কথা তাঁর অন্তরে গেঁথে রাখলেন।

52. পরে ঈসা জ্ঞানে ও বয়সে এবং আল্লাহ্‌র ও মানুষের কাছে অনুগ্রহে বৃদ্ধি পেতে থাকলেন।