অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24
  25. 25
  26. 26
  27. 27
  28. 28
  29. 29
  30. 30
  31. 31
  32. 32
  33. 33
  34. 34
  35. 35
  36. 36
  37. 37
  38. 38
  39. 39
  40. 40
  41. 41
  42. 42
  43. 43
  44. 44
  45. 45
  46. 46
  47. 47
  48. 48
  49. 49
  50. 50

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

পয়দায়েশ 32 Kitabul Mukkadas (MBCL)

ইসের সংগে হযরত ইয়াকুবের দেখা করবার প্রস্তুতি

1. ইয়াকুবও তাঁর পথে চললেন। পথে এক জায়গায় তিনি আল্লাহ্‌র ফেরেশতাদের দেখলেন।

2. তাঁদের দেখে তিনি বললেন, “এটা আল্লাহ্‌র ছাউনি।” এইজন্য তিনি সেই জায়গার নাম রাখলেন মহনয়িম (যার মানে “দুই ছাউনি”)।

3. ইয়াকুব তাঁর আগে আগে সেয়ীর, অর্থাৎ ইদোম দেশে তাঁর ভাই ইসের কাছে কয়েকজন লোক পাঠালেন।

4. তিনি তাদের বলে দিলেন যেন তারা তাঁর প্রভু ইস্‌কে জানায় যে, তাঁর গোলাম ইয়াকুব বলছে, “আমি এই পর্যন্ত লাবনের কাছে ছিলাম।

5. আমার গরু-গাধা, ছাগল-ভেড়া এবং গোলাম ও বাঁদী সবই আছে। আমার প্রভুর কাছে দয়া পাব এই আশা করেই আমি আগে থেকেই আপনাকে খবর দিচ্ছি।”

6. লোকগুলো ফিরে এসে ইয়াকুবকে বলল, “আমরা আপনার ভাই ইসের কাছে গিয়েছিলাম। তিনি এখন চারশো লোক নিয়ে আপনার সংগে দেখা করতে আসছেন।”

7. এই কথা শুনে ভীষণ ভয়ে ইয়াকুবের মন অস্থির হয়ে উঠল। তিনি তাঁর সংগের লোকজন, ছাগল-ভেড়া, গরু-গাধা ও উট দুই দলে ভাগ করলেন।

8. তিনি ভাবলেন, ইস্‌ যদি এসে এক দলকে হামলা করে তবে অন্য দলটি পালাতে পারবে।

9. ইয়াকুব আল্লাহ্‌র কাছে এই বলে মুনাজাত করলেন, “হে মাবুদ, আমার পূর্বপুরুষ ইব্রাহিমের আল্লাহ্‌, আমার বাবা ইসহাকের আল্লাহ্‌, তুমিই তো আমাকে বলেছ আমার দেশে, আমার নিজের লোকদের কাছে ফিরে যেতে, আর সেখানেই তুমি আমার মংগল করবে।

10. তোমার এই গোলামকে তুমি যে সমস্ত রহমত ও বিশ্বস্ততা দেখিয়েছ আমি তার যোগ্য নই। কেবল একখানা লাঠি হাতে নিয়ে আমি এই জর্ডান নদী পার হয়েছিলাম, কিন্তু এখন আমার সংগে রয়েছে দু’টা বড় দল।

11. আমি মিনতি জানাই, আমার ভাই ইসের হাত থেকে তুমি আমাকে রক্ষা কর। আমার ভয় হচ্ছে সে এসে আমাদের হত্যা করবে, মা-শিশু কাউকেই রেহাই দেবে না।

12. কিন্তু তুমি তো বলেছিলে, ‘আমি নিশ্চয়ই তোমার উন্নতি করব এবং তোমার বংশের লোকদের সমুদ্র পারের বালুকণার মত করব যা গুণে শেষ করা যায় না।’ ”

13. ইয়াকুব সেই রাতটা সেখানেই কাটালেন। তাঁর যা কিছু ছিল তার মধ্য থেকে তিনি তাঁর ভাই ইসের জন্য একটা উপহার ঠিক করে রাখলেন।

14-15. তা হল, দু’শো ছাগী ও বিশটা ছাগল, দু’শো ভেড়ী ও বিশটা ভেড়া, বাচ্চাসুদ্ধ ত্রিশটা দুধালো উট, চল্লিশটা গাভী ও দশটা ষাঁড়, বিশটা গাধী ও দশটা গাধা।

16. সেগুলো বিভিন্ন দলে ভাগ করে গোলামদের হাতে দিয়ে তিনি তাদের বলে দিলেন, “প্রত্যেকটি দলের শেষে কিছু জায়গা রেখে তোমরা আমার আগে আগে যাও।”

17. প্রথম দলের গোলামকে তিনি হুকুম দিয়ে বললেন, “আমার ভাই ইসের সংগে দেখা হলে তিনি যখন জিজ্ঞাসা করবেন, ‘কোথায় যাচ্ছ? তুমি কার লোক? তোমার সামনের ঐ পশুগুলোই বা কার?’

18. তখন তুমি বলবে, ‘এগুলো আপনার গোলাম ইয়াকুবের। তিনি আমার প্রভু ইসের জন্য এই উপহার পাঠিয়েছেন, আর তিনি আমাদের পিছনেই আছেন।’ ”

19. এইভাবে তিনি দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং অন্যান্য গোলাম যারা পশুর দল নিয়ে যাচ্ছিল তাদের প্রত্যেককেই হুকুম দিলেন, “ইসের সংগে দেখা হলে তোমরাও ঠিক এই কথাই বলবে।

20. আর শেষে বলবে, ‘আপনার গোলাম ইয়াকুব আমাদের পিছনেই আছেন।’ ”ইয়াকুব মনে মনে এই চিন্তা করলেন, “আমার আগে আগে যে উপহার যাচ্ছে তা দিয়ে আমি তাঁকে শান্ত করে নেব। তার পরে যখন তাঁর সংগে আমার দেখা হবে তখন আমাকে গ্রহণ করতে হয়তো তাঁর কোন আপত্তি থাকবে না।”

21. কাজেই উপহারের জিনিসগুলো তাঁর আগে চলে গেল, কিন্তু সেই রাতটা তিনি সেখানেই কাটালেন।

হযরত ইয়াকুব (আঃ)-এর কুস্তি

22. সেই রাতেই ইয়াকুব উঠে তাঁর দুই স্ত্রী, দুই বাঁদী ও এগারোজন ছেলেকে হেঁটে পার হওয়া যায় এমন একটা জায়গা দিয়ে যব্বোক নদীর ওপারে রেখে আসলেন।

23. তাঁর আর যা কিছু ছিল সেই সবও তাদের সংগে পাঠিয়ে দিলেন।

24. তাতে ইয়াকুব একাই রয়ে গেলেন। তখন একজন লোক এসে ভোর না হওয়া পর্যন্ত তাঁর সংগে কুস্তি করলেন।

25. সেই লোকটি যখন দেখলেন যে, তিনি ইয়াকুবকে হারাতে পারছেন না তখন কুস্তি চলবার সময় তিনি ইয়াকুবের রানের জোড়ায় আঘাত করলেন। তাতে তাঁর রানের হাড় ঠিক জায়গা থেকে সরে গেল।

26. তখন সেই লোকটি বললেন, “ফজর হয়ে আসছে, এবার আমাকে ছেড়ে দাও।”ইয়াকুব বললেন, “আমাকে দোয়া না করা পর্যন্ত আমি আপনাকে ছাড়ব না।”

27. লোকটি বললেন, “তোমার নাম কি?”তিনি বললেন, “আমার নাম ইয়াকুব।”

28. লোকটি বললেন, “তুমি আল্লাহ্‌ ও মানুষের সংগে যুদ্ধ করে জয়ী হয়েছ বলে তোমার নাম আর ইয়াকুব থাকবে না, তোমার নাম হবে ইসরাইল (যার মানে ‘যিনি আল্লাহ্‌র সংগে যুদ্ধ করেন’)।”

29. ইয়াকুব তাঁকে বললেন, “মিনতি করি, আপনি বলুন আপনার নাম কি?”তিনি বললেন, “তুমি আমার নাম জিজ্ঞাসা করছ কেন?” এই কথা বলেই তিনি ইয়াকুবকে দোয়া করলেন।

30. তখন ইয়াকুব সেই জায়গাটার নাম রাখলেন পনূয়েল (যার মানে “আল্লাহ্‌র মুখ”)। তিনি বললেন, “আমি আল্লাহ্‌কে সামনাসামনি দেখেও বেঁচে রয়েছি।”

31. ইয়াকুব যখন পনূয়েল থেকে রওনা দিলেন তখন সূর্য উঠে গেছে। তাঁর রানের অবস্থার জন্য তিনি খোঁড়াতে লাগলেন।

32. এইজন্যই বনি-ইসরাইলরা আজও রানের জোড়ার উপরকার গোশ্‌ত খায় না, কারণ রানের জোড়ার উপরেই ইয়াকুবকে আঘাত করা হয়েছিল।