অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24
  25. 25
  26. 26
  27. 27
  28. 28
  29. 29
  30. 30
  31. 31
  32. 32
  33. 33
  34. 34
  35. 35
  36. 36
  37. 37
  38. 38
  39. 39
  40. 40
  41. 41
  42. 42
  43. 43
  44. 44
  45. 45
  46. 46
  47. 47
  48. 48
  49. 49
  50. 50

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

পয়দায়েশ 26 Kitabul Mukkadas (MBCL)

বাদশাহ্‌ আবিমালেকের ঘরে বিবি রেবেকা

1. ইব্রাহিমের সময়ের মত এবারও দেশে একটা দুর্ভিক্ষ দেখা দিল। সেইজন্য ইসহাক গরার শহরে ফিলিস্তিনীদের বাদশাহ্‌ আবিমালেকের কাছে চলে গেলেন।

2. তখন মাবুদ ইসহাককে দেখা দিয়ে বললেন, “তুমি মিসরে যেয়ো না। আমি তোমাকে যে দেশের কথা বলব সেই দেশেই থাক।

3. এখন এই দেশে তুমি কিছুকালের জন্য বাস করবে। আমি নিজে তোমার সংগে থেকে তোমাকে দোয়া করব। এই সব দেশ আমি তোমাকে ও তোমার বংশের লোকদেরই দেব। এছাড়া আমি তোমার পিতা ইব্রাহিমের কাছে যে কসম খেয়েছিলাম তাও বজায় রাখব।

4. আমি তোমার বংশের লোকদের আসমানের তারার মত অসংখ্য করব এবং এই সব দেশ তাদের দেব। তোমার বংশের মধ্য দিয়ে দুনিয়ার সমস্ত জাতি দোয়া পাবে,

5. কারণ ইব্রাহিম আমার বাধ্য থেকে আমার সমস্ত দাবি, হুকুম, নিয়ম ও নির্দেশ পালন করেছিল।”

6. সেইজন্য ইসহাক গরার শহরেই রয়ে গেলেন।

7. কিন্তু সেখানকার লোকেরা যখন তাঁর স্ত্রীর কথা জিজ্ঞাসা করল তখন তিনি তাঁকে তাঁর বোন বলে পরিচয় দিলেন। তাঁকে তাঁর স্ত্রী বলতে তিনি ভয় পেলেন; মনে করলেন রেবেকা সুন্দরী বলে সেখানকার লোকেরা রেবেকাকে পাবার জন্য তাঁকে হত্যা করবে।

8. ইসহাক অনেক দিন সেখানে কাটালেন। একদিন ফিলিস্তিনীদের বাদশাহ্‌ আবিমালেক জানালা দিয়ে তাকালেন। তিনি দেখে আশ্চর্য হয়ে গেলেন যে, ইসহাক তাঁর স্ত্রী রেবেকাকে আদর করছেন।

9. এতে তিনি ইসহাককে ডেকে বললেন, “দেখুন, রেবেকা নিশ্চয়ই আপনার স্ত্রী; আপনি কেন তাঁকে আপনার বোন বলেছেন?”জবাবে ইসহাক বললেন, “কারণ আমি মনে করেছিলাম তাঁর জন্যই হয়তো আমাকে মারা পড়তে হবে।”

10. আবিমালেক বললেন, “কিন্তু আমাদের সংগে আপনি এ কি ব্যবহার করলেন? যে কোন লোক তো আপনার স্ত্রীকে তার সহবাসের সংগিনী করতে পারত। এতে আপনি গুনাহের দায়ে আমাদের দায়ী করতেন।”

11. এর পরে আবিমালেক সমস্ত লোকের উপর এই বলে এক কড়া হুকুম জারি করলেন যে, কেউ যদি ইসহাক কিংবা তাঁর স্ত্রীর গায়ে হাত তোলে তবে নিশ্চয়ই তাকে হত্যা করা হবে।

12. ইসহাক সেই বছরেই সেই দেশে চাষ করে একশো গুণ ফসল পেলেন। মাবুদ তাঁকে দোয়া করলেন,

13. আর তাতে তিনি ধনী হয়ে উঠলেন। তাঁর অবস্থা দিন দিন ভাল হতে হতে শেষে তিনি এক বিরাট সম্পত্তির মালিক হয়ে উঠলেন।

14. তাঁর ভেড়া, গরু ও গোলামদের সংখ্যা এত বেড়ে গেল যে, তা দেখে ফিলিস্তিনীরা তাঁকে হিংসা করতে লাগল।

15. ইব্রাহিমের সময়ে তাঁর গোলামেরা যে সব কূয়া খুঁড়েছিল ফিলিস্তিনীরা সেগুলো মাটি ফেলে বন্ধ করে দিয়েছিল।

16. পরে আবিমালেক ইসহাককে বললেন, “আপনি আমাদের কাছ থেকে চলে যান, কারণ আপনি আমাদের চেয়ে বেশী শক্তিশালী হয়ে উঠেছেন।”

17. কাজেই ইসহাক সেখান থেকে সরে গিয়ে গরারের শুকনা নদীর উপরে তাম্বু ফেলে বাস করতে লাগলেন।

কূয়া নিয়ে ঝগড়া

18. সেখানে তাঁর পিতা ইব্রাহিমের সময়ে যে সব কূয়া খোঁড়া হয়েছিল ইসহাক আবার সেই কূয়াগুলো খুঁড়িয়ে নিলেন, কারণ ইব্রাহিমের ইন্তেকালের পর ফিলিস্তিনীরা সেগুলো বন্ধ করে দিয়েছিল। তাঁর পিতা সেই কূয়াগুলোর যেটির যে নাম দিয়েছিলেন তিনি সেটির সেই নামই দিলেন।

19. ইসহাকের গোলামেরা সেই শুকনা নদীতে কূয়া খুঁড়তে গিয়ে এমন একটা কূয়া খুঁজে পেল যার তলা থেকে পানি উঠছিল।

20. কিন্তু গরারের রাখালেরা ইসহাকের রাখালদের সংগে ঝগড়া করে বলল, “এই পানি আমাদের।” এই ঝগড়ার জন্য ইসহাক সেই কূয়ার নাম দিলেন এষক (যার মানে “ঝগড়া”)।

21. পরে ইসহাকের রাখালেরা আর একটা কূয়া খুঁড়ল, কিন্তু সেটা নিয়েও তারা ঝগড়া করতে লাগল। এ দেখে ইসহাক সেটার নাম দিলেন সিট্‌না (যার মানে “শত্রুতা”)।

22. তারপর ইসহাক সেখান থেকে সরে গিয়ে আর একটা কূয়া খুঁড়ালেন। এবার কিন্তু ফিলিস্তিনীরা তা নিয়ে কোন ঝগড়া-বিবাদ করল না। ইসহাক সেই কূয়াটার নাম রাখলেন রহোবোৎ (যার মানে “অনেক জায়গা”)। তিনি বললেন, “শেষ পর্যন্ত মাবুদই আমাদের জায়গা করে দিলেন যাতে আমরা এখানেই সংখ্যায় বেড়ে উঠতে পারি।”

23. পরে ইসহাক সেখান থেকে সরে বের্‌-শেবাতে গেলেন।

24. সেই রাতেই মাবুদ তাঁকে দেখা দিয়ে বললেন, “আমি তোমার পিতা ইব্রাহিমের আল্লাহ্‌। কোন ভয় কোরো না, কারণ আমি তোমার সংগে আছি। আমার গোলাম ইব্রাহিমের জন্যই আমি তোমাকে দোয়া করব এবং তোমার বংশ বাড়িয়ে দেব।”

25. তখন ইসহাক সেখানে একটা কোরবানগাহ্‌ তৈরী করলেন এবং মাবুদের এবাদত করলেন। সেখানেই তিনি তাঁর তাম্বু ফেললেন এবং তাঁর গোলামেরা আর একটা কূয়া খুঁড়ল।

বাদশাহ্‌ আবিমালেকের সংগে হযরত ইসহাকের চুক্তি

26. এর পর আবিমালেক তাঁর মন্ত্রী অহূষৎ ও প্রধান সেনাপতি ফীখোলকে নিয়ে গরার থেকে ইসহাকের কাছে আসলেন।

27. ইসহাক তাঁদের বললেন, “আপনারা আমার কাছে কেন এসেছেন? আপনারা তো হিংসা করে আমাকে আপনাদের কাছ থেকে দূর করে দিয়েছেন।”

28. তাঁরা বললেন, “আমরা এখন পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি মাবুদ আপনার সংগে আছেন। তাই আমরা ঠিক করেছি আপনার ও আমাদের মধ্যে একটা চুক্তি হওয়া দরকার। আসুন, আমরা এই কসম খাই যে,

29. আমরা যেমন আপনার কোন ক্ষতি করি নি বরং ভাল ব্যবহার করে আপনাকে শান্তিতে বিদায় দিয়েছি তেমনি আপনিও আমাদের কোন ক্ষতি করবেন না। আপনি এখন মাবুদের দোয়ার পাত্র।”

30. এর পর ইসহাক তাঁদের জন্য একটা মেজবানীর আয়োজন করলেন, আর তাঁরাও খাওয়া-দাওয়া করলেন।

31. পরদিন খুব ভোরে উঠে তাঁরা একে অন্যের কাছে কসম খেলেন। তারপর ইসহাক যখন তাঁদের বিদায় দিলেন তখন তাঁরা মনে শান্তি নিয়ে রওনা হলেন।

32. সেই দিনই ইসহাকের গোলামেরা এসে তাদের খোঁড়া একটা কূয়ার কথা তাঁকে জানিয়ে বলল, “আমরা পানির খোঁজ পেয়েছি।”

33. ইসহাক সেই কূয়াটার নাম দিলেন শিবিয়া (যার মানে “কসম”)। সেইজন্য আজও সেই শহরটার নাম বের্‌-শেবা রয়ে গেছে।

ইসের দু’জন বিদেশী স্ত্রী

34. ইস্‌ চল্লিশ বছর বয়সে হিট্টীয় বেরির মেয়ে যিহূদীৎ এবং হিট্টীয় এলোনের মেয়ে বাসমত্‌কে বিয়ে করলেন।

35. এই দু’জন স্ত্রীলোক ইসহাক ও রেবেকার জীবন বিষিয়ে তুলেছিল। ইসহাক ইয়াকুবকে দোয়া করলেন