অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24
  25. 25
  26. 26
  27. 27
  28. 28

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

প্রেরিত 2 কিতাবুল মোকাদ্দস (BACIB)

পঞ্চাশত্তমীর দিনে পাক-রূহের অবতরণ

1. পরে পঞ্চাশত্তমীর দিন উপস্থিত হলে তাঁরা সকলে এক স্থানে সমবেত হলেন।

2. তখন হঠাৎ আসমান থেকে প্রচণ্ড বায়ুর বেগের শব্দের মত একটা আওয়াজ আসল এবং যে গৃহে তাঁরা বসেছিলেন, সেই আওয়াজে গৃহটি পূর্ণ হয়ে গেল।

3. এমন সময়ে তাঁরা দেখতে পেলেন আগুনের জিহ্বার মত অনেক জিহ্বা অংশ অংশ হয়ে পড়ছে এবং সেই জিহ্বাগুলো এসে তাঁদের প্রত্যেক জনের উপরে বসলো।

4. তাতে তাঁরা সকলে পাক-রূহে পরিপূর্ণ হলেন এবং রূহ্‌ তাঁদেরকে যেরকম কথা বলার শক্তি দান করলেন, সেই অনুসারে তাঁরা ভিন্ন ভিন্ন ভাষায় কথা বলতে লাগলেন।

5. সেই সময়ে আসমানের নিচের সমস্ত দেশ থেকে আগত বহু ভক্ত ইহুদীরা এসে জেরুশালেমে বাস করছিল।

6. আর তাদের অনেক লোক সেই ধ্বনি শুনে সমাগত হল এবং তারা হতবুদ্ধি হয়ে পড়ল, কারণ প্রত্যেক জন তাদের নিজ নিজ ভাষায় তাঁদেরকে কথা বলতে শুনছিল।

7. তখন সকলে ভীষণ আশ্চর্য ও চমৎকৃত হয়ে বলতে লাগল, দেখ, এই যে লোকেরা কথা বলছে, এরা সকলে কি গালীলীয় নয়?

8. তবে আমরা কেমন করে প্রত্যেকে নিজ নিজ মাতৃভাষায় কথা শুনছি?

9. পার্থীয়, মাদীয় ও ইলামীয় লোক এবং মেসোপটেমিয়া, এহুদিয়া ও কাপ্পাদকিয়া, পন্ত ও এশিয়া, ফরুগিয়া ও পাম্ফুলিয়া,

10. মিসর এবং লিবিয়া দেশস্থ কুরীণীর নিকটবর্তী অঞ্চল-নিবাসী এবং প্রবাসকারী রোমীয় ইহুদী ও ইহুদী-ধর্মাবলম্বী অ-ইহুদী লোকেরা এবং ক্রীটীয় ও আরবীয় লোক যে আমরা,

11. আমাদের নিজ নিজ ভাষায় ওদেরকে আল্লাহ্‌র মহৎ মহৎ কাজের কথা বলতে শুনছি।

12. এভাবে তারা সকলে চমৎকৃত হল ও হতবুদ্ধি হয়ে পরস্পর বলতে লাগল, এর অর্থ কি?

13. অন্য লোকেরা পরিহাস করে বললো, ওরা মিষ্ট আঙ্গুর-রসে মাতাল হয়েছে।

হযরত পিতরের তবলিগ

14. কিন্তু পিতর এগার জনের সঙ্গে দাঁড়িয়ে উচ্চৈঃস্বরে তাদের কাছে বক্তৃতা করে বললেন, হে ইহুদী লোকেরা, হে জেরুশালেম-নিবাসী সকলে, তোমরা এই কথা জেনে রাখ এবং আমার কথা শুন।

15. কেননা তোমরা যে অনুমান করছো, এরা মাতাল, তা নয়, কারণ এখন তো সকাল নয় ঘটিকা মাত্র।

16. কিন্তু এটি সেই ঘটনা, যার কথা যোয়েল নবীর মধ্য দিয়ে বলা হয়েছে,

17. “শেষ কালে এরকম হবে, এই কথা আল্লাহ্‌ বলছেন,আমি মানুষের উপরে আমার রূহ্‌ সেচন করবো;তাতে তোমাদের পুত্ররা ও তোমাদের কন্যারা ভবিষ্যদ্বাণী বলবে,আর তোমাদের যুবকেরা দর্শন পাবে,এবং তোমাদের প্রাচীনেরা স্বপ্ন দেখবে।

18. আবার আমার গোলামদের উপরেএবং আমার বাঁদীদের উপরে সেই সময়ে আমি আমার রূহ্‌ সেচন করবো,আর তারা ভবিষ্যদ্বাণী বলবে।

19. আমি উপরে আসমানে নানা অদ্ভুত লক্ষণএবং নিচে দুনিয়াতে নানা চিহ্ন রক্ত, আগুন ও ধোঁয়া দেখাবো।

20. প্রভুর সেই মহৎ ও প্রসিদ্ধ দিনের আগমনের আগেসূর্য অন্ধকার হয়ে যাবে, চন্দ্র রক্ত হয়ে যাবে;

21. আর এরকম হবে, যে কেউ প্রভুর নামে ডাকবে,সেই নাজাত পাবে।”

22. হে ইসরাইল লোকেরা, এসব কথা শোন। নাসরতীয় ঈসা কুদরতি-কাজ, অদ্ভুত লক্ষণ ও চিহ্নগুলো দ্বারা তোমাদের কাছে আল্লাহ্‌-কর্তৃক প্রমাণিত মানুষ; তাঁরই দ্বারা আল্লাহ্‌ তোমাদের মধ্যে ঐ সমস্ত কাজ করেছেন, যা তোমরা নিজেরাই জান।

23. সেই ব্যক্তিকে আল্লাহ্‌ তাঁর নিরূপিত মন্ত্রণা ও পূর্বজ্ঞান অনুসারে তোমাদের হাতে দিলে তোমরা তাঁকে অধর্মীদের দ্বারা ক্রুশে দিয়ে হত্যা করেছিলে।

24. কিন্তু আল্লাহ্‌ মৃত্যু-যন্ত্রণা থেকে মুক্ত করে তাঁকে উঠিয়েছেন; কেননা তাঁকে ধরে রাখবার সাধ্য মৃত্যুর ছিল না।

25. কারণ দাউদ তাঁর বিষয়ে বলেন,“আমি প্রভুকে নিয়তই আমার সম্মুখে দেখতাম;কারণ তিনি আমার ডান পাশে আছেন, যেন আমি বিচলিত না হই।

26. এজন্য আমার অন্তর আনন্দিত ও আমার জিহ্বা উল্লসিত হল;আবার আমার দেহও প্রত্যাশায় প্রবাস করবে;

27. কারণ তুমি আমার প্রাণ পাতালে পরিত্যাগ করবে না,আর নিজের বিশ্বস্ত গোলামের ক্ষয় দেখতে দেবে না।

28. তুমি আমাকে জীবনের পথ জানিয়েছ,তোমার উপস্থিতি দ্বারা আমাকে আনন্দে পূর্ণ করবে।”

29. ভাইয়েরা, সেই পিতৃকুলপতি দাউদের বিষয়ে আমি তোমাদেরকে মুক্ত কণ্ঠে বলতে পারি যে, তিনি ইন্তেকাল করেছেন এবং তাঁকে দাফন করা হয়েছে, আর তাঁর কবর আজ পর্যন্ত আমাদের কাছে রয়েছে।

30. ভাল, তিনি নবী ছিলেন এবং জানতেন, আল্লাহ্‌ কসম খেয়ে তাঁর কাছে এই শপথ করেছিলেন যে, তাঁর এক জন বংশধরকে তাঁর সিংহাসনে বসাবেন;

31. অতএব দাউদ আগে থেকে দেখে মসীহেরই পুনরুত্থান বিষয়ে এই কথা বললেন যে, তাঁকে পাতালে পরিত্যাগও করা হয় নি, তাঁর দেহ ক্ষয়ও হয় নি।

32. এই ঈসাকেই আল্লাহ্‌ উঠিয়েছেন, আমরা সকলেই এই বিষয়ের সাক্ষী।

33. অতএব আল্লাহ্‌র ডান পাশে বসবার গৌরব তাঁকেই দান করা হয়েছে এবং পিতার কাছ থেকে ওয়াদা করা পাক-রূহ্‌ পেয়েছেন, আর এখন তোমরা যা দেখছো ও শুনছো, তা তিনি সেচন করলেন।

34. কেননা দাউদ বেহেশতে যান নি, কিন্তু তিনি নিজে এই কথা বলেন,“প্রভু আমার প্রভুকে বললেন,তুমি আমার ডান দিকে বস,

35. যতদিন আমি তোমার দুশমনদেরকে, তোমার পায়ের তলায় না রাখি।”

36. অতএব ইসরাইলের সমস্ত কুল নিশ্চিত-ভাবে জানুক যে, যাঁকে তোমরা ক্রুশে দিয়েছিলে, আল্লাহ্‌ সেই ঈসাকেই প্রভু ও মসীহ্‌ উভয়ই করেছেন।

তিন হাজার লোক মণ্ডলীভুক্ত হওয়া

37. এই কথা শুনে তাদের অন্তরে যেন শেল-বিদ্ধ হল এবং তারা পিতরকে ও অন্য প্রেরিতদেরকে বলতে লাগল, ভাইয়েরা, আমরা কি করবো?

38. তখন পিতর তাদেরকে বললেন, মন ফিরাও এবং তোমরা প্রত্যেক জন তোমাদের গুনাহ্‌ মাফের জন্য ঈসা মসীহের নামে বাপ্তিস্ম নেও; তা হলে পাক-রূহ্‌রূপ দান পাবে।

39. কারণ তোমাদের জন্য, তোমাদের সন্তানদের জন্য এবং দূরবর্তী সকলের জন্য অর্থাৎ, যত লোককে আমাদের আল্লাহ্‌ প্রভু ডেকে আনবেন তাদের সকলের জন্য এই ওয়াদা করা হয়েছে।

40. এছাড়া, আরও অনেক কথা বলে তিনি সাক্ষ্য দিলেন ও তাদেরকে উপদেশ দিয়ে বললেন, এই কালের কুটিল লোকদের থেকে তোমাদের নিজেদেরকে রক্ষা কর।

41. তখন যারা তাঁর কথা গ্রাহ্য করলো, তারা বাপ্তিস্ম নিল; তাতে সেদিন কমবেশ তিন হাজার লোক তাঁদের সঙ্গে সংযুক্ত হল।

42. আর তারা প্রেরিতদের শিক্ষায় ও সহভাগিতায়, রুটি ভাঙ্গায় ও মুনাজাতে নিবিষ্ট থাকলো।

ঈমানদারদের জীবন-যাপন

43. তখন সকলের মধ্যে ভয় উপস্থিত হল, কেননা প্রেরিতদের কর্তৃক অনেক অদ্ভুত লক্ষণ ও চিহ্ন-কাজ সাধিত হত।

44. আর যারা ঈমান আনলো, তারা সকলে একসঙ্গে সমস্তই সাধারণে রাখতো;

45. আর স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি করে যার যেমন প্রয়োজন, সেই অনুসারে সকলকে ভাগ করে দিত।

46. আর তারা প্রতিদিন বায়তুল-মোকাদ্দসে একসঙ্গে মিলিত হত এবং বাড়িতে রুটি ভেঙ্গে উল্লাসে ও হৃদয়ের সরলতায় খাদ্য গ্রহণ করতো; তারা আল্লাহ্‌র প্রশংসা করতো এবং সমস্ত লোকের প্রীতির পাত্র হল।

47. আর যারা নাজাত পাচ্ছিল, প্রভু দিন দিন তাদেরকে তাদের সঙ্গে সংযুক্ত করতেন।