অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24
  25. 25
  26. 26
  27. 27
  28. 28

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

প্রেরিত 19 কিতাবুল মোকাদ্দস (BACIB)

ইফিষে হযরত পৌলের ইঞ্জিল তবলিগ

1. আপল্লো যে সময়ে করিন্থে ছিলেন, সেই সময়ে পৌল উত্তর অঞ্চল দিয়ে গমন করে ইফিষে আসলেন।

2. তিনি সেখানে কয়েক জন সাহাবীর দেখা পেলেন; আর তাদেরকে বললেন, ঈমান আনার পর তোমরা কি পাক-রূহ্‌ পেয়েছিলে? তারা তাঁকে বললো, পাক-রূহ্‌ যে আছেন, তাও আমরা শুনি নি।

3. তিনি বললেন, তবে কোন বাপ্তিস্ম নিয়েছিলে? তারা বললো, ইয়াহিয়ার বাপ্তিস্ম।

4. পৌল বললেন, ইয়াহিয়া মন পরিবর্তনের বাপ্তিস্মে বাপ্তিস্ম দিতেন, লোকদেরকে বলতেন, যিনি তাঁর পরে আসবেন, তাঁতে অর্থাৎ ঈসাতে তাদেরকে ঈমান আনতে হবে।

5. এই কথা শুনে তারা প্রভু ঈসার নামে বাপ্তিস্ম নিল।

6. আর পৌল তাদের উপরে হস্তার্পণ করলে পাক-রূহ্‌ তাদের উপরে আসলেন, তাতে তারা নানা ভাষায় কথা বলতে এবং ভবিষ্যদ্বাণী বলতে লাগল।

7. তারা সবসুদ্ধ বারো জন পুরুষ ছিল।

8. পরে তিনি মজলিস-খানায় প্রবেশ করে তিন মাস সাহসপূর্বক কথা বললেন, আল্লাহ্‌র রাজ্যের বিষয়ে আলাপ করতেন ও তারা যেন ঈমান আনে তার চেষ্টা করতে লাগলেন।

9. কিন্তু যখন কয়েক জন কঠিন ও অবাধ্য হয়ে লোকদের সাক্ষাতে সেই পথের নিন্দা করতে লাগল, তখন তিনি তাদের কাছ থেকে চলে গেলেন। তিনি তাঁর সাহাবীদেরকে নিয়ে প্রতিদিন তূরান্নের বক্তৃতাগৃহে গিয়ে যুক্তিতর্কের সঙ্গে আলোচনা করতে লাগলেন।

স্কিবার সাত জন পুত্র

10. এভাবে দু’বছর কাল চললো; তাতে এশিয়া-নিবাসী ইহুদী ও গ্রীক সকলেই প্রভুর কালাম শুনতে পেল।

11. আর আল্লাহ্‌ পৌলের হাত দ্বারা অসামান্য কুদরতি-কাজ সাধন করতেন;

12. এমন কি, তাঁর শরীর থেকে রুমাল কিংবা গামছা অসুস্থ লোকদের কাছে আনলে ব্যাধি তাদেরকে ছেড়ে যেত এবং দুষ্ট রূহ্‌রা বের হয়ে যেত।

13. আর কয়েক জন পর্যটনকারী ইহুদী ওঝাও দুষ্ট রূহ্‌বিষ্ট লোকদের কাছে প্রভু ঈসার নাম ব্যবহার করে তাদের ছাড়াতে চেষ্টা করতো। তারা বলতো, পৌল যাঁর বিষয়ে তবলিগ করেন, সেই ঈসার কসম দিয়ে তোমাদেরকে বলছি।

14. আর স্কিবা নামে এক জন ইহুদী প্রধান ইমামের সাতটি পুত্র ছিল, তারা এই রকম করতো।

15. তাতে মন্দ রূহ্‌ জবাবে তাদেরকে বললো, ঈসাকে আমি জানি, পৌলকেও চিনি, কিন্তু তোমরা কে?

16. তখন যে ব্যক্তি মন্দ রূহ্‌বিষ্ট, সে তাদের উপরে লাফ দিয়ে পড়লো, তাদের সকলকে পরাজিত করে তাদের উপরে এমন বল প্রকাশ করলো যে, তারা উলঙ্গ ও ক্ষত-বিক্ষত হয়ে সেই বাড়ি থেকে পালিয়ে গেল।

17. আর এই কথা ইফিষ-নিবাসী ইহুদী ও গ্রীক সকলেই জানতে পেল, তাতে সকলে খুব ভয় পেল এবং প্রভু ঈসার নাম প্রশংসিত হতে লাগল।

18. আর যারা ঈমান এনেছিল, তাদের অনেকে এসে নিজ নিজ কাজ স্বীকার ও প্রকাশ করতে লাগল।

19. আর যারা জাদুর খেলা দেখাত, তাদের মধ্যে অনেকে নিজ নিজ বই এনে একত্র করে সকলের সাক্ষাতে পুড়িয়ে ফেলল। সেসব কিতাবের মূল্য গণনা করলে দেখা গেল, পঞ্চাশ হাজার রূপার মুদ্রা।

20. এভাবে সপরাক্রমে প্রভুর কালাম বৃদ্ধি পেতে ও প্রবল হতে লাগল।

ইফিষে হুলস্থূল

21. এসব কাজ সম্পন্ন হলে পর পৌল রূহে সঙ্কল্প করলেন যে, তিনি ম্যাসিডোনিয়া ও আখায়া যাবার পর জেরুশালেমে যাবেন, তিনি বললেন, সেখানে যাবার পর আমাকে রোম নগরও দেখতে হবে।

22. আর তীমথি ও ইরাস্ত নামে যে দু’জন তাঁর পরিচর্যা করতেন, তাঁদের তিনি ম্যাসিডোনিয়াতে প্রেরণ করলেন এবং তিনি নিজে কিছুকাল এশিয়া প্রদেশে রইলেন।

23. আর সেই সময়ে এই পথের বিষয় ভীষণ হুলস্থূল পড়ে গেল।

24. কারণ দীমীত্রিয় নামে এক জন স্বর্ণকার দেবী আর্তেমিসের রূপার মন্দির নির্মাণ করতো এবং কারিগরদেরকে যথেষ্ট কাজের যোগান দিত।

25. সেই ব্যক্তি তাদেরকে এবং সেই ব্যবসার কারিগরদেরকে ডেকে বললো, মহোদয়গণ, আপনারা জানেন, এই কাজের দ্বারা আমাদের বেশ অর্থ উপার্জন হয়।

26. আর আপনারা দেখছেন ও শুনছেন, কেবল এই ইফিষে নয়, প্রায় সমস্ত এশিয়ায় এই পৌল বিস্তর লোককে প্রবৃত্তি দিয়ে ফিরিয়েছে, এই কথা বলেছে যে, হাতের তৈরি দেবমূর্তি আসলে কোন দেবতাই নয়।

27. এতে এই আশঙ্কা হচ্ছে, কেবল আমাদের এই ব্যবসার দুর্নাম হবে, তা নয়; কিন্তু মহাদেবী আর্তেমিসের মন্দির নগণ্য হয়ে পড়বে, আবার যাঁকে সমস্ত এশিয়া, এমন কি, জগৎ সংসার পূজা করে, তিনিও মহিমাচ্যুত হবেন।

28. এই কথা শুনে তারা ক্রোধে পরিপূর্ণ হয়ে চিৎকার করে বলতে লাগল, ইফিষীয়দের আর্তেমিসই মহাদেবী।

29. তাতে নগর গণ্ডগোলে পরিপূর্ণ হল; পরে লোকেরা একযোগে রঙ্গভূমিতে বেগে দৌড়ে গেল, আর ম্যাসিডোনিয়ার গায় ও আরিষ্টার্খ নামে পৌলের দু’জন সহযাত্রীকে ধরে নিয়ে গেল।

30. তখন পৌল লোকদের কাছে যেতে চাইলে সাহাবীরা তাঁকে যেতে দিলেন না।

31. আর এশিয়ার কর্মকর্তাদের মধ্যে কয়েক জন তাঁর বন্ধু ছিলেন বলে তাঁর কাছে লোক পাঠিয়ে এই নিবেদন করলেন, যেন তিনি রঙ্গভূমিতে নিজের বিপদ ঘটাতে না যান।

32. তখন নানা লোকে নানা কথা বলে চিৎকার করছিল, কেননা সভা গোলযোগে পরিপূর্ণ হয়েছিল এবং কি জন্য সমাগত হয়েছিল অধিকাংশ লোকই তা জানত না।

33. তখন ইহুদীরা আলেকজাণ্ডারকে সম্মুখে উপস্থিত করায় লোকেরা জনতার মধ্য থেকে তাকে বের করলো; তাতে আলেকজাণ্ডার হাত দিয়ে ইশারা করে লোকদের কাছে পক্ষসমর্থন করতে উদ্যত হল।

34. কিন্তু যখন তারা জানতে পারলো যে, সে ইহুদী, তখন সকলে একস্বরে অনুমান দুই ঘণ্টা কাল এই বলে চেঁচাতে থাকলো, ‘ইফিষীয়দের আর্তেমিসই মহাদেবী’।

35. শেষে নগর সমপাদক জনতাকে ক্ষান্ত করে বললেন, হে ইফিষীয় লোকেরা, বল দেখি, ইফিষীয়দের নগরী যে মহাদেবী আর্তেমিসের এবং আসমান থেকে পড়া মূর্তির রক্ষাকারী, এই সব মানুষের মধ্যে তা কে না জানে?

36. অতএব এই কথা অখণ্ডনীয় হওয়াতে তোমাদের ক্ষান্ত থাকা এবং অবিবেচনার কোন কাজ না করা উচিত।

37. কারণ এই যে লোকদেরকে তোমরা এই স্থানে এনেছ, এরা তো মন্দিরগুলোর অপহারকও নয়, আমাদের দেবীর নিন্দুকও নয়।

38. অতএব যদি কারো বিরুদ্ধে দীমীত্রিয়ের ও তার সঙ্গী কারিগরদের কোন কথা থাকে, তবে আদালত খোলা আছে, শাসনকর্তারাও আছেন, তারা পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করুক।

39. কিন্তু তোমাদের অন্য কোন দাবী-দাওয়া যদি থাকে, তবে নিয়মিত সভায় তার নিষ্পত্তি হবে।

40. বস্তুত আজকের ঘটনার কারণে দাঙ্গা-হাঙ্গামার দোষে দোষী বলে আমাদের নামে অভিযোগ হবার আশঙ্কাও আছে, যেহেতু এর কোন কারণ নেই, এই জনসমাগমের বিষয়ে উত্তর দেবার কোন উপায় আমাদের নেই।

41. এই বলে তিনি সভাকে বিদায় করলেন।