অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24
  25. 25
  26. 26
  27. 27
  28. 28

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

প্রেরিত 17 কিতাবুল মোকাদ্দস (BACIB)

থিষলনীকীতে সুসমাচার-তবলিগ

1. পরে তাঁরা আম্ফিপলি ও আপল্লোনিয়া দিয়ে গমন করে থিষলনীকী শহরে আসলেন। সেই স্থানে ইহুদীদের একটি মজলিস-খানা ছিল।

2. আর পৌল তাঁর রীতি অনুসারে তাদের কাছে গেলেন এবং তিনটি বিশ্রামবারে পাক-কিতাবের কথা নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করলেন, অর্থ বুঝিয়ে দিলেন।

3. তিনি তাদের দেখালেন যে, মসীহের মৃত্যুবরণ করা ও মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থান করা আবশ্যক ছিল। তিনি তাদের বললেন, এই যে ঈসাকে আমি তোমাদের কাছে তবলিগ করছি, তিনিই সেই মসীহ্‌।

4. তাতে তাদের মধ্যে কয়েক জন তাঁদের কথায় ঈমান আনলো এবং পৌলের ও সীলের সঙ্গে যোগ দিল; আর ভক্ত গ্রীকদের মধ্যে অনেক লোক ও বেশ কয়েক জন প্রধান মহিলা তাঁদের সঙ্গে যোগ দিলেন।

5. কিন্তু ইহুদীরা ঈর্ষান্বিত হয়ে, বাজারের কয়েক জন দুষ্ট লোককে সঙ্গে নিয়ে ভিড় জমাল এবং নগরে গোলযোগ বাঁধিয়ে দিল। তারপর তারা পৌল ও সীলকে খুঁজে বের করে লোকদের কাছে আনবার জন্য যাসোনের বাড়ি আক্রমণ করলো;

6. কিন্তু তাঁদেরকে না পাওয়াতে তাঁরা যাসোন এবং কয়েক ভাইকে নগর-প্রশাসকদের সম্মুখে টেনে নিয়ে গেল ও চেঁচিয়ে বলতে লাগল, এই যে লোকেরা জগৎ-সংসারকে লণ্ডভণ্ড করে ফেলেছে, এরা এই স্থানেও উপস্থিত হয়েছে;

7. আর যাসোন এদের মেহমানদারী করেছে। এরা সকলে সম্রাটের নির্দেশের বিরুদ্ধাচরণ করে ও বলে, ঈসা নামে আর এক জন বাদশাহ্‌ আছেন।

8. এসব কথা শুনিয়ে তারা জনতাকে ও নগরের কর্মকর্তাদেরকে অস্থির করে তুললো।

9. তখন তাঁরা যাসোনের ও আর সকলের জামিন নিয়ে তাঁদেরকে ছেড়ে দিলেন।

বিরয়া শহরে হযরত পৌল

10. পরে ভাইয়েরা অবিলম্বে পৌলকে ও সীলকে রাতের বেলা বিরয়াতে পাঠিয়ে দিলেন। সেখানে উপস্থিত হয়ে তাঁরা ইহুদীদের মজলিস-খানায় গমন করলেন।

11. থিষলনীকীর ইহুদীদের চেয়ে এরা ভদ্র ছিল; কেননা এরা সমপূর্ণ আগ্রহপূর্বক কালাম গ্রহণ করলো, আর এসব বাস্তবিকই এরকম কি না তা জানবার জন্য প্রতিদিন পাক-কিতাব পরীক্ষা করতে লাগল।

12. অতএব তাদের মধ্যে অনেকে এবং গ্রীকদের মধ্যেও অনেক সম্ভ্রান্ত মহিলা ও পুরুষ ঈমান আনলেন।

13. কিন্তু থিষলনীকীর ইহুদীরা যখন জানতে পারলো যে, বিরয়াতেও পৌল কর্তৃক আল্লাহ্‌র কালাম তবলিগ হয়েছে, তখন তারা সেখানেও এসে লোকদেরকে অস্থির ও উত্তেজিত করে তুলতে লাগল।

14. তখন ভাইয়েরা অবিলম্বে পৌলকে সমুদ্র পর্যন্ত নিয়ে যাবার জন্য প্রেরণ করলেন; আর সীল ও তীমথি সেখানে রইলেন।

15. আর যারা পৌলকে সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিল, তারা তাঁকে এথেন্স পর্যন্ত নিয়ে গেল। পরে তারা পৌলের কাছ থেকে এই নির্দেশ নিয়ে প্রস্থান করলো যে, যেন সীল ও তীমথি খুব তাড়াতাড়ি তাঁর সঙ্গে যোগ দেন।

এথেন্সে হযরত পৌলের ইঞ্জিল তবলিগ

16. পৌল যখন তাদের অপেক্ষায় এথেন্সে ছিলেন, তখন সেই নগর মূর্তিতে পরিপূর্ণ দেখে তাঁর অন্তরে তাঁর রূহ্‌ উত্তপ্ত হয়ে উঠলো।

17. অতএব তিনি মজলিস-খানায় ইহুদী ও ভক্ত লোকদের কাছে এবং বাজারে প্রতিদিন যাদের সঙ্গে দেখা হত, তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতেন।

18. আবার এপিকিউরীয় ও স্টোয়িকীয় কয়েক জন দার্শনিক তাঁর সঙ্গে তর্কবিতর্ক করতে লাগল। আর কেউ কেউ বললো, এই বাচালটা কি বলতে চায়? আর কেউ কেউ বললো, ওকে বিজাতীয় দেবতাদের প্রচারক বলে মনে হয়; কারণ তিনি ঈসা ও পুনরুত্থান বিষয়ক সুসমাচার তবলিগ করতেন।

19. পরে তারা তাঁর হাত ধরে এরিওপেগসে নিয়ে গিয়ে বললো, এই যে নতুন শিক্ষা আপনি তবলিগ করছেন, তা কি রকম, আমরা কি জানতে পারি?

20. কারণ আপনার কতগুলো কথা আমাদের কানে অদ্ভুত শোনাচ্ছে; অতএব আমরা জানতে বাসনা করি, এসব কথার অর্থ কি।

21. (এথেন্সের সকল লোক ও সেখানকার প্রবাসী বিদেশীরা কেবল নতুন কোন কথা বলা বা শোনা ছাড়া আর কিছুতে সময় ব্যয় করতো না।)

22. তখন পৌল এরিওপেগসের মধ্যস্থলে দাঁড়িয়ে বললেন, হে এথেন্সের লোকেরা, দেখছি, তোমরা সর্ব বিষয়ে বড়ই দেবতা-ভক্ত।

23. কেননা বেড়াবার সময়ে তোমাদের উপাস্য বস্তুগুলো দেখতে দেখতে একটি বেদী দেখতে পেলাম, যার উপরে লেখা আছে, ‘অজানা দেবতার উদ্দেশে।’ অতএব তোমরা যে অজানা দেবতার ভজনা করছো, তাঁকে আমি তোমাদের কাছে তবলিগ করি।

24. আল্লাহ্‌, যিনি দুনিয়া ও তার মধ্যেকার সমস্ত বস্তু নির্মাণ করেছেন, তিনিই বেহেশতের ও দুনিয়ার প্রভু। তিনি হাতের তৈরি কোন মন্দিরে বাস করেন না।

25. তাঁর কোন কিছুর অভাব নেই, সেজন্য তিনি মানুষের হাত দ্বারা সেবিতও হন না। কেননা তিনিই সকলকে জীবন, শ্বাস ও সমস্ত কিছু দান করেন।

26. আর তিনি এক ব্যক্তি থেকে মানুষের সকল জাতিকে উৎপন্ন করেছেন, যেন তারা সমস্ত ভূতলে বাস করে। তিনি তাদের নির্দিষ্ট কাল ও নিবাসের সীমা স্থির করে দিয়েছেন।

27. আল্লাহ্‌ তা করেছেন, যেন মানুষ অনুসন্ধান করতে করতে তাঁর উদ্দেশ পেয়ে যাবার আশায় তাঁর খোঁজ করে; অথচ তিনি আমাদের কারো কাছ থেকে দূরে নন।

28. কেননা তাঁতেই আমাদের জীবন, গতি ও সত্তা; যেমন তোমাদের কয়েক জন কবিও বলেছেন, ‘কারণ আমরাও তাঁর সন্তান’।

29. অতএব আমরা যখন আল্লাহ্‌র সন্তান, তখন আল্লাহ্‌র স্বরূপকে মানুষের শিল্প ও কল্পনা অনুসারে খোদাই-করা সোনার বা রূপার বা পাথরের মত জ্ঞান করা আমাদের কর্তব্য নয়।

30. আল্লাহ্‌ সেই অজ্ঞানতার কাল উপেক্ষা করেছিলেন, কিন্তু এখন সমস্ত জায়গায় ও সকল মানুষকে মন পরিবর্তন করতে হুকুম দিচ্ছেন;

31. কেননা তিনি একটি দিন স্থির করেছেন, যে দিনে তাঁর নির্ধারিত ব্যক্তি দ্বারা ন্যায়ভাবে জগৎ সংসারের বিচার করবেন; এই বিষয়ে সকলের বিশ্বাস যোগ্য প্রমাণ দিয়েছেন, ফলত মৃতদের মধ্য থেকে তাঁকে উঠিয়েছেন।

32. তখন মৃতদের পুনরুত্থানের কথা শুনে কেউ কেউ উপহাস করতে লাগল; কিন্তু আর কেউ কেউ বললো, আপনার কাছে এই বিষয় আর একবার শুনবো।

33. এভাবে পৌল তাদের মধ্য থেকে প্রস্থান করলেন।

34. কিন্তু কোন কোন ব্যক্তি তাঁর সঙ্গ ধরলো ও ঈমান আনলো; তাদের মধ্যে এরিওপেগসীয় দিয়নুষিয় এবং দামারিস্‌ নাম্নী এক জন স্ত্রীলোক ও তাঁদের সঙ্গে আর কয়েক জন ছিলেন।