অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

মার্ক 12 কিতাবুল মোকাদ্দস (BACIB)

কৃষকদের দৃষ্টান্ত

1. পরে তিনি দৃষ্টান্ত দ্বারা তাদের কাছে কথা বলতে লাগলেন। এক ব্যক্তি আঙ্গুর-ক্ষেত করে তার চারদিকে বেড়া দিলেন, আঙ্গুর প্রেষণের জন্য কুণ্ড খনন করলেন এবং উঁচু পাহারা-ঘর নির্মাণ করলেন; আর কৃষকদেরকে তা ইজারা দিয়ে অন্য দেশে চলে গেলেন।

2. পরে কৃষকদের কাছে আঙ্গুর-ক্ষেতের ফলের অংশ পাবার জন্য তাদের কাছে উপযুক্ত সময়ে এক জন গোলামকে পাঠিয়ে দিলেন;

3. তারা তাকে ধরে প্রহার করলো ও খালি হাতে বিদায় করে দিল।

4. আবার তিনি তাদের কাছে আর এক জন গোলামকে পাঠালেন; তারা তার মাথায় আঘাত করলো ও অপমান করলো।

5. পরে তিনি আর এক জনকে পাঠালেন; তারা তাকে হত্যা করলো এবং আরও অনেকের মধ্যে কাউকেও প্রহার, কাউকেও বা হত্যা করলো।

6. তখন তাঁর আর এক জন মাত্র ছিলেন, তিনি প্রিয়তম পুত্র; তিনি তাদের কাছে শেষে তাঁকেই পাঠালেন, বললেন, তারা আমার পুত্রকে সম্মান করবে।

7. কিন্তু কৃষকেরা পরস্পর বললো, এই তো উত্তরাধিকারী, এসো, আমরা একে হত্যা করি, তাতে অধিকার আমাদেরই হবে।

8. পরে তারা তাঁকে ধরে হত্যা করলো এবং আঙ্গুর-ক্ষেতের বাইরে ফেলে দিল।

9. সেই আঙ্গুর-ক্ষেতের মালিক কি করবেন? তিনি এসে সেই কৃষকদেরকে বিনষ্ট করবেন এবং ক্ষেত অন্য লোকদেরকে দেবেন।

10. তোমরা কি পাক-কিতাবের এই কালাম পাঠ কর নি,“যে পাথর রাজমিস্ত্রিরা অগ্রাহ্য করেছে,তা-ই কোণের প্রধান পাথর হয়েউঠলো;

11. এটা প্রভু হতেই হয়েছে,আর আমাদের দৃষ্টিতে অদ্ভুত লাগে”?

12. তখন তারা তাঁকে ধরতে চেষ্টা করলো, কেননা তারা বুঝেছিল যে, তিনি তাদেরই বিষয়ে সেই দৃষ্টান্ত বলেছিলেন; কিন্তু তারা লোকসাধারণকে ভয় করতো বলে তাঁকে পরিত্যাগ করে চলে গেল।

কর দেবার বিষয়ে শিক্ষা

13. পরে তারা কয়েকজন ফরীশী ও হেরোদীয়কে তাঁর কাছে পাঠিয়ে দিল, যেন তারা তাঁকে কথার ফাঁদে ধরতে পারে।

14. তারা এসে তাঁকে বললো, হুজুর, আমরা জানি, আপনি সৎ এবং কারো বিষয়ে ভীত নন; কারণ আপনি মানুষের মুখাপেক্ষা করেন না, কিন্তু সত্যরূপে আল্লাহ্‌র পথের বিষয় শিক্ষা দিচ্ছেন; সীজারকে কি কর দেওয়া উচিত?

15. আমরা কর দেব কি দেব না? তিনি তাদের কপটতা বুঝে বললেন, আমাকে কেন পরীক্ষা করছো? একটি দীনার এনে দাও, আমি দেখি।

16. তারা একটি দীনার আনলো; তিনি তাদেরকে বললেন, এই ছবি ও এই নাম কার? তারা বললো, সম্রাটের।

17. ঈসা তাদেরকে বললেন, সম্রাটের যা যা তা সম্রাটকে দাও, আর আল্লাহ্‌র যা তা আল্লাহ্‌কে দাও। তখন তারা তাঁর বিষয়ে অতিশয় আশ্চর্য জ্ঞান করলো।

পুনরুত্থানের বিষয়ে শিক্ষা

18. পরে সদ্দূকীরা— যারা বলে, পুনরুত্থান নেই— তাঁর কাছে আসল এবং তাঁকে জিজ্ঞাসা করলো,

19. হুজুর, মূসা আমাদের জন্য লিখেছেন, কারো ভাই যদি স্ত্রী রেখে মারা যায়, আর তার সন্তান না থাকে, তবে তার ভাই তার স্ত্রীকে বিয়ে করে আপন ভাইয়ের জন্য বংশ উৎপন্ন করবে।

20. ভাল, তারা সাত ভাই ছিল; প্রথম জন এক জন স্ত্রীকে বিয়ে করলো, আর সে সন্তান না রেখে মারা গেল।

21. পরে দ্বিতীয় জন তাকে বিয়ে করলো, কিন্তু সেও সন্তান না রেখে মারা গেল;

22. তৃতীয় জনও তেমনি। এভাবে সাত জনই কোন সন্তান রেখে যায় নি; সকলের শেষে সেই স্ত্রীও মারা গেল।

23. পুনরুত্থান দিনে যখন তারা উঠবে, সে তাদের মধ্যে কার স্ত্রী হবে? তারা সাত জনই তো তাকে বিয়ে করেছিল।

24. ঈসা তাদেরকে বললেন, এটা-ই কি তোমাদের ভ্রান্তির কারণ নয় যে, তোমরা না জান পাক-কিতাব, না জান আল্লাহ্‌র পরাক্রম?

25. মৃতদের মধ্য থেকে উঠলে পর লোকেরা তো বিয়ে করে না এবং বিবাহিতাও হয় না, বরং বেহেশতে ফেরেশতাদের মত থাকে।

26. কিন্তু মৃতদের বিষয়ে, তারা যে উত্থিত হয়, এই বিষয়ে মূসার কিতাবে ঝোপের ঘটনায় আল্লাহ্‌ তাঁকে কিরূপ বলেছিলেন, তা কি তোমরা পাঠ কর নি? তিনি বলেছিলেন, “আমি ইব্রাহিমের আল্লাহ্‌, ইস্‌হাকের আল্লাহ্‌ ও ইয়াকুবের আল্লাহ্‌।”

27. তিনি মৃতদের আল্লাহ্‌ নন, কিন্তু জীবিতদের। তোমরা বড়ই ভ্রান্তিতে পড়েছ।

সর্বপ্রধান হুকুমের বিষয়ে শিক্ষা

28. আর আলেমদের এক জন কাছে এসে তাদেরকে তর্ক বিতর্ক করতে শুনে এবং ঈসা তাদেরকে বিলক্ষণ উত্তর দিয়েছেন জেনে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলো, সকল হুকুমের মধ্যে কোন্‌টি প্রথম?

29. জবাবে ঈসা বললেন, প্রথমটি এই, “হে ইসরাইল, শোন; আমাদের আল্লাহ্‌ প্রভু একই প্রভু;

30. আর তুমি তোমার সমস্ত অন্তঃকরণ, তোমার সমস্ত প্রাণ, তোমার সমস্ত মন ও তোমার সমস্ত শক্তি দিয়ে তোমার আল্লাহ্‌ প্রভুকে মহব্বত করবে।”

31. দ্বিতীয়টি এই, “তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মত মহব্বত করবে।” এই দু’টি হুকুম থেকে বড় আর কোন হুকুম নেই।

32. আলেম তাঁকে বললো, বেশ, হুজুর, আপনি সত্যি বলেছেন যে, তিনি এক এবং তিনি ছাড়া অন্য কেউ নেই;

33. আর সমস্ত অন্তঃকরণ, সমস্ত বুদ্ধি ও সমস্ত শক্তি দিয়ে তাঁকে মহব্বত করা এবং প্রতিবেশীকে নিজের মত মহব্বত করা সমস্ত পোড়ানো-কোরবানী ও অন্যান্য কোরবানী থেকে শ্রেষ্ঠ।

34. তখন সে বুদ্ধিপূর্বক উত্তর দিয়েছে দেখে ঈসা তাকে বললেন, আল্লাহ্‌র রাজ্য থেকে তুমি খুব দূরে নও। এর পরে তাঁকে কোন কথা জিজ্ঞাসা করতে আর কারো সাহস হল না।

হযরত দাউদের পুত্রের বিষয়ে আলেমদের কাছে প্রশ্ন

35. আর বায়তুল-মোকাদ্দসে উপদেশ দেবার সময়ে ঈসা প্রসঙ্গ করে বললেন, আলেমেরা কেমন করে বলে যে, মসীহ্‌ দাউদের সন্তান?

36. দাউদ নিজেই তো পাক-রূহের আবেশে এই কথা বলেছেন,“প্রভু আমার প্রভুকে বললেন,তুমি আমার ডান দিকে বস,যতদিন তোমার দুশমনদেরকেতোমার পায়ের তলায় না রাখি।”

37. দাউদ নিজেই তো তাঁকে প্রভু বলেন, তবে তিনি কিভাবে তাঁর সন্তান হলেন? আর সাধারণ লোকে আনন্দপূর্বক তাঁর কথা শুনতো।

আলেমদের প্রতি ভর্ৎসনা

38. আর তিনি তাঁর উপদেশের মধ্যে তাদেরকে বললেন, আলেমদের থেকে সাবধান, তারা লম্বা লম্বা কোর্তা পরে বেড়াতে চায় এবং হাট বাজারে লোকদের কাছ থেকে সালাম পেতে চায়,

39. মজলিস-খানায় প্রধান প্রধান আসন এবং ভোজে প্রধান প্রধান স্থান ভালবাসে।

40. এই যে লোকেরা বিধবাদের বাড়িসুদ্ধ গ্রাস করে, আর লোক দেখাবার লম্বা লম্বা মুনাজাত করে, এরা বিচারে আরও বেশি দণ্ড পাবে।

দরিদ্র বিধবার দান

41. আর তিনি ভাণ্ডারের সম্মুখে বসে, লোকেরা ভাণ্ডারের মধ্যে কিভাবে টাকা-পয়সা রাখছে, তা দেখছিলেন। তখন অনেক ধনবান তার মধ্যে বিস্তর টাকা-পয়সা রাখল।

42. পরে একটি দরিদ্রা বিধবা এসে দু’টি ক্ষুদ্র মুদ্রা তাতে রাখল, যার মূল্য সিকি পয়সা।

43. তখন তিনি তাঁর সাহাবীদেরকে কাছে ডেকে বললেন, আমি তোমাদেরকে সত্যি বলছি, ভাণ্ডারে যারা মুদ্রা রাখছে, তাদের সকলের চেয়ে এই দরিদ্র বিধবা বেশি রাখল;

44. কেননা অন্য সকলে নিজ নিজ অতিরিক্ত ধন থেকে কিছু কিছু রেখেছে, কিন্তু সে নিজের অভাব থাকলেও বেঁচে থাকবার জন্য তার যা ছিল, সমস্তই রাখল।