অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

মার্ক 10 কিতাবুল মোকাদ্দস (BACIB)

স্ত্রী তালাকের বিষয়ে শিক্ষা

1. সেই স্থান থেকে উঠে তিনি এহুদিয়ার অঞ্চলে ও জর্ডান নদীর অপর পারে আসলেন; তাতে তাঁর কাছে আবার লোক সমাগত হতে লাগল এবং তিনি নিজের রীতি অনুসারে আবার তাদেরকে উপদেশ দিলেন।

2. তখন ফরীশীরা কাছে এসে পরীক্ষা করার জন্য তাঁকে জিজ্ঞাসা করলো, স্ত্রী পরিত্যাগ করা কি পুরুষের পক্ষে উচিত?

3. জবাবে তিনি তাদেরকে বললেন, মূসা তোমাদেরকে কি হুকুম দিয়েছেন?

4. তারা বললো, তালাক-নামা লিখে আপন স্ত্রীকে তালাক দেবার অনুমতি মূসা দিয়েছেন।

5. ঈসা তাদেরকে বললেন, তোমাদের অন্তঃকরণ কঠিন বলে তিনি এই বিধি লিখেছেন;

6. কিন্তু সৃষ্টির আদি থেকে আল্লাহ্‌ পুরুষ ও স্ত্রী করে তাদেরকে নির্মাণ করেছেন;

7. “এই কারণে মানুষ তার পিতা-মাতাকে ত্যাগ করে আপন স্ত্রীতে আসক্ত হবে,

8. আর সে দু’জন একাঙ্গ হবে;” সুতরাং তারা আর দুই নয়, কিন্তু একাঙ্গ।

9. অতএব আল্লাহ্‌ যার যোগ করে দিয়েছেন, মানুষ তার বিয়োগ না করুক।

10. পরে সাহাবীরা বাড়িতে আবার সেই বিষয় তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন।

11. তিনি তাঁদেরকে বললেন, যে কেউ আপন স্ত্রীকে তালাক দিয়ে অন্য স্ত্রীকে বিয়ে করে, সে তার বিরুদ্ধে জেনা করে;

12. আর স্ত্রী যদি আপন স্বামীকে পরিত্যাগ করে আর এক জনকে বিয়ে করে, তবে সেও জেনা করে।

শিশুদের প্রতি ঈসা মসীহের দোয়া

13. পরে লোকেরা কতগুলো শিশুকে তাঁর কাছে আনলো, যেন তিনি তাদেরকে স্পর্শ করেন; তাতে সাহাবীরা তাদেরকে ভর্ৎসনা করলেন।

14. কিন্তু ঈসা তা দেখে অসন্তুষ্ট হলেন, আর তাঁদেরকে বললেন, শিশুদেরকে আমার কাছে আসতে দাও, বারণ করো না; কেননা আল্লাহ্‌র রাজ্য এদের মত লোকদেরই।

15. আমি তোমাদেরকে সত্যি বলছি, যে ব্যক্তি শিশুর মত হয়ে আল্লাহ্‌র রাজ্য গ্রহণ না করে, সে কোন মতে তাতে প্রবেশ করতে পারবে না।

16. পরে তিনি তাদেরকে কোলে নিলেন ও তাদের উপরে হাত রেখে দোয়া করলেন।

এক জন ধনবান

17. পরে তিনি বের হয়ে পথে যাচ্ছেন, এমন সময়ে এক জন দৌড়ে এসে তাঁর সম্মুখে হাঁটু পেতে জিজ্ঞাসা করলো, হে সৎ ওস্তাদ, অনন্ত জীবনের অধিকারী হবার জন্য আমি কি করবো?

18. ঈসা তাকে বললেন, আমাকে সৎ কেন বলছো? এক জন ছাড়া সৎ আর কেউ নেই, তিনি আল্লাহ্‌।

19. তুমি হুকুমগুলো জানো, “নরহত্যা করো না, জেনা করো না, চুরি করো না, মিথ্যা সাক্ষ্য দিও না, প্রবঞ্চনা করো না, তোমার পিতামাতাকে সমাদর কোরো”।

20. সেই বক্তি তাঁকে বললো, হুজুর, বাল্যকাল থেকে এসব আমি পালন করে আসছি।

21. ঈসা তার প্রতি দৃষ্টিপাত করে মহব্বতে পূর্ণ হয়ে তাকে বললেন, একটি বিষয়ে তোমার ত্রুটি আছে, যাও, তোমার যা কিছু আছে বিক্রি করে দরিদ্রদেরকে দান কর, তাতে বেহেশতে ধন পাবে; আর এসো, আমার অনুসারী হও।

22. এই কথায় সে বিষণ্ন হল, দুঃখিত হয়ে চলে গেল, কারণ তার বিস্তর সম্পত্তি ছিল।

23. তখন ঈসা চারদিকে দৃষ্টিপাত করে তাঁর সাহাবীদেরকে বললেন, যাদের ধন আছে, তাদের পক্ষে আল্লাহ্‌র রাজ্যে প্রবেশ করা কেমন দুষ্কর!

24. তাঁর কথায় সাহাবীরা আশ্চর্য হলেন; কিন্তু ঈসা পুনর্বার তাঁদেরকে বললেন, বৎসরা, যারা ধনের উপর নির্ভর করে, আল্লাহ্‌র রাজ্যে প্রবেশ করা তাদের পক্ষে কেমন দুষ্কর!

25. আল্লাহ্‌র রাজ্যে ধনবানের প্রবেশ করার চেয়ে বরং সূচের ছিদ্র দিয়ে উটের যাওয়া সহজ।

26. তখন তাঁরা অতিশয় আশ্চর্য হয়ে বললেন, তবে কে নাজাত পেতে পারে?

27. ঈসা তাঁদের প্রতি দৃষ্টিপাত করে বললেন, এটা মানুষের পক্ষে অসম্ভব বটে, কিন্তু আল্লাহ্‌র পক্ষে অসম্ভব নয়, কারণ আল্লাহ্‌র পক্ষে সকলই সম্ভব।

28. তখন পিতর তাঁকে বলতে লাগলেন, দেখুন, আমরা সমস্ত কিছু পরিত্যাগ করে আপনার অনুসারী হয়েছি।

29. ঈসা বললেন, আমি তোমাদেরকে সত্যি বলছি, এমন কেউ নেই, যে আমার জন্য ও সুসমাচারের জন্য তার বাড়ি বা ভাই-বোন বা পিতা-মাতা বা সন্তান-সন্ততি বা জায়গা-জমি ত্যাগ করেছে, কিন্তু এখন ইহকালে তার শতগুণ না পাবে;

30. সে বাড়ি, ভাই-বোন, মা, সন্তান-সন্তুতি ও জায়গা-জমি, নির্যাতনের সঙ্গে এসব পাবে এবং আগামী যুগে অনন্ত জীবন পাবে।

31. কিন্তু যারা প্রথম, এমন অনেক লোক শেষে পড়বে ও যারা শেষের, তারা প্রথম হবে।

ঈসা মসীহ্‌ তৃতীয় বার নিজের মৃত্যুর বিষয় বলেন

32. একবার তাঁরা পথে ছিলেন, জেরুশালেমে যাচ্ছিলেন এবং ঈসা তাদের আগে আগে চলছিলেন, তখন তাঁরা আশ্চর্য হলেন আর যাঁরা পিছনে চলছিলেন, তাঁরা ভয় পেলেন। পরে তিনি আবার সেই বারো জনকে নিয়ে নিজের প্রতি যা যা ঘটবে, তা তাঁদেরকে বলতে লাগলেন।

33. তিনি বললেন, দেখ, আমরা জেরুশালেমে যাচ্ছি, আর ইবনুল-ইনসানকে প্রধান ইমাম ও আলেমদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হবে; তারা তাঁর প্রাণদণ্ড বিধান করবে এবং অ-ইহুদীদের হাতে তাঁকে তুলে দেওয়া হবে।

34. আর তারা তাঁকে বিদ্রূপ করবে, তাঁর মুখে থুথু দেবে, তাঁকে কশাঘাত করবে ও হত্যা করবে; আর তিন দিন পরে তিনি আবার জীবিত হয়ে উঠবেন।

আল্লাহ্‌-রাজ্যে মহান কে?

35. পরে সিবদিয়ের দুই পুত্র, ইয়াকুব ও ইউহোন্না, তাঁর কাছে এসে বললেন, হুজুর, আমাদের বাসনা এই, আমরা আপনার কাছে যা যাচ্ঞা করবো, আপনি তা আমাদের জন্য করুন।

36. তিনি তাঁদেরকে বললেন, তোমাদের বাসনা কি? তোমাদের জন্য আমি কি করবো?

37. তাঁরা বললেন, আমাদেরকে এই বর দান করুন, যেন আপনি যখন মহিমা লাভ করবেন তখন আমরা এক জন আপনার ডান পাশে, আর এক জন বাম পাশে বসতে পারি।

38. ঈসা তাঁদেরকে বললেন, তোমরা কি যাচ্ঞা করছো, তা বোঝ না। আমি যে পাত্রে পান করি, তাতে কি তোমরা পান করতে পার এবং আমি যে বাপ্তিস্মে বাপ্তিস্ম নেই, তাতে কি তোমরা বাপ্তিস্ম নিতে পার?

39. তাঁরা বললেন, পারি। ঈসা তাঁদেরকে বললেন, আমি যে পাত্রে পান করি, তাতে তোমরা পান করবে এবং আমি যে বাপ্তিস্মে বাপ্তিস্ম নেই, তাতে তোমরাও বাপ্তিস্ম নেবে;

40. কিন্তু যাদের জন্য স্থান প্রস্তুত করা হয়েছে, তাদের ছাড়া আর কাউকেও আমার ডান পাশে বা বাম পাশে বসতে দিতে আমার অধিকার নেই।

41. এই কথা শুনে অন্য দশ জন ইয়াকুব ও ইউহোন্নার প্রতি বিরক্ত হতে লাগলেন।

42. কিন্তু ঈসা তাঁদেরকে কাছে ডেকে বললেন, তোমরা জান, জাতিদের মধ্যে যারা শাসনকর্তা বলে গণ্য, তারা তাদের উপরে প্রভুত্ব করে এবং তাদের মধ্যে যারা মহান, তারা তাদের উপরে কর্তৃত্ব করে।

43. তোমাদের মধ্যে সেরকম হওয়া উচিত নয়; কিন্তু তোমাদের মধ্যে যে কেউ মহান হতে চায়, সে তোমাদের পরিচারক হবে;

44. এবং তোমাদের মধ্যে যে কেউ প্রধান হতে চায়, সে সকলের গোলাম হবে।

45. কারণ বাস্তবিক ইবনুল-ইনসানও পরিচর্যা পেতে আসেন নি, কিন্তু পরিচর্যা করতে এবং অনেকের পরিবর্তে আপন প্রাণ মুক্তির মূল্যরূপে দিতে এসেছেন।

অন্ধ বরতীময়কে সুস্থ করা

46. পরে তাঁরা জেরিকোতে আসলেন। আর তিনি যখন তাঁর সাহাবীদের ও বিস্তর লোকের সঙ্গে জেরিকো থেকে বের হয়ে যাচ্ছেন, তখন তীময়ের পুত্র বর্‌তীময় নামে এক জন অন্ধ ভিক্ষুক পথের পাশে বসেছিল।

47. সে যখন শুনতে পেল তিনি নাসরতীয় ঈসা, তখন চেঁচিয়ে বলতে লাগল, হে ঈসা, দাউদ-সন্তান, আমার প্রতি করুণা করুন।

48. তখন অনেক লোক চুপ চুপ বলে তাকে ধমক্‌ দিল; কিন্তু সে আরও বেশি চেঁচিয়ে বলতে লাগল, হে দাউদ-সন্তান, আমার প্রতি করুণা করুন।

49. তখন ঈসা থেমে বললেন, ওকে ডাক; তাতে লোকেরা সেই অন্ধকে ডেকে বললো, ওহে, সাহস কর, উঠ, উনি তোমাকে ডাকছেন।

50. তখন সে তার কাপড় ফেলে লাফ দিয়ে উঠে ঈসার কাছে গেল।

51. ঈসা তাকে বললেন, তুমি কি চাও? আমি তোমার জন্য কি করবো? অন্ধ তাঁকে বললো, রব্বূণী (হে আমার হুজুর), যেন দেখতে পাই।

52. ঈসা তাকে বললেন, চলে যাও, তোমার ঈমান তোমাকে সুস্থ করলো। তখনই সে দেখতে পেল এবং পথ দিয়ে তাঁর পিছনে পিছনে চলতে লাগল।