অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24
  25. 25
  26. 26
  27. 27
  28. 28

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

মথি 22 পবিত্র বাইবেল (SBCL)

বিয়ের ভোজের গল্প

1. শিক্ষা দেবার জন্য যীশু আবার সেই ধর্ম-নেতাদের কাছে এই গল্পটা বললেন,

2. “স্বর্গ-রাজ্য এমন একজন রাজার মত যিনি তাঁর ছেলের বিয়ের ভোজ প্রস্তুত করলেন।

3. সেই ভোজে নিমন্ত্রিত লোকদের ডাকবার জন্য তিনি তাঁর দাসদের পাঠিয়ে দিলেন, কিন্তু তারা আসতে চাইল না।

4. তখন তিনি আবার অন্য দাসদের দিয়ে নিমন্ত্রিতদের বলে পাঠালেন, ‘দেখুন, আমি আমার বলদ ও মোটাসোটা বাছুরগুলো কেটে ভোজ প্রস্তুত করেছি। এখন সবই প্রস্তুত, আপনারা ভোজে আসুন।’

5. “নিমন্ত্রিত লোকেরা কিন্তু সেই দাসদের কথা না শুনে একজন তার নিজের ক্ষেতে ও আর একজন তার নিজের কাজে চলে গেল।

6. বাকী সবাই রাজার দাসদের ধরে অপমান করল ও মেরে ফেলল।

7. তখন রাজা খুব রেগে গেলেন এবং সৈন্য পাঠিয়ে তিনি সেই খুনীদের ধ্বংস করলেন আর তাদের শহর পুড়িয়ে দিলেন।

8. পরে তিনি তাঁর দাসদের বললেন, ‘ভোজ প্রস্তুত, কিন্তু যাদের নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল তারা এর যোগ্য নয়।

9. তোমরা বরং রাস্তার মোড়ে মোড়ে যাও, আর যত জনের দেখা পাও সবাইকে বিয়ের ভোজে ডেকে আন।’

10. তখন সেই দাসেরা বাইরে রাস্তায় রাস্তায় গিয়ে ভাল-মন্দ যাদের পেল সবাইকে ডেকে আনল। তাতে বিয়ে-বাড়ী সেই অতিথিতে ভরে গেল।

11. “এর পর রাজা অতিথিদের দেখবার জন্য ভিতরে এসে দেখলেন,

12. একজন লোক বিয়ের কাপড় না পরেই সেখানে এসেছে। রাজা তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘বন্ধু, বিয়ের কাপড় ছাড়া কেমন করে এখানে ঢুকলে?’ সে এর কোন উত্তর দিতে পারল না।

13. তখন রাজা চাকরদের বললেন, ‘এর হাত-পা বেঁধে বাইরের অন্ধকারে ফেলে দাও। সেই জায়গায় লোকে কান্নাকাটি করবে ও যন্ত্রণায় দাঁতে দাঁত ঘষতে থাকবে।’ ”

14. গল্পের শেষে যীশু বললেন, “এইজন্য বলি, অনেক লোককে ডাকা হয়েছে কিন্তু অল্প লোককে বেছে নেওয়া হয়েছে।”

কর্‌ দেবার বিষয়ে

15. তখন ফরীশীরা চলে গেলেন এবং কেমন করে যীশুকে তাঁর কথার ফাঁদে ফেলা যায় সেই পরামর্শ করতে লাগলেন।

16. তারা হেরোদের দলের কয়েকজন লোকের সংগে নিজেদের কয়েকজন শিষ্যকে যীশুর কাছে পাঠালেন। তারা যীশুকে বলল, “গুরু, আমরা জানি আপনি একজন সৎ লোক। ঈশ্বরের পথের বিষয়ে আপনি সত্যভাবে শিক্ষা দিয়ে থাকেন। লোকে কি মনে করবে না করবে তাতে আপনার কিছু যায় আসে না, কারণ আপনি কারও মুখ চেয়ে কিছু করেন না।

17. তাহলে আপনি বলুন, মোশির আইন- কানুন অনুসারে রোম-সম্রাটকে কি কর্‌ দেওয়া উচিত? আপনার কি মনে হয়?”

18. তাদের মন্দ উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে যীশু বললেন, “ভণ্ডেরা, কেন আমাকে পরীক্ষা করছ?

19. যে টাকায় কর্‌ দেবে তার একটা আমাকে দেখাও।” তারা একটা দীনার যীশুর কাছে আনল।

20. তখন যীশু তাদের বললেন, “এর উপরে এই ছবি ও নাম কার?”

21. তারা বলল, “রোম-সম্রাটের।”যীশু তাদের বললেন, “তবে যা সম্রাটের তা সম্রাটকে দাও, আর যা ঈশ্বরের তা ঈশ্বরকে দাও।”

22. এই কথা শুনে তারা আশ্চর্য হল এবং তাঁকে ছেড়ে চলে গেল।

জীবিত হয়ে উঠবার বিষয়ে

23. সেই একই দিনে কয়েকজন সদ্দূকী যীশুর কাছে আসলেন। সদ্দূকীদের মতে মৃতদের জীবিত হয়ে ওঠা বলে কিছু নেই।

24. এইজন্য তাঁরা যীশুকে জিজ্ঞাসা করলেন, “গুরু, মোশি বলেছেন, যদি কোন লোক সন্তানহীন অবস্থায় মারা যায় তবে তার ভাই তার স্ত্রীকে বিয়ে করে ভাইয়ের হয়ে তার বংশ রক্ষা করবে।

25. আমাদের এখানে সাত ভাই ছিল। প্রথম জন বিয়ে করে মারা গেল এবং সন্তান না থাকাতে সে তার ভাইয়ের জন্য নিজের স্ত্রীকে রেখে গেল।

26. এইভাবে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও সপ্তম ভাই পর্যন্ত সেই স্ত্রীকে বিয়ে করল।

27. শেষে সেই স্ত্রীলোকটিও মারা গেল।

28. তাহলে মৃতেরা যখন জীবিত হয়ে উঠবে তখন ঐ সাত ভাইয়ের মধ্যে এই স্ত্রীলোকটি কার স্ত্রী হবে? তারা সবাই তো তাকে বিয়ে করেছিল।”

29. যীশু তাঁদের বললেন, “আপনারা ভুল করছেন, কারণ আপনারা শাস্ত্রও জানেন না, ঈশ্বরের শক্তির বিষয়েও জানেন না।

30. মৃতেরা জীবিত হয়ে উঠবার পরে বিয়ে করবে না এবং তাদের বিয়ে দেওয়াও হবে না; তারা স্বর্গদূতদের মত হবে।

31. মৃতদের জীবিত হয়ে উঠবার বিষয়ে ঈশ্বর যে কথা আপনাদের বলেছেন সেই কথা কি আপনারা শাস্ত্রে পড়েন নি?

32. তাতে লেখা আছে, ‘আমি অব্রাহামের ঈশ্বর, ইস্‌হাকের ঈশ্বর এবং যাকোবের ঈশ্বর।’ কিন্তু ঈশ্বর তো মৃতদের ঈশ্বর নন, তিনি জীবিতদেরই ঈশ্বর।”

33. এই কথা শুনে লোকেরা তাঁর শিক্ষায় আশ্চর্য হল।

সবচেয়ে বড় আদেশ

34. যীশু সদ্দূকীদের মুখ বন্ধ করে দিয়েছেন শুনে ফরীশীরা একত্র হলেন।

35. তাঁদের মধ্যে একজন ধর্ম-শিক্ষক যীশুকে পরীক্ষা করবার জন্য জিজ্ঞাসা করলেন,

36. “গুরু, মোশির আইন-কানুনের মধ্যে সবচেয়ে বড় আদেশ কোন্‌টা?”

37-38. যীশু তাঁকে বললেন, “সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে দরকারী আদেশ হল, ‘তোমরা প্রত্যেকে তোমাদের সমস্ত অন্তর, সমস্ত প্রাণ ও সমস্ত মন দিয়ে তোমাদের প্রভু ঈশ্বরকে ভালবাসবে।’

39. তার পরের দরকারী আদেশটা প্রথমটারই মত-‘তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মত ভালবাসবে।’

40. মোশির সমস্ত আইন-কানুন এবং নবীদের সমস্ত শিক্ষা এই দু’টি আদেশের উপরেই নির্ভর করে আছে।”

ধর্ম-শিক্ষকদের কাছে প্রভু যীশুর প্রশ্ন

41. ফরীশীরা তখনও একসংগে ছিলেন, এমন সময় যীশু তাদের জিজ্ঞাসা করলেন,

42. “আপনারা মশীহের বিষয়ে কি মনে করেন? তিনি কার বংশধর?”তাঁরা যীশুকে বললেন, “দায়ূদের বংশধর।”

43. তখন যীশু তাঁদের বললেন, “তবে দায়ূদ কেমন করে মশীহকে পবিত্র আত্মার পরিচালনায় প্রভু বলে ডেকেছিলেন? তিনি বলেছিলেন,

44. ‘সদাপ্রভু আমার প্রভুকে বললেন,যতক্ষণ না আমি তোমার শত্রুদেরতোমার পায়ের তলায় রাখি,ততক্ষণ তুমি আমার ডানদিকে বস।’

45. তাহলে দায়ূদ যখন মশীহকে প্রভু বলে ডেকেছেন তখন মশীহ কেমন করে দায়ূদের বংশধর হতে পারেন?”

46. এর উত্তরে কেউ এক কথাও তাঁকে বলতে পারল না এবং সেই দিন থেকে কেউ তাঁকে আর কিছু জিজ্ঞাসা করতেও সাহস করল না।