অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24
  25. 25
  26. 26
  27. 27
  28. 28
  29. 29
  30. 30
  31. 31
  32. 32
  33. 33
  34. 34
  35. 35
  36. 36

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

২ বংশাবলি 9 পবিত্র বাইবেল (SBCL)

শলোমনের কাছে শিবা দেশের রাণী

1. শিবা দেশের রাণী শলোমনের সুনাম শুনে তাঁকে কঠিন কঠিন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে পরীক্ষা করবার জন্য যিরূশালেমে আসলেন। তিনি অনেক লোক ও উট নিয়ে শলোমনের কাছে পৌঁছালেন। উটের পিঠে ছিল সুগন্ধি মশলা, প্রচুর পরিমাণে সোনা ও মণি-মুক্তা। তিনি শলোমনের কাছে এসে তাঁর মনে যা যা ছিল তা সবই তাঁকে বললেন।

2. শলোমন তাঁর সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন; শলোমনের কাছে কোন কিছুই এমন কঠিন ছিল না যা তিনি তাঁকে বুঝিয়ে বলতে পারেন নি।

3. শিবার রাণী শলোমনের জ্ঞান ও তাঁর তৈরী রাজবাড়ী দেখলেন।

4. তিনি আরও দেখলেন তাঁর টেবিলের খাবার, তাঁর কর্মচারীদের থাকবার জায়গা, সুন্দর পোশাক পরা তাঁর সেবাকারীদের, তাঁর পানীয় পরিবেশকদের এবং সেই সিঁড়ি, যে সিঁিড় দিয়ে তিনি সদাপ্রভুর ঘরে উঠে যেতেন। এই সব দেখে তিনি অবাক হয়ে গেলেন।

5. তিনি রাজাকে বললেন, “আমার নিজের দেশে থাকতে আপনার কাজ ও জ্ঞানের বিষয় যে খবর আমি শুনেছি তা সত্যি।

6. কিন্তু এখানে এসে নিজের চোখে না দেখা পর্যন্ত আমি সেই সব কথা বিশ্বাস করি নি। সত্যি আপনার জ্ঞানের অর্ধেকও আমাকে বলা হয় নি। যে খবর আমি পেয়েছি আপনার গুণ তার চেয়ে অনেক বেশী।

7. আপনার লোকেরা কত সুখী! যারা সব সময় আপনার সামনে থাকে ও আপনার জ্ঞানের কথা শোনে আপনার সেই কর্মচারীরা কত ভাগ্যবান!

8. আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর গৌরব হোক, যিনি আপনার উপর খুশী হয়ে আপনাকে তাঁর সিংহাসনে বসিয়েছেন যেন আপনি আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর হয়ে রাজত্ব করতে পারেন। ইস্রায়েলীয়দের তিনি ভালবাসেন এবং তাদের চিরস্থায়ী করতে চান বলে তিনি সুবিচার ও ন্যায় রক্ষার জন্য আপনাকে রাজা করেছেন।”

9. তিনি রাজাকে সাড়ে চার টনেরও বেশী সোনা, অনেক সুগন্ধি মশলা ও মণি-মুক্তা দিলেন। শিবার রাণী রাজা শলোমনকে যে রকম মশলা দিয়েছিলেন সেই রকম মশলা আর কখনও দেশে দেখা যায় নি।

10. এছাড়া হীরম ও শলোমনের যে লোকেরা ওফীর থেকে সোনা নিয়ে আসত তারা চন্দন কাঠ আর মণি-মুক্তাও নিয়ে আসত।

11. রাজা সেই সব চন্দন কাঠ দিয়ে সদাপ্রভুর ঘরের ও রাজবাড়ীর সিঁড়ি এবং গায়কদের জন্য বীণা ও সুরবাহার তৈরী করালেন। এর আগে এত চন্দন কাঠ যিহূদা দেশে কখনও দেখা যায় নি।

12. শিবার রাণী যা ইচ্ছা করলেন ও চাইলেন রাজা শলোমন তা সবই তাঁকে দিলেন। রাণী তাঁর জন্য যা এনেছিলেন তার চেয়ে অনেক বেশী তিনি তাঁকে দিলেন। এর পর রাণী তাঁর লোকজন নিয়ে নিজের দেশে ফিরে গেলেন।

রাজা শলোমনের জাঁকজমক

13. প্রতি বছর শলোমনের কাছে যে সোনা আসত তার ওজন ছিল প্রায় ছাব্বিশ টন।

14. এছাড়া বণিক ও ব্যবসায়ীরা সোনা নিয়ে আসত এবং আরবের সমস্ত রাজারা ও দেশের শাসনকর্তারা শলোমনের কাছে সোনা ও রূপা নিয়ে আসত।

15. রাজা শলোমন পিটানো সোনা দিয়ে দু’শো বড় ঢাল তৈরী করালেন। প্রত্যেকটা ঢালে সাত কেজি আটশো গ্রাম সোনা লেগেছিল।

16. পিটানো সোনা দিয়ে তিনি তিনশো ছোট ঢালও তৈরী করিয়েছিলেন। তার প্রত্যেকটাতে সোনা লেগেছিল তিন কেজি ন’শো গ্রাম করে। তিনি সেগুলো লেবানন-বন-কুটিরে রাখলেন।

17. এর পরে রাজা হাতির দাঁতের একটা বড় সিংহাসন তৈরী করিয়ে খাঁটি সোনা দিয়ে তা মুড়িয়ে নিলেন।

18. সেই সিংহাসনের সিঁড়ির ছয়টা ধাপ ছিল এবং তার সংগে লাগানো ছিল পা রাখবার একটা সোনার আসন। বসবার জায়গার দু’দিকে হাতল ছিল এবং হাতলের পাশে ছিল দাঁড়ানো সিংহমূর্তি।

19. সেই ছয়টা ধাপের প্রত্যেকটার দু’পাশে একটা করে মোট বারোটা সিংহমূর্তি ছিল। অন্য কোন রাজ্যে এই রকম সিংহাসন কখনও তৈরী হয় নি।

20. শলোমনের পানীয়ের সমস্ত পাত্রগুলো ছিল সোনার আর লেবানন-বন-কুটিরের সমস্ত পাত্রগুলোও ছিল খাঁটি সোনার তৈরী। শলোমনের সময়ে রূপার তেমন কোন দাম ছিল না।

21. রাজার কতগুলো বড় বড় জাহাজ হীরমের লোকদের সংগে নিয়ে তর্শীশে যেত। প্রতি তিন বছর পর পর সেই তর্শীশ-জাহাজগুলো সোনা, রূপা, হাতির দাঁত, বানর ও বেবুন নিয়ে ফিরে আসত।

22. রাজা শলোমন পৃথিবীর অন্য সব রাজাদের চেয়ে ধনী ও জ্ঞানী হয়ে উঠেছিলেন।

23. ঈশ্বর শলোমনের অন্তরে যে জ্ঞান দিয়েছিলেন সেই জ্ঞানপূর্ণ কথাবার্তা শুনবার জন্য পৃথিবীর সব দেশের রাজারা তাঁর সংগে দেখা করতে চেষ্টা করতেন।

24. যাঁরা আসতেন তাঁরা প্রত্যেকে কিছু না কিছু উপহার আনতেন। সেগুলোর মধ্যে ছিল সোনা-রূপার পাত্র, কাপড়-চোপড়, অস্ত্রশস্ত্র, সুগন্ধি মশলা, ঘোড়া আর খচ্চর। বছরের পর বছর এই রকম চলত।

25. ঘোড়া ও রথের জন্য শলোমনের চার হাজার ঘর ছিল। তাঁর বারো হাজার ঘোড়সওয়ার ছিল; তাদের তিনি রথ রাখবার শহরগুলোতে এবং যিরূশালেমে নিজের কাছে রাখতেন।

26. তিনি ইউফ্রেটিস নদী থেকে পলেষ্টীয়দের দেশ ও মিসরের সীমানা পর্যন্ত সমস্ত রাজাদের উপরে রাজত্ব করতেন।

27. রাজা যিরূশালেমে রূপাকে করলেন পাথরের মত প্রচুর এবং এরস কাঠকে করলেন নীচু পাহাড়ী এলাকায় গজানো ডুমুর গাছের মত অনেক।

28. শলোমনের ঘোড়াগুলো মিসর ও অন্যান্য সব দেশ থেকে আনা হত।

শলোমনের মৃত্যু

29. শলোমনের অন্যান্য সমস্ত কাজের কথা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত নবী নাথনের লেখায়, শীলোনীয় অহিয়ের ভবিষ্যদ্বাণীতে এবং নবাটের ছেলে যারবিয়ামের বিষয়ে “ইদ্দো দর্শকের দর্শন” নামে বইটিতে লেখা আছে।

30. শলোমন যিরূশালেমে চল্লিশ বছর ধরে গোটা ইস্রায়েল জাতির উপরে রাজত্ব করেছিলেন।

31. তারপর তিনি তাঁর পূর্বপুরুষদের কাছে চলে গেলেন; তাঁকে তাঁর বাবা দায়ূদের শহরে কবর দেওয়া হল। তারপর তাঁর ছেলে রহবিয়াম তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।