অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24
  25. 25
  26. 26
  27. 27
  28. 28
  29. 29
  30. 30
  31. 31
  32. 32
  33. 33
  34. 34
  35. 35
  36. 36
  37. 37
  38. 38
  39. 39
  40. 40

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

হিজরত 34 কিতাবুল মোকাদ্দস (BACIB)

দ্বিতীয় পাথর-ফলক

1. পরে মাবুদ মূসাকে বললেন, তুমি আগের মত দু’টি পাথরের ফলক খোদাই করে প্রস্তুত কর; প্রথম যে দু’টি ফলক তুমি ভেঙে ফেলেছ, তাতে যা যা লেখা ছিল, সেসব কথা আমি এই দু’টি ফলকে লিখবো।

2. আর তুমি খুব ভোরে প্রস্তুত হয়ো, খুব ভোরে তুর পর্বতে উঠে এসো ও সেখানে পর্বতের চূড়ায় আমার কাছে উপস্থিত হয়ো।

3. কিন্তু তোমার সঙ্গে অন্য কোন মানুষ উপরে না আসুক এবং এই পর্বতের কোথাও কোন মানুষ দেখা না যাক, আর গোমেষাদির পালও এই পর্বতের সম্মুখে না চরুক।

4. পরে মূসা প্রথম পাথরের মত দু’টি পাথরের ফলক খোদাই করলেন এবং মাবুদের হুকুম অনুসারে খুব ভোরে উঠে তুর পর্বতের উপরে গেলেন ও সেই দু’টি পাথরের ফলক হাতে করে নিলেন।

5. তখন মাবুদ মেঘে নেমে সেই স্থানে তাঁর সামনে দণ্ডায়মান হয়ে মাবুদের নাম ঘোষণা করলেন।

6. ফলত মাবুদ তাঁর সম্মুখ দিয়ে গমন করে ঘোষণা করলেন,‘মাবুদ, মাবুদ,স্নেহশীল ও কৃপাময় আল্লাহ্‌,ক্রোধ ধীর এবং অটল মহব্বতেও বিশ্বস্ততায় মহান;

7. হাজার হাজার পুরুষ পর্যন্ত অটলমহব্বত রক্ষাকারী।অপরাধের, অধর্মের ও গুনাহ্‌র ক্ষমাকারী;তবুও তিনি অবশ্য গুনাহ্‌র দণ্ড দেন;পুত্র পৌত্রদের উপরে, তৃতীয়ও চতুর্থ পুরুষ পর্যন্ত,তিনি পিতৃগণের অপরাধেরপ্রতিফল বর্তান।’

8. মূসা তখনই ভূমিতে উবুড় হয়ে সেজ্‌দা করলেন,

9. আর বললেন, হে মালিক, আমি যদি তোমার দৃষ্টিতে অনুগ্রহ লাভ করে থাকি তবে আরজ করি, মালিক, আমাদের মধ্যবর্তী হয়ে গমন কর, কারণ এরা একগুঁয়ে জাতি। তুমি আমাদের অপরাধ ও গুনাহ্‌ মাফ করে তোমার অধিকারের জন্য আমাদেরকে গ্রহণ কর।

আল্লাহ্‌র শরীয়তের পুনঃস্থাপন

10. তখন তিনি বললেন, দেখ, আমি একটি নিয়ম করি; সারা দুনিয়াতে ও যাবতীয় জাতির মধ্যে যে রকম কখনও করা হয় নি, এমন সমস্ত অলৌকিক কাজ আমি তোমার সমস্ত লোকের সাক্ষাতে করবো; তাতে যেসব লোকের মধ্যে তুমি আছ, তারা মাবুদের কাজ দেখবে, কেননা তোমার কাছে যা করবো, তা ভয়ঙ্কর।

11. আজ আমি তোমাকে যা হুকুম করি, তাতে মনোযোগ দাও; দেখ, আমি আমোরীয়, কেনানীয়, হিট্টিয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়কে তোমার সম্মুখ থেকে তাড়িয়ে দেব।

12. সাবধান, যে দেশে তুমি যাচ্ছ, সেই দেশবাসীদের সঙ্গে নিয়ম স্থির করো না, তা করলে তোমার মধ্যে তা ফাঁদস্বরূপ হবে।

13. কিন্তু তোমরা তাদের সমস্ত বেদী ভেঙে ফেলবে, তাদের সমস্ত স্তম্ভ খণ্ড খণ্ড করবে ও সেখানকার সমস্ত আশেরা-মূর্তি কেটে ফেলবে।

14. তুমি অন্য দেবতার কাছে সেজ্‌দা করো না, কেননা মাবুদ স্বগৌরব রক্ষণে উদ্যোগী নাম ধারণ করেন; তিনি স্বগৌরব রক্ষণে উদ্যোগী আল্লাহ্‌।

15. কি জানি, তুমি সেই দেশবাসী লোকদের সঙ্গে সম্বন্ধ স্থাপন করবে; তা করলে যে সময়ে তারা নিজের দেবতাদের পিছনে চলে জেনা করে ও নিজের দেবতাদের কাছে কোরবানী করে, সেই সময়ে কেউ তোমাকে ডাকলে তুমি তার কোরবানীর জিনিস খাবে;

16. কিংবা তুমি তোমার পুত্রদের জন্য তাদের কন্যাদেরকে গ্রহণ করলে তাদের কন্যারা নিজের দেবতাদের পিছনে চলে জেনা করে তোমার পুত্রদেরকে তাদের দেবতাদের অনুগামী করে জেনা করাবে।

17. তুমি তোমার জন্য ছাঁচে ঢালা কোন দেবতা তৈরি করো না।

18. তুমি খামিহীন রুটির উৎসব পালন করবে। আবীব মাসের যে নির্ধারিত সময়ে যেরকম করতে তোমাকে হুকুম করেছি, সেভাবে তুমি সেই সাত দিন খামিহীন রুটি খাবে, কেননা সেই আবীব মাসে তুমি মিসর দেশ থেকে বের হয়ে এসেছিলে।

19. প্রথমজাত সমস্ত পুত্র সন্তান এবং গোমেষাদি পালের মধ্যে প্রথমজাত সমস্ত পুরুষ পশু আমার।

20. প্রথমজাত গাধার পরিবর্তে তুমি ভেড়ার বাচ্চা দিয়ে তাকে মুক্ত করবে; যদি মুক্ত না কর তবে তার গলা ভেঙ্গে দেবে। তোমার প্রথমজাত পুত্রদেরকে তুমি মুক্ত করবে। আর কেউ শুন্য হাতে আমার সম্মুখে উপস্থিত হবে না।

21. তুমি ছয় দিন পরিশ্রম করবে কিন্তু সপ্তম দিনে বিশ্রাম করবে; চাষের ও ফসল কাটার সময়েও বিশ্রাম করবে।

22. তুমি সাত সপ্তাহের উৎসব, অর্থাৎ কাটা গমের প্রথমে পাকা ফলের উৎসব এবং বছরের শেষভাগে ফলসংগ্রহের উৎসব পালন করবে।

23. বছরের মধ্যে তিন বার তোমাদের সমস্ত পুরুষ মানুষ ইসরাইলের আল্লাহ্‌ সার্বভৌম মাবুদের সাক্ষাতে উপস্থিত হবে।

24. কেননা আমি তোমার সম্মুখ থেকে জাতিদেরকে, দূর করে দেব ও তোমার সীমা বাড়িয়ে দেব এবং তুমি বছরের মধ্যে তিনবার তোমার আল্লাহ্‌ মাবুদের সম্মুখে উপস্থিত হবার জন্য গমন করলে তোমার ভূমিতে কেউ লোভ করবে না।

25. তুমি আমার কোরবানীর রক্ত খামিযুক্ত খাদ্যের সঙ্গে কোরবানী করবে না ও ঈদুল ফেসাখের উৎসবের কোরবানীর জিনিস সকাল পর্যন্ত রাখা যাবে না।

26. তুমি নিজের ভূমির প্রথমে পাকা ফলের অগ্রিমাংশ তোমার আল্লাহ্‌ মাবুদের গৃহে আনবে। তুমি ছাগলের বাচ্চাকে তার মায়ের দুধে সিদ্ধ করবে না।

27. আর মাবুদ মূসাকে বললেন, তুমি এসব কালাম লিপিবদ্ধ কর, কেননা আমি এসব কালাম অনুসারে তোমার ও ইসরাইলের সঙ্গে নিয়ম স্থির করলাম।

28. সেই সময়ে মূসা চল্লিশ দিন আর চল্লিশ রাত সেখানে মাবুদের সঙ্গে অবস্থান করলেন, খাদ্য ও পানি গ্রহণ করলেন না; তিনি সেই দু’টি পাথরে উপর নিয়মের কালামগুলো অর্থাৎ দশটি হুকুম লিখলেন।

হযরত মূসার উজ্জ্বল চেহারা

29. পরে মূসা দু’টি শরীয়ত-ফলক হাতে নিয়ে তুর পর্বত থেকে নামলেন; যখন পর্বত থেকে নামলেন, তখন, মাবুদের সঙ্গে আলাপে তাঁর মুখমণ্ডল যে উজ্জ্বল হয়েছিল, তা মূসা বুঝতে পারলেন না।

30. পরে যখন হারুন ও সমস্ত বনি-ইসরাইল মূসাকে দেখতে পেল, তখন দেখ, তাঁর মুখ উজ্জ্বল, আর তারা তাঁর কাছে আসতে ভয় পেল।

31. কিন্তু মূসা তাদেরকে ডাকলে হারুন ও মণ্ডলীর নেতৃবৃন্দ তাঁর কাছে ফিরে আসলেন, আর মূসা তাঁদের সঙ্গে আলাপ করলেন।

32. এর পরে বনি-ইসরাইল সকলে তাঁর কাছে আসল; তাতে তিনি তুর পর্বতে কথিত মাবুদের সমস্ত হুকুম তাদেরকে জানালেন।

33. পরে তাদের সঙ্গে কথোপকথন সমাপ্ত হলে মূসা তাঁর মুখে আবরণ দিলেন।

34. কিন্তু মূসা যখন মাবুদের সঙ্গে কথা বলতে ভিতরে তাঁর সম্মুখে যেতেন তখন এবং যতক্ষণ সেখানে থাকতেন ততক্ষণ সেই আবরণ খুলে রাখতেন। পরে যে সমস্ত হুকুম পেতেন, বের হয়ে বনি-ইসরাইলকে তা বলতেন।

35. মূসার মুখমণ্ডল উজ্জ্বল, এটা বনি-ইসরাইল তাঁর মুখের প্রতি দৃষ্টিপাত করে দেখতো। পরে মূসা মাবুদের সঙ্গে কথা বলতে যে পর্যন্ত না যেতেন, সেই পর্যন্ত তাঁর মুখে পুনর্বার আবরণ দিয়ে রাখতেন।