অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

২ শামুয়েল 15 Kitabul Mukkadas (MBCL)

অবশালোমের ষড়যন্ত্র

1. পরে অবশালোম নিজের জন্য রথ ও ঘোড়া যোগাড় করল এবং তার আগে আগে যাবার জন্য পঞ্চাশজন লোক নিযুক্ত করল।

2. অবশালোম খুব সকালে উঠে শহরের সদর দরজার দিকে যাবার রাস্তার একপাশে দাঁড়াত। কেউ যখন কোন নালিশ নিয়ে বাদশাহ্‌র কাছে বিচারের জন্য আসত অবশালোম তাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করত, “তুমি কোন্‌ গ্রামের লোক?” জবাবে লোকটি বলত, “আপনার গোলাম আমি ইসরাইলের অমুক গোষ্ঠীর লোক।”

3. তখন অবশালোম তাকে বলত, “দেখ, তোমার নালিশ ন্যায্য ও ঠিক, কিন্তু তোমার কথা শুনবার জন্য বাদশাহ্‌র কোন লোক নেই।”

4. তারপর সে আরও বলত, “হায়, আমাকে যদি দেশের বিচারক করে নিযুক্ত করা হত! তাহলে যারা আমার কাছে নালিশ নিয়ে আসত আমি তাদের প্রত্যেকের পক্ষে ন্যায়বিচার করতাম।”

5. এছাড়া যদি কেউ কদমবুচি করবার জন্য তার সামনে যেত তবে সে হাত বাড়িয়ে তাকে ধরে চুম্বন করত।

6. বনি-ইসরাইলদের যত লোক বাদশাহ্‌র কাছে বিচারের জন্য আসত অবশালোম তাদের সংগে এই রকম ব্যবহার করত। এইভাবে সে বনি-ইসরাইলদের মন জয় করে নিল।

7. চার বছর পরে অবশালোম বাদশাহ্‌কে বলল, “আমি মাবুদের কাছে যে মানত করেছি তা পূরণ করবার জন্য আমাকে হেবরনে যেতে দিন।

8. আপনার গোলাম আমি সিরিয়া দেশের গশূরে থাকবার সময় মানত করে বলেছিলাম, ‘মাবুদ যদি আমাকে জেরুজালেমে ফিরিয়ে নিয়ে যান তবে আমি হেবরনে গিয়ে মাবুদের উদ্দেশে কোরবানী দেব।’ ”

9. বাদশাহ্‌ তাকে বললেন, “সহিসালামতে যাও।” তখন অবশালোম হেবরনে গেল।

10. অবশালোম ইসরাইলের সমস্ত গোষ্ঠীর কাছে এই কথা বলে গোপনে লোক পাঠাল, “তোমরা যখনই শিংগার আওয়াজ শুনবে তখনই বলবে, ‘অবশালোম হেবরনে বাদশাহ্‌ হলেন।’ ”

11. জেরুজালেম থেকে দু’শো লোক অবশালোমের সংগে গিয়েছিল। মেহমান হিসাবে তাদের ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল আর তারা কোন কিছু না জেনেই সরল মনে তার সংগে গিয়েছিল।

12. কোরবানী দেবার সময় অবশালোম দাউদের গীলোনীয় মন্ত্রী অহীথোফলকে তার গ্রাম গীলো থেকে ডেকে আনাল। ষড়যন্ত্রটা খুব জোরালো হয়ে উঠল, কারণ অবশালোমের পক্ষের লোক একের পর এক বেড়ে যেতে লাগল।

বাদশাহ্‌ দাউদ (আঃ) পালিয়ে গেলেন

13. পরে একজন লোক দাউদের কাছে এসে বলল, “ইসরাইলীয়দের মন অবশালোমের দিকে গেছে।”

14. জেরুজালেমে দাউদের যে সব কর্মচারীরা তাঁর সংগে ছিল তিনি তাদের বললেন, “চল, আমরা পালিয়ে যাই। তা না হলে আমরা কেউই অবশালোমের হাত থেকে রক্ষা পাব না। আমাদের এক্ষুনি বেরিয়ে পড়তে হবে, নইলে সে তাড়াতাড়ি এসে আমাদের ভীষণ বিপদে ফেলবে আর শহরের সবাইকে শেষ করে দেবে।”

15. বাদশাহ্‌র কর্মচারীরা তাঁকে বলল, “আমাদের প্রভু মহারাজের যা ইচ্ছা আমরা তা-ই করতে প্রস্তুত আছি।”

16. তখন বাদশাহ্‌ রওনা হলেন আর তাঁর বাড়ীর সবাই তাঁর পিছনে পিছনে চলল। রাজবাড়ীটা দেখাশোনা করবার জন্য তিনি দশজন উপস্ত্রীকে রেখে গেলেন।

17. বাদশাহ্‌ ও তাঁর সংগের সমস্ত লোক যেতে যেতে শহরের শেষ সীমানায় গিয়ে থামলেন।

18. দাউদের সমস্ত লোক তাঁর সামনে দিয়ে এগিয়ে গেল। তাদের মধ্যে ছিল করেথীয়, পলেথীয় আর ছ’শো গাতীয় লোক যারা আগে গাৎ থেকে বাদশাহ্‌র সংগে চলে এসেছিল।

19. বাদশাহ্‌ তখন গাতীয় ইত্তয়কে বললেন, “আমাদের সংগে কেন তুমি যাচ্ছ? তুমি ফিরে গিয়ে বাদশাহ্‌ অবশালোমের সংগে থাক। তুমি তো বিদেশী; তোমার নিজের দেশ থেকে তুমি বের হয়ে এসেছ।

20. তুমি তো মাত্র সেদিন এসেছ। আর আজকেই কি তোমাকে আমাদের সংগে ঘুরে বেড়াবার জন্য আমার নেওয়া উচিত? আমি নিজেই জানি না আমি কোথায় যাচ্ছি। তুমি ফিরে যাও আর তোমার দেশের লোকদেরও সংগে নিয়ে যাও। অটল মহব্বত ও বিশ্বস্ততা তোমাদের সংগী হোক।”

21. কিন্তু জবাবে ইত্তয় বাদশাহ্‌কে বলল, “আল্লাহ্‌র কসম এবং আমার প্রভু মহারাজের প্রাণের কসম, আমার প্রভু মহারাজ যেখানে থাকবেন সেখানে আপনার গোলাম আমিও থাকব, তাতে আমি বেঁচেই থাকি বা মারাই পড়ি।”

22. এই কথা শুনে দাউদ ইত্তয়কে বললেন, “তবে এগিয়ে যাও।” তখন গাতীয় ইত্তয় তার সমস্ত লোক ও তার সংগের সমস্ত পরিবার নিয়ে এগিয়ে চলল।

23. দাউদের সমস্ত লোক যখন চলে যাচ্ছিল তখন দেশের সব লোক জোরে জোরে কাঁদতে লাগল। বাদশাহ্‌ ও তাঁর সমস্ত লোক কিদ্রোণ উপত্যকা পার হয়ে মরুভূমির দিকে এগিয়ে গেলেন।

24. বাদশাহ্‌ যখন শহর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন তখন ইমাম সাদোক ও সমস্ত লেবীয়রাও তাঁর সংগে ছিল। লেবীয়রা আল্লাহ্‌র সাক্ষ্য-সিন্দুকটা বয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। শহর থেকে সমস্ত লোক বেরিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত লেবীয়রা আল্লাহ্‌র সিন্দুকটা নামিয়ে রাখল আর ইমাম অবিয়াথরও তাদের সংগে ছিলেন।

25. সমস্ত লোক বেরিয়ে যাবার পর বাদশাহ্‌ দাউদ সাদোককে বললেন, “আল্লাহ্‌র সিন্দুকটা শহরে ফিরিয়ে নিয়ে যান। মাবুদ যদি আমাকে দয়ার চোখে দেখেন তবে তিনি আমাকে ফিরিয়ে আনবেন আর এই সিন্দুক ও তাঁর থাকবার জায়গা আবার আমাকে দেখতে দেবেন।

26. কিন্তু যদি তিনি বলেন, ‘আমি তোমার উপর সন্তুষ্ট নই,’ তবে তিনি যা ভাল মনে করেন তা-ই আমার প্রতি করুন।”

27. তারপর বাদশাহ্‌ ইমাম সাদোককে বললেন, “আপনি তো সবই দেখতে পাচ্ছেন। আপনার ছেলে অহীমাস ও অবিয়াথরের ছেলে যোনাথনকে সংগে করে আপনি সহিসালামতে শহরে ফিরে যান।

28. যে পর্যন্ত না আমাকে জানাবার জন্য আপনাদের কাছ থেকে খবর আসে সেই পর্যন্ত আমি মরুভূমির মধ্যে নদীর যে জায়গাটা হেঁটে পার হওয়া যায় সেখানে অপেক্ষা করতে থাকব।”

29. কাজেই সাদোক ও অবিয়াথর আল্লাহ্‌র সিন্দুকটি নিয়ে জেরুজালেমে ফিরে গেলেন এবং সেখানেই থাকলেন।

30. এদিকে দাউদ কাঁদতে কাঁদতে জৈতুন পাহাড়ের উপর উঠতে লাগলেন। তিনি মাথা ঢেকে খালি পায়ে হাঁটছিলেন। লোকেরাও সকলে তাঁর সংগে মাথা ঢেকে কাঁদতে কাঁদতে উপরে উঠতে লাগল।

31. তখন দাউদকে কেউ বলল, “অবশালোমের সংগে ষড়যন্ত্রকারীদের মধ্যে অহীথোফলও আছে।” এই কথা শুনে দাউদ এই বলে মুনাজাত করলেন, “হে মাবুদ, তুমি অহীথোফলের পরামর্শকে বিফল করে দাও।”

32. লোকেরা পাহাড়ের উপরে যে জায়গায় আল্লাহ্‌র এবাদত করত দাউদ সেখানে উপস্থিত হলে পর অর্কীয় হূশয় তাঁর সংগে দেখা করতে আসলেন। তাঁর পোশাক ছেঁড়া এবং মাথায় ধুলা ছিল।

33. দাউদ তাঁকে বললেন, “তুমি আমার সংগে গেলে আমার বোঝা বাড়বে।

34. কিন্তু তুমি শহরে ফিরে গিয়ে যদি অবশালোমকে বল, ‘হে মহারাজ, আমি আপনার গোলাম হয়ে থাকব; আমি যেমন আগে আপনার পিতার গোলাম ছিলাম তেমনি এখন আপনার গোলাম হব,’ তাহলে তুমি অহীথোফলের দেওয়া পরামর্শকে অকেজো করে দিয়ে আমাকে সাহায্য করতে পারবে।

35. ইমাম সাদোক ও অবিয়াথর সেখানে তোমার সংগে থাকবেন। রাজবাড়ীতে তুমি যা শুনবে তা তাঁদের জানাবে।

36. সাদোকের ছেলে অহীমাস ও অবিয়াথরের ছেলে যোনাথনও সেখানে তাঁদের সংগে আছেন। কিছু শুনলে পর তাঁদের দিয়েই তা আমাকে জানিয়ে দেবে।”

37. দাউদের বন্ধু হূশয় যখন জেরুজালেমে ঢুকলেন তখন অবশালোমও সেখানে পৌঁছাল।