অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

২ শামুয়েল 11 Kitabul Mukkadas (MBCL)

হযরত দাউদ (আঃ) ও বৎশেবা

1. বসন্তকালে যখন বাদশাহ্‌রা সাধারণতঃ যুদ্ধ করতে বের হন তখন দাউদও যুদ্ধ করবার জন্য যোয়াবকে ও তাঁর অন্যান্য সেনাপতিদের এবং সমস্ত ইসরাইলীয় সৈন্যদের পাঠিয়ে দিলেন। তারা অম্মোনীয়দের ধ্বংস করে রব্বা শহরটা ঘেরাও করল। দাউদ কিন্তু জেরুজালেমেই রয়ে গেলেন।

2. তখন একদিন বিকাল বেলায় দাউদ তাঁর বিছানা থেকে উঠে রাজবাড়ীর ছাদে বেড়াচ্ছিলেন। এমন সময় তিনি ছাদের উপর থেকে একজন স্ত্রীলোককে গোসল করতে দেখলেন। স্ত্রীলোকটি দেখতে ছিল খুব সুন্দরী।

3. দাউদ স্ত্রীলোকটির খোঁজ নেবার জন্য লোক পাঠিয়ে দিলেন। একজন লোক বলল, “সে তো ইলিয়ামের মেয়ে হিট্টীয় উরিয়ার স্ত্রী বৎশেবা।”

4. দাউদ তাকে নিয়ে আসবার জন্য লোক পাঠালেন। সে তাঁর কাছে আসলে পর দাউদ তার সংগে সহবাস করলেন। স্ত্রীলোকটি তখন তার মাসিকের নাপাকী থেকে পাক-সাফ হয়েছিল। এর পর স্ত্রীলোকটি তার বাড়িতে ফিরে গেল।

5. সে যখন বুঝতে পারল যে, সে গর্ভবতী হয়েছে তখন সেই খবর সে দাউদকে পাঠাল।

6. তখন দাউদ যোয়াবকে এই কথা বলে পাঠালেন, “হিট্টীয় উরিয়াকে আমার কাছে পাঠিয়ে দাও।” এতে যোয়াব তাকে দাউদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন।

7. উরিয়া আসলে পর দাউদ তাকে যোয়াব ও সৈন্যদের ভাল-মন্দের খবর এবং যুদ্ধ কেমন চলছে তা জিজ্ঞাসা করলেন।

8. তারপর তিনি উরিয়াকে বললেন, “তুমি নিজের বাড়ীতে গিয়ে হাত-পা ধুয়ে বিশ্রাম কর।” উরিয়া রাজবাড়ী থেকে বের হয়ে গেল আর বাদশাহ্‌ তার জন্য কিছু উপহার পাঠিয়ে দিলেন।

9. উরিয়া কিন্তু নিজের বাড়ীতে গেল না। সে বাদশাহ্‌র সমস্ত কর্মচারীদের সংগে রাজবাড়ীর দরজায় শুয়ে রইল।

10. দাউদকে সেই কথা জানানো হলে পর দাউদ উরিয়াকে বললেন, “তুমি তো যুদ্ধ থেকে ফিরে এসেছ, তবে কেন তোমার বাড়ীতে গেলে না?”

11. উরিয়া দাউদকে বলল, “সাক্ষ্য-সিন্দুক নিয়ে ইসরাইল ও এহুদার সৈন্যেরা তাম্বুতে রয়েছে, আর আমার সেনাপতি যোয়াব ও আপনার লোকেরা খোলা মাঠে ছাউনি ফেলে রয়েছেন। এই অবস্থায় আমি কি করে বাড়ী গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করে আমার স্ত্রীর সংগে বিছানায় যাব? আপনার প্রাণের কসম যে, আমি এমন কাজ কখনও করব না।”

12. তখন দাউদ তাকে বললেন, “আজকের দিনটাও তুমি এখানে থাক; কালকে আমি তোমাকে ফেরৎ পাঠিয়ে দেব।” কাজেই উরিয়া সেই দিনটা এবং তার পরের দিনও জেরুজালেমে রয়ে গেল।

13. দাউদ তাকে দাওয়াত করলে পর সে দাউদের সংগে খাওয়া-দাওয়া করল আর দাউদ তাকে মদানো রস খাইয়ে মাতাল করে তুললেন। কিন্তু রাত হলে উরিয়া বাদশাহ্‌র কর্মচারীদের মধ্যে নিজের বিছানায় শুয়ে রইল, বাড়ী গেল না।

14. পরদিন সকালে দাউদ যোয়াবকে একটা চিঠি লিখে উরিয়ার হাতে দিয়ে পাঠিয়ে দিলেন।

15. তার মধ্যে তিনি এই কথা লিখেছিলেন, “যেখানে ভয়ঙ্কর যুদ্ধ হচ্ছে সেখানে সৈন্যদের সামনের সারিতে উরিয়াকে পাঠাবে, তারপর তার পিছন থেকে তোমরা সরে যাবে যাতে সে আঘাত পেয়ে মারা যায়।”

16. কাজেই শহর ঘেরাও করবার সময় যোয়াব উরিয়াকে এমন একটা জায়গায় পাঠালেন যেখানে বিপক্ষের শক্তিশালী যোদ্ধারা ছিল বলে তিনি জানতেন।

17. পরে শহরের লোকেরা বের হয়ে এসে যখন যোয়াবের সংগে যুদ্ধ করতে লাগল তখন দাউদের সৈন্যদলের কিছু লোক মারা পড়ল আর সেই সংগে হিট্টীয় উরিয়াও মারা গেল।

18-20. যোয়াব লোক পাঠিয়ে যুদ্ধের সমস্ত খবর দাউদকে দিলেন। যাকে দিয়ে খবর পাঠানো হচ্ছিল যোয়াব তাকে বললেন, “যুদ্ধের এই খবর বাদশাহ্‌র কাছে দিলে পর বাদশাহ্‌ হয়তো রাগে জ্বলে উঠে তোমাকে বলবেন, ‘যুদ্ধ করবার জন্য কেন তোমরা শহরের এত কাছে গিয়েছিলে? দেয়ালের উপর থেকে তারা যে তীর ছুঁড়বে তা কি তোমরা জানতে না?

21. কে যিরূব্বেশতের ছেলে আবিমালেককে হত্যা করেছিল? একজন স্ত্রীলোক দেয়ালের উপর থেকে জাঁতার উপরের পাথরটা তার উপর ফেলেছিল আর তাতেই তিনি তেবেষে মারা গিয়েছিলেন। কেন তোমরা দেয়ালের এত কাছে গিয়েছিলে?’ যদি তিনি সেই কথা তোমাকে বলেন তবে তুমি তাঁকে বলবে যে, তাঁর গোলাম হিট্টীয় উরিয়া মারা গেছে।”

22. সেই লোকটি তখন রওনা হয়ে গেল এবং দাউদের কাছে পৌঁছে যোয়াব তাকে যা বলতে পাঠিয়েছিলেন তা বলল।

23. দাউদকে সেই লোকটি বলল, “লোকগুলো প্রথমে আমাদের চেয়ে বেশী শক্তিশালী হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে খোলা মাঠে বের হয়ে এসেছিল, কিন্তু আমরা তাদের তাড়া করতে করতে শহরের সদর দরজা পর্যন্ত গিয়েছিলাম।

24. এতে ধনুকধারীরা দেয়ালের উপর থেকে আপনার গোলামদের উপর তীর ছুঁড়তে লাগল। তাতে বাদশাহ্‌র কিছু লোক মারা পড়েছে। আপনার গোলাম হিট্টীয় উরিয়াও মারা পড়েছে।”

25. দাউদ তাকে বললেন, “তুমি যোয়াবকে বলবে সে যেন এতে মন খারাপ না করে, কারণ যুদ্ধের সময় তলোয়ার কাউকেই বাদ দেয় না। শহরটার বিরুদ্ধে আরও ভীষণভাবে যুদ্ধ করে সে যেন সেটা একেবারে ধ্বংস করে ফেলে। এই কথা তুমি যোয়াবকে বলে তাকে উৎসাহ দেবে।”

26. এদিকে উরিয়ার স্ত্রী তার স্বামীর মৃত্যুর খবর শুনে শোক করতে লাগল।

27. শোক করবার সময় পার হয়ে যাওয়ার পর দাউদ তাকে তাঁর বাড়ীতে আনালেন। সে তাঁর স্ত্রী হল এবং তার একটা ছেলে হল। কিন্তু দাউদ যা করেছিলেন তাতে মাবুদ নারাজ হয়েছিলেন।