অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24
  25. 25
  26. 26
  27. 27
  28. 28
  29. 29
  30. 30
  31. 31
  32. 32
  33. 33
  34. 34
  35. 35
  36. 36
  37. 37
  38. 38
  39. 39
  40. 40
  41. 41
  42. 42
  43. 43
  44. 44
  45. 45
  46. 46
  47. 47
  48. 48
  49. 49
  50. 50
  51. 51
  52. 52

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

ইয়ারমিয়া 50 Kitabul Mukkadas (MBCL)

ব্যাবিলনের বিষয়

1. ব্যাবিলন, অর্থাৎ ব্যাবিলনীয়দের দেশ সম্বন্ধে নবী ইয়ারমিয়ার মধ্য দিয়ে মাবুদ এই কথা বলেছিলেন,

2. “তোমরা জাতিদের মধ্যে প্রচার ও ঘোষণা কর, নিশান তুলে ধর এবং ঘোষণা কর। কিছু গোপন রেখো না, বরং বল, ‘অন্যেরা ব্যাবিলনকে অধিকার করবে; বেল দেবতাকে লজ্জা দেওয়া হবে, মারডক দেবতাকে চুরমার করা হবে। ব্যাবিলনের মূর্তিগুলোকে লজ্জা দেওয়া হবে এবং তার প্রতিমাগুলোকে চুরমার করা হবে।’

3. উত্তর থেকে একটা জাতি তাকে আক্রমণ করবে এবং তার দেশকে পতিত জমি করে রাখবে। কেউ তার মধ্যে বাস করবে না; মানুষ ও পশু দুই-ই পালিয়ে যাবে।

4. “সেই সময়ে ইসরাইল ও এহুদার লোকেরা একত্রে চোখের পানির সংগে তাদের মাবুদ আল্লাহ্‌কে গভীরভাবে জানতে আগ্রহী হবে।

5. তারা সিয়োনে যাবার পথের কথা জিজ্ঞাসা করবে এবং সেই দিকে তাদের মুখ ফিরাবে। তারা এসে এমন একটা চিরস্থায়ী ব্যবস্থায় মাবুদের সংগে নিজেদের বাঁধবে যা লোকে ভুলে যাবে না।

6. “আমার বান্দারা হারানো ভেড়ার মত হয়েছে; তাদের রাখালেরা তাদের বিপথে নিয়ে গেছে। সেই রাখালদের দরুন তারা পাহাড়-পর্বতে ঘুরে বেড়িয়েছে এবং নিজেদের বিশ্রামের জায়গার কথা ভুলে গেছে।

7. যারা তাদের পেয়েছে তারা তাদের গ্রাস করেছে; তাদের শত্রুরা বলেছে, ‘আমরা দোষী নই, কারণ মাবুদের বিরুদ্ধে, তাদের সত্যিকারের চারণ ভূমির বিরুদ্ধে, তাদের পূর্বপুরুষদের আশা সেই মাবুদের বিরুদ্ধে তারা গুনাহ্‌ করেছে।’

8. “হে বনি-ইসরাইলরা, তোমরা ব্যাবিলন থেকে পালিয়ে যাও; ব্যাবিলনীয়দের দেশ ত্যাগ কর এবং পালের আগে আগে চলা ছাগলগুলোর মত হও।

9. আমি উত্তর দিকের দেশ থেকে বড় বড় জাতিদের একত্র করব আর তাদের উত্তেজিত করে ব্যাবিলনের বিরুদ্ধে নিয়ে আসব। তারা ব্যাবিলনের বিরুদ্ধে সৈন্যদের সাজাবে এবং সেটা অধিকার করবে। দক্ষ যোদ্ধাদের মত তাদের তীরগুলো বিফল হবে না।

10. ব্যাবিলনকে লুট করা হবে; যারা তাকে লুট করবে তারা সবাই তৃপ্ত হবে। আমি মাবুদ এই কথা বলছি।

11. “হে ব্যাবিলনীয়রা, তোমরা আমার অধিকারকে লুট করছ এবং তাতে আনন্দ করছ, খুশী হচ্ছ। তোমরা শস্য মাড়াই-করা বক্‌না বাছুরের মত নাচানাচি করছ এবং তেজী ঘোড়ার মত ডাকছ;

12. সেইজন্য তোমাদের মা খুব লজ্জা পাবে; যে তোমাদের জন্ম দান করেছে সে অসম্মানিতা হবে। জাতিদের মধ্যে সে হবে সবচেয়ে ছোট; সে হবে একটা মরুভূমি, একটা শুকনা জায়গা, একটা মরুভূমি।

13. মাবুদের রাগের দরুন তার মধ্যে কেউ বাস করবে না, তা একেবারে ধ্বংসস্থান হবে। যারা ব্যাবিলনের পাশ দিয়ে যাবে তারা সবাই হতভম্ব হবে এবং তার সব আঘাত দেখে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করবে।

14. “হে ধনুকধারীরা, তোমরা সবাই যুদ্ধের জন্য জায়গা নিয়ে ব্যাবিলনের চারপাশে দাঁড়াও। তার দিকে তীর ছোঁড়ো। কোন তীর রেখে দিয়ো না, কারণ সে মাবুদের বিরুদ্ধে গুনাহ্‌ করেছে।

15. তার বিরুদ্ধে চারদিক থেকে যুদ্ধের হাঁক দাও। সে হার স্বীকার করেছে, তার রক্ষার ব্যবস্থা ভেংগে গেছে এবং তার দেয়াল ধ্বংস হয়েছে। মাবুদ তার উপরে প্রতিশোধ নিচ্ছেন, তোমরাও প্রতিশোধ নাও। সে অন্যদের প্রতি যা করেছে তোমরাও তার প্রতি তা-ই কর।

16. ব্যাবিলনে যারা বীজ বোনে আর সময়মত ফসল কাটে তাদের প্রত্যেককে শেষ করে দাও। অত্যাচারীর তলোয়ারের ভয়ে প্রত্যেকে তার নিজের লোকদের কাছে ফিরে যাবে, প্রত্যেকে তার নিজের দেশে পালিয়ে যাবে।

17. “ইসরাইল যেন একটা ছড়িয়ে পড়া ভেড়ার পাল যাকে সিংহেরা তাড়িয়ে দিয়েছে। প্রথমে আশেরিয়ার বাদশাহ্‌ তাকে গ্রাস করেছিল; শেষে ব্যাবিলনের বাদশাহ্‌ বখতে-নাসার তার হাড়গুলো গুঁড়া করে দিয়েছে।

18. সেইজন্য আমি ইসরাইলের মাবুদ আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামীন আশেরিয়ার বাদশাহ্‌কে যেমন শাস্তি দিয়েছি তেমনি করে ব্যাবিলনের বাদশাহ্‌ ও তার দেশকে আমি শাস্তি দেব।

19. কিন্তু ইসরাইলকে আমি তার নিজের চারণ ভূমিতে ফিরিয়ে আনব এবং সে কর্মিল ও বাশনের উপরে চরে বেড়াবে; আফরাহীম ও গিলিয়দের পাহাড়গুলোতে তার খিদে মিটবে।

20. সেই সময়ে ইসরাইলের অন্যায়ের খোঁজ নেওয়া হবে কিন্তু একটাও থাকবে না, এহুদার গুনাহের খোঁজ করা হবে কিন্তু একটাও পাওয়া যাবে না, কারণ আমি যাদের বাঁচিয়ে রাখব তাদের আমি মাফ করব।

21. “হে ব্যাবিলনের শত্রুরা, আমি মাবুদ বলছি, তোমরা মরাথয়িম দেশকে ও যারা পকোদে বাস করে তাদের আক্রমণ কর। তাদের তাড়া কর, হত্যা কর ও সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দাও; আমি তোমাদের যে যে হুকুম দিয়েছি তার প্রত্যেকটা তোমরা পালন করবে।

22. দেশে যুদ্ধের ও মহা ধ্বংসের শব্দ হচ্ছে।

23. গোটা দুনিয়ার হাতুড়ী কেমন ভেংগে টুকরা টুকরা হয়ে গেল। ব্যাবিলনের অবস্থা দেখে সব জাতির লোকেরা কেমন হতভম্ব হয়ে গেছে।

24. হে ব্যাবিলন, আমি তোমার জন্য একটা ফাঁদ পেতেছি আর তুমি না জেনে তাতে ধরা পড়েছ; তোমাকে পাওয়া গেছে এবং ধরাও হয়েছে, কারণ তুমি আমার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলে।

25. আমি আমার অস্ত্রশস্ত্রের ঘর খুলে আমার রাগের অস্ত্রগুলো বের করে আনলাম, কারণ ব্যাবিলনীয়দের দেশে দীন-দুনিয়ার মালিক আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামীনের কাজ আছে।

26. হে ব্যাবিলনের শত্রুরা, তোমরা দূর থেকে তার বিরুদ্ধে এস। তার গোলাঘরগুলো খুলে ফেল; জড়ো করা শস্যের মত তাকে ঢিবি কর। তাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস কর, তার কিছু বাকী রেখো না।

27. তার সব ষাঁড়গুলো মেরে ফেল; সেগুলো জবাই করবার জায়গায় নেমে যাক। হায়! তাদের শাস্তি পাবার সময় এসে পড়েছে।”

28. শোন, ব্যাবিলন থেকে পালিয়ে যাওয়া ও রক্ষা পাওয়া লোকেরা সিয়োনে এসে ঘোষণা করছে যে, আমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌ কেমন করে তাঁর ঘরের জন্য প্রতিশোধ নিয়েছেন।

29. মাবুদ বলছেন, “ব্যাবিলনের বিরুদ্ধে সব ধনুকধারীদের ডাক। তার চারপাশে সৈন্য-ছাউনি ফেল; কাউকে পালাতে দিয়ো না। তার কাজের ফল তাকে দাও। সে যা করেছে তার প্রতি তা-ই কর, কারণ সে মাবুদের বিরুদ্ধে, ইসরাইলের আল্লাহ্‌ পাকের বিরুদ্ধে নিজেকে বড় করে দেখিয়েছে।

30. সেইজন্য তার যুবকেরা শহরের খোলা জায়গায় মরে পড়ে থাকবে; সেই দিন তার সব সৈন্যদের শেষ করে দেওয়া হবে।

31. আমি দীন-দুনিয়ার মালিক আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামীন বলছি, হে অহংকারী, দেখ, আমি তোমার বিরুদ্ধে, কারণ তোমার শাস্তি পাবার সময় এসে গেছে।

32. সেই অহংকারী উচোট খেয়ে পড়ে যাবে এবং কেউ তাকে উঠতে সাহায্য করবে না; তার শহরগুলোতে আমি আগুন ধরিয়ে দেব, তা তার চারপাশের সব কিছু পুড়িয়ে ফেলবে।”

33. আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামীন বলছেন, “ইসরাইল ও এহুদার লোকেরা অত্যাচারিত হচ্ছে। যারা তাদের ধরেছে তারা সবাই তাদের শক্ত করে ধরে রেখেছে, তাদের যেতে দিচ্ছে না।

34. কিন্তু তাদের মুক্তিদাতা শক্তিশালী; তাঁর নাম আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামীন। তিনি জোরালোভাবেই তাদের পক্ষে ওকালতি করবেন যাতে তাদের দেশে শান্তি ও ব্যাবিলনের বাসিন্দাদের জন্য অশান্তি আনতে পারেন।”

35. মাবুদ বলছেন, “ব্যাবিলনীয়দের বিরুদ্ধে, ব্যাবিলনের বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে ও তার উঁচু পদের কর্মচারী ও জ্ঞানী লোকদের বিরুদ্ধে তলোয়ার রয়েছে।

36. তার ভণ্ড নবীদের বিরুদ্ধে রয়েছে তলোয়ার; তারা বোকা হয়ে যাবে। তার যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে রয়েছে তলোয়ার; তারা ভয়ে পূর্ণ হবে।

37. তার সব ঘোড়া, রথ ও বিদেশী সৈন্যদের বিরুদ্ধে রয়েছে তলোয়ার; তারা স্ত্রীলোকদের মত দুর্বল হয়ে যাবে। তার ধন-সম্পদের বিরুদ্ধে রয়েছে তলোয়ার; সেই সব লুট হয়ে যাবে।

38. খরায় তার সমস্ত পানি শুকিয়ে যাবে, কারণ সেটা হল মূর্তির দেশ, আর সেই ভয়ংকর মূর্তিগুলো সেখানকার লোকদের পাগল করে তুলবে।

39. “সেইজন্য মরুভূমির প্রাণী ও শিয়ালেরা সেখানে বাস করবে, আর সেখানে উটপাখী থাকবে। সেখানে আর কখনও লোক থাকবে না, পুরুষের পর পুরুষ কেউ সেখানে বাস করবে না।

40. আমি যেমন আশেপাশের গ্রাম সুদ্ধ সাদুম ও আমুরা ধ্বংস করেছিলাম, তেমনি কেউ সেখানে বাস করবে না; কোন মানুষ তার মধ্যে থাকবে না। আমি মাবুদ এই কথা বলছি।

41. “দেখ, একদল সৈন্য উত্তর থেকে আসছে; দুনিয়ার শেষ সীমা থেকে একটা বড় জাতি ও অনেক বাদশাহ্‌রা উত্তেজিত হয়ে আসছে।

42. তারা ধনুক ও তলোয়ারধারী; তারা নিষ্ঠুর ও দয়াহীন। তারা ঘোড়ায় করে আসবার সময় সমুদ্রের গর্জনের মত শব্দ হচ্ছে; হে ব্যাবিলন্তকন্যা, তোমাকে আক্রমণ করবার জন্য তারা যুদ্ধের সাজে আসছে।

43. ব্যাবিলনের বাদশাহ্‌ তাদের সম্বন্ধে খবর শুনেছে আর তার হাত অবশ হয়ে ঝুলে পড়েছে। প্রসব-যন্ত্রণা ভোগকারিণী স্ত্রীলোকের ব্যথার মত দারুণ কষ্ট তাকে ধরেছে।

44. জর্ডানের জংগল থেকে সিংহ যেমন উঠে এসে ভাল চারণ ভূমিতে শিকার করতে যায় তেমনি করে আমি মুহূর্তের মধ্যে ব্যাবিলনীয়দের তাদের দেশ থেকে তাড়া করব। আমি তার উপর আমার বাছাই করা বান্দাকে নিযুক্ত করব। কে আমার সমান? কে আমার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারে? কোন্‌ পালক আমার বিরুদ্ধে টিকে থাকতে পারে?”

45. কাজেই ব্যাবিলনের বিরুদ্ধে মাবুদ কি পরিকল্পনা করেছেন, ব্যাবিলনীয়দের বিরুদ্ধে তিনি কি ঠিক করেছেন তা শোন্তপালের বাচ্চাদের টেনে নিয়ে যাওয়া হবে; তাদের কাজের দরুনই তাদের চারণ ভুমি তিনি একেবারে ধ্বংস করে দেবেন।

46. “ব্যাবিলন দখল করা হয়েছে,” এই চিৎকারের শব্দে দুনিয়া কাঁপবে; জাতিদের মধ্যে তার কান্নার শব্দ শোনা যাবে।