অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

লূক 20 Kitabul Mukkadas (MBCL)

হযরত ঈসা মসীহ্‌ ও ধর্ম-নেতারা

1-2. একদিন ঈসা বায়তুল-মোকাদ্দসে লোকদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন এবং তবলিগ করছিলেন। এমন সময় প্রধান ইমামেরা ও আলেমেরা বৃদ্ধনেতাদের সংগে এসে ঈসাকে বললেন, “কোন্‌ অধিকারে তুমি এই সব করছ এবং কে তোমাকে এই অধিকার দিয়েছে, তা আমাদের বল।”

3. জবাবে ঈসা তাঁদের বললেন, “আমিও আপনাদের একটা কথা জিজ্ঞাসা করব। বলুন দেখি,

4. তরিকাবন্দী দেবার অধিকার ইয়াহিয়া আল্লাহ্‌র কাছ থেকে পেয়েছিলেন, না মানুষের কাছ থেকে পেয়েছিলেন?”

5. তখন তাঁরা নিজেদের মধ্যে এই আলোচনা করতে লাগলেন, “যদি আমরা বলি, ‘আল্লাহ্‌র কাছ থেকে,’ তবে সে বলবে, ‘তা হলে তাঁকে বিশ্বাস করেন নি কেন?’

6. কিন্তু যদি বলি, ‘মানুষের কাছ থেকে,’ তাহলে লোকেরা আমাদের পাথর মারবে, কারণ তারা ইয়াহিয়াকে নবী বলে বিশ্বাস করে।”

7. এইজন্য তাঁরা বললেন, “সেই অধিকার কোথা থেকে এসেছিল তা আমরা জানি না।”

8. ঈসা তাঁদের বললেন, “তবে আমিও বলব না কোন্‌ অধিকারে আমি এই সব করছি।”

আংগুর-ক্ষেতের চাষীদের গল্প

9. এর পরে ঈসা লোকদের শিক্ষা দেবার জন্য এই কথা বললেন: “একজন লোক একটা আংগুর-ক্ষেত করলেন এবং চাষীদের কাছে সেটা ইজারা দিয়ে অনেক দিনের জন্য বিদেশে চলে গেলেন।

10. পরে তিনি সেই ক্ষেতের আংগুর ফলের ভাগ পাবার জন্য সময়মতই একজন গোলামকে চাষীদের কাছে পাঠালেন। কিন্তু চাষীরা তাকে মারধর করে খালি হাতেই ফেরৎ পাঠিয়ে দিল।

11. তখন তিনি আর একজন গোলামকে পাঠালেন, কিন্তু চাষীরা তাকেও মারল ও অপমান করল এবং খালি হাতে পাঠিয়ে দিল।

12. পরে তিনি তৃতীয় গোলামকে পাঠালেন, কিন্তু চাষীরা তাকেও ভীষণ মারধর করে তাড়িয়ে দিল।

13. “তখন আংগুর-ক্ষেতের মালিক বললেন, ‘কি করি? আচ্ছা, আমি আমার প্রিয় পুত্রকে পাঠাব। হয়তো তারা তাকে সম্মান করবে।’

14. “কিন্তু চাষীরা তাঁকে দেখে একে অন্যকে বলল, ‘এ-ই তো পরে সম্পত্তির মালিক হবে। সম্পত্তিটা যেন আমাদেরই হয় সেইজন্য এস, আমরা ওকে মেরে ফেলি।’

15. এই বলে তারা তাঁকে ধরে ক্ষেতের বাইরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করল।“এখন আংগুর-ক্ষেতের মালিক সেই চাষীদের কি করবেন?

16. তিনি এসে তাদের হত্যা করবেন এবং ক্ষেতটা অন্যদের ইজারা দেবেন।”লোকেরা ঈসার কথা শুনে বলল, “এমন না হোক।”

17. তখন ঈসা তাদের দিকে তাকিয়ে বললেন, “তবে এই যে কথা পাক-কিতাবের মধ্যে লেখা আছে, ‘রাজমিস্ত্রিরা যে পাথরটা বাতিল করে দিয়েছিল, সেটাই সবচেয়ে দরকারী পাথর হয়ে উঠল’- এর অর্থ কি?

18. যে কেউ সেই পাথরের উপরে পড়বে সে ভেংগে টুকরা টুকরা হয়ে যাবে এবং যার উপর সেই পাথর পড়বে সে চুরমার হয়ে যাবে।”

19. এই সময়ে আলেমেরা ও প্রধান ইমামেরা ঈসাকে ধরতে চাইলেন, কারণ তাঁরা বুঝেছিলেন যে, ঐ কথা ঈসা তাঁদের বিরুদ্ধেই বলেছেন; কিন্তু তাঁরা লোকদের ভয় পেলেন।

খাজনা দেবার বিষয়ে

20. আলেম ও প্রধান ইমামেরা ঈসাকে চোখে চোখে রাখলেন এবং গোয়েন্দা পাঠিয়ে দিলেন। ঈসাকে তাঁর নিজের কথার ফাঁদে ফেলবার জন্য সেই গোয়েন্দারা ভাল মানুষের ভাণ করতে লাগল, যেন তারা তাঁকে প্রধান শাসনকর্তার বিচার-ক্ষমতার অধীনে ফেলতে পারে।

21. সেইজন্য তারা তাঁকে বলল, “হুজুর, আমরা জানি যে, আপনি যা বলেন ও শিক্ষা দেন তা ঠিক। আপনি সবাইকে সমান চোখে দেখেন এবং সত্য ভাবেই আল্লাহ্‌র পথের বিষয়ে শিক্ষা দিয়ে থাকেন।

22. আচ্ছা, মূসার শরীয়ত অনুসারে রোম-সম্রাটকে কি খাজনা দেওয়া উচিত?”

23. ঈসা তাদের চালাকি বুঝতে পেরে বললেন,

24. “আমাকে একটা দীনার দেখাও। এর উপরে কার ছবি ও কার নাম আছে?”তারা বলল, “রোম-সম্রাটের।”

25. ঈসা তাদের বললেন, “তা হলে যা সম্রাটের তা সম্রাটকে দাও এবং যা আল্লাহ্‌র তা আল্লাহ্‌কে দাও।”

26. লোকদের সামনে ঈসা যা বলেছিলেন তাতে সেই গোয়েন্দারা তাঁকে তাঁর কথার ফাঁদে ফেলতে পারল না। তাঁর জবাবে আশ্চর্য হয়ে তারা চুপ হয়ে গেল।

জীবিত হয়ে উঠবার বিষয়ে

27. সদ্দূকীদের মধ্যে কয়েকজন ঈসার কাছে আসলেন। সদ্দূকীদের মতে মৃতদের জীবিত হয়ে উঠা বলে কিছু নেই। তাঁরা ঈসাকে জিজ্ঞাসা করলেন,

28. “হুজুর, মূসা আমাদের জন্য এই কথা লিখে গেছেন, সন্তানহীন অবস্থায় যদি কোন লোক তার স্ত্রীকে রেখে মারা যায়, তবে তার ভাই তার স্ত্রীকে বিয়ে করে ভাইয়ের হয়ে তার বংশ রক্ষা করবে।

29. খুব ভাল, ধরুন, সাতজন ভাই ছিল। প্রথম জন বিয়ে করে সন্তানহীন অবস্থায় মারা গেল।

30-31. পরে দ্বিতীয় ও তার পরে তৃতীয় ভাই সেই বিধবা স্ত্রীকে বিয়ে করল এবং সেই একইভাবে সাতজনই ছেলেমেয়ে না রেখে মারা গেল।

32. শেষে সেই স্ত্রীলোকটিও মারা গেল।

33. তাহলে যেদিন মৃতেরা জীবিত হয়ে উঠবে সেই দিন সে কার স্ত্রী হবে? সাতজনের প্রত্যেকেই তো তাকে বিয়ে করেছিল।”

34. ঈসা তাঁদের বললেন, “এই কালের লোকেরা বিয়ে করে এবং তাদের বিয়ে দেওয়া হয়।

35. কিন্তু মৃত্যু থেকে জীবিত হয়ে আগামী যুগে পার হয়ে যাবার যোগ্য বলে যাদের ধরা হবে, তারা বিয়ে করবে না এবং তাদের বিয়ে দেওয়াও হবে না।

36. তারা আর মরতে পারে না, কারণ তারা ফেরেশতাদের মত। তারা আল্লাহ্‌র সন্তান কারণ মৃত্যু থেকে তাদের জীবিত করা হয়েছে।

37. জ্বলন্ত ঝোপের বিষয়ে যেখানে লেখা আছে সেখানে মূসা দেখিয়ে দিয়েছেন যে, মৃতেরা সত্যিই জীবিত হয়ে ওঠে। সেখানে মূসা মাবুদকে ‘ইব্রাহিমের আল্লাহ্‌, ইসহাকের আল্লাহ্‌ ও ইয়াকুবের আল্লাহ্‌’ বলে ডেকেছেন।

38. কিন্তু আল্লাহ্‌ তো মৃতদের আল্লাহ্‌ নন, তিনি জীবিতদেরই আল্লাহ্‌। তাঁরই উদ্দেশ্যে সব লোক বেঁচে থাকে।”

39. তখন কয়েকজন আলেম বললেন, “হুজুর, আপনি ভালই বলেছেন।”

40. তাঁরা আর কোন কিছু ঈসাকে জিজ্ঞাসা করতে সাহস পেলেন না।

আলেমদের কাছে হযরত ঈসা মসীহের প্রশ্ন

41. ঈসা সেই আলেমদের বললেন, “লোকে কি করে বলে যে, মসীহ্‌ দাউদের বংশধর?

42-43. জবুর শরীফ কিতাবে দাউদ তো নিজেই এই কথা বলেছেন,‘মাবুদ আমার প্রভুকে বললেন,যতক্ষণ না আমি তোমার শত্রুদেরতোমার পায়ের তলায় রাখি,ততক্ষণ তুমি আমার ডানদিকে বস।’

44. দাউদ তো মসীহ্‌কে প্রভু বলে ডেকেছিলেন; তাহলে মসীহ্‌ কেমন করে দাউদের বংশধর হতে পারেন?”

45. লোকেরা যখন ঈসার কথা শুনছিল তখন ঈসা তাঁর সাহাবীদের বললেন,

46. “আলেমদের বিষয়ে সাবধান হও। তাঁরা লম্বা লম্বা কোর্তা পরে ঘুরে বেড়াতে চান এবং হাটে-বাজারে সম্মান পেতে ভালবাসেন। তাঁরা মজলিস-খানায় প্রধান প্রধান আসনে ও মেজবানীর সময়ে সম্মানের জায়গায় বসতে ভালবাসেন।

47. এক দিকে তাঁরা লোককে দেখাবার জন্য লম্বা লম্বা মুনাজাত করেন, অন্য দিকে বিধবাদের সম্পত্তি দখল করেন। এই লোকদের অনেক বেশী শাস্তি হবে।”