অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

লূক 6 Kitabul Mukkadas (MBCL)

বিশ্রামবার সম্বন্ধে শিক্ষা

1. কোন এক বিশ্রামবারে ঈসা শস্যক্ষেতের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন। তাঁর সাহাবীরা শীষ ছিঁড়ে হাতে ঘষে ঘষে খেতে লাগলেন।

2. তখন কয়েকজন ফরীশী বললেন, “শরীয়ত মতে বিশ্রামবারে যা করা উচিত নয়, তোমরা তা করছ কেন?”

3. ঈসা বললেন, “নবী দাউদ ও তাঁর সংগীদের যখন খিদে পেয়েছিল তখন তিনি কি করেছিলেন তা কি আপনারা পড়েন নি?

4. তিনি তো আল্লাহ্‌র ঘরে ঢুকে পবিত্র-রুটি নিয়ে খেয়েছিলেন এবং তাঁর সংগীদেরও দিয়েছিলেন। কিন্তু কেবল মাত্র ইমামেরা ছাড়া আর কারও তা খাবার নিয়ম ছিল না।”

5. শেষে ঈসা সেই ফরীশীদের বললেন, “ইব্‌ন্তেআদমই বিশ্রামবারের মালিক।”

শুকনা-হাত লোকটি সুস্থ হল

6. আর এক বিশ্রামবারে ঈসা মজলিস-খানায় গিয়ে শিক্ষা দিচ্ছিলেন। সেখানে এমন একজন লোক ছিল যার ডান হাত শুকিয়ে গিয়েছিল।

7. আলেমেরা ও ফরীশীরা ঈসাকে দোষ দেবার একটা অজুহাত খুঁজছিলেন। তাই বিশ্রামবারে তিনি কাউকে সুস্থ করেন কি না তা দেখবার জন্য তাঁরা ঈসার উপর ভালভাবে নজর রাখতে লাগলেন।

8. ঈসা কিন্তু তাঁদের মনের চিন্তা জানতেন। সেইজন্য যার হাত শুকিয়ে গিয়েছিল তিনি সেই লোকটিকে বললেন, “উঠে সকলের সামনে এসে দাঁড়াও।” তাতে সে উঠে দাঁড়াল।

9. ঈসা আলেম ও ফরীশীদের বললেন, “আমি আপনাদের একটা কথা জিজ্ঞাসা করি, বিশ্রামবারে ভাল কাজ করা উচিত, না খারাপ কাজ করা উচিত? প্রাণ রক্ষা করা উচিত, না নষ্ট করা উচিত?”

10. তারপর ঈসা চারপাশের সকলের দিকে তাকিয়ে লোকটিকে বললেন, “তোমার হাত বাড়িয়ে দাও।” সে তা করলে পর তার হাত একেবারে ভাল হয়ে গেল।

11. তখন সেই ধর্ম-নেতারা ভীষণ রাগ করলেন এবং ঈসাকে নিয়ে কি করা যায় তা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে লাগলেন।

বারোজন সাহাবীকে সাহাবী-পদ দান

12. এর পরে ঈসা মুনাজাত করবার জন্য একটা পাহাড়ে গেলেন এবং সারা রাত আল্লাহ্‌র কাছে মুনাজাত করে কাটালেন।

13. সকাল হলে পর তিনি তাঁর সাহাবীদের নিজের কাছে ডাকলেন এবং তাঁদের মধ্য থেকে বারোজনকে বেছে নিয়ে তাঁদের সাহাবী-পদ দিলেন।

14. তাঁরা হলেন শিমোন, যাকে তিনি পিতর নামও দিলেন; শিমোনের ভাই আন্দ্রিয়; ইয়াকুব ও ইউহোন্না; ফিলিপ ও বর্থলময়;

15. মথি ও থোমা; আল্‌ফেয়ের ছেলে ইয়াকুব; শিমোন, যাঁকে মৌলবাদী বলা হয়;

16. ইয়াকুবের ছেলে এহুদা এবং এহুদা ইষ্কারিয়োৎ, যে ঈসাকে পরে শত্রুদের হাতে ধরিয়ে দিয়েছিল।

17. ঈসা তাঁর সাহাবীদের সংগে নিয়ে পাহাড় থেকে নেমে একটা সমান জায়গায় গিয়ে দাঁড়ালেন। সেখানে তাঁর অনেক উম্মত জড়ো হয়েছিলেন। এছাড়া এহুদিয়া, জেরুজালেম এবং টায়ার ও সিডন নামে সাগর পারের দু’টা শহরের এলাকা থেকেও অনেক লোক সেখানে ছিল।

18. তারা তাঁর কথা শুনবার জন্য এবং রোগ থেকে সুস্থ হবার জন্য সেখানে এসেছিল। যারা ভূতের দ্বারা কষ্ট পাচ্ছিল তারা ভাল হচ্ছিল।

19. তখন সব লোক তাঁকে ছোঁবার চেষ্টা করতে লাগল, কারণ তাঁর মধ্য থেকে শক্তি বের হয়ে সকলকে সুস্থ করছিল।

হযরত ঈসা মসীহের শিক্ষা

20. পরে ঈসা সাহাবীদের দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলেন,“ধন্য তোমরা, যারা গরীব,কারণ আল্লাহ্‌র রাজ্য তোমাদেরই।

21. ধন্য তোমরা, যাদের এখন খিদে আছে,কারণ তোমরা তৃপ্ত হবে।ধন্য তোমরা, যারা এখন কাঁদছ,কারণ তোমরা হাসবে।

22. “ধন্য তোমরা, যখন ইব্‌ন্তেআদমের দরুন লোকে তোমাদের ঘৃণা করে, সমাজ থেকে বের করে দেয় ও নিন্দা করে এবং তোমাদের নাম শুনলে থুথু ফেলে।

23. সেই সময় তোমরা খুশী হয়ো ও আনন্দে নেচে উঠো, কারণ বেহেশতে তোমাদের জন্য মহা পুরস্কার আছে। ঐ সব লোকদের পূর্বপুরুষেরা নবীদের উপরও এই রকম করত।

24. “কিন্তু ঘৃণ্য ধনী লোকেরা!তোমরা পরিপূর্ণভাবেই সুখ ভোগ করছ।

25. ঘৃণ্য তৃপ্ত লোকেরা!তোমাদের তো খিদে পাবে।ঘৃণ্য যারা হাসছ!তোমরা দুঃখ করবে ও কাঁদবে।

26. ঘৃণ্য তোমরা, যখন সব লোকেতোমাদের প্রশংসা করে।এই সব লোকদের পূর্বপুরুষেরাভণ্ড নবীদেরও প্রশংসা করত।

27. “তোমরা যারা শুনছ তাদের আমি বলছি, তোমাদের শত্রুদের মহব্বত কোরো। যারা তোমাদের ঘৃণা করে তাদের উপকার কোরো।

28. যারা তোমাদের অবনতি চায় তাদের উন্নতি চেয়ো। যারা তোমাদের সংগে খারাপ ব্যবহার করে তাদের জন্য মুনাজাত কোরো।

29. যে তোমার এক গালে চড় মারে তাকে অন্য গালেও মারতে দিয়ো। যে তোমার চাদর নিয়ে যায় তাকে কোর্তাও নিতে দিয়ো।

30. যারা তোমার কাছে চায় তাদের দিয়ো। কেউ তোমার কোন জিনিস নিয়ে গেলে তা আর ফেরৎ চেয়ো না।

31. লোকের কাছ থেকে তোমরা যেমন ব্যবহার পেতে চাও তোমরাও তাদের সংগে তেমনই ব্যবহার কোরো।

32. “যারা তোমাদের মহব্বত করে তোমরা যদি তাদেরই কেবল মহব্বত কর তবে তাতে প্রশংসার কি আছে? খারাপ লোকেরাও তো এইভাবে মহব্বত করে থাকে।

33. যারা তোমাদের উপকার করে তোমরা যদি তাদেরই উপকার করতে থাক তবে তাতে প্রশংসার কি আছে? খারাপ লোকেরাও তো তা করে থাকে।

34. যাদের কাছ থেকে তোমরা ফিরে পাবার আশা কর, যদি তাদেরই টাকা ধার দাও তবে তাতে প্রশংসার কি আছে? পাবে বলেই তো খারাপ লোকেরা খারাপ লোকদের ধার দিয়ে থাকে।

35. কিন্তু তোমরা তোমাদের শত্রুদের মহব্বত কোরো এবং তাদের উপকার কোরো। কিছুই ফেরৎ পাবার আশা না রেখে ধার দিয়ো। তাহলে তোমাদের জন্য মহা পুরস্কার আছে, আর তোমরা আল্লাহ্‌তা’লার সন্তান হবে, কারণ তিনি অকৃতজ্ঞ এবং দুষ্টদেরও দয়া করেন।

36. তোমাদের পিতা যেমন দয়ালু তোমরাও তেমনি দয়ালু হও।

37. “অন্যদের দোষ ধরে বেড়িয়ো না, তাতে তোমাদেরও দোষ ধরা হবে না। অন্যদের শাস্তি পাবার যোগ্য বলে মনে কোরো না, তাতে তোমাদেরও শাস্তি পাবার যোগ্য বলে মনে করা হবে না। অন্যদের মাফ কোরো, তাতে তোমাদেরও মাফ করা হবে।

38. দান কোরো, তাতে তোমাদেরও দেওয়া হবে; অনেক বেশী করে, চেপে চেপে, ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে, উপ্‌চে পড়বার মত করে তোমাদের কোঁচড়ে দেওয়া হবে, কারণ যেভাবে তোমরা মেপে দাও সেইভাবে তোমাদের জন্য মাপা হবে।”

39. পরে ঈসা তাঁর সাহাবীদের শিক্ষা দেবার জন্য এই উদাহরণ দিলেন: “একজন অন্ধ কি অন্য আর একজন অন্ধকে পথ দেখাতে পারে? তা হলে কি তারা দু’জনেই গর্তে পড়বে না?

40. ছাত্র তার শিক্ষকের উপরে নয়, কিন্তু পরিপূর্ণ শিক্ষা পেয়ে প্রত্যেকটি ছাত্র তার শিক্ষকের মতই হয়ে ওঠে।

41. “তোমার ভাইয়ের চোখে যে কূটা আছে তা-ই কেবল দেখছ, অথচ তোমার নিজের চোখে যে কড়িকাঠ আছে তা লক্ষ্য করছ না কেন?

42. তোমার নিজের চোখে যে কড়িকাঠ আছে তা যখন লক্ষ্য করছ না তখন কেমন করে তোমার ভাইকে বলতে পার, ‘ভাই, তোমার চোখে যে কূটা আছে, এস, তা বের করে দিই’? ভণ্ড, প্রথমে তোমার নিজের চোখ থেকে কড়িকাঠটা বের করে ফেল, তাহলে তোমার ভাইয়ের চোখে যে কূটাটা আছে তা বের করবার জন্য স্পষ্ট দেখতে পাবে।

43. “ভাল গাছে খারাপ ফল ধরে না, আবার খারাপ গাছেও ভাল ফল ধরে না।

44. ফল দিয়েই গাছ চেনা যায়। লোকে কাঁটাঝোপ থেকে ডুমুর এবং কাঁটাগাছ থেকে আংগুর তোলে না।

45. ভাল লোক তার অন্তর-ভরা ভাল থেকে ভাল কথাই বের করে আনে, আর খারাপ লোক তার অন্তর-ভরা খারাপী থেকে খারাপ কথা বের করে আনে। মানুষের অন্তর যা দিয়ে পূর্ণ থাকে মুখ তো সেই কথাই বলে।

46. “তোমরা কেন আমাকে ‘প্রভু, প্রভু’ বলে ডাক, অথচ আমি যা বলি তা কর না?

47. যে কেউ আমার কাছে এসে আমার কথা শোনে এবং সেইমত কাজ করে সে কার মত আমি তা তোমাদের বলি।

48. সে এমন একজন লোকের মত, যে ঘর তৈরী করবার জন্য গভীর করে মাটি কেটে পাথরের উপর ভিত্তি গাঁথল। পরে বন্যা আসল এবং নদীর পানির স্রোত সেই ঘরের উপর এসে পড়ল, কিন্তু ঘরটা নাড়াতে পারল না, কারণ সেটা শক্ত করেই তৈরী করা হয়েছিল।

49. যে আমার কথা শোনে অথচ সেইমত কাজ না করে সে এমন একজন লোকের মত, যে মাটির উপর ভিত্তি ছাড়াই ঘর তৈরী করল। পরে নদীর পানির স্রোত যখন সেই ঘরের উপর এসে পড়ল তখনই সেই ঘরটা পড়ে একেবারে ধ্বংস হয়ে গেল।”