অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

লূক 4 Kitabul Mukkadas (MBCL)

হযরত ঈসা মসীহ্‌কে গুনাহে ফেলবার চেষ্টা

1-2. ঈসা পাক-রূহে পূর্ণ হয়ে জর্ডান নদী থেকে চলে গেলেন। পাক-রূহের পরিচালনায় তিনি চল্লিশ দিন ধরে মরুভূমিতে ঘুরে বেড়াতে লাগলেন। সেই সময় ইবলিস তাঁকে লোভ দেখিয়ে গুনাহে ফেলবার চেষ্টা করতে থাকল। এই চল্লিশ দিন ঈসা কিছুই খান নি; সেইজন্য এই দিনগুলো কেটে যাবার পর তাঁর খিদে পেল।

3. তখন ইবলিস ঈসাকে বলল, “তুমি যদি ইব্‌নুল্লাহ্‌ হও তবে এই পাথরটাকে রুটি হয়ে যেতে বল।”

4. ঈসা ইবলিসকে বললেন, “পাক-কিতাবে লেখা আছে, ‘মানুষ কেবল রুটিতেই বাঁচে না।’ ”

5-6. এর পরে ইবলিস তাঁকে একটা উঁচু জায়গায় নিয়ে গেল এবং মুহূর্তের মধ্যে দুনিয়ার সব রাজ্যগুলো দেখিয়ে বলল, “এই সবের অধিকার ও সেগুলোর জাঁকজমক আমি তোমাকে দেব, কারণ এই সব আমাকে দেওয়া হয়েছে। আমার যাকে ইচ্ছা আমি তাকেই তা দিতে পারি।

7. এখন তুমি যদি আমাকে সেজদা কর তবে এই সবই তোমার হবে।”

8. ঈসা তাকে জবাব দিলেন, “পাক-কিতাবে লেখা আছে, ‘তুমি তোমার মাবুদ আল্লাহ্‌কেই ভয় করবে, কেবল তাঁরই এবাদত করবে।’ ”

9. তখন ইবলিস ঈসাকে জেরুজালেমে নিয়ে গেল আর বায়তুল-মোকাদ্দসের চূড়ার উপরে তাঁকে দাঁড় করিয়ে বলল, “তুমি যদি ইব্‌নুল্লাহ্‌ হও তবে এখান থেকে লাফ দিয়ে নীচে পড়,

10. কারণ পাক-কিতাবে লেখা আছে,তিনি তাঁর ফেরেশতাদের তোমার বিষয়ে হুকুম দেবেনযেন তাঁরা তোমাকে রক্ষা করেন।

11. তাঁরা তোমাকে হাত দিয়ে ধরে ফেলবেনযাতে তোমার পায়ে পাথরের আঘাত না লাগে।”

12. ঈসা তাকে বললেন, “পাক-কিতাবে বলা হয়েছে, ‘তোমার মাবুদ আল্লাহ্‌কে তুমি পরীক্ষা করতে যেয়ো না।’ ”

13. সমস্ত রকম লোভ দেখানো শেষ করে ইবলিস অল্প সময়ের জন্য ঈসার কাছ থেকে চলে গেল।

নাসরতে হযরত ঈসা মসীহের উপদেশ

14. পরে ঈসা পাক-রূহের শক্তিতে পূর্ণ হয়ে গালীল প্রদেশে ফিরে গেলেন। ঈসার খবর সেই এলাকার সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ল।

15. সেখানকার ভিন্ন ভিন্ন মজলিস-খানায় ঈসা শিক্ষা দিতে শুরু করলেন। তখন সবাই তাঁর প্রশংসা করতে লাগল।

16. এর পরে ঈসা নাসরতে গেলেন। এখানেই তিনি বড় হয়েছিলেন। তিনি নিজের নিয়ম মত বিশ্রামবারে মজলিস-খানায় গেলেন, তারপর কিতাব তেলাওয়াত করবার জন্য উঠে দাঁড়ালেন।

17. তাঁর হাতে নবী ইশাইয়ার লেখা কিতাবখানা দেওয়া হল। গুটিয়ে-রাখা কিতাবখানা খুলেই তিনি সেই জায়গাটা পেলেন যেখানে লেখা আছে,

18. “আল্লাহ্‌ মালিকের রূহ্‌ আমার উপরে আছেন,কারণ তিনিই আমাকে নিযুক্ত করেছেনযেন আমি গরীবদের কাছে সুসংবাদ তবলিগ করি।তিনি আমাকে বন্দীদের কাছে স্বাধীনতার কথা,অন্ধদের কাছে দেখতে পাবার কথাঘোষণা করতে পাঠিয়েছেন।যাদের উপর জুলুম হচ্ছে,তিনি আমাকে তাদের মুক্ত করতে পাঠিয়েছেন।

19. এছাড়া মাবুদ আমাকে ঘোষণা করতে পাঠিয়েছেন যে,এখন তাঁর রহমত দেখাবার সময় হয়েছে।”

20. তারপর তিনি কিতাবখানা আবার গুটিয়ে কর্মচারীর হাতে দিয়ে বসে পড়লেন। মজলিস-খানার প্রত্যেকটি লোকের চোখ তাঁর উপরে পড়ল।

21. তখন ঈসা লোকদের বললেন, “পাক-কিতাবের এই কথা আজ আপনারা শুনবার সংগে সংগেই তা পূর্ণ হল।”

22. লোকেরা সবাই তাঁর প্রশংসা করল এবং তাঁর মুখে এই সব সুন্দর সুন্দর কথা শুনে আশ্চর্য হল। তারা বলল, “এ কি ইউসুফের ছেলে নয়?”

23. ঈসা তাদের বললেন, “আপনারা এই চলতি কথাটা নিশ্চয়ই আমাকে বলবেন, ‘ডাক্তার, নিজেকে সুস্থ কর।’ আরও বলবেন, ‘কফরনাহূমে যে সব কাজ করবার কথা আমরা শুনেছি সেই সব এখন নিজের গ্রামেও করে দেখাও।’ ”

24. তিনি আরও বললেন, “আমি আপনাদের সত্যি বলছি, কোন নবীকেই তাঁর নিজের গ্রামের লোক গ্রাহ্য করে না।

25. এই কথা সত্যি যে, নবী ইলিয়াসের সময়ে যখন সাড়ে তিন বছর বৃষ্টি হয় নি এবং সমস্ত দেশে ভীষণ দুর্ভিক্ষ হয়েছিল তখন ইসরাইল দেশে অনেক বিধবা ছিল।

26. কিন্তু তাদের কারও কাছে ইলিয়াসকে পাঠানো হয় নি, কেবল সিডন এলাকার সারিফত গ্রামের বিধবা স্ত্রীলোকটির কাছে পাঠানো হয়েছিল।

27. নবী আল-ইয়াসার সময়ে ইসরাইল দেশে অনেক চর্মরোগী ছিল, কিন্তু তাদের কাউকে সুস্থ করা হয় নি, কেবল সিরিয়া দেশের নামানকেই সুস্থ করা হয়েছিল।”

28. এই কথা শুনে মজলিস-খানার সমস্ত লোক রেগে আগুন হল।

29. তারা উঠে ঈসাকে গ্রামের বাইরে তাড়িয়ে নিয়ে চলল, আর তাঁকে নীচে ফেলে দেবার জন্য তাদের গ্রামটা যে পাহাড়ের গায়ে ছিল সেই পাহাড়ের চূড়ায় তাঁকে নিয়ে গেল।

30. কিন্তু তিনি সেই লোকদের মধ্য দিয়েই চলে গেলেন।

অনেকে সুস্থ হল

31. পরে ঈসা গালীল প্রদেশের কফরনাহূম শহরে গেলেন এবং বিশ্রামবারে লোকদের শিক্ষা দিলেন।

32. তাঁর শিক্ষায় লোকেরা আশ্চর্য হল, কারণ তিনি এমন লোকের মত কথা বলছিলেন যাঁর অধিকার আছে।

33. সেই মজলিস-খানায় এমন একটি লোক ছিল যাকে ভূতে পেয়েছিল। সে চিৎকার করে বলল,

34. “ওহে নাসরত গ্রামের ঈসা, আমাদের সংগে আপনার কি দরকার? আপনি কি আমাদের ধ্বংস করতে এসেছেন? আমি জানি আপনি কে; আপনিই তো আল্লাহ্‌র সেই পবিত্রজন।”

35. ঈসা সেই ভূতকে ধমক দিয়ে বললেন, “চুপ কর, ওর মধ্য থেকে বের হয়ে যাও।” সেই ভূত তখন লোকটিকে সকলের মাঝখানে আছড়ে ফেলল এবং তার কোন ক্ষতি না করে তার মধ্য থেকে বের হয়ে গেল।

36. এতে সবাই আশ্চর্য হয়ে নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগল, “এ কেমন কথা! অধিকার ও ক্ষমতা নিয়ে তিনি ভূতদের হুকুম দেন আর তারা বের হয়ে যায়!”

37. সেই এলাকার সব জায়গায় ঈসার কথা ছড়িয়ে পড়ল।

38. এর পরে ঈসা মজলিস-খানা ছেড়ে শিমোনের বাড়ীতে গেলেন। শিমোনের শাশুড়ীর খুব জ্বর হয়েছিল। তাঁকে ভাল করবার জন্য ঈসাকে অনুরোধ করা হল।

39. তখন ঈসা শিমোনের শাশুড়ীর পাশে দাঁড়িয়ে জ্বরকে ধমক দিলেন। তাতে তাঁর জ্বর ছেড়ে গেল, আর তিনি তখনই উঠে তাঁদের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করতে লাগলেন।

40. বেলা ডুবে যাবার সময়ে লোকেরা সব রোগীদের ঈসার কাছে নিয়ে আসল। তারা নানা রকম রোগে ভুগছিল। ঈসা তাদের প্রত্যেকের গায়ে হাত দিয়ে তাদের সুস্থ করলেন।

41. অনেক লোকের মধ্য থেকে ভূতও বের হয়ে গেল। সেই ভূতগুলো চিৎকার করে বলল, “আপনি ইব্‌নুল্লাহ্‌।” তিনি যে মসীহ্‌ তা তারা জানত। এইজন্য তিনি ধমক দিয়ে তাদের মুখ বন্ধ করে দিলেন।

42. খুব ভোরে ঈসা সেই জায়গা ছেড়ে একটা নির্জন জায়গায় চলে গেলেন। লোকেরা তাঁর তালাশ করতে করতে তাঁর কাছে গেল এবং যাতে তিনি তাদের কাছ থেকে চলে না যান সেইজন্য তাঁকে তাদের কাছে ধরে রাখতে চেষ্টা করল।

43. তখন ঈসা তাদের বললেন, “আরও অনেক জায়গায় আমাকে আল্লাহ্‌র রাজ্যের সুসংবাদ তবলিগ করতে হবে, কারণ এরই জন্য আল্লাহ্‌ আমাকে পাঠিয়েছেন।”

44. এর পরে তিনি ইহুদীদের দেশের ভিন্ন ভিন্ন মজলিস-খানায় তবলিগ করতে থাকলেন।