অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

হেদায়েতকারী 2 কিতাবুল মোকাদ্দস (BACIB)

আমোদ-প্রমোদ অসার

1. আমি মনে মনে বললাম, ‘এসো, আমি একবার আমোদ-প্রমোদের দ্বারা তোমার পরীক্ষা করি, তুমি সুখভোগ কর;’ আর দেখ, তাও অসার।

2. আমি হাসির বিষয়ে বললাম, ওটা পাগলামী; এবং আমোদের বিষয়ে বললাম, ওতে কি উপকার হবে?

3. আমি মনে মনে দেখতে চাইলাম, কিভাবে মদ্যপানে শরীরকে তুষ্ট করবো, তখনও আমার মন প্রজ্ঞাসহকারে আমাকে পথ দেখাচ্ছিল— আর কিভাবে অজ্ঞানতা অবলম্বন করে শেষে দেখতে পারব, আসমানের নিচে বনি-আদমদের সমস্ত জীবনকালে কি কি করা ভাল।

4. আমি নিজের জন্য নানা মহৎ কাজ করলাম, নিজের জন্য নানা স্থানে বাড়ি নির্মাণ করলাম, নিজের জন্য আঙ্গুর-ক্ষেতগুলো প্রস্তুত করলাম;

5. আমি নিজের জন্য অনেক বাগান ও উপবন করে তার মধ্যে সমস্ত রকম ফলের গাছ রোপণ করলাম;

6. সেই বনের বৃদ্ধি পাওয়া গাছগুলোতে পানি সেচনের জন্য আমি বিভিন্ন স্থানে পুকুর খনন করলাম।

7. আমি অনেক গোলাম বাঁদী ক্রয় করলাম এবং আমার বাড়িতে গোলামেরা জন্মগ্রহণ করলো; আর আমার আগে জেরুশালেমে যাঁরা ছিলেন, সেগুলো থেকে আমার গোমেষাদি পশুধন বেশি ছিল।

8. আমি রূপা ও সোনা এবং নানা বাদশাহ্‌র ও নানা প্রদেশের বিশেষ বিশেষ ধন সঞ্চয় করলাম; আমি অনেক গায়ক গায়িকা ও বনি-আদমদের সন্তোষকারিণী কত উপপত্নী পেলাম।

9. বাস্তবিক আমি মহান ছিলাম, আমার আগে যাঁরা জেরুশালেমে ছিলেন, সেই সকলের চেয়ে বেশি সমৃদ্ধশালী হলাম এবং আমার প্রজ্ঞা আমার সহবর্তিনী ছিল।

10. আর আমার চোখ দু’টি যা ইচ্ছা করতো, তা আমি তাদের অগোচর রাখতাম না; আমার হৃদয়কে কোন আনন্দভোগ করতে বারণ করতাম না; বাস্তবিক আমার সমস্ত পরিশ্রমে আমার হৃদয় আনন্দ করতো; সমস্ত পরিশ্রমে এ-ই আমার পুরস্কার হল।

11. পরে আমার হাত যেসব কাজ করতো, যে পরিশ্রমে আমি পরিশ্রান্ত হতাম, সেই সমস্তের প্রতি দৃষ্টিপাত করলাম, আর দেখ, সে সবই অসার ও বায়ুর পিছনে দৌড়ানো ছাড়া আর কিছু নয়; সূর্যের নিচে কোন কিছুতেই লাভ নেই।

প্রজ্ঞা ও আনন্দ যিনি লাভ করতে পারেন

12. পরে আমি প্রজ্ঞা এবং উন্মত্ততা ও অজ্ঞানতা দেখতে প্রবৃত্ত হলাম; কারণ যে ব্যক্তি রাজ পদের উত্তরাধিকারী হয়ে আসবে, সে কি করবে? আগে যা করা গিয়েছিল, তা-ই মাত্র।

13. তখন আমি দেখলাম, যেমন অন্ধকারের চেয়ে আলো উত্তম, তেমনি অজ্ঞানতার চেয়ে প্রজ্ঞা উত্তম।

14. জ্ঞানবানের মস্তকেই চোখ থাকে, কিন্তু হীনবুদ্ধি অন্ধকারে ভ্রমণ করে; তবুও আমি জানলাম যে, সকলেরই এক দশা ঘটে।

15. তখন আমি মনে মনে বললাম, হীনবুদ্ধির প্রতি যা ঘটে, তা-ই তো আমার প্রতি ঘটে, তবে আমি কি জন্য বেশি জ্ঞানবান হলাম? পরে আমি মনে মনে বললাম, এও অসার।

16. কেননা হীনবুদ্ধির মত জ্ঞানবানের বিষয়ও লোকে চিরকাল মনে রাখবে না, ভবিষ্যৎকালে কিছুই স্মরণে থাকবে না; আহা! হীনবুদ্ধি যেমন মরে, তেমনি জ্ঞানবানও মরে।

17. সুতরাং আমি জীবনে বিরক্ত হলাম; কেননা সূর্যের নিচে যে কাজ করা হয় তা আমার কষ্টদায়ক মনে হল; কারণ সকলই অসার ও বায়ুর পিছনে দৌড়ানো ছাড়া আর কিছু নয়।

18. সূর্যের নিচে আমি যে পরিশ্রমে পরিশ্রান্ত হতাম, আমার সেসব পরিশ্রমে বিরক্ত হলাম; কেননা আমার পরবর্তী ব্যক্তির জন্য তা রেখে যেতে হবে।

19. আর সে জ্ঞানবান হবে, কি হীনবুদ্ধি হবে, তা কে জানে? কিন্তু আমি সূর্যের নিচে যে পরিশ্রম করে প্রজ্ঞা দেখাতাম, সেসব পরিশ্রমের ফলাধিকারী সে হবে; এও অসার।

20. অতএব সূর্যের নিচে আমি যে পরিশ্রমে পরিশ্রান্ত হতাম, পুনরায় আমার সেসব পরিশ্রমের বিষয়ে নিজের হৃদয়কে নিরাশ করলাম।

21. কেননা এক ব্যক্তির পরিশ্রম প্রজ্ঞা, বিদ্যা ও কৌশল সহযুক্ত হতে পারে; তবুও যে ব্যক্তি সে বিষয়ে পরিশ্রম করে নি, তাকে তার অধিকার বলে তা দিয়ে যেতে হয়।

22. এও অসার ও বড় মন্দ। তবে সূর্যের নিচে মানুষ যেসব পরিশ্রম ও হৃদয়ের উদ্বেগে পরিশ্রান্ত হয়, তাতে তার কি ফল লাভ হয়?

23. কেননা তার সমস্ত দিন ব্যথাযুক্ত এবং তার কষ্ট মনস্তাপজনক, রাত্রেও তার দিল বিশ্রাম পায় না। এও অসার।

24. ভোজন পান করা এবং নিজের পরিশ্রমের মধ্যে প্রাণকে সুখভোগ করানো ছাড়া আর মঙ্গল মানুষের হয় না; এও আমি দেখলাম যে, তা আল্লাহ্‌ থেকে হয়।

25. আর আমা থেকে কে বেশি ভোজন করতে কিংবা বেশি সুখভোগ করতে পারে?

26. বস্তুত যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র প্রীতিজনক, তাকে তিনি প্রজ্ঞা, বিদ্যা ও আনন্দ দেন; কিন্তু গুনাহ্‌গারকে কষ্ট দেন, যেন সে আল্লাহ্‌র প্রীতিজনক ব্যক্তিকে দেবার জন্য ধন সংগ্রহ ও সঞ্চয় করে। এও অসার ও বায়ুর পিছনে দৌড়ানো ছাড়া আর কিছু নয়।