1. যে সব ইসরাইলীয়দের কেনান দেশের কোন যুদ্ধের অভিজ্ঞতা ছিল না তাদের পরীক্ষায় ফেলে শিক্ষা দেবার জন্য মাবুদ কতগুলো জাতিকে দেশের মধ্যেই রেখে দিয়েছিলেন।
2. বনি-ইসরাইলদের বংশধরেরা যারা আগে কোন দিন যুদ্ধ করে নি তাদের যুদ্ধের ব্যাপারে শিক্ষিত করে তুলবার জন্য তিনি তা করেছিলেন।
3. সেই সব জাতিগুলো হল, ফিলিস্তিনীরা ও তাদের পাঁচজন শাসনকর্তা, সমস্ত কেনানীয়রা এবং সিডনীয় ও হিব্বীয়রা। বাল-হর্মোণ পাহাড় থেকে হামা গ্রাম পর্যন্ত লেবাননের যে পাহাড়ী এলাকাটা আছে এই হিব্বীয়রা সেখানে থাকত।
4. মাবুদ মূসার মধ্য দিয়ে তাদের পূর্বপুরুষদের যে হুকুম দিয়েছিলেন তা এই বনি-ইসরাইলরা মেনে চলে কি না তা পরীক্ষা করবার জন্য এই সব জাতিকে রেখে দেওয়া হয়েছিল।
5. এর ফলে বনি-ইসরাইলরা কেনানীয়, হিট্টীয়, আমোরীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় এবং যিবূষীয়দের মধ্যে বাস করতে লাগল।
6. তারা তাদের মেয়েদের বিয়ে করত এবং নিজেদের মেয়েদের তাদের ছেলেদের সংগে বিয়ে দিত আর তাদের দেব-দেবীদের পূজা করত।
7. বনি-ইসরাইলরা মাবুদের চোখে যা খারাপ তা-ই করতে লাগল। তারা তাদের মাবুদ আল্লাহ্কে ভুলে গিয়ে বাল-দেবতাদের আর আশেরা দেবীদের পূজা করতে লাগল।
8. সেইজন্য ইসরাইলের প্রতি মাবুদের রাগ জ্বলে উঠল এবং তিনি ইরাম-নহরয়িমের বাদশাহ্ কূশন্তরিশিয়াথয়িমের হাতে তাদের তুলে দিলেন। তারা আট বছর তাঁর অধীনে রইল।
9. কিন্তু তারা মাবুদের কাছে কান্নাকাটি করলে পর তিনি তাদের উদ্ধার করবার জন্য একজন উদ্ধারকর্তা দাঁড় করালেন। তিনি হলেন কালুতের ছোট ভাই কনষের বংশধর অৎনীয়েল।
10. মাবুদের রূহ্ তাঁর উপর আসলে পর তিনি বনি-ইসরাইলদের শাসনকর্তা হলেন। তিনি যখন যুদ্ধ করতে গেলেন তখন মাবুদ ইরামের বাদশাহ্ কূশন্তরিশিয়াথয়িমকে তাঁর হাতে তুলে দিলেন, আর তিনি তাঁকে হারিয়ে দিলেন।
11. কনষের বংশধর অৎনীয়েলের ইন্তেকাল পর্যন্ত দেশে চল্লিশ বছর শান্তি ছিল।
12. পরে মাবুদের চোখে যা খারাপ বনি-ইসরাইলরা আবার তা-ই করতে শুরু করল। কাজেই মাবুদ মোয়াবের বাদশাহ্ ইগ্লোনকে ইসরাইলের বিরুদ্ধে শক্তিশালী করে তুললেন।
13. অম্মোনীয় ও আমালেকীয়দের সংগে নিয়ে ইগ্লোন বনি-ইসরাইলদের হামলা করলেন এবং জেরিকো অধিকার করে নিলেন।
14. বনি-ইসরাইলরা আঠারো বছর মোয়াবের বাদশাহ্ ইগ্লোনের অধীনে রইল।
15. এর পর বনি-ইসরাইলরা আবার মাবুদের কাছে ফরিয়াদ জানাতে লাগল, আর তিনি তাদের জন্য এহূদ নামে একজন উদ্ধারকর্তা দাঁড় করালেন। তিনি ছিলেন বিন্যামীন-গোষ্ঠীর গেরার ছেলে। তিনি বাঁ হাতে কাজ করতেন। মোয়াবের বাদশাহ্ ইগ্লোনকে খাজনা দেবার জন্য বনি-ইসরাইলরা তাঁকে পাঠিয়ে দিল।
16. তিনি এক হাত লম্বা দু’দিকে ধার দেওয়া একটা ছোরা বানিয়ে তাঁর কাপড়ের নীচে ডান রানের সংগে বেঁধে নিলেন।
17. তিনি গিয়ে মোয়াবের বাদশাহ্ ইগ্লোনকে সেই খাজনা দিলেন। বাদশাহ্ ইগ্লোন ছিলেন খুব মোটা।
18. খাজনা দেবার পর যারা খাজনা বয়ে এনেছিল এহূদ তাদের বিদায় করে দিলেন,
19. কিন্তু তিনি নিজে গিল্গলের কাছের খোদাই করা পাথরগুলো পর্যন্ত গিয়ে ফিরে এসে বললেন, “মহারাজ, আপনাকে আমার একটা গোপন খবর দেবার আছে।”বাদশাহ্ তাঁর লোকদের বললেন, “তোমরা চুপ কর”; এতে তাঁর লোকেরা তাঁর কাছ থেকে চলে গেল।
20. তখন বাদশাহ্ তাঁর ছাদের ঠাণ্ডা-ঘরে একা বসে ছিলেন, আর এহূদ তাঁর কাছে গিয়ে বললেন, “আপনাকে আমার একটা খবর দেবার আছে; খবরটা আল্লাহ্র কাছ থেকে এসেছে।” এই কথা শুনে বাদশাহ্ উঠে দাঁড়ালেন,
21. আর এহূদ বাঁ হাত দিয়ে তাঁর ডান দিকের রান থেকে ছোরাটা টেনে বের করে নিয়ে বাদশাহ্র পেটে সেটা ঢুকিয়ে দিলেন।
22. বাঁট সুদ্ধ ছোরাটা পেটে ঢুকে গিয়ে চর্বিতে ঢাকা পড়ে গেল, কারণ এহূদ ছোরাটা টেনে বের করে নেন নি। ছোরাটা পিছন দিকে খানিকটা বের হয়ে ছিল।
23. তারপর এহূদ বারান্দায় বের হয়ে এসে ঘরের দরজা টেনে দিয়ে তালা বন্ধ করে দিলেন।
24. এহূদ চলে যাবার পর চাকরেরা এসে দেখল উপরের ঘরের দরজা তালা দেওয়া। তারা বলল, “নিশ্চয় তিনি ভিতরের ঘরে পায়খানায় গেছেন।”
25. তারা অনেকক্ষণ পর্যন্ত অপেক্ষা করল, কিন্তু তবুও তিনি দরজা খুলছেন না দেখে তারা লজ্জা ভেংগে চাবি এনে দরজা খুলে ফেলল। তারা দেখল তাদের মালিক মরা অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছেন।
26. চাকরেরা অপেক্ষা করবার সময় এহূদ পালিয়ে গিয়ে খোদাই করা পাথরগুলো পিছনে ফেলে সিয়ীরাতে গিয়ে উপস্থিত হলেন।
27. সেখানে আফরাহীমের পাহাড়ী এলাকায় তিনি শিংগা বাজালে পর বনি-ইসরাইলরা তাঁর সংগে পাহাড় থেকে নীচে নেমে এসে তাঁর পিছনে পিছনে চলল,
28. কারণ তিনি তাদের হুকুম দিয়েছিলেন, “আমার পিছনে পিছনে এস; মাবুদ তোমাদের শত্রু মোয়াবীয়দের তোমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন।” কাজেই তারা তাঁর পিছনে পিছনে নেমে গিয়ে মোয়াবের কাছে জর্ডান নদীর যে জায়গাগুলো হেঁটে পার হওয়া যায় সেগুলো দখল করে নিল। তারা কাউকে সেই সব জায়গা দিয়ে পার হতে দিল না।
29. সেই সময় তারা দশ হাজার মোয়াবীয়কে হত্যা করল। এই মোয়াবীয়রা সবাই স্বাস্থ্যবান ও শক্তিশালী ছিল, কিন্তু তাদের একজন লোকও পালিয়ে যেতে পারে নি।
30. সেই দিনই মোয়াব দেশটা বনি-ইসরাইলদের অধীনে আনা হল, আর আশি বছর দেশে শান্তি বজায় রইল।
31. এহূদের পরে অনাতের ছেলে শম্গর শাসনকর্তা হলেন। তিনি গরু চরানো লাঠি দিয়ে ফিলিস্তিনীদের ছ’শো লোককে হত্যা করেছিলেন। তিনিও বনি-ইসরাইলদের রক্ষা করেছিলেন।