অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

কাজীগণ 11 Kitabul Mukkadas (MBCL)

1. সেই সময় গিলিয়দীয় যিপ্তহ খুব শক্তিশালী যোদ্ধা ছিলেন। তাঁর মা ছিল একজন বেশ্যা আর তাঁর বাবার নাম ছিল গিলিয়দ।

2. গিলিয়দের নিজের স্ত্রীর গর্ভের কতগুলো ছেলে ছিল। তারা বড় হয়ে যিপ্তহকে এই বলে তাড়িয়ে দিল, “তুমি আমাদের পরিবারের সম্পত্তির অধিকার পাবে না, কারণ তুমি অন্য এক স্ত্রীলোকের সন্তান।”

3. কাজেই যিপ্তহ তাঁর ভাইদের কাছ থেকে পালিয়ে গিয়ে টোব দেশে বাস করতে লাগলেন। সেখানে কতগুলো বাজে লোক তাঁর চারপাশে এসে জমায়েত হল এবং তাঁর সংগে চলাফেরা করতে লাগল।

4-5. এর কিছুকাল পরে যখন অম্মোনীয়রা বনি-ইসরাইলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসল তখন গিলিয়দের বৃদ্ধ নেতারা টোব দেশ থেকে যিপ্তহকে আনতে গেলেন।

6. তাঁরা বললেন, “আমরা অম্মোনীয়দের সংগে যুদ্ধ করব, তাই তুমি এসে আমাদের সেনাপতি হও।”

7. যিপ্তহ তাঁদের বললেন, “তোমরা কি ঘৃণা করে আমাকে আমার বাবার বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দাও নি? এখন বিপদে পড়ে কেন আমার কাছে এসেছ?”

8. গিলিয়দের বৃদ্ধ নেতারা তাঁকে বললেন, “কিন্তু এখন আমরা তোমার কাছে ফিরে এসেছি যেন তুমি আমাদের সংগে গিয়ে অম্মোনীয়দের সংগে যুদ্ধ কর। এতে তুমি গিলিয়দে বাসকারী আমাদের সকলের কর্তা হবে।”

9. জবাবে যিপ্তহ বললেন, “ধর, অম্মোনীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য তোমরা আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে গেলে আর মাবুদও আমার হাতে তাদের তুলে দিলেন; তাহলে তখন সত্যিই কি আমি তোমাদের কর্তা হব?”

10. গিলিয়দের বৃদ্ধ নেতারা জবাবে বললেন, “মাবুদই আমাদের সাক্ষী রইলেন যে, তুমি যা বললে আমরা তা-ই করব।”

11. এতে যিপ্তহ গিলিয়দের বৃদ্ধ নেতাদের সংগে গেলেন আর লোকেরা তাঁকে তাদের কর্তা ও সেনাপতি করল। তিনি মিসপাতে গিয়ে মাবুদের সামনে সেই সব কথা বললেন।

12. এর পর যিপ্তহ লোক পাঠিয়ে অম্মোনীয় বাদশাহ্‌কে এই কথা জিজ্ঞাসা করলেন, “আমার ও আপনার মধ্যে এমন কি হয়েছে যার জন্য আপনি আমার দেশ আক্রমণ করতে এসেছেন?”

13. অম্মোনীয় বাদশাহ্‌ যিপ্তহের পাঠানো লোকদের বললেন, “বনি-ইসরাইলরা মিসর দেশ থেকে বের হয়ে এসে জর্ডান নদীর কিনারা ধরে অর্ণোন নদী থেকে যব্বোক নদী পর্যন্ত আমার সমস্ত জায়গাটা দখল করে নিয়েছে। এখন সহিসালামতে তা ফিরিয়ে দাও।”

14-15. অম্মোনীয় বাদশাহ্‌র কাছে যিপ্তহ আবার লোক পাঠিয়ে এই কথা বললেন, “যিপ্তহ বলছেন যে, বনি-ইসরাইলরা মোয়াব কিংবা অম্মোনীয়দের দেশ দখল করে নি।

16. মিসর থেকে বেরিয়ে আসবার পর বনি-ইসরাইলরা মরুভূমির মধ্য দিয়ে লোহিত সাগর পর্যন্ত গিয়েছিল এবং তারপর গিয়েছিল কাদেশে।

17. তারপর বনি-ইসরাইলরা ইদোমের বাদশাহ্‌র কাছে লোক পাঠিয়ে বলেছিল, ‘আপনার দেশের মধ্য দিয়ে আমাদের যাবার অনুমতি দিন।’ কিন্তু ইদোমের বাদশাহ্‌ সেই কথায় কান দেন নি। তারা মোয়াবের বাদশাহ্‌র কাছেও লোক পাঠিয়েছিল কিন্তু তিনিও রাজী হন নি। কাজেই বনি-ইসরাইলরা কাদেশেই রয়ে গেল।

18. তারপর তারা মরুভূমির মধ্য দিয়ে গিয়ে ইদোম ও মোয়াব দেশ ঘুরে মোয়াব দেশের পূর্ব দিক দিয়ে গিয়ে অর্ণোন নদীর অন্য পাশে ছাউনি ফেলেছিল। তারা মোয়াব দেশে ঢোকে নি, কারণ অর্ণোন নদীই ছিল মোয়াবের সীমানা।

19. তারপর বনি-ইসরাইলরা আমোরীয়দের বাদশাহ্‌ সীহোন, যিনি হিষ্‌বোনে থেকে রাজত্ব করতেন, তাঁর কাছে লোক দিয়ে বলে পাঠাল, ‘আমাদের দেশে যাবার জন্য আপনার দেশের মধ্য দিয়ে আমাদের যেতে দিন।’

20. কিন্তু সীহোন বনি-ইসরাইলদের বিশ্বাস না করে তাঁর দেশের মধ্য দিয়ে তাদের যাবার অনুমতি দিলেন না। তিনি তাঁর সমস্ত লোকজন জমায়েত করে যহসে ছাউনি ফেললেন এবং বনি-ইসরাইলদের সংগে যুদ্ধ করলেন।

21. তখন বনি-ইসরাইলদের মাবুদ আল্লাহ্‌ বনি-ইসরাইলদের হাতে সীহোন ও তাঁর সমস্ত লোকদের তুলে দিলেন আর তারা তাদের হারিয়ে দিল। সেই দেশে বাসকারী সমস্ত আমোরীয়দের জায়গা বনি-ইসরাইলরা দখল করে নিল।

22. তারা অর্ণোন থেকে যব্বোক পর্যন্ত এবং মরুভূমি থেকে জর্ডান পর্যন্ত আমোরীয়দের সমস্ত জায়গাটা অধিকার করে নিল।

23. ইসরাইল জাতির মাবুদ আল্লাহ্‌ যখন তাঁর বান্দা বনি-ইসরাইলদের সামনে থেকে আমোরীয়দের তাড়িয়ে দিয়েছেন তখন সেটা ফিরিয়ে নেবার কি অধিকার আপনার আছে?

24. আপনার কমোশ-দেবতা আপনাকে যা অধিকার করতে দিয়েছেন তা কি আপনার অধিকারে নেই? ঠিক সেইভাবে আমাদের মাবুদ আল্লাহ্‌ আমাদের সামনে থেকে যাদের তাড়িয়ে দিয়েছেন আমরা তাদেরই জায়গা অধিকার করে আছি।

25. আপনি কি মোয়াবের বাদশাহ্‌ সিপ্পোরের ছেলে বালাকের চেয়েও ভাল? তিনি কখনও ইসরাইলের সংগে ঝগড়া কিংবা যুদ্ধ করেন নি।

26. আজ তিনশো বছর বনি-ইসরাইলরা হিষ্‌বোন ও অরোয়ের শহর এবং তাদের আশেপাশের গ্রাম এবং অর্ণোন নদীর কিনারা ধরে সমস্ত গ্রামে বাস করে আসছে। সেই সময়ের মধ্যে আপনি সেগুলো কেন আবার দখল করে নেন নি?

27. এই ব্যাপারে আমি আপনার প্রতি কোন অন্যায় করি নি, বরং আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে আপনিই আমার প্রতি অন্যায় করছেন। বিচারকর্তা মাবুদই এখন ইসরাইলীয় ও অম্মোনীয়দের মধ্যে বিচার করুন।”

28. কিন্তু যিপ্তহের পাঠানো এই খবরে অম্মোনের বাদশাহ্‌ কান দিলেন না।

29. তখন মাবুদের রূহ্‌ যিপ্তহের উপরে আসলেন। তাতে যিপ্তহ গিলিয়দ ও মানশা এলাকার মধ্য দিয়ে গিয়ে গিলিয়দের মিসপাতে আসলেন এবং সেখান থেকে অম্মোনীয়দের বিরুদ্ধে এগিয়ে গেলেন।

30-31. যিপ্তহ এই বলে মাবুদের কাছে একটা মানত করলেন, “তুমি যদি আমার হাতে অম্মোনীয়দের তুলে দাও তবে অম্মোনীয়দের সংগে যুদ্ধে জয়লাভ করে ফিরে আসবার সময় যে আমাকে এগিয়ে নেবার জন্য বাড়ী থেকে দরজার বাইরে আসবে সে-ই মাবুদের হবে। তাকে দিয়ে আমি একটা পোড়ানো-কোরবানী দেব।”

32. এর পর যিপ্তহ অম্মোনীয়দের সংগে যুদ্ধ করতে গেলেন আর মাবুদ তাঁর হাতে অম্মোনীয়দের তুলে দিলেন।

33. তিনি অরোয়ের থেকে মিন্নীতের কাছাকাছি আবেল-করামীম পর্যন্ত বিশটা শহর ও গ্রামের লোকদের ভীষণভাবে আঘাত করে হত্যা করলেন। এইভাবে বনি-ইসরাইলরা অম্মোনীয়দের দমন করল।

34. যিপ্তহ যখন মিসপাতে নিজের বাড়ীতে ফিরে আসলেন তখন যে তাঁকে এগিয়ে নিতে আসল সে ছিল তাঁরই মেয়ে। সে খঞ্জনীর তালে তালে নেচে নেচে আসছিল। সে ছিল যিপ্তহের একমাত্র সন্তান, আর এই মেয়েটি ছাড়া তাঁর অন্য কোন ছেলে বা মেয়ে ছিল না।

35. যিপ্তহ মেয়েকে দেখে তাঁর কাপড় ছিঁড়ে বললেন, “হায় হায়, মা আমার, তুমি এ কি সর্বনাশ করলে! তুমি আমাকে ভীষণ বিপদের মধ্যে ফেলে দিলে, কারণ আমি মাবুদের কাছে এমন একটা মানত করেছি যা আমার পক্ষে ভাংগা সম্ভব নয়।”

36. জবাবে মেয়েটি বলল, “আব্বা, তুমি মাবুদকে কথা দিয়েছ। কাজেই তোমার কথা অনুসারে আমার প্রতি যা করবার তা কর, কারণ মাবুদ তোমাকে তোমার শত্রু অম্মোনীয়দের উপর প্রতিশোধ নিতে দিয়েছেন।”

37. তারপর সে বলল, “তবে আমার একটা অনুরোধ রাখ। আমি তো সন্তানের মা হতে পারব না; তাই পাহাড়ে পাহাড়ে ঘুরে সখীদের সংগে বিলাপ করে বেড়াবার জন্য আমাকে দু’মাস সময় দাও।”

38. যিপ্তহ বললেন, “যাও, মা।” এই বলে তিনি তাকে দু’মাসের জন্য বিদায় দিলেন। তখন সে আর অন্য মেয়েরা পাহাড়ে পাহাড়ে ঘুরে বিলাপ করতে লাগল, কারণ সে কখনও সন্তানের মা হতে পারবে না।

39. দু’মাস পার হয়ে গেলে পর সে তার বাবার কাছে ফিরে আসল। যিপ্তহ মাবুদের কাছে যা মানত করেছিলেন তিনি তাঁর মেয়ের প্রতি তা-ই করলেন। মেয়েটি অবিবাহিতা অবস্থায় মারা গেল।এই ঘটনা থেকে বনি-ইসরাইলদের মধ্যে একটা রীতি চালু হয়ে গেল।

40. গিলিয়দীয় যিপ্তহের মেয়ের কথা স্মরণ করে বিলাপ করবার জন্য ইসরাইলীয় যুবতী মেয়েরা প্রত্যেক বছর চার দিনের জন্য বাড়ী থেকে বের হয়ে যেত।