অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24
  25. 25
  26. 26
  27. 27
  28. 28
  29. 29
  30. 30
  31. 31
  32. 32
  33. 33
  34. 34
  35. 35
  36. 36
  37. 37
  38. 38
  39. 39
  40. 40

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

যাত্রাপুস্তক 8 পবিত্র বাইবেল (SBCL)

মিসরের উপর দ্বিতীয় আঘাত- ব্যাঙের উৎপাত

1. তারপর সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “ফরৌণকে গিয়ে এই কথা বল যে, সদাপ্রভু বলছেন, ‘আমার উপাসনা করবার জন্য আমার লোকদের যেতে দাও।

2. যদি তুমি তাদের যেতে না দাও তবে সারা দেশের উপর আমি ব্যাঙের উৎপাত সৃষ্টি করতে যাচ্ছি।

3. নীল নদী ব্যাঙে ভরে যাবে, আর নদী থেকে সেগুলো উঠে আসবে এবং তোমার ঘর-বাড়ীতে, তোমার শোবার ঘরে, তোমার বিছানাতে, তোমার কর্মচারীদের ঘরে, তোমার লোকদের ঘরে, তোমার চুলাতে এবং তোমার ময়দা মাখবার পাত্রে গিয়ে উঠবে।

4. সেই ব্যাঙগুলো তোমার উপর এবং তোমার লোকদের ও তোমার কর্মচারীদের উপর গিয়ে উঠবে।’ ”

5. তারপর সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি হারোণকে এই কথা বলবে, ‘মিসর দেশের সব নদী, খাল ও পুকুরের উপরে লাঠি সুদ্ধ তোমার হাতখানা বাড়িয়ে দেশের উপর ব্যাঙ তুলে নিয়ে এস।’ ”

6. তখন হারোণ মিসরের সব জলের উপর তাঁর হাত বাড়িয়ে দিলেন। তাতে ব্যাঙ উঠে এসে দেশটা ছেয়ে ফেলল।

7. যাদুকরেরাও তাদের যাদুমন্ত্রের জোরে সেই একই কাজ করল। তারাও মিসর দেশে ব্যাঙ আনল।

8. ফরৌণ তখন মোশি ও হারোণকে ডাকিয়ে এনে বললেন, “তোমরা সদাপ্রভুর কাছে মিনতি কর যেন তিনি আমার ও আমার লোকদের উপর থেকে এই ব্যাঙের উৎপাত সরিয়ে নেন। তখন আমি লোকদের যেতে দেব যাতে তারা গিয়ে সদাপ্রভুর উদ্দেশে পশু উৎসর্গ করতে পারে।”

9. মোশি ফরৌণকে বললেন, “ব্যাঙগুলো যাতে আপনাকে ও আপনার ঘর-বাড়ী ছেড়ে চলে গিয়ে কেবল নদীর মধ্যে থাকে, সেইজন্য বলুন কখন আমি আপনার ও আপনার কর্মচারী ও লোকদের জন্য মিনতি করব। সময়টা আপনিই ঠিক করুন।”

10. উত্তরে ফরৌণ বললেন, “তবে সেটা কালকেই হোক।”মোশি বললেন, “তা-ই হবে। এতে আপনি বুঝতে পারবেন যে, আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর মত কেউ নেই।

11. ব্যাঙগুলো আপনাকে এবং আপনার বাড়ী-ঘর, আপনার কর্মচারী ও আপনার লোকদের ছেড়ে চলে যাবে। সেগুলো কেবল নীল নদীর মধ্যেই থাকবে।”

12. এই কথা বলে মোশি ও হারোণ ফরৌণের কাছ থেকে চলে গেলেন। ফরৌণের উপর সদাপ্রভু যে ব্যাঙের উৎপাত এনেছিলেন সেই সম্বন্ধে মোশি সদাপ্রভুর কাছে কান্নাকাটি করলেন।

13. তখন সদাপ্রভু তাঁর কথামতই কাজ করলেন। ঘর-বাড়ি, উঠান ও জায়গা-জমিতে যত ব্যাঙ ছিল সব মরে গেল।

14. লোকেরা সেগুলো এনে নানা জায়গায় জড়ো করল আর তাতে দেশের মধ্যে এক ভীষণ দুর্গন্ধের সৃষ্টি হল।

15. কিন্তু ব্যাঙের উৎপাত থেকে রেহাই পেয়ে ফরৌণ আবার তাঁর মন শক্ত করে মোশি ও হারোণের কথা শুনলেন না। সদাপ্রভু যা বলেছিলেন তা-ই হল।

মিসরের উপর তৃতীয় আঘাত- মশার উৎপাত

16. তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “হারোণকে তার লাঠি তুলে মাটিতে ধূলার উপর আঘাত করতে বল। তাতে সেই ধূলা মশা হয়ে সারা মিসর দেশটা ছেয়ে ফেলবে।”

17. হারোণ ও মোশি তা-ই করলেন। হারোণ তাঁর হাতখানা বাড়িয়ে লাঠি দিয়ে মাটিতে ধূলার উপর আঘাত করলেন আর তাতে মানুষ ও পশুর উপর মশার উৎপাত দেখা দিল। মিসর দেশের সমস্ত ধূলাই মশা হয়ে গেল।

18. যাদুকরেরা তাদের যাদুমন্ত্রের জোরে মশা নিয়ে আসবার চেষ্টা করল কিন্তু পারল না। মানুষ এবং পশুর উপর মশা বসতে লাগল।

19. এই অবস্থা দেখে যাদুকরেরা ফরৌণকে বলল, “এতে ঈশ্বরের আংগুলের ছোঁয়া রয়েছে।” কিন্তু তবুও ফরৌণের মন কঠিনই রয়ে গেল; তিনি মোশি ও হারোণের কথায় কান দিলেন না। সদাপ্রভু যা বলেছিলেন তা-ই হল।

মিসরের উপর চতুর্থ আঘাত- পোকার উৎপাত

20. পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি খুব ভোরে উঠবে এবং ফরৌণ যখন বাইরে নদীর ঘাটে যাবে তখন তুমি তার সামনে গিয়ে দাঁড়াবে। তাকে বলবে যে, সদাপ্রভু বলছেন, ‘আমার উপাসনা করবার জন্য আমার লোকদের যেতে দাও।

21. যদি তা না দাও তবে আমি তোমার উপর এবং তোমার সব কর্মচারী ও তোমার লোকদের উপর আর তোমার বাড়ী-ঘরে ঝাঁকে ঝাঁকে পোকা পাঠাচ্ছি। মিসরীয়দের বাড়ী-ঘর এবং সব জায়গা নানা রকম পোকায় ভরে যাবে।

22. কিন্তু সেই দিন গোশন এলাকাটা আমি বাদ দেব, কারণ আমার লোকেরা সেখানে বাস করছে। সেখানে কোন পোকার উৎপাত থাকবে না। তা থেকে তোমরা জানতে পারবে যে, আমি সদাপ্রভুই এই দেশে আছি।

23. আমার লোকদের আমি রেহাই দেব, তোমার লোকদের নয়। আগামী কাল এই আশ্চর্য ব্যাপার দেখা যাবে।’ ”

24. সদাপ্রভু তা-ই করলেন। ফরৌণের রাজবাড়ীতে এবং তাঁর কর্মচারীদের বাড়ীতে ঝাঁকে ঝাঁকে পোকা ঢুকল। এই সব পোকার উৎপাতে সারা মিসর দেশটার সর্বনাশ হতে লাগল।

25. তখন ফরৌণ মোশি ও হারোণকে ডাকিয়ে এনে বললেন, “তোমরা এই দেশের মধ্যেই কোথাও গিয়ে তোমাদের ঈশ্বরের উদ্দেশে পশু উৎসর্গ কর।”

26. মোশি বললেন, “কিন্তু এটা করা কি ঠিক হবে? আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে আমরা যা উৎসর্গ করব তা মিসরীয়দের কাছে ঘৃৃণার জিনিস। মিসরীয়েরা যা ঘৃণা করে তা-ই যদি আমরা তাদের চোখের সামনে উৎসর্গ করি তবে কি তারা আমাদের পাথর মারবে না?

27. সেইজন্য আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আদেশ মতই মরু-এলাকার মধ্যে তিন দিনের পথ গিয়ে তাঁর উদ্দেশে আমাদের পশু উৎসর্গ করতে হবে।”

28. ফরৌণ বললেন, “তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে পশু উৎসর্গের জন্য আমি মরু-এলাকাতেই তোমাদের যেতে দেব। কিন্তু তোমরা বেশী দূরে যাবে না। এবার তোমরা আমার জন্য মিনতি কর।”

29. মোশি বললেন, “আমি আপনার কাছ থেকে গিয়েই সদাপ্রভুর কাছে মিনতি করব যেন কালই মহারাজ এবং তাঁর কর্মচারীদের ও তাঁর লোকদের উপর থেকে এই পোকার উৎপাত চলে যায়। কিন্তু সদাপ্রভুর উদ্দেশে পশু উৎসর্গ করবার জন্য যেতে না দিয়ে মহারাজ যেন আমাদের আবার ফাঁকি না দেন।”

30. এর পর মোশি ফরৌণের কাছ থেকে গিয়ে সদাপ্রভুর কাছে মিনতি করলেন,

31. আর সদাপ্রভুও মোশির কথামত কাজ করলেন। তিনি ফরৌণ এবং তাঁর কর্মচারী ও তাঁর লোকদের উপর থেকে পোকার উৎপাত সরিয়ে দিলেন। একটা পোকাও আর রইল না।

32. কিন্তু এবারও ফরৌণ তাঁর মন শক্ত করলেন এবং লোকদের যেতে দিলেন না।