অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

যোহন 5 পবিত্র বাইবেল (SBCL)

আর একজন রোগী সুস্থ হল

1. এই সব ঘটনার পরে যীশু যিরূশালেমে গেলেন, কারণ সেই সময় যিহূদীদের একটা পর্ব ছিল।

2. যিরূশালেমে মেষ-ফটকের কাছে একটা পুকুর আছে; সেখানে পাঁচটা ছাদ-দেওয়া জায়গা আছে। ইব্রীয় ভাষায় পুকুরটার নাম বৈথেস্‌দা।

3. সেই সব জায়গায় অনেক রোগী পড়ে থাকত। অন্ধ, খোঁড়া, এমন কি শরীর যাদের একেবারে শুকিয়ে গেছে তেমন লোকও তাদের মধ্যে ছিল।

4. একজন স্বর্গদূত সময়ে সময়ে ঐ পুকুরে নেমে এসে জল কাঁপাতেন, আর তার পরেই যে প্রথমে জলের মধ্যে নামত তার যে কোন রোগ ভাল হয়ে যেত। ঐ সব রোগীরা জল কাঁপবার অপেক্ষায় সেখানে পড়ে থাকত।

5. আটত্রিশ বছর ধরে রোগে ভুগছে তেমন একজন লোকও সেখানে ছিল।

6. অনেক দিন ধরে সে এইভাবে পড়ে আছে জেনে যীশু তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমার কি ভাল হবার ইচ্ছা আছে?”

7. রোগীটি উত্তর দিল, “আমার এমন কেউ নেই যে, জল কেঁপে উঠবার সংগে সংগে আমাকে পুকুরে নামিয়ে দেয়। আমি যেতে না যেতেই আর একজন আমার আগে নেমে পড়ে।”

8. যীশু তাকে বললেন, “ওঠো, তোমার বিছানা তুলে নিয়ে হেঁটে বেড়াও।”

9. তখনই সেই লোকটি ভাল হয়ে গেল ও তার বিছানা তুলে নিয়ে হাঁটতে লাগল।সেই দিনটা ছিল বিশ্রামবার।

10. এইজন্য যে লোকটিকে ভাল করা হয়েছিল তাকে যিহূদী নেতারা বললেন, “আজ বিশ্রামবার; ধর্মের নিয়ম মতে বিছানা তুলে নেওয়া তোমার উচিত নয়।”

11. তখন সে সেই নেতাদের বলল, “কিন্তু যিনি আমাকে ভাল করেছেন তিনিই আমাকে বলেছেন, ‘তোমার বিছানা তুলে নিয়ে হেঁটে বেড়াও।’ ”

12. তাঁরা সেই লোকটিকে জিজ্ঞাসা করলেন, “কে সেই লোক, যে তোমাকে বলেছে, ‘তোমার বিছানা তুলে নিয়ে হেঁটে বেড়াও?’ ”

13. কিন্তু যে লোকটি ভাল হয়েছিল সে জানত না তিনি কে, কারণ সেই জায়গায় অনেক লোক ভিড় করেছিল বলে যীশু চলে গিয়েছিলেন।

14. এর পরে যীশু সেই লোকটিকে উপাসনা-ঘরে দেখতে পেয়ে বললেন, “দেখ, তুমি ভাল হয়েছ। পাপে জীবন আর কাটায়ো না, যেন তোমার আরও ক্ষতি না হয়।”

15. তখন সেই লোকটি গিয়ে যিহূদী নেতাদের বলল যে, তাকে যিনি ভাল করেছেন তিনি যীশু।

পুত্রের অধিকার

16. বিশ্রামবারে যীশু এই সব কাজ করছিলেন বলে যিহূদী নেতারা তাঁকে মেরে ফেলতে চেষ্টা করলেন।

17. তখন তিনি সেই নেতাদের বললেন, “আমার পিতা সব সময় কাজ করছেন এবং আমিও করছি।”

18. যীশুর এই কথার জন্য যিহূদী নেতারা তাঁকে মেরে ফেলবার জন্য উঠে পড়ে লাগলেন, কারণ তিনি যে কেবল বিশ্রামবারের নিয়ম ভাংছিলেন তা নয়, ঈশ্বরকে নিজের পিতা বলে ডেকে নিজেকে ঈশ্বরের সমানও করছিলেন।

19. এতে যীশু সেই নেতাদের বললেন, “আমি সত্যিই আপনাদের বলছি, পুত্র নিজ থেকে কিছুই করতে পারেন না। পিতাকে যা করতে দেখেন কেবল তা-ই করতে পারেন, কারণ পিতা যা করেন পুত্রও তা-ই করেন।

20. পিতা পুত্রকে ভালবাসেন এবং তিনি নিজে যা কিছু করেন সমস্তই পুত্রকে দেখান। তিনি এগুলোর চেয়ে আরও মহৎ মহৎ কাজ পুত্রকে দেখাবেন, যেন পুত্রকে সেই সব কাজ করতে দেখে আপনারা আশ্চর্য হন।

21. পিতা যেমন মৃতদের জীবন দিয়ে উঠান ঠিক তেমনি পুত্রও যাকে ইচ্ছা করেন তাকে জীবন দেন।

22. পিতা কারও বিচার করেন না, কিন্তু সমস্ত বিচারের ভার পুত্রকে দিয়েছেন,

23. যেন পিতাকে যেমন সবাই সম্মান করে তেমনি পুত্রকেও সম্মান করে। পুত্রকে যে সম্মান করে না, যিনি তাঁকে পাঠিয়েছেন সেই পিতাকেও সে সম্মান করে না।

24. “আমি আপনাদের সত্যিই বলছি, আমার কথা যে শোনে এবং আমাকে যিনি পাঠিয়েছেন তাঁকে বিশ্বাস করে তার অনন্ত জীবন আছে। তাকে দোষী বলে স্থির করা হবে না; সে তো মৃত্যু থেকে জীবনে পার হয়ে গেছে।

25. আমি আপনাদের সত্যি বলছি, এমন সময় আসছে, বরং এখনই এসেছে, যখন মৃতেরা ঈশ্বরের পুত্রের গলার স্বর শুনবে এবং যারা শুনবে তারা জীবিত হবে।

26. এর কারণ হল, পিতা নিজে যেমন জীবনের অধিকারী তেমনি তিনি পুত্রকেও জীবনের অধিকারী হতে দিয়েছেন।

27. পিতা পুত্রকে মানুষের বিচার করবার অধিকার দিয়েছেন, কারণ তিনি মনুষ্যপুত্র।

28. এই কথা শুনে আশ্চর্য হবেন না, কারণ এমন সময় আসছে, যারা কবরে আছে তারা সবাই মনুষ্যপুত্রের গলার স্বর শুনে বের হয়ে আসবে।

29. যারা ভাল কাজ করেছে তারা জীবন পাবার জন্য উঠবে, আর যারা অন্যায় কাজ করে সময় কাটিয়েছে তারা শাস্তি পাবার জন্য উঠবে।

30. আমি নিজ থেকে কিছুই করতে পারি না; যেমন শুনি তেমনই বিচার করি। আমি ন্যায়ভাবে বিচার করি, কারণ আমি আমার ইচ্ছামত কাজ করতে চাই না কিন্তু যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁরই ইচ্ছামত কাজ করতে চাই।

প্রভু যীশুর বিষয়ে সাক্ষ্য

31. “আমিই যদি আমার নিজের পক্ষে সাক্ষ্য দিই তবে আমার সেই সাক্ষ্য সত্যি নয়।

32. অন্য একজন আছেন যিনি আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দিচ্ছেন, আর আমি জানি আমার বিষয়ে তিনি যে সাক্ষ্য দেন তা সত্যি।

33. আপনারা যোহনের কাছে জিজ্ঞাসা করে পাঠিয়েছিলেন, আর তিনি সত্যের পক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছেন।

34. অবশ্য আমি মানুষের সাক্ষ্যের উপর নির্ভর করি না, কিন্তু যেন আপনারা পাপ থেকে উদ্ধার পান সেইজন্য এই সব কথা বলছি।

35. যোহনই ছিলেন সেই জ্বলন্ত বাতি যা আলো দিচ্ছিল; আপনারা কিছু সময়ের জন্য তাঁর সেই আলোতে আনন্দ করতে রাজী হয়েছিলেন।

36. কিন্তু যোহনের সাক্ষ্যের চেয়ে আরও বড় সাক্ষ্য আমার আছে, কারণ পিতা আমাকে যে কাজগুলো করতে দিয়েছেন সেগুলোই আমি করছি। আর সেগুলো আমার বিষয়ে এই সাক্ষ্য দেয় যে, পিতাই আমাকে পাঠিয়েছেন।

37. সেই পিতা, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তিনি নিজেই আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আপনারা কখনও তাঁর স্বরও শোনেন নি, চেহারাও দেখেন নি।

38. তা ছাড়া তাঁর বাক্য আপনাদের অন্তরে থাকে না, কারণ তিনি যাঁকে পাঠিয়েছেন তাঁর উপর আপনারা বিশ্বাস করেন না।

39. আপনারা পবিত্র শাস্ত্র খুব মনোযোগ দিয়ে পড়েন, কারণ আপনারা মনে করেন তার দ্বারা অনন্ত জীবন পাবেন। কিন্তু সেই শাস্ত্র তো আমারই বিষয়ে সাক্ষ্য দেয়;

40. তবুও আপনারা জীবন পাবার জন্য আমার কাছে আসতে চান না।

41. “আমি মানুষের প্রশংসা পাবার চেষ্টা করি না,

42. কিন্তু আমি আপনাদের জানি। আমি জানি আপনাদের অন্তরে ঈশ্বরের প্রতি ভালবাসা নেই।

43. আমি আমার পিতার নামে এসেছি আর আপনারা আমাকে গ্রহণ করছেন না; কিন্তু অন্য কেউ যদি তার নিজের নামে আসে তাকে আপনারা গ্রহণ করবেন।

44. আপনারা একজন অন্যজনের কাছ থেকে প্রশংসা পাবার আশা করেন, কিন্তু যে প্রশংসা একমাত্র ঈশ্বরের কাছ থেকে পাওয়া যায় তার চেষ্টাও করেন না। এর পরে আপনারা কেমন করে বিশ্বাস করতে পারেন?

45. মনে করবেন না যে, পিতার কাছে আমি আপনাদের দোষী করব; কিন্তু যে মোশির উপরে আপনারা আশা করে আছেন সেই মোশিই আপনাদের দোষী করছেন।

46. যদি আপনারা মোশিকে বিশ্বাস করতেন তবে আমাকেও বিশ্বাস করতেন, কারণ মোশি তো আমারই বিষয়ে লিখেছেন।

47. কিন্তু যখন তাঁর লেখায়ই আপনারা বিশ্বাস করেন না তখন কেমন করে আমার কথায় বিশ্বাস করবেন?”