অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24
  25. 25
  26. 26
  27. 27
  28. 28

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

প্রেরিত্‌ 26 পবিত্র বাইবেল (SBCL)

1. তখন আগ্রিপ্প পৌলকে বললেন, “তোমার নিজের পক্ষে কথা বলবার জন্য তোমাকে অনুমতি দেওয়া গেল।”তখন পৌল হাত বাড়িয়ে দিয়ে নিজের পক্ষে এই কথা বললেন,

2. “হে রাজা আগ্রিপ্প, যিহূদীরা আমাকে যে সব দোষ দিয়েছে তার বিরুদ্ধে আপনার সামনে আজ আমার নিজের পক্ষে কথা বলবার সুযোগ পেয়েছি বলে আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি,

3. বিশেষ করে যখন যিহূদীদের চলতি নিয়ম এবং তর্কের বিষয়গুলো সম্বন্ধে আপনার ভাল করেই জানা আছে। এইজন্য ধৈর্য ধরে আমার কথা শুনতে আমি আপনাকে বিশেষ ভাবে অনুরোধ করছি।

4. “ছেলেবেলা থেকে, অর্থাৎ আমার জীবনের আরম্ভ থেকে আমার নিজের দেশের এবং পরে যিরূশালেমের লোকদের মধ্যে আমি কিভাবে জীবন কাটিয়েছি যিহূদীরা সবাই তা জানে।

5. তারা অনেক দিন ধরেই আমাকে চেনে এবং ইচ্ছা করলে এই সাক্ষ্য দিতে পারে যে, আমাদের ধর্মের ফরীশী নামে যে গোঁড়া দল আছে আমি সেই ফরীশীর জীবনই কাটিয়েছি।

6. ঈশ্বর আমার পূর্বপুরুষদের কাছে যে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন তাতে আমি আশা রাখি বলে এখন আমার বিচার করা হচ্ছে।

7. আমাদের বারো গোষ্ঠীর লোকেরা দিনরাত মন-প্রাণ দিয়ে ঈশ্বরের সেবা করে সেই প্রতিজ্ঞার পূর্ণতা দেখবার আশায় আছে। মহারাজ, সেই আশার জন্যই যিহূদীরা আমাকে দোষ দিচ্ছে।

8. ঈশ্বর যে মৃতদের জীবিত করেন এই কথা বিশ্বাসযোগ্য নয় বলে আপনারা কেন মনে করছেন?

9. “আমি নিজেই বিশ্বাস করতাম, নাসরতের যীশুর বিরুদ্ধে যা করা যায় তার সবই আমার করা উচিত,

10. আর ঠিক তা-ই আমি যিরূশালেমে করছিলাম। প্রধান পুরোহিতদের কাছ থেকে ক্ষমতা পেয়ে আমি খ্রীষ্টের উপর বিশ্বাসী অনেককে জেলে দিতাম এবং তাদের মেরে ফেলবার সময় তাদের বিরুদ্ধে ভোট দিতাম।

11. তাদের শাস্তি দেবার জন্য আমি প্রায়ই এক সমাজ- ঘর থেকে অন্য সমাজ-ঘরে যেতাম এবং যীশুর বিরুদ্ধে কথা বলবার জন্য আমি তাদের উপর জোর খাটাতাম। তাদের উপর আমার এত রাগ ছিল যে, তাদের উপর অত্যাচার করবার জন্য আমি বিদেশের শহরগুলোতে পর্যন্ত যেতাম।

12. “এইভাবে একবার প্রধান পুরোহিতদের কাছ থেকে ক্ষমতা ও আদেশ নিয়ে আমি দামেস্কে যাচ্ছিলাম।

13. মহারাজ, তখন বেলা প্রায় দুপুর। পথের মধ্যে সুর্য থেকেও উজ্জ্বল একটা আলো স্বর্গ থেকে আমার ও আমার সংগীদের চারদিকে জ্বলতে লাগল।

14. আমরা সবাই মাটিতে পড়ে গেলাম এবং আমি শুনলাম ইব্রীয় ভাষায় কে যেন আমাকে বলছেন, ‘শৌল, শৌল, কেন তুমি আমার উপর অত্যাচার করছ? কাঁটা বসানো লাঠির মুখে লাথি মেরে কি তুমি নিজের ক্ষতি করছ না?’

15. “তখন আমি বললাম, ‘প্রভু, আপনি কে?’

16. “প্রভু বললেন, ‘আমি যীশু, যাঁর উপর তুমি অত্যাচার করছ। এখন ওঠো, তোমার পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াও। সেবাকারী ও সাক্ষী হিসাবে তোমাকে নিযুক্ত করবার জন্য আমি তোমাকে দেখা দিলাম। তুমি আমাকে যেভাবে দেখলে এবং আমি তোমাকে যা দেখাব তা তুমি অন্যদের কাছে বলবে।

17-18. তোমার নিজের লোকদের ও অযিহূদীদের হাত থেকে আমি তোমাকে রক্ষা করব। তাদের চোখ খুলে দেবার জন্য ও অন্ধকার থেকে আলোতে এবং শয়তানের শক্তির হাত থেকে ঈশ্বরের কাছে ফিরিয়ে আনবার জন্য আমি তোমাকে তাদের কাছে পাঠাচ্ছি, যেন আমার উপর বিশ্বাসের ফলে তারা পাপের ক্ষমা পায় এবং ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে যাদের আলাদা করে রাখা হয়েছে তাদের মধ্যে স্থান পায়।’

19. “রাজা আগ্রিপ্প, এইজন্য স্বর্গ থেকে এই দর্শনের মধ্য দিয়ে আমাকে যা বলা হয়েছে তার অবাধ্য আমি হই নি।

20. যারা দামেস্কে আছে প্রথমে তাদের কাছে, তার পরে যারা যিরূশালেমে এবং সমস্ত যিহূদিয়া প্রদেশে আছে তাদের কাছে এবং অযিহূদীদের কাছেও আমি প্রচার করেছি যে, পাপ থেকে মন ফিরিয়ে ঈশ্বরের দিকে তাদের ফেরা উচিত, আর এমন কাজ করা উচিত যার দ্বারা প্রমাণ পাওয়া যায় যে, তারা মন ফিরিয়েছে।

21. এইজন্যই যিহূদীরা আমাকে উপাসনা-ঘরে ধরে মেরে ফেলবার চেষ্টা করেছিল।

22. কিন্তু ঈশ্বর আজ পর্যন্ত আমাকে সাহায্য করে আসছেন এবং সেইজন্যই আমি এখানে দাঁড়িয়ে ছোট-বড় সবার কাছে সাক্ষ্য দিচ্ছি। নবীরা এবং মোশি যা ঘটবার কথা বলে গেছেন তার বাইরে আমি কিছুই বলছি না।

23. সেই কথা হল এই যে, মশীহকে কষ্টভোগ করতে হবে এবং তাঁকেই মৃত্যু থেকে প্রথমে জীবিত হয়ে উঠে তাঁর নিজের জাতির লোকদের ও অযিহূদীদের কাছে আলোর রাজ্যের বিষয়ে ঘোষণা করতে হবে।”

24. পৌল এইভাবে যখন নিজের পক্ষে কথা বলছিলেন তখন ফীষ্ট তাঁকে বাধা দিয়ে চিৎকার করে বললেন, “পৌল, তুমি পাগল হয়ে গেছ। তুমি অনেক পড়াশোনা করেছ আর সেই পড়াশুনাই তোমাকে পাগল করে তুলেছে।”

25. তখন পৌল বললেন, “মাননীয় ফীষ্ট, আমি পাগল নই। আমি যা বলছি তা সত্যি এবং যুক্তিপূর্ণ।

26. রাজা তো এই সব বিষয় জানেন এবং আমি তাঁর সংগে খোলাখুলিই সব কথা বলতে পারি। আর এই কথা আমি নিশ্চয় জানি যে, এর কিছুই তাঁর চোখ এড়ায় নি, কারণ এই সব ঘটনা তো গোপনে ঘটে নি।

27. রাজা আগ্রিপ্প, আপনি কি নবীদের কথা বিশ্বাস করেন? আমি জানি আপনি করেন।”

28. তখন আগ্রিপ্প পৌলকে বললেন, “তুমি কি এত অল্প সময়ের মধ্যেই আমাকে খ্রিষ্িটয়ান করবার চেষ্টা করছ?”

29. পৌল বললেন, “সময় অল্প হোক বা বেশী হোক, আমি ঈশ্বরের কাছে এই প্রার্থনা করি যে, কেবল আপনি নন, কিন্তু যাঁরা আজ আমার কথা শুনছেন তাঁরা সবাই যেন আমার মত হন-কেবল এই শিকল ছাড়া।”

30. তখন রাজা উঠলেন এবং তাঁর সাথে সাথে প্রধান শাসনকর্তা ফীষ্ট ও বর্ণীকী এবং যাঁরা তাঁদের সংগে বসে ছিলেন সবাই উঠে দাঁড়ালেন।

31. তারপর তাঁরা সেই ঘর ছেড়ে চলে গেলেন এবং একে অন্যকে বলতে লাগলেন, “এই লোকটি মৃত্যুর শাস্তি পাবার বা জেল খাটবার মত কিছুই করে নি।”

32. আগ্রিপ্প ফীষ্টকে বললেন, “এই লোকটি যদি সম্রাটের কাছে আপীল না করত তবে তাকে ছেড়ে দেওয়া যেত।”