অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24
  25. 25
  26. 26
  27. 27
  28. 28

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

প্রেরিত্‌ 22 পবিত্র বাইবেল (SBCL)

1. “ভাইয়েরা ও পিতারা, এখন আমি আমার নিজের পক্ষে কথা বলি, শুনুন।”

2. লোকেরা তাঁকে ইব্রীয় ভাষায় কথা বলতে শুনে একেবারে চুপ হয়ে গেল।তখন পৌল বললেন,

3. “আমি একজন যিহূদী। কিলিকিয়ার তার্ষ শহরে আমার জন্ম, তবে আমি এই শহরেই বড় হয়েছি। গমলীয়েলের পায়ের কাছে বসে আমি আমাদের পূর্বপুরুষদের আইন-কানুন সম্পূর্ণভাবে শিক্ষালাভ করেছি। ঈশ্বর সম্বন্ধে আজ আপনারা যেমন আগ্রহ দেখাচ্ছেন আমি নিজেও তেমনি আগ্রহী ছিলাম।

4. যীশুর পথে যারা চলত আমি তাদের অত্যাচার করে অনেককে মেরে ফেলতাম আর পুরুষ ও স্ত্রীলোকদের ধরে জেলে দিতাম।

5. এই কথা যে সত্যি, তার সাক্ষী মহাপুরোহিত ও মহাসভার সবাই। এমন কি, আমি তাঁদের কাছ থেকে দামেস্ক শহরের ধর্ম-নেতাদের দেবার জন্য চিঠি নিয়েছিলাম এবং ঐ ধরনের লোকদের বন্দী হিসাবে যিরূশালেমে এনে শাস্তি দেবার জন্য সেখানে যাচ্ছিলাম।

6. “তখন বেলা প্রায় দুপুর। আমি দামেস্কের কাছাকাছি আসলে পর হঠাৎ আমার চারদিকে স্বর্গ থেকে একটা উজ্জ্বল আলো পড়ল।

7. আমি মাটিতে পড়ে গেলাম এবং শুনলাম কেউ যেন আমাকে বলছেন, ‘শৌল, শৌল, কেন তুমি আমার উপর অত্যাচার করছ?’

8. “আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ‘প্রভু, আপনি কে?’“তিনি বললেন, ‘আমি নাসরতের যীশু, যাঁর উপর তুমি অত্যাচার করছ।’

9. যারা আমার সংগে ছিল তারা সেই আলো দেখল, কিন্তু যিনি আমার সংগে কথা বলছিলেন তাঁর কথা তারা বুঝল না।

10. “তখন আমি বললাম, ‘প্রভু, আমি কি করব?’“প্রভু বললেন, ‘ওঠো, দামেস্কে যাও। তোমার জন্য যা ঠিক করে রাখা হয়েছে তা সেখানেই তোমাকে বলা হবে।’

11. আমার সংগীরা হাত ধরে আমাকে দামেস্কে নিয়ে চলল, কারণ সেই উজ্জ্বল আলোতে আমি অন্ধ হয়ে গিয়েছিলাম।

12. “পরে অননিয় নামে একজন লোক আমার কাছে আসলেন। তিনি মোশির আইন-কানুন ভক্তির সংগে পালন করতেন, আর সেখানকার সব যিহূদীরা তাঁকে খুব সম্মান করত।

13. তিনি আমার পাশে এসে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘ভাই শৌল, তোমার দেখবার শক্তি ফিরে আসুক।’ আর তখনই আমি তাঁকে দেখতে পেলাম।

14. “তখন অননিয় বললেন, ‘আমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর তোমাকে বেছে নিয়েছেন যেন তুমি তাঁর ইচ্ছা জানতে পার, আর সেই ন্যায়বান লোককে, অর্থাৎ যীশু খ্রীষ্টকে দেখতে পাও এবং তাঁর মুখের কথা শুনতে পাও।

15. তুমি তাঁরই সাক্ষী হবে এবং যা দেখেছ আর শুনেছ সব মানুষের কাছে তা বলবে।

16. এখন তুমি কেন দেরি করছ? উঠে বাপ্তিস্ম গ্রহণ কর এবং পাপ থেকে উদ্ধার পাবার জন্য যীশুকে ডেকে তোমার সব পাপ ধুয়ে ফেল।’

17. “পরে আমি যিরূশালেমে ফিরে এসে যখন একদিন উপাসনা-ঘরে প্রার্থনা করছিলাম তখন আমি তন্দ্রার মত অবস্থায় পড়লাম।

18. সেই অবস্থায় আমি দেখলাম প্রভু আমার সংগে কথা বলছেন। তিনি আমাকে বললেন, ‘তাড়াতাড়ি কর, এখনই যিরূশালেম ছেড়ে চলে যাও, কারণ আমার বিষয়ে তোমার সাক্ষ্য লোকে গ্রহণ করবে না।’

19. “আমি বললাম, ‘প্রভু, এই লোকেরা জানে, যারা তোমার উপর বিশ্বাস করত তাদের মারধর করে জেলে দেবার জন্য আমি এক সমাজ-ঘর থেকে অন্য সমাজ-ঘরে যেতাম।

20. যখন তোমার সাক্ষী স্তিফানকে খুন করা হচ্ছিল তখন আমি সেখানে দাঁড়িয়ে সায় দিচ্ছিলাম, আর যারা তাঁকে খুন করছিল তাদের কাপড়-চোপড় পাহারা দিচ্ছিলাম।’

21. “তখন প্রভু আমাকে বললেন, ‘তুমি যাও, আমি তোমাকে দূরে অযিহূদীদের কাছে পাঠাব।’ ”

22. লোকেরা এতক্ষণ পর্যন্ত পৌলের কথা শুনছিল, কিন্তু যখন তিনি অযিহূদীদের কথা বললেন তখন লোকেরা জোরে চিৎকার করে বলতে লাগল, “ওকে পৃথিবী থেকে দূর করে দাও; ও বেঁচে থাকবার উপযুক্ত নয়।”

23. লোকেরা যখন চিৎকার করছিল এবং কাপড়-চোপড় ছুঁড়ে আকাশে ধুলা ছড়াচ্ছিল,

24. তখন প্রধান সেনাপতি পৌলকে সেনানিবাসে নিয়ে যাবার হুকুম দিলেন। কেন লোকেরা পৌলের বিরুদ্ধে এইভাবে চিৎকার করছে তা জানবার জন্য তিনি তাঁকে চাবুক মেরে জেরা করতে আদেশ দিলেন।

25. পৌলকে যখন চাবুক মারবার জন্য বাঁধা হল, তখন যে শতপতি সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন পৌল তাঁকে বললেন, “যাকে দোষী বলে এখনও ঠিক করা হয় নি এমন একজন রোমীয়কে চাবুক মারা কি আপনাদের পক্ষে আইন মত কাজ হচ্ছে?”

26. এই কথা শুনে সেই শতপতি প্রধান সেনাপতির কাছে সেই খবর দিয়ে বললেন, “আপনি কি করতে যাচ্ছেন? এই লোকটি তো রোমীয়।”

27. তখন প্রধান সেনাপতি পৌলের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমাকে বল দেখি, তুমি কি রোমীয়?”পৌল বললেন, “হ্যাঁ।”

28. প্রধান সেনাপতি বললেন, “অনেক টাকা-পয়সা দিয়ে রোমীয় হবার অধিকার আমি কিনেছি।”পৌল বললেন, “কিন্তু আমি রোমীয় হয়ে জন্মেছি।”

29. এই কথা শুনে যারা তাঁকে জেরা করতে যাচ্ছিল তারা তখনই চলে গেল। যখন প্রধান সেনাপতি বুঝতে পারলেন যে, তিনি একজন রোমীয়কে বেঁধেছিলেন তখন তিনি ভয় পেলেন।

মহাসভার সামনে পৌল

30. যিহূদীরা কেন পৌলকে দোষ দিচ্ছে তা ঠিকভাবে জানবার জন্য পরের দিন প্রধান সেনাপতি পৌলের বাঁধন খুলে দিলেন এবং প্রধান পুরোহিতদের ও মহাসভার লোকদের একসংগে মিলিত হবার আদেশ দিলেন। তারপর তিনি পৌলকে নিয়ে এসে তাঁদের সামনে দাঁড় করালেন।