অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

গালাতীয় 3 পবিত্র বাইবেল (SBCL)

বিশ্বাস, না আইন-কানুন?

1. ওহে অবুঝ গালাতীয়েরা! কে তোমাদের যাদু করেছে? তোমাদের কাছে তো স্পষ্টভাবেই প্রচার করা হয়েছে যে, যীশু খ্রীষ্টকে ক্রুশে দেওয়া হয়েছিল।

2. আমি কেবল তোমাদের কাছ থেকে জানতে চাই, তোমরা আইন- কানুন পালন করে কি পবিত্র আত্মাকে পেয়েছিলে, না সুখবর শুনে বিশ্বাস করে পেয়েছিলে?

3. তোমরা কি এতই অবুঝ? পবিত্র আত্মার মধ্য দিয়ে নতুন জীবন আরম্ভ করে কি এখন নিজের চেষ্টায় পূর্ণতা লাভ করতে যাচ্ছ?

4. তোমরা কি মিথ্যাই এত দুঃখভোগ করেছ? আমি আশা করি তোমাদের সেই দুঃখভোগ অনর্থক হয় নি।

5. ঈশ্বর কেন তোমাদের পবিত্র আত্মা দিয়েছেন এবং তোমাদের মধ্যে এত আশ্চর্য কাজ করছেন তা ভেবে দেখ। তোমরা আইন-কানুন পালন করছ বলেই কি তিনি এই সব করছেন, নাকি সুখবর শুনে বিশ্বাস করেছ বলে করছেন?

6. অব্রাহামের কথা ভেবে দেখ। পবিত্র শাস্ত্রে লেখা আছে, “অব্রাহাম ঈশ্বরের কথা বিশ্বাস করলেন আর ঈশ্বর সেইজন্য তাঁকে নির্দোষ বলে গ্রহণ করলেন।”

7. এইজন্য তোমরা এই কথা জেনো, যারা ঈশ্বরকে বিশ্বাস করে কেবল তারাই অব্রাহামের বংশধর।

8. পবিত্র শাস্ত্রে আগেই লেখা হয়েছিল, বিশ্বাসের জন্যই ঈশ্বর অযিহূদীদের নির্দোষ বলে গ্রহণ করবেন। অব্রাহামের কাছে এই কথা বলে আগেই সুখবর জানানো হয়েছিল, “তোমার মধ্য দিয়েই সব জাতি আশীর্বাদ পাবে।”

9. তাহলে দেখা যায়, ঈশ্বরকে বিশ্বাস করে অব্রাহাম যেমন আশীর্বাদ পেয়েছিলেন ঠিক তেমনি তাঁর পর থেকে যারা ঈশ্বরকে বিশ্বাস করছে তারাও সেই আশীর্বাদ পাচ্ছে।

10. পবিত্র শাস্ত্রে লেখা আছে, “সেই লোক অভিশপ্ত, যে আইন-কানুনে লেখা প্রত্যেকটি কথা পালন করে না।” তাহলে দেখা যায়, যারা আইন-কানুন পালন করবার উপর নির্ভর করে তাদের সকলের উপরে এই অভিশাপ রয়েছে।

11. তা ছাড়া এটাও পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে যে, আইন-কানুন পালন করবার জন্য ঈশ্বর কাউকে নির্দোষ বলে গ্রহণ করেন না, কারণ পবিত্র শাস্ত্রের কথামত, “যাকে নির্দোষ বলে গ্রহণ করা হয় সে বিশ্বাসের মধ্য দিয়েই জীবন পাবে।” বিশ্বাসের সংগে আইন-কানুনের কোন সম্বন্ধ নেই।

12. আইন-কানুন বরং বলে, “যে লোক আইন-কানুন মতে চলে সে তার মধ্য দিয়েই জীবন পাবে।”

13. আইন-কানুন অমান্য করবার দরুন যে অভিশাপ আমাদের উপর ছিল, খ্রীষ্ট সেই অভিশাপ নিজের উপর নিয়ে আমাদের মুক্ত করেছেন। পবিত্র শাস্ত্রে এই কথা লেখা আছে, “যাকে গাছে টাংগানো হয় সে অভিশপ্ত।”

14. ঈশ্বর অব্রাহামকে যে আশীর্বাদ করেছিলেন সেই আশীর্বাদ খ্রীষ্ট যীশুর মধ্য দিয়ে যেন অযিহূদীরাও পেতে পারে, আর যেন আমরা বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে প্রতিজ্ঞা-করা পবিত্র আত্মাকে পেতে পারি, সেইজন্যই খ্রীষ্ট সেই অভিশাপ নিজের উপর নিয়েছিলেন।

আইন-কানুন ও প্রতিজ্ঞা

15. ভাইয়েরা, আমি একটা সাধারণ কথা দিয়ে বিষয়টা বুঝাচ্ছি। একবার যখন মানুষের মধ্যে কোন চুক্তি পাকা করে ফেলা হয় তখন সেই চুক্তি কেউ বাতিল করতে পারে না বা তার সংগে কিছু যোগও দিতে পারে না।

16. অব্রাহাম ও তাঁর বংশের কাছে ঈশ্বর প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। পবিত্র শাস্ত্র বলে নি, “বংশগুলোর কাছে,” অর্থাৎ অনেক বংশের কাছে, বরং বলেছে, “তোমার বংশের কাছে,” অর্থাৎ একটি বংশের কাছে, আর সেই বংশের বংশধর হলেন খ্রীষ্ট।

17. আমার কথার মানে হল, ঈশ্বর অব্রাহামের সময়ে একটা প্রতিজ্ঞাপুর্ণ ব্যবস্থা স্থাপন করেছিলেন। তার চারশো ত্রিশ বছর পরে আইন-কানুন দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তাতে আগের সেই ব্যবস্থা বাতিল হয়ে গেল না; কাজেই তার প্রতিজ্ঞা টিকেই রইল।

18. ঈশ্বরের আশীর্বাদ পাওয়া যদি আইন-কানুন পালনের উপর নির্ভর করে তাহলে তো আর প্রতিজ্ঞার উপর তা নির্ভর করছে না। কিন্তু ঈশ্বর দয়া করে একটা প্রতিজ্ঞার মধ্য দিয়ে অব্রাহামকে আশীর্বাদ করেছিলেন।

19. তাহলে আইন-কানুন কেন দেওয়া হয়েছিল? মানুষ পাপ করতে থাকবার দরুন ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞার সংগে আইন-কানুন যুক্ত করা হয়েছিল। যাঁর বিষয় ঈশ্বর প্রতিজ্ঞা করেছিলেন অব্রাহামের সেই বংশধর না আসা পর্যন্ত বহাল থাকবার জন্যই আইন-কানুন দেওয়া হয়েছিল। স্বর্গদূতদের মধ্য দিয়ে একজন মধ্যস্থের দ্বারা এই আইন-কানুন বহাল করা হয়েছিল।

20. কিন্তু কেবল একজন থাকলে মধ্যস্থের দরকার হয় না; আর ঈশ্বর মাত্র একজনই।

21. তাহলে আইন-কানুন কি ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাগুলোর বিরুদ্ধে? নিশ্চয়ই না। ঈশ্বর যদি এমন আইন-কানুন দিতেন যা জীবন দিতে পারে তবে তা পালনের দ্বারা নিশ্চয় মানুষ ঈশ্বরের গ্রহণযোগ্য হত।

22. কিন্তু পবিত্র শাস্ত্র সব মানুষকেই পাপের জন্য দোষী বলে স্থির করেছে, যেন যীশু খ্রীষ্টের উপর যারা বিশ্বাস করে তারা তাদের সেই বিশ্বাসের ফলে প্রতিজ্ঞা- করা আশীর্বাদ পেতে পারে।

23. বিশ্বাস আসবার আগে আইন-কানুন আমাদের পাহারা দিয়ে রেখেছিল এবং যতদিন না বিশ্বাস প্রকাশিত হল ততদিন পর্যন্ত আমাদের বন্দী করে রেখেছিল।

24. তাহলে দেখা যায়, খ্রীষ্টের কাছে পৌঁছে দেবার জন্য এই আইন-কানুনই আমাদের পরিচালনাকারী, যেন বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে আমাদের নির্দোষ বলে গ্রহণ করা হয়।

25. কিন্তু এখন বিশ্বাস এসেছে বলে আমরা আর আইন-কানুনের পরিচালনার অধীন নই।

ঈশ্বরের সন্তানেরা

26. খ্রীষ্ট যীশুর উপর বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে তোমরা সবাই ঈশ্বরের সন্তান হয়েছ,

27. কারণ তোমাদের যাদের খ্রীষ্টের মধ্যে বাপ্তিস্ম হয়েছে, তোমরা কাপড়ের মত করে খ্রীষ্টকে দিয়ে নিজেদের ঢেকে ফেলেছ।

28. যিহূদী ও অযিহূদীর মধ্যে, দাস ও স্বাধীন লোকের মধ্যে, স্ত্রীলোক ও পুরুষের মধ্যে কোন তফাৎ নেই, কারণ খ্রীষ্ট যীশুর সংগে যুক্ত হয়ে তোমরা সবাই এক হয়েছ।

29. তোমরা যখন খ্রীষ্টের হয়েছ তখন অব্রাহামের বংশধরও হয়েছ। আর ঈশ্বর যা দেবার প্রতিজ্ঞা অব্রাহামের কাছে করেছিলেন তোমরাও সেই সবের অধিকারী হয়েছ।