ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

বিচারকর্তৃগণ 16:13-29 পবিত্র বাইবেল (SBCL)

13. দলীলা তখন শিম্‌শোনকে বলল, “তুমি এই পর্যন্ত আমার কাছে মিথ্যা কথা বলে আমাকে বোকা বানিয়েছ। কি দিয়ে তোমাকে বাঁধা যায় তা আমাকে ঠিক করে বল।”উত্তরে শিম্‌শোন বললেন, “আমার মাথার সাত গোছা চুল যদি তুমি তাঁতে বোনো তবে তা সম্ভব হবে।”

14. তখন দলীলা তাঁর চুল তাঁতে বুনে গোঁজের সংগে আঁটকে রেখে তাঁকে বলল, “শিম্‌শোন, পলেষ্টীয়েরা তোমাকে ধরতে এসেছে।” তখন শিম্‌শোন ঘুম থেকে জেগে উঠে গোঁজ আর তাঁতটা উপ্‌ড়ে ফেললেন।

15. এতে দলীলা তাঁকে বলল, “কেমন করে তুমি আমাকে বলতে পার যে, তুমি আমাকে ভালবাস? তোমার মন তো আমার উপরে নেই। এই নিয়ে তৃতীয়বার তুমি আমাকে বোকা বানালে। তোমার এই মহাশক্তির গোপন কথাটা আমাকে জানালে না।”

16. এইভাবে দিনের পর দিন সে তার কথা দিয়ে তাঁকে এমনভাবে জ্বালাতে লাগল যে, তাঁর জীবনের উপর একটা বিরক্তি এসে গেল।

17. কাজেই তিনি তাকে সব কথা খুলে বললেন। তিনি বললেন, “আমার মাথায় কখনও ক্ষুর দেওয়া হয় নি। জন্ম থেকেই আমি ঈশ্বরের উদ্দেশে একজন নাসরীয়। আমার মাথা কামানো হলে আমার শক্তি আমাকে ছেড়ে যাবে। তাতে আমি অন্য যে কোন লোকের মতই দুর্বল হয়ে পড়ব।”

18. দলীলা যখন বুঝল যে, তিনি তাকে সব কথা খুলে বলেছেন তখন সে পলেষ্টীয় শাসনকর্তাদের কাছে এই বলে খবর পাঠাল, “আপনারা আর একবার আসুন। সে আমাকে সব কথা খুলে বলেছে।” কাজেই পলেষ্টীয়দের শাসনকর্তারা রূপা সংগে নিয়ে আসলেন।

19. দলীলা শিম্‌শোনকে তার কোলে ঘুম পাড়াল এবং তাঁর সাত গোছা চুল কামিয়ে ফেলবার জন্য একজন লোককে ডাকল। এইভাবে সে তাঁকে কষ্টের মধ্যে ফেলল এবং তাঁর শক্তিও তাঁকে ছেড়ে গেল।

20. তারপর দলীলা তাঁকে বলল, “শিম্‌শোন, পলেষ্টীয়েরা তোমাকে ধরতে এসেছে।” শিম্‌শোন ঘুম থেকে জেগে উঠে ভাবলেন যে, তিনি আগের মতই বাইরে যাবেন এবং ঝাড়া দিয়ে নিজেকে মুক্ত করে নেবেন। কিন্তু তিনি জানতেন না যে, সদাপ্রভু তাঁকে ছেড়ে চলে গেছেন।

21. তখন পলেষ্টীয়েরা তাঁকে ধরে তাঁর চোখ দু’টা তুলে ফেলল এবং তাঁকে গাজাতে নিয়ে গেল। তারা তাঁকে ব্রোঞ্জের শিকল দিয়ে বাঁধল এবং জেলখানার মধ্যে তাঁকে দিয়ে যাঁতা ঘুরাবার কাজ করাতে লাগল।

22. কিন্তু তাঁর মাথার চুল কামিয়ে ফেলবার পর আবার তা গজাতে লাগল।

23. এর পর পলেষ্টীয়দের শাসনকর্তারা তাঁদের দেবতা দাগোনের কাছে একটা মস্ত বড় উৎসর্গের অনুষ্ঠান করে আনন্দ করবার জন্য এক জায়গায় জড়ো হলেন। তাঁরা বললেন, “আমাদের দেবতা আমাদের শত্রু শিম্‌শোনকে আমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন।”

24. লোকেরা শিম্‌শোনকে দেখে এই কথা বলে তাদের দেবতার প্রশংসা করতে লাগল, “আমাদের দেবতা আমাদের হাতে আমাদের শত্রুকে তুলে দিয়েছেন; সে আমাদের জমি নষ্ট করেছে আর আমাদের অনেক লোককে মেরে ফেলেছে।”

25. তারপর তারা আনন্দে মেতে উঠে এই বলে চিৎকার করল, “শিম্‌শোনকে বের করে আনা হোক; আমরা তামাশা দেখব।” কাজেই তারা জেলখানা থেকে শিম্‌শোনকে বের করে আনল আর শিম্‌শোন তাদের তামাশা দেখাতে লাগলেন।তারা শিম্‌শোনকে থামগুলোর মাঝখানে দাঁড় করাল।

26. যে ছেলেটি তাঁর হাত ধরে ছিল শিম্‌শোন তাকে বললেন, “যে থামগুলোর উপর মন্দিরটা দাঁড়িয়ে আছে সেগুলো আমাকে ছুঁতে দাও যাতে আমি সেখানে হেলান দিতে পারি।”

27. সেই মন্দিরে অনেক পুরুষ ও স্ত্রীলোক জমা হয়েছিল, আর পলেষ্টীয়দের সমস্ত শাসনকর্তারাও সেখানে ছিলেন। ছাদের উপর থেকে প্রায় তিন হাজার পুরুষ ও স্ত্রীলোক শিম্‌শোনের তামাশা দেখছিল।

28. তখন শিম্‌শোন সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করে বললেন, “হে প্রভু সদাপ্রভু, আমার কথা একবার মনে কর। হে ঈশ্বর, দয়া করে আর একটিবার মাত্র আমাকে শক্তি দাও যাতে আমার দু’টা চোখের জন্য একবারেই আমি পলেষ্টীয়দের উপর প্রতিশোধ নিতে পারি।”

29. মাঝখানে যে দু’টা থামের উপর মন্দিরটা দাঁড়িয়ে ছিল শিম্‌শোন সেই দু’টা আঁকড়ে ধরলেন। তিনি ডান হাতটা একটা থামের উপর এবং বাঁ হাতটা অন্য থামের উপরে রেখে নিজের ভার থামগুলোর উপর দিলেন।

সম্পূর্ণ অধ্যায় পড়ুন বিচারকর্তৃগণ 16