অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24
  25. 25
  26. 26
  27. 27
  28. 28
  29. 29
  30. 30
  31. 31
  32. 32
  33. 33
  34. 34
  35. 35
  36. 36
  37. 37
  38. 38
  39. 39
  40. 40
  41. 41
  42. 42
  43. 43
  44. 44
  45. 45
  46. 46
  47. 47
  48. 48
  49. 49
  50. 50

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

আদিপুস্তক 29 পবিত্র বাইবেল (SBCL)

লাবনের বাড়ীতে যাকোব

1. পরে যাকোব চলতে চলতে পূর্বদেশীয় লোকদের জায়গায় গিয়ে উপস্থিত হলেন।

2. সেখানে চারদিকে তাকিয়ে তিনি মাঠের মধ্যে একটা কূয়া দেখতে পেলেন। সেই কূয়ার পাশে ভেড়ার তিনটা পাল শুয়ে ছিল। রাখালেরা সেখান থেকেই তাদের জল খাওয়াত। কূয়াটার মুখে খুব বড় একটা পাথর বসানো ছিল।

3. যখন সমস্ত ভেড়ার পাল জড়ো হত তখন রাখালেরা কূয়ার মুখ থেকে পাথরটা সরিয়ে দিয়ে ভেড়াগুলোকে জল খাওয়াত। তারপর পাথরটা আবার কূয়ার মুখে বসিয়ে রাখত।

4. যাকোব রাখালদের জিজ্ঞাসা করলেন, “ভাইয়েরা, আপনারা কোথাকার লোক?”তারা বলল, “হারণ শহরের।”

5. যাকোব তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনারা কি নাহোরের নাতি লাবনকে চেনেন?”তারা বলল, “হ্যাঁ, চিনি।”

6. যাকোব তাদের বললেন, “তিনি কি ভাল আছেন?”তারা বলল, “হ্যাঁ, তিনি ভালই আছেন। ঐ তো তাঁর মেয়ে রাহেল ভেড়ার পাল নিয়ে আসছে।”

7. যাকোব বললেন, “দেখুন, বেলা পড়তে এখনও অনেক দেরি আছে। সব পশু এক জায়গায় জড়ো হওয়ার সময় এখনও হয় নি। আপনারা বরং আপনাদের ভেড়াগুলোকে জল খাইয়ে আবার চরাতে নিয়ে যান।”

8. কিন্তু তারা বলল, “না, আমাদের পক্ষে তা সম্ভব নয়। সব পশুর পাল একসংগে জড়ো হলে পর কূয়ার মুখ থেকে পাথরটা সরানো হবে, আর তখন আমরা ভেড়াগুলোকে জল খাওয়াতে পারব।”

9. যাকোব তখনও সেই লোকদের সংগে কথা বলছেন এমন সময় রাহেল তাঁর বাবার ভেড়াগুলো নিয়ে সেখানে আসলেন, কারণ তিনি সেই পাল চরাতেন।

10. যাকোব তাঁর মামা লাবনের মেয়ে ও তাঁর ভেড়ার পাল দেখে কূয়ার কাছে গেলেন এবং কূয়ার মুখ থেকে পাথরটা সরিয়ে দিয়ে ভেড়াগুলোকে জল খাওয়ালেন।

11. তারপর তিনি রাহেলকে চুম্বন করে জোরে জোরে কাঁদতে লাগলেন।

12. তিনি রাহেলকে জানালেন যে, তিনি তাঁর বাবার আত্মীয়, রিবিকার ছেলে। এই কথা শুনে রাহেল দৌড়ে গিয়ে তাঁর বাবাকে সেই খবর দিলেন।

13. লাবন তাঁর বোনের ছেলে যাকোবের আসবার খবর পেয়ে দৌড়ে তাঁর সংগে দেখা করতে গেলেন। তিনি তাঁকে জড়িয়ে ধরে চুম্বন করলেন এবং তাঁকে নিজের বাড়ীতে নিয়ে গেলেন। তখন যাকোব লাবনকে তাঁর আসবার সব কথা জানালেন।

14. লাবন তাঁকে বললেন, “সত্যিই আমাদের গায়ে একই রক্ত বইছে।” এর পর যাকোব লাবনের বাড়ীতে এক মাস কাটালেন।

লেয়া ও রাহেলের জন্য যাকোবের পরিশ্রম

15. একদিন লাবন বললেন, “তুমি আমার আত্মীয় বলেই কি বিনা বেতনে আমার কাজ করবে? তোমাকে কি দিতে হবে আমাকে বল।”

16. লাবনের দু’টি মেয়ে ছিল। বড়টির নাম লেয়া আর ছোটটির নাম রাহেল।

17. লেয়ার থাকবার মধ্যে ছিল শুধু দু’টি সুন্দর চোখ, কিন্তু রাহেলের দেহের গড়ন ও চেহারা সবই ছিল সুন্দর।

18. যাকোব রাহেলকে ভালবাসতেন বলে তিনি বললেন, “আপনার ছোট মেয়ে রাহেলের জন্য সাত বছর আমি আপনার কাজ করব।”

19. লাবন বললেন, “রাহেলকে অন্য কোন লোকের হাতে দেবার চেয়ে তোমার হাতে দেওয়াই ভাল। তুমি আমার কাছেই থাক।”

20. এর পর যাকোব রাহেলের জন্য সাত বছর কাজ করলেন। যাকোব রাহেলকে ভালবাসতেন বলে সেই বছরগুলো তাঁর কাছে মাত্র কয়েক দিন বলে মনে হল।

21. তারপর যাকোব লাবনকে বললেন, “আমার কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। যাঁর জন্য আমি কাজ করেছি এবার তাঁকে আমার হাতে তুলে দিন যেন তাঁকে নিয়ে আমি বাস করতে পারি।”

22. তখন লাবন সেই এলাকার সব লোকদের ডেকে একটা ভোজ দিলেন।

23. পরে রাত হলে তিনি তাঁর মেয়ে লেয়াকে যাকোবের কাছে দিয়ে আসলেন, আর যাকোবও তাঁর সংগে থাকলেন।

24. লাবন তাঁর দাসী সিল্পাকেও লেয়ার দাসী হিসাবে দিয়েছিলেন।

25. সকাল হলে পর যাকোব আশ্চর্য হয়ে দেখলেন যে, তিনি লেয়া। সেইজন্য তিনি লাবনকে বললেন, “আপনি আমার সংগে এ কি রকম ব্যবহার করলেন? এতদিন কি আমি রাহেলের জন্যই আপনার কাজ করি নি? তবে কেন আপনি আমাকে ঠকালেন?”

26. লাবন বললেন, “বড় মেয়ের আগে ছোট মেয়ের বিয়ে দেওয়া আমাদের দেশের নিয়ম নয়।

27. তুমি এই বিয়ের উৎসব-সপ্তাটা পার হতে দাও। তারপর অন্য মেয়েটিকেও তোমাকে দেওয়া হবে। তবে তার জন্য তোমাকে আরও সাত বছর আমার কাজ করতে হবে।”

28. যাকোব তাঁর কথা মেনে নিয়ে সেই উৎসব-সপ্তাটা শেষ করলেন। তারপর লাবন তাঁর মেয়ে রাহেলকেও যাকোবের সংগে বিয়ে দিলেন,

29. আর তাঁর দাসী বিল্‌হাকে রাহেলের দাসী হিসাবে দিলেন।

30. যাকোব রাহেলের সংগেও থাকলেন। তিনি লেয়ার চেয়ে রাহেলকে বেশী ভালবাসতেন। এর পর তিনি আরও সাত বছর লাবনের অধীনে কাজ করলেন।

যাকোবের সন্তানেরা

31. লেয়াকে অবহেলা করা হচ্ছে দেখে সদাপ্রভু তাঁকে গর্ভধারণ করবার ক্ষমতা দিলেন, কিন্তু রাহেল বন্ধ্যা হয়ে রইলেন।

32. লেয়া গর্ভবতী হলেন এবং তাঁর একটি ছেলে হল। তিনি ছেলেটির নাম রাখলেন রূবেণ (যার মানে “ঐ দেখ, একটি ছেলে”), কারণ তিনি বলেছিলেন, “সদাপ্রভু আমার দুঃখ দেখেছেন, তাই এখন থেকে আমার স্বামী নিশ্চয়ই আমাকে ভালবাসবেন।”

33. এর পর লেয়া আবার গর্ভবতী হলেন এবং তাঁর আর একটি ছেলে হল। তিনি ছেলেটির নাম রাখলেন শিমিয়োন (যার মানে “তিনি শোনেন”), কারণ তিনি বলেছিলেন, “আমাকে অবহেলা করবার কথা সদাপ্রভুর কানে গিয়ে পৌঁছেছে, সেইজন্য তিনি আমাকে এই ছেলেটিও দিলেন।”

34. তার পরে তিনি আবার গর্ভবতী হলেন এবং তাঁর আর একটি ছেলে হল। তিনি বললেন, “এইবার আমার স্বামী আমার সংগে যুক্ত হবেন, কারণ আমি তাঁর তিনটি ছেলে গর্ভে ধারণ করেছি।” এই বলে তিনি ছেলেটির নাম রাখলেন লেবি (যার মানে “যুক্ত”)।

35. পরে তিনি আবার গর্ভবতী হলেন এবং তাঁর আর একটি ছেলে হল। তিনি বললেন, “এইবার আমি সদাপ্রভুর গৌরব করব।” তাই তিনি ছেলেটির নাম রাখলেন যিহূদা (যার মানে “গৌরব”)। তারপর কিছুকালের জন্য তাঁর আর কোন ছেলেমেয়ে হয় নি।