অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24
  25. 25
  26. 26
  27. 27
  28. 28
  29. 29
  30. 30
  31. 31
  32. 32
  33. 33
  34. 34
  35. 35
  36. 36
  37. 37
  38. 38
  39. 39
  40. 40
  41. 41
  42. 42
  43. 43
  44. 44
  45. 45
  46. 46
  47. 47
  48. 48
  49. 49
  50. 50

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

আদিপুস্তক 21 পবিত্র বাইবেল (SBCL)

ইস্‌হাকের জন্ম

1. সদাপ্রভু তাঁর কথামতই সারার দিকে মনোযোগ দিলেন এবং তিনি তাঁর জন্য যা করবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন তা করলেন।

2. এতে সারা গর্ভবতী হলেন। অব্রাহামের বুড়ো বয়সে সারার গর্ভে তাঁর ছেলের জন্ম হল। ঈশ্বর যে সময়ের কথা বলেছিলেন সেই সময়েই তার জন্ম হল।

3. অব্রাহাম সারার গর্ভের এই সন্তানের নাম রাখলেন ইস্‌হাক।

4. ঈশ্বরের আদেশ অনুসারে অব্রাহাম আট দিনের দিন তাঁর ছেলে ইস্‌হাকের সুন্নত করালেন।

5. অব্রাহামের বয়স যখন একশো বছর তখন তাঁর ছেলে ইস্‌হাকের জন্ম হয়েছিল।

6. সারা বলেছিলেন, “ঈশ্বর আমার মুখে হাসি ফুটালেন, আর সেই কথা শুনে অন্যের মুখেও হাসি ফুটবে।”

7. তিনি আরও বলেছিলেন, “সারা যে সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াবে এই কথা এর আগে কে অব্রাহামকে বলতে পারত? অথচ তাঁর এই বুড়ো বয়সেই তাঁর সন্তান আমার কোলে আসল।”

হাগার ও ইশ্মায়েলকে বের করে দেওয়া

8. ইস্‌হাক বড় হলে পর যেদিন তাকে মায়ের দুধ ছাড়ানো হল সেই দিন অব্রাহাম একটা বড় ভোজ দিলেন।

9. সারা দেখলেন, মিসরীয় হাগারের গর্ভে অব্রাহামের যে সন্তানটি জন্মেছে সে ইস্‌হাককে নিয়ে তামাশা করছে।

10. এই অবস্থা দেখে তিনি অব্রাহামকে বললেন, “ছেলে সুদ্ধ ঐ দাসীকে বের করে দাও, কারণ ঐ ছেলে আমার ইস্‌হাকের সংগে বিষয়-সম্পত্তির অধিকারী হতে পারবে না।”

11. ছেলে ইশ্মায়েলের এই ব্যাপার নিয়ে অব্রাহামের মনের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গেল।

12. কিন্তু ঈশ্বর তাঁকে বললেন, “তোমার দাসী ও তার ছেলেটির কথা ভেবে তুমি মন খারাপ কোরো না। সারা তোমাকে যা বলছে তুমি তা-ই কর, কারণ ইস্‌হাকের বংশকেই তোমার বংশ বলে ধরা হবে।

13. তবে সেই দাসীর ছেলের মধ্য দিয়েও আমি একটা জাতি গড়ে তুলব, কারণ সে-ও তো তোমার সন্তান।”

14. তখন অব্রাহাম খুব ভোরে উঠে কিছু খাবার আর জলে ভরা একটা চামড়ার থলি হাগারের কাঁধে তুলে দিলেন। তারপর ছেলেটিকে তার হাতে দিয়ে তাকে বিদায় করে দিলেন। সেখান থেকে বের হয়ে হাগার বের্‌-শেবার মরু-এলাকায় ঘুরে বেড়াতে লাগল।

15. থলির জল যখন ফুরিয়ে গেল তখন সে ছেলেটিকে একটা ঝোপের তলায় শুইয়ে রাখল।

16. তারপর একটা তীর ছুঁড়লে যতদূর যায় আন্দাজ ততটা দূরে গিয়ে সে বসে রইল। “ছেলেটির মৃত্যু যেন আমাকে দেখতে না হয়,” মনে মনে এই কথা বলে সেখানে বসেই সে জোরে জোরে কাঁদতে লাগল।

17. ছেলেটির কান্না কিন্তু ঈশ্বরের কানে গিয়ে পৌঁছাল। তখন ঈশ্বরের দূত স্বর্গ থেকে হাগারকে ডেকে বললেন, “হাগার, তোমার কি হয়েছে? ভয় কোরো না, কারণ ছেলেটি যেখানে আছে সেখান থেকেই তার কান্না ঈশ্বরের কানে গিয়ে পৌঁছেছে।

18. তুমি উঠে ছেলেটিকে তুলে শান্ত কর, কারণ আমি তার মধ্য দিয়ে একটা মহাজাতি গড়ে তুলব।”

19. তারপর ঈশ্বর হাগারের চোখ খুলে দিলেন, তাতে সে একটা জলে ভরা কূয়া দেখতে পেল। সেই কূয়ার কাছে গিয়ে সে তার চামড়ার থলিটা ভরে নিয়ে ছেলেটিকে জল খাওয়াল।

20. ঈশ্বর সেই ছেলেটির দেখাশোনা করতে থাকলেন, আর সে বড় হয়ে উঠতে লাগল। সে মরু-এলাকায় বাস করত আর তীর-ধনুক ব্যবহারে পাকা হয়ে উঠল।

21. পারণ নামে এক মরু-এলাকায় সে বাস করতে লাগল। মিসর দেশের এক মেয়ের সংগে তার মা তার বিয়ে দিল।

অব্রাহাম ও অবীমেলকের চুক্তি

22. সেই সময় অবীমেলক ও তাঁর প্রধান সেনাপতি ফীখোল অব্রাহামের কাছে এসে বললেন, “দেখা যাচ্ছে, আপনার সব কাজের মধ্যে ঈশ্বর আপনার সংগে আছেন।

23. কাজেই ঈশ্বরের নামে আপনি এখন আমার কাছে এই শপথ করুন যে, আমার বা আমার সন্তানদের সংগে কিম্বা আমার বংশধরদের কারও সংগে আপনি কোন ছলনার কাজ করবেন না। আমি যেমন করে আপনার সংগে বিশ্বস্তভাবে ব্যবহার করেছি, ঠিক তেমনি করে আপনিও আমার সংগে এবং যে দেশে আপনি বিদেশী হয়ে বাস করছেন সেই দেশের লোকদের সংগে বিশ্বস্তভাবে ব্যবহার করবেন।”

24. অব্রাহাম বললেন, “হ্যাঁ, আমি শপথ করছি।”

25. তবে তিনি একটা কূয়ার ব্যাপারে নালিশ জানিয়ে অবীমেলককে বললেন যে, তাঁর দাসেরা তা জোর করে তাঁর কাছ থেকে দখল করে নিয়েছে।

26. উত্তরে অবিমেলক বললেন, “এই কাজ কে করেছে তা আমি জানি না। আগে তো আপনি এই কথা আমাকে বলেন নি। আজকেই আমি এই কথা শুনলাম।”

27. তারপর অব্রাহাম কতগুলো ভেড়া ও গরু এনে অবীমেলককে দিলেন এবং তাঁরা দু’জনে একটা চুক্তি করলেন।

28. পরে অব্রাহাম তাঁর ভেড়ার পাল থেকে সাতটা বাচ্চা-ভেড়ী আলাদা করে নিলেন।

29. এ দেখে অবীমেলক তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “ব্যাপার কি? এই সাতটা আলাদা করা বাচ্চা-ভেড়ীর মানে?”

30. অব্রাহাম বললেন, “আপনি এগুলো গ্রহণ করুন। এই কূয়াটা যে আমিই খুঁড়েছি এগুলো তার প্রমাণ।”

31. সেইজন্যই সেই জায়গাটার নাম হল বের্‌-শেবা (যার মানে “শপথের কূয়া”), কারণ এখানেই তাঁরা দু’জনে শপথ করেছিলেন।

32. বের্‌-শেবাতে এই চুক্তি করবার পর অবীমেলক ও তাঁর প্রধান সেনাপতি ফীখোল তাঁদের দেশে, অর্থাৎ পলেষ্টীয়দের দেশে ফিরে গেলেন।

33. অব্রাহাম বের্‌-শেবাতে সদাপ্রভুকে, অর্থাৎ যাঁর শুরু এবং শেষ নেই সেই ঈশ্বরকে তাঁর যোগ্য সম্মান দিলেন। তিনি সেখানে একটা ঝাউ গাছ লাগালেন।

34. অব্রাহাম পলেষ্টীয়দের দেশে বেশ কিছুকাল রইলেন।