অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

ইবরানী 11 কিতাবুল মোকাদ্দস (BACIB)

ঈমানের বীরদের সম্বন্ধে

1. আর ঈমান হল প্রত্যাশিত বিষয়ের নিশ্চয়জ্ঞান, অদৃশ্য বিষয়ের প্রমাণপ্রাপ্তি।

2. কারণ এই সম্বন্ধেই প্রাচীনদের পক্ষে সাক্ষ্য দেওয়া হয়েছিল।

3. ঈমান আনার মধ্য দিয়ে আমরা বুঝতে পারি যে, এই আসমান-জমিন আল্লাহ্‌র কালাম দ্বারা রচিত হয়েছে, সুতরাং কোন প্রত্যক্ষ বস্তু থেকে এসব দৃশ্য বস্তুর উৎপত্তি হয় নি।

হাবিল, হনোক ও নূহের উদাহরণ

4. ঈমানে হাবিল আল্লাহ্‌র উদ্দেশে কাবিলের চেয়ে শ্রেষ্ঠ কোরবানী করলেন। এর দ্বারা তাঁর পক্ষে এই সাক্ষ্য দেওয়া হয়েছিল যে, তিনি ধার্মিক; আল্লাহ্‌ তাঁর উপহারের পক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন; এবং তিনি ইন্তেকাল করলেও তাঁর মধ্য দিয়ে এখনও কথা বলছেন।

5. ঈমানের জন্যই হনোক লোকান্তরে নীত হলেন, যেন মৃত্যু না দেখতে পান; তাঁর উদ্দেশ আর পাওয়া গেল না, কেননা আল্লাহ্‌ তাঁকে নিয়ে গেলেন। বস্তুত তাঁকে নিয়ে যাবার আগে তাঁর পক্ষে এই সাক্ষ্য দেওয়া হয়েছিল যে, তিনি আল্লাহ্‌র প্রীতির পাত্র ছিলেন।

6. কিন্তু ঈমান ছাড়া প্রীতির পাত্র হওয়া কারো সাধ্য নয়; কারণ যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র কাছে উপস্থিত হয়, তার এটি বিশ্বাস করা আবশ্যক যে, আল্লাহ্‌ আছেন এবং যারা তাঁর খোঁজ করে, তিনি তাদের পুরস্কারদাতা।

7. ঈমানের জন্যই নূহ্‌, যা যা তখন দেখা যাচ্ছিল না, এমন বিষয়ে হুকুম পেয়ে ভক্তিযুক্ত ভয়ে আবিষ্ট হয়ে আপন পরিবারের রক্ষার জন্য একটি জাহাজ নির্মাণ করলেন এবং দুনিয়াকে তা দ্বারা দোষী করলেন ও নিজে ঈমান অনুরূপ ধার্মিকতার অধিকারী হলেন।

হযরত ইব্রাহিমের ঈমান

8. ঈমানের জন্যই ইব্রাহিম, যখন আহ্বান পেলেন তখন যে স্থান অধিকার হিসেবে লাভ করবেন, সেই স্থানে যাবার হুকুম মান্য করলেন এবং কোথায় যাচ্ছেন তা না জেনে যাত্রা করলেন।

9. ঈমানের জন্যই তিনি বিদেশের মত প্রতিজ্ঞাত দেশে প্রবাসী হলেন, তিনি সেই প্রতিজ্ঞার সহাধিকারী ইস্‌হাক ও ইয়াকুবের সঙ্গে তাঁবুতেই বাস করতেন;

10. কারণ তিনি ভিত্তিমূল বিশিষ্ট সেই নগরের অপেক্ষা করছিলেন, যার স্থাপনকর্তা ও নির্মাতা আল্লাহ্‌।

11. ঈমানের জন্যই স্বয়ং সারাও বংশ উৎপাদনের শক্তি পেলেন, যদিও তাঁর অতিরিক্ত বয়স হয়েছিল, কেননা যিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন তাঁকে তিনি বিশ্বাসযোগ্য জ্ঞান করেছিলেন।

12. এজন্য এক ব্যক্তি থেকে, এমন কি মৃতকল্প ব্যক্তি থেকে, এত লোক উৎপন্ন হল, যারা সংখ্যায় আসমানের তারাগুলোর মত অসংখ্য এবং সাগর পারের গণনাতীত বালুকণার মত অসংখ্য।

13. এঁরা সকলে ঈমানের মধ্যে জীবন কাটিয়ে ইন্তেকাল করেছেন; এঁরা প্রতিজ্ঞাগুলোর ফল পান নি, কিন্তু দূর থেকে তা দেখতে পেয়ে সাদর সম্ভাষণ জানিয়েছিলেন এবং নিজেরা যে দুনিয়াতে বিদেশী ও প্রবাসী তা স্বীকার করেছিলেন।

14. কারণ যাঁরা এভাবে কথা বলেন, তাঁরা এর মধ্য দিয়ে এটা স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেন যে, তাঁরা নিজেদের জন্য একটি দেশের খোঁজ করছেন।

15. আর যে দেশ থেকে বের হয়েছিলেন, সেই দেশ যদি মনে রাখতেন, তবে ফিরে যাবার সুযোগ অবশ্য পেতেন।

16. কিন্তু এখন তাঁরা আরও উত্তম দেশের, অর্থাৎ বেহেশতী দেশের, আকাঙক্ষা করছেন। এজন্য আল্লাহ্‌ নিজেকে তাঁদের আল্লাহ্‌ বলতে লজ্জিত নন; কারণ তিনি তাঁদের জন্য একটি নগর প্রস্তুত করেছেন।

17. ঈমানের জন্যই ইব্রাহিম পরীক্ষিত হয়ে ইস্‌হাককে কোরবানী করেছিলেন; এমন কি, যিনি ওয়াদাগুলো সানন্দে গ্রহণ করেছিলেন, তিনি নিজের সেই একজাত পুত্রকে কোরবানী করছিলেন,

18. যাঁর বিষয়ে তাঁকে বলা হয়েছিল, “ইস্‌হাকের বংশই তোমার বংশ বলে আখ্যাত হবে”;

19. তিনি মনে স্থির করেছিলেন, আল্লাহ্‌ মৃতদের মধ্য থেকেও উত্থাপন করতে সমর্থ; আবার তিনি সেখান থেকে দৃষ্টান্ত হিসেবে তাঁকে ফিরে পেলেন।

20. ঈমানের জন্যই ইস্‌হাক আগামী বিষয়ের উদ্দেশেও ইয়াকুবকে ও ইস্‌কে দোয়া করলেন।

21. ঈমানের জন্যই ইয়াকুব মৃত্যুকালে ইউসুফের উভয় পুত্রকে দোয়া করলেন এবং তাঁর লাঠির অগ্রভাগে ভর করে আল্লাহ্‌র এবাদত করলেন।

22. ঈমানের জন্যই ইউসুফ মৃত্যুকালে বনি-ইসরাইলদের প্রস্থানের বিষয়ে উল্লেখ করলেন এবং তাঁর মৃতদেহের বিষয়ে হুকুম দিলেন।

হযরত মূসার ঈমান

23. ঈমানের জন্যই মূসা জন্ম নিলে পর, তিন মাস পর্যন্ত তাঁর পিতা-মাতা গোপনে প্রতিপালন করলেন, কেননা তাঁরা দেখলেন শিশুটি সুন্দর; আর বাদশাহ্‌র হুকুমকে ভয় করলেন না।

24. ঈমানের জন্যই মূসা বড় হবার পর ফেরাউনের কন্যার পুত্র বলে আখ্যাত হতে অস্বীকার করলেন;

25. তিনি গুনাহের অস্থায়ী সুখভোগের চেয়ে বরং আল্লাহ্‌র লোকদের সঙ্গে দুঃখভোগ মনোনীত করলেন;

26. তিনি মিসরের সমস্ত ধনের চেয়ে মসীহের দুর্নাম মহাধন জ্ঞান করলেন, কেননা তিনি পুরস্কারদানের প্রতি দৃষ্টি রাখতেন।

27. ঈমানের জন্যই তিনি মিসর ত্যাগ করলেন, বাদশাহ্‌র রাগকে ভয় করেন নি, কারণ যিনি অদৃশ্য তাঁকে যেন দেখেই স্থির থাকলেন।

28. ঈমানের জন্যই তিনি ঈদুল ফেসাখ ও রক্ত ছিটাবার নিয়ম পালন করেছিলেন, যেন প্রথমজাতদের সংহারকর্তা তাদেরকে স্পর্শ না করেন।

বনি-ইসরাইলের অন্যান্য নেতৃবর্গের ঈমান

29. ঈমানের জন্যই লোকেরা শুকনো ভূমির মত লোহিত সাগরের মধ্য দিয়ে গমন করলো, কিন্তু মিসরীয়রা সেই চেষ্টা করতে গিয়ে পানিতে ডুবে মরলো।

30. ঈমানের জন্যই জেরিকোর প্রাচীর সাত দিন প্রদক্ষিণ করা হলে পর তা পড়ে গেল।

31. ঈমানের জন্যই পতিতা রাহব শান্তির সঙ্গে গুপ্তচরদের অভ্যর্থনা করাতে, অবাধ্যদের সঙ্গে বিনষ্ট হল না।

32. আর বেশি কি বলবো? গিদিয়োন, বারক, শামাউন, যিপ্তহ এবং দাউদ ও শামুয়েল ও নবীদের কথা বলতে গেলে সময়ের অকুলান হবে।

33. ঈমান দ্বারা এঁরা নানা রাজ্য পরাজিত করলেন, ধার্মিকতার অনুষ্ঠান করলেন, নানা প্রতিজ্ঞার ফল লাভ করলেন, সিংহদের মুখ বন্ধ করলেন,

34. আগুনের তেজ নিভিয়ে ফেললেন, তলোয়ারের মুখ এড়ালেন, দুর্বলতা থেকে শক্তি লাভ করলেন, যুদ্ধে বিক্রমশালী হলেন, বিজাতীয়দের সৈন্যশ্রেণী তাড়িয়ে দিলেন।

35. নারীরা নিজ নিজ মৃত লোককে পুনরুত্থান দ্বারা ফিরে পেয়েছিলেন; অন্যেরা প্রহার দ্বারা নিহত হলেন, মুক্তি গ্রহণ করেন নি, যেন শ্রেষ্ঠ পুনরুত্থানের ভাগী হতে পারেন।

36. আর অন্যেরা বিদ্রূপের ও কশাঘাতের, এমন কি, বন্ধনের ও কারাগারের পরীক্ষা ভোগ করলেন;

37. তাঁরা প্রস্তরাঘাতে হত, পরীক্ষিত, করাত দ্বারা বিদীর্ণ, তলোয়ার দ্বারা নিহত হলেন; তাঁরা ভেড়ার ও ছাগলের চামড়া পরে ঘুরে বেড়াতেন, দীনহীন, ক্লিষ্ট, নির্যাতিত হতেন;

38. এই দুনিয়া যাঁদের যোগ্য ছিল না, তারা মরুভূমিতে মরু-ভূমিতে, পাহাড়ে পাহাড়ে, গুহায় গুহায় ও দুনিয়ার গহ্বরে গহ্বরে ঘুরে বেড়াতেন।

39. আর ঈমানের জন্যই এঁদের সকলের পক্ষে সাক্ষ্য দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু এঁরা প্রতিজ্ঞার ফল পান নি;

40. কেননা আল্লাহ্‌ আমাদের জন্য আরও কোন শ্রেষ্ঠ বিষয় ঠিক করে রেখেছিলেন, যেন তাঁরা আমাদের ছাড়া পূর্ণতা না পান।