অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

২ শামুয়েল 3 কিতাবুল মোকাদ্দস (BACIB)

বাদশাহ্‌ দাউদের কাছে অব্‌নেরের পরাজয়

1. তালুতের কুলে ও দাউদের কুলে পরস্পর অনেক দিন যুদ্ধ হল; তাতে দাউদ বলবান হয়ে উঠতে লাগলেন, কিন্তু তালুতের কুল ক্ষীণ হয়ে পড়তে লাগল।

2. আর হেবরনে দাউদের কয়েকটি পুত্র জন্মগ্রহণ করলো; তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র অম্নোন, সে যিষ্রিয়েলীয়া অহীনোয়মের সন্তান;

3. তাঁর দ্বিতীয় পুত্র কিলাব, সে কর্মিলীয় নাবলের বিধবা অবীগলের সন্তান; তৃতীয় অবশালোম, সে গশূরের তল্‌ময় বাদশাহ্‌র কন্যা মাখার সন্তান;

4. চতুর্থ আদোনিয়, সে হগীতের সন্তান; পঞ্চম শফটিয়, সে অবীটলের সন্তান;

5. এবং ষষ্ঠ যিত্রিয়ম, সে দাউদের স্ত্রী ইগ্লার সন্তান; দাউদের এসব পুত্রের জন্ম হেবরনে হল।

6. যে সময়ে তালুতের কুলে ও দাউদের কুলে পরস্পর যুদ্ধ হল, সেই সময়ে অব্‌নের তালুতের কুলের পক্ষে বীরত্ব দেখালেন।

7. কিন্তু অয়ার কন্যা রিসপা নাম্নী তালুতের এক জন উপপত্নী ছিল; ঈশ্‌বোশৎ অব্‌নেরকে বললেন, তুমি আমার পিতার উপপত্নীর কাছে কেন গমন করেছ?

8. ঈশবোশতের এই কথায় অব্‌নের অতিশয় ক্রুদ্ধ হয়ে বললেন, আমি কি এহুদা পক্ষের কুকুরের মুণ্ড? আজ পর্যন্ত আমি তোমার পিতা তালুতের কুলের প্রতি, তাঁর ভাইদের ও বন্ধুদের প্রতি রহম করছি এবং তোমাকে দাউদের হাতে তুলে দেই নি, তবু তুমি আজ ঐ স্ত্রীলোকের বিষয়ে আমাকে অপরাধী করছো?

9. আল্লাহ্‌ অব্‌নেরকে অমুক ও ততোধিক দণ্ড দিন, যদি দাউদের বিষয়ে মাবুদ যে কসম খেয়েছেন, আমি সেই অনুসারে কাজ না করি,

10. তালুতের কুল থেকে রাজ্য নিয়ে দান থেকে বের্‌-শেবা পর্যন্ত ইসরাইলের ও এহুদার উপরে দাউদের সিংহাসন স্থাপনের চেষ্টা না করি।

11. তখন তিনি অব্‌নেরকে আর একটা কথাও বলতে পারলেন না কারণ তিনি তাঁকে ভয় করলেন।

12. পরে অব্‌নের নিজের পক্ষ থেকে দাউদের কাছে দূতদের পাঠিয়ে বললেন, এই দেশ কার? আরও বললেন, আপনি আমার সঙ্গে নিয়ম করুন, আর দেখুন, সমস্ত ইসরাইলকে আপনার পক্ষে আনতে আমার হাত আপনার সহকারী হবে।

13. দাউদ বললেন, ভাল; আমি তোমার সঙ্গে নিয়ম করবো; কেবল একটি বিষয় আমি তোমার কাছে চাই; যখন তুমি আমার মুখ দেখতে আসবে, তখন তালুতের কন্যা মীখলকে না আনলে আমার মুখ দেখতে পাবে না।

14. আর দাউদ তালুতের পুত্র ঈশ্‌বোশতের কাছে দূত পাঠিয়ে বললেন, আমি ফিলিস্তিনীদের এক শত লিঙ্গাগ্রত্বক পণ দিয়ে যাকে বিয়ে করেছি, আমার সেই স্ত্রী মীখলকে দাও।

15. তাতে ঈশ্‌বোশৎ লোক পাঠিয়ে তাঁর স্বামীর অর্থাৎ লয়িশের পুত্র পল্‌টিয়েলের কাছ থেকে মীখলকে নিয়ে আসলেন।

16. তখন তাঁর স্বামী তাঁর পেছন পেছন কাঁদতে কাঁদতে বহুরীম পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে সঙ্গে চললো। পরে অব্‌নের তাকে বললেন, যাও, ফিরে যাও; তাতে সে ফিরে গেল।

17. পরে অব্‌নের ইসরাইলের প্রাচীনবর্গের সঙ্গে এরকম কথাবার্তা বললেন, তোমরা ইতিপূর্বে নিজেদের উপরে দাউদকে বাদশাহ্‌ করার চেষ্টা করেছিলে।

18. এখন তা-ই কর কেননা মাবুদ দাউদের বিষয়ে বলেছেন, আমি আমার গোলাম দাউদের হাত দিয়ে আমার লোক ইসরাইলকে ফিলিস্তিনীদের হাত থেকে ও সকল দুশমনের হাত থেকে উদ্ধার করবো।

19. আর অব্‌নের বিন্‌ইয়ামীন-বংশের কাছেও সেই কথা বললেন। আর ইসরাইলের ও বিন্‌ইয়ামীনের সমস্ত কুলের দৃষ্টিতে যা ভাল মনে হল, অব্‌নের সেসব কথা দাউদের কাছে বলবার জন্য হেবরনে যাত্রা করলেন।

20. তখন অব্‌নের বিশ জনকে সঙ্গে নিয়ে হেবরনে দাউদের কাছে উপস্থিত হলে দাউদ অব্‌নেরের ও তাঁর সঙ্গী লোকদের জন্য ভোজ প্রস্তুত করলেন,

21. পরে অব্‌নের দাউদকে বললেন, আমি উঠে গিয়ে সমস্ত ইসরাইলকে আমার মালিক বাদশাহ্‌র কাছে সংগ্রহ করি; যেন তারা আপনার সঙ্গে নিয়ম করে, আর আপনি আপনার ইচ্ছামত সকলের উপরে রাজত্ব করেন। পরে দাউদ অব্‌নেরকে বিদায় করলে তিনি সহিসালামতে প্রস্থান করলেন।

যোয়াব অবনেরকে খুন করেন

22. আর দেখ, দাউদের গোলামরা ও যোয়াব আক্রমণ করা শেষ করে ফিরে আসলেন, প্রচুর লুটদ্রব্য সঙ্গে নিয়ে আসলেন। তখন অব্‌নের হেবরনে দাউদের কাছে ছিলেন না, কারণ দাউদ তাঁকে বিদায় করেছিলেন, তিনি সহিসালামতে গমন করেছিলেন।

23. পরে যোয়াব ও তাঁর সঙ্গী সমস্ত সৈন্য আসলে লোকেরা যোয়াবকে বললো, নেরের পুত্র অবনের বাদশাহ্‌র কাছে এসেছিলেন, বাদশাহ্‌ তাঁকে বিদায় করেছেন, তিনি সহিসালামতে চলে গেছেন।

24. তখন যোয়াব বাদশাহ্‌র কাছে গিয়ে বললেন, আপনি কি করেছেন? দেখুন, অব্‌নের আপনার কাছে এসেছিল, আপনি কেন তাকে বিদায় করে একেবারে চলে যেতে দিয়েছেন?

25. আপনি তো নেরের পুত্র অব্‌নেরকে জানেন; আপনাকে ভুলাবার জন্য, আপনার বাইরে ও ভিতরে গমনাগমন জানবার জন্য, আর আপনি যা যা করছেন, সেই সমস্ত বিষয় অবগত হবার জন্য সে এসেছিল।

26. পরে যোয়াব দাউদের কাছ থেকে বের হয়ে অব্‌নেরের পিছনে দূতদের প্রেরণ করলেন; তারা সিরা কূপের কাছ থেকে তাঁকে ফিরিয়ে আনলো; কিন্তু দাউদ তা জানতেন না।

27. পরে অব্‌নের হেবরনে ফিরে আসলে যোয়াব তাঁর সঙ্গে বিরলে আলাপ করার ছলে নগর-দ্বারের ভিতরে তাঁকে নিয়ে গেলেন, পরে তাঁর ভাই অসাহেলের রক্তের প্রতিশোধ নেবার জন্য সেই স্থানে তাঁর উদরে আঘাত করলে, তিনি মারা পড়লেন।

28. পরে যখন দাউদ সেই কথা শুনলেন, তখন তিনি বললেন, নেরের পুত্র অব্‌নেরের রক্তপাতের বিষয়ে আমি ও আমার রাজ্য মাবুদের সাক্ষাতে চিরকাল নির্দোষ।

29. সেই রক্ত যোয়াবের ও তার সমস্ত পিতৃকুলের উপরে বর্তুক এবং যোয়াবের কুলে প্রমেহী কিংবা কুষ্ঠী কিংবা লাঠি ভর দিয়ে চলা কিংবা তলোয়ারের আঘাতে মারা পড়া কিংবা খাবারের অভাবে কষ্ট পাওয়া লোকের অভাব না হোক।

30. এভাবে যোয়াব ও তাঁর ভাই অবীশয় অব্‌নেরকে হত্যা করলেন, কেননা তিনি গিবিয়োনে যুদ্ধের সময়ে তাঁদের ভাই অসাহেলকে হত্যা করেছিলেন।

31. পরে দাউদ যোয়াব ও তাঁর সমস্ত সঙ্গী লোককে বললেন, তোমরা নিজ নিজ কাপড় ছিঁড়ে চট পর এবং শোক করতে করতে অব্‌নেরের আগে আগে চল। আর বাদশাহ্‌ দাউদও শবাধারের পেছন পেছন চললেন।

32. আর হেবরনে অব্‌নেরকে কবর দেওয়া হল; তখন বাদশাহ্‌ অব্‌নেরের কবরের কাছে চিৎকার করে কাঁদতে লাগলেন, সমস্ত লোকও কাঁদতে লাগল।

33. বাদশাহ্‌ অব্‌নেরের বিষয়ে মাতম করে বললেন,যেমন মূঢ় মরে, তেমনি কি মরলেন অব্‌নের?

34. তোমার হাত ছিল না বাঁধা, চরণও ছিল না শেকলে আবদ্ধ;যেমন কেউ অন্যায়কারীদের সম্মুখে পড়ে,তেমনি পড়লে তুমি!তখন সমস্ত লোক তাঁর বিষয়ে আবার কাঁদতে লাগল।

35. পরে কিছু বেলা থাকতে সমস্ত লোক দাউদকে আহার করাতে এল, কিন্তু দাউদ এই শপথ করলেন, আল্লাহ্‌ আমাকে অমুক ও তার চেয়েও বেশি দণ্ড দিন, যদি সূর্য অস্তগত না হলে আমি রুটি কিংবা অন্য কোন দ্রব্যের আস্বাদ গ্রহণ করি।

36. তখন সমস্ত লোক তা লক্ষ্য করলো ও সন্তুষ্ট হল; বাদশাহ্‌ যা কিছু করলেন, তাতেই সকল লোক সন্তুষ্ট হল।

37. দাউদের সমস্ত লোক ও সমস্ত ইসরাইল সেদিন জানতে পারলো যে, নেরের পুত্র অব্‌নেরের হত্যাকাণ্ডে বাদশাহ্‌র কোন হাত ছিল না।

38. আর বাদশাহ্‌ তাঁর গোলামদের বললেন, তোমরা কি জান না যে, আজ ইসরাইলের মধ্যে প্রধান ও মহান এক জন মারা পড়লেন?

39. আর বাদশাহ্‌র পদে অভিষিক্ত হলেও আজ আমি দুর্বল; এই কয়টা লোক, সরূয়ার পুত্রেরা, আমার অবাধ্য। মাবুদ দুষ্কর্মকারীকে তার দুষ্টতা অনুসারে প্রতিফল দিন।