অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24
  25. 25

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

২ বাদশাহ্‌নামা 18 কিতাবুল মোকাদ্দস (BACIB)

এহুদার বাদশাহ্‌ হিষ্কিয়

1. এলার পুত্র ইসরাইলের বাদশাহ্‌ হোসিয়ার তৃতীয় বছরে এহুদার বাদশাহ্‌ আহসের পুত্র হিষ্কিয় রাজত্ব করতে আরম্ভ করেন।

2. তিনি পঁচিশ বছর বয়সে রাজত্ব করতে আরম্ভ করেন এবং ঊনত্রিশ বছর জেরুশালেমে রাজত্ব করেন, তাঁর মায়ের নাম অবী, তিনি জাকারিয়ার কন্যা।

3. হিষ্কিয় তাঁর পূর্বপুরুষ দাউদের মতই মাবুদের দৃষ্টিতে যা ন্যায্য তা-ই করতেন।

4. তিনি সমস্ত উচ্চস্থলী উচ্ছিন্ন করলেন ও সমস্ত স্তম্ভ ভেঙ্গে ফেললেন এবং আশেরা-মূর্তি বিনষ্ট করলেন, আর মূসা যে ব্রোঞ্জের সাপ তৈরি করেছিলেন তা ভেঙে ফেললেন। কেননা সেই সময় পর্যন্ত বনি-ইসরাইল তার উদ্দেশে ধূপ জ্বালাত; তিনি তার নাম নহুষ্টন (পিত্তলখণ্ড) রাখলেন।

5. তিনি ইসরাইলের আল্লাহ্‌ মাবুদের উপর নির্ভর করতেন; আর তাঁর পরে এহুদার বাদশাহ্‌দের মধ্যে কেউ তাঁর তুল্য হন নি, তাঁর আগেও ছিলেন না।

6. বাস্তবিক মাবুদের প্রতি তিনি আসক্ত ছিলেন, তাঁকে অনুসরণ করা থেকে বিরত হলেন না, বরং মাবুদ মূসাকে যেসব হুকুম দিয়েছিলেন, সেই সমস্ত পালন করতেন।

7. আর মাবুদ তাঁর সহবর্তী ছিলেন; তিনি যে কোন স্থানে যেতেন, বুদ্ধিপূর্বক চলতেন; আর তিনি আসেরিয়ার বাদশাহ্‌র অধীনতা অস্বীকার করলেন, তাঁর গোলামী আর করলেন না।

8. তিনি গাজা ও তার সীমা পর্যন্ত, প্রহরীদের উঁচু পাহারা-ঘর থেকে প্রাচীরবেষ্টিত নগর পর্যন্ত, ফিলিস্তিনীদের আক্রমণ করলেন।

9. হিষ্কিয় বাদশাহ্‌র চতুর্থ বছরে, অর্থাৎ ইসরাইলের বাদশাহ্‌ এলার পুত্র হোসিয়ার সপ্তম বছরে আসেরিয়ার বাদশাহ্‌ শালমানেসার সামেরিয়ার বিরুদ্ধে তা অবরোধ করলেন।

10. আর তিন বছর পরে আসেরিয়েরা তা অধিকার করলো; হিষ্কিয় বাদশাহ্‌র ষষ্ঠ বছরে ও ইসরাইলের বাদশাহ্‌ হোসিয়ার নবম বছরে সামেরিয়া অন্যের অধিকারে চলে গেল।

11. পরে আসেরিয়ার বাদশাহ্‌ ইসরাইলকে আসেরিয়া দেশে নিয়ে গিয়ে হলহে, হাবোরে, গোষণের নদীতীরে এবং মাদীয়দের নানা নগরে স্থাপন করলেন।

12. এর কারণ এই, তারা তাদের আল্লাহ্‌ মাবুদের মান্য করতো না; বরং তাঁর নিয়ম অর্থাৎ মাবুদের গোলাম মূসার সমস্ত হুকুম লঙ্ঘন করতো, তা শুনত না, পালনও করতো না।

বাদশাহ্‌ সন্‌হেরীবের এহুদা আক্রমণ

13. পরে হিষ্কিয় বাদশাহ্‌র চতুর্দশ বছরে আসেরিয়ার বাদশাহ্‌ সনহেরীব এহুদার প্রাচীর-বেষ্টিত সমস্ত নগরের বিরুদ্ধে এসে সেই সকল অধিকার করতে লাগলেন।

14. তাতে এহুদার বাদশাহ্‌ হিষ্কিয় লাখীশে আসেরিয়ার বাদশাহ্‌র কাছে এই কথা বলে পাঠালেন, আমি অন্যায় করেছি, আমার কাছ থেকে ফিরে যান; আপনি আমাকে যে ভার দেবেন, তা আমি বহন করবো। তাতে আসেরিয়া দেশের বাদশাহ্‌ এহুদার বাদশাহ্‌ হিষ্কিয়ের তিন শত তালন্ত রূপা ও ত্রিশ তালন্ত সোনা দণ্ড নির্ধারণ করলেন।

15. তখন হিষ্কিয় মাবুদের গৃহে ও রাজপ্রাসাদের ভাণ্ডারগুলোতে পাওয়া সমস্ত রূপা তাকে দিলেন।

16. এহুদার বাদশাহ্‌ হিষ্কিয় মাবুদের বায়তুল-মোকাদ্দসের যে যে কবাট ও যে যে বাজু সোনা দিয়ে মুড়িয়েছিলেন, হিষ্কিয় সেই সময়ে তা থেকে সোনা কেটে আসেরিয়ার বাদশাহ্‌কে দিলেন।

17. পরে আসেরিয়ার বাদশাহ্‌ লাখীশ থেকে তর্তনকে, রব্‌সারীসকে ও রব্‌শাকিকে বড় সৈন্যদলের সঙ্গে জেরুশালেমে হিষ্কিয় বাদশাহ্‌র কাছে প্রেরণ করলেন এবং তাঁরা যাত্রা করে জেরুশালেমে উপস্থিত হলেন। তাঁরা এসে উচ্চতর পুষ্করিণীর প্রণালীর কাছে ধোপার-ভূমির রাজপথে অবস্থান গ্রহণ করলেন।

18. পরে তাঁরা বাদশাহ্‌কে আহ্বান করলে হিল্কিয়ের পুত্র ইলিয়াকীম নামে রাজপ্রাসাদের নেতা, শিব্‌ন লেখক ও আসফের পুত্র যোয়াহ নামক ইতিহাস-রচয়িতা বের হয়ে তাঁদের কাছে গেলেন।

19. রব্‌শাকি তাঁদেরকে বললেন, তোমরা হিষ্কিয়কে এই কথা বল, বাদশাহ্‌দের বাদশাহ্‌ আসেরিয়ার বাদশাহ্‌ এই কথা বলেন, তুমি যে সাহস করছো, সে কেমন সাহস?

20. তুমি বলছো, যুদ্ধের বুদ্ধি ও পরাক্রম আমার আছে, কিন্তু সেটা কেবল মুখের কথামাত্র; বল দেখি, তুমি কার উপরে নির্ভর করে আমার বিদ্রোহী হলে?

21. এখন দেখ, তুমি ঐ থেঁৎলা নলরূপ লাঠিতে, অর্থাৎ মিসরের উপরে নির্ভর করছো; কিন্তু কেউ যদি তার উপরে নির্ভর করে, সে তার হাতে ফুটে তা বিদ্ধ করে, যত লোক মিসরের বাদশাহ্‌ ফেরাউনের উপরে নির্ভর করে, সেই সবের পক্ষে সে তেমনই।

22. আর যদি তোমরা আমাকে বল, আমরা আমাদের আল্লাহ্‌ মাবুদের উপর বিশ্বাস করি, তবে তিনি কি সেই জন নন, যাঁর উচ্চস্থলী ও সমস্ত কোরবানগাহ্‌ হিষ্কিয় দূর করেছে এবং এহুদা ও জেরুশালেমের লোকদের বলেছে, তোমরা জেরুশালেমে এই কোরবানগাহ্‌র কাছে সেজ্‌দা করবে?

23. তুমি একবার আমার মালিক আসেরিয়ার বাদশাহ্‌র কাছে পণ কর, আমি তোমাকে দুই হাজার ঘোড়া দেব, যদি তুমি ঘোড়সওয়ার দিতে পার।

24. তবে কেমন করে আমার প্রভুর ক্ষুদ্রতম গোলামদের মধ্যে এক জন সেনাপতিকে হটিয়ে দেবে এবং রথ ও ঘোড়সওয়ারদের জন্য মিসরের উপরে নির্ভর করবে?

25. বল দেখি, আমি কি মাবুদের সম্মতি ছাড়া এই স্থান ধ্বংস করতে এসেছি? মাবুদই আমাকে বলেছেন, তুমি ঐ দেশে গিয়ে সেটি ধ্বংস কর।

26. তখন হিল্কিয়ের পুত্র ইলিয়াকিম, শিব্‌ন ও যোয়াহ রব্‌শাকিকে বললেন, আরজ করি, আপনার গোলামদেরকে অরামীয় ভাষায় বলুন, কেননা আমরা তা বুঝতে পারি; প্রাচীরের উপরিস্থ লোকদের শুনিয়ে আমাদের সঙ্গে এহুদার ভাষায় কথা বলবেন না।

27. কিন্তু রব্‌শাকি তাদেরকে বললেন, আমার মালিক কি শুধু তোমার মালিকের কাছে এবং তোমারই কাছে এই কথা বলতে আমাকে পাঠিয়েছেন? ঐ যে লোকেরা তোমাদের সঙ্গে নিজ নিজ বিষ্ঠা খেতে ও মূত্র পান করতে প্রাচীরের উপরে বসে আছে, ওদেরই কাছে কি তিনি পাঠান নি?

28. পরে রব্‌শাকি দাঁড়িয়ে উচ্চৈঃস্বরে ইহুদী ভাষায় বলতে লাগলেন, তোমরা বাদশাহ্‌দের বাদশাহ্‌ আসেরিয়ার বাদশাহ্‌র কথা শোন।

29. বাদশাহ্‌ এই কথা বলছেন, হিষ্কিয় তোমাদের যেন না ভুলায়; কেননা তাঁর হাত থেকে তোমাদেরকে রক্ষা করতে তার সাধ্য নেই।

30. আর হিষ্কিয় এই কথা বলে মাবুদের উপর তোমাদের বিশ্বাস না জন্মায় যে, মাবুদ আমাদেরকে নিশ্চয়ই উদ্ধার করবেন, এই নগর কখনও আসেরিয়ার বাদশাহ্‌র অধিকারে যাবে না।

31. তোমরা হিষ্কিয়ের কথা শুনবে না; কেননা আসেরিয়ার বাদশাহ্‌ এই কথা বলেন, তোমরা আমার সঙ্গে সন্ধি কর, বের হয়ে আমার কাছে এসো; তোমরা প্রত্যেক জন যার যার আঙ্গুর ফল ও ডুমুরফল ভোজন কর এবং নিজ নিজ কূপের পানি পান কর;

32. পরে আমি এসে তোমাদের নিজের দেশের মত একটি দেশে, শস্য ও আঙ্গুর-রসের দেশে, রুটি ও আঙ্গুর-ক্ষেতের দেশে এবং তৈলদায়ক জলপাই গাছ ও মধুর দেশে তোমাদেরকে নিয়ে যাব; তাতে তোমরা বাঁচবে, মরবে না; কিন্তু হিষ্কিয়ের কথা শুনবে না; কেননা সে তোমাদেরকে ভুলায়, বলে, মাবুদ আমাদেরকে উদ্ধার করবেন।

33. জাতিদের দেবতারা কি কেউ কখনও আসেরিয়ার বাদশাহ্‌র হাত থেকে নিজ নিজ দেশ রক্ষা করেছে?

34. হমাত ও অর্পদের দেবতারা কোথায়? সফর্বয়িমের, হেনার ও ইব্বার দেবতারা কোথায়? ওরা কি আমার হাত থেকে সামেরিয়াকে রক্ষা করেছে?

35. ভিন্ন ভিন্ন দেশের সমস্ত দেবতার মধ্যে কোন্‌ দেবতারা আমার হাত থেকে তাদের দেশ উদ্ধার করেছে? তবে মাবুদ আমার হাত থেকে জেরুশালেমকে উদ্ধার করবেন, এ কি সম্ভব?

36. কিন্তু লোকেরা নীরব হয়ে থাকলো, তাঁর একটা কথারও জবাবে কিছু বললো না, কারণ বাদশাহ্‌র এই হুকুম ছিল যে, তাকে কোন জবাব দিও না।

37. পরে হিল্কিয়ের পুত্র রাজপ্রাসাদের নেতা ইলিয়াকীম, শিব্‌ন লেখক ও আসফের পুত্র ইতিহাস-রচয়িতা যোয়াহ যার যার কাপড় ছিঁড়ে হিষ্কিয়ের কাছে এসে রব্‌শাকির সমস্ত কথা তাঁকে জানালেন।