অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24
  25. 25

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

২ বাদশাহ্‌নামা 17 কিতাবুল মোকাদ্দস (BACIB)

ইসরাইলের বাদশাহ্‌ হোশেয়

1. এহুদার বাদশাহ্‌ আহসের বারো বছরের রাজত্বের সময় এলার পুত্র হোসিয়া সামেরিয়াতে ইসরাইলে রাজত্ব করতে আরম্ভ করেন এবং নয় বছরকাল রাজত্ব করেন।

2. তিনি মাবুদের দৃষ্টিতে যা মন্দ, তা-ই করতেন বটে, কিন্তু তাঁর আগে ইসরাইলের যে বাদশাহ্‌রা ছিলেন তাঁদের মত নয়।

3. তাঁর বিরুদ্ধে আসেরিয়ার বাদশাহ্‌ শালমানেসার যুদ্ধযাত্রা করলেন; তাতে হোসিয়া তাঁর গোলাম হলেন ও তাঁকে উপঢৌকন দিতে লাগলেন।

4. পরে আসেরিয়ার বাদশাহ্‌ হোসিয়ার চক্রান্ত জানতে পারলেন, কেননা তিনি মিসরের বাদশাহ্‌ সো এর কাছে দূতদেরকে প্রেরণ করেছিলেন এবং বছরের পর বছর যেমন করতেন, আসেরিয়ার বাদশাহ্‌র কাছে তেমনি উপঢৌকন আর পাঠালেন না; এজন্য আসেরিয়ার বাদশাহ্‌ তাঁকে রুদ্ধ করলেন, কারাগারে আটক করলেন।

নির্বাসনে ইসরাইল

5. পরে আসেরিয়ার বাদশাহ্‌ সমস্ত দেশ আক্রমণ করলেন ও সামেরিয়াতে গিয়ে তিন বছর পর্যন্ত তা অবরোধ করে রইলেন।

6. হোসিয়ার নবম বছরে আসেরিয়ার বাদশাহ্‌ সামেরিয়া দখল করে ইসরাইলকে আসেরিয়া দেশ নিয়ে গেলেন এবং হলহে ও হাবোরে, গোষণের নদীতীরে ও মাদীয়দের নানা নগরে বসিয়ে দিলেন।

7. এর কারণ এই— বনি-ইসরাইলদের আল্লাহ্‌ মাবুদ, যিনি তাদেরকে মিসর দেশ থেকে, মিসরের বাদশাহ্‌ ফেরাউনের অধীনতা থেকে, বের করে এনেছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে তারা গুনাহ্‌ করেছিল ও অন্য দেবতাদেরকে ভয় করতো;

8. আর মাবুদ বনি-ইসরাইলদের সম্মুখ থেকে যে জাতিদেরকে অধিকারচ্যুত করেছিলেন, তারা তাদেরই বিধি এবং ইসরাইলের বাদশাহ্‌দের হুকুম করা বিধি অনুসারে চলতো।

9. বনি-ইসরাইল গোপনে নিজেদের আল্লাহ্‌ মাবুদের বিরুদ্ধে অন্যায় কাজ করতো; তারা প্রহরীদের উঁচু পাহারা-ঘর থেকে প্রাচীরবেষ্টিত নগর পর্যন্ত তাদের সকল নগরে নিজেদের জন্য উচ্চস্থলী প্রস্তুত করেছিল।

10. আর তারা প্রত্যেক উঁচু পাহাড়ের উপরে ও প্রত্যেক সবুজ গাছের তলে স্তম্ভ ও আশেরা-মূর্তি স্থাপন করেছিল।

11. আর মাবুদ তাদের সম্মুখ থেকে যে জাতিদের নির্বাসিত করেছিলেন, তারা তাদের মত সেখানকার সকল উচ্চস্থলীতে ধূপ জ্বালাতো এবং দুষ্কর্ম করে মাবুদকে অসন্তুষ্ট করতো।

12. আর তারা মূর্তিগুলোর সেবা করতো, যার বিষয় মাবুদ বলেছিলেন, তোমরা এমন কাজ করবে না।

13. তবুও মাবুদ সমস্ত নবীর ও দর্শকের দ্বারা ইসরাইল ও এহুদার কাছে সাক্ষ্য দিতেন, বলতেন, তোমরা তোমাদের কুপথ থেকে ফিরে এসো এবং আমি তোমাদের পূর্ব-পুরুষদেরকে যে সমস্ত ব্যবস্থা দিয়েছি ও আমার গোলাম নবীদের মাধ্যমে তোমাদের কাছে যা পাঠিয়েছি সেই অনুসারে আমার হুকুম ও সমস্ত বিধি পালন কর।

14. কিন্তু তারা কথা শোনল না, তাদের যে পূর্ব-পুরুষেরা তাদের আল্লাহ্‌ মাবুদের উপর বিশ্বাস করতো না, তাদের ঘাড়ের মত স্ব স্ব ঘাড় শক্ত করতো।

15. আর তাঁর বিধিগুলো ও তাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে কৃত তাঁর নিয়ম ও তাদের কাছে দেওয়া তাঁর সাক্ষ্যাদি অগ্রাহ্য করেছিল; আর অসার বস্তুর অনুগামী হয়ে তারাও অসার হয়েছিল। এছাড়া, মাবুদ যাদের মত কাজ করতে নিষেধ করেছিলেন, চারপাশের সেই জাতিদের অনুগামী হয়েছিল।

16. তারা তাদের আল্লাহ্‌ মাবুদের সমস্ত হুকুম ত্যাগ করে নিজেদের জন্য ছাঁচে ঢালা বাছুরটির দু’টি মূর্তি তৈরি করেছিল, আশেরা-মূর্তিও তৈরি করেছিল এবং আসমানের সমস্ত বাহিনীর কাছে সেজ্‌দা করতো ও বালদেবের সেবা করতো।

17. আর তারা নিজ নিজ পুত্রকন্যাদেরকে আগুনের মধ্য দিয়ে গমন করাত এবং মন্ত্র ও মায়াক্রিয়ার ব্যবহার করতো, আর মাবুদের দৃষ্টিতে যা মন্দ, তা-ই করার জন্য নিজেদের বিক্রি করেছিল, এভাবে তাঁকে অসন্তুষ্ট করলো।

18. এজন্য মাবুদ ইসরাইলের উপর অতিশয় ক্রুদ্ধ হয়ে তাদেরকে তাঁর দৃষ্টিসীমা থেকে দূর করলেন; কেবল এহুদা বংশ ছাড়া আর কেউ অবশিষ্ট থাকলো না।

19. আর এহুদাও তার আল্লাহ্‌ মাবুদের হুকুম পালন না করে ইসরাইলের হুকুম করা বিধি অনুসারে চলতে লাগল।

20. তাই মাবুদ ইসরাইলের সমস্ত বংশকে অগ্রাহ্য করে দুঃখ দিলেন এবং তাদেরকে লুণ্ঠনকারীদের হাতে তুলে দিলেন, শেষে একেবারে তাঁর দৃষ্টিসীমা থেকে দূরে ফেলে দিলেন।

21. কেননা তিনি দাউদের কুল থেকে ইসরাইলকে ছিঁড়ে নেবার পর তারা নবাটের পুত্র ইয়ারাবিমকে বাদশাহ্‌ করেছিল; আর ইয়ারাবিম মাবুদের পিছনে চলা থেকে ইসরাইলকে সরিয়ে নিয়ে তাদেরকে মহা-গুনাহ্‌ করিয়েছিলেন।

22. ইয়ারাবিম যেসব গুনাহ্‌ করেছিলেন, বনি-ইসরাইল তাঁর সেসব গুনাহ্‌ পথে চলতো, সেসব থেকে ফিরল না।

23. শেষে মাবুদ তাঁর সমস্ত গোলাম নবীদের দ্বারা যেরকম বলেছিলেন, সেই অনুসারে ইসরাইলকে তাঁর দৃষ্টিসীমা থেকে দূর করলেন। আর ইসরাইল তার দেশ থেকে আসেরিয়া দেশ নীত হল; আজও তারা সেই স্থানে আছে।

সামেরিয়ায় অন্যান্য লোকদের বাস

24. পরে আসেরিয়ার বাদশাহ্‌ ব্যাবিলন, কূথা, অব্বা, হমাৎ ও সফর্বয়িম থেকে লোক আনিয়ে বনি-ইসরাইলদের পরিবর্তে তাদেরকে সামেরিয়ার নগরগুলোতে বসিয়ে দিলেন; তাতে তারা সামেরিয়া অধিকার করে সেখানকার নগরগুলোতে বাস করলো।

25. সেখানে তাদের বাস করার প্রথম দিকে তারা মাবুদকে ভয় করতো না, এজন্য মাবুদ তাদের মধ্যে সিংহ পাঠালেন এবং সিংহেরা কোন কোন লোককে হত্যা করলো।

26. অতএব লোকেরা আসেরিয়ার বাদশাহ্‌কে বললো, আপনি যে জাতিদেরকে নির্বাসিত করে সামেরিয়ায় সকল নগরে বসিয়ে দিয়েছেন, তারা সেই দেশের আল্লাহ্‌র বিধান জানে না; এজন্য তিনি তাদের মধ্যে সিংহ পাঠিয়েছেন এবং দেখুন, সিংহেরা তাদেরকে মেরে ফেলছে, কেননা তারা সেই দেশের আল্লাহ্‌র বিধান জানে না।

27. পরে আসেরিয়ার বাদশাহ্‌ এই হুকুম করলেন, তোমরা সেই স্থান থেকে যে ইমামদের এনেছ, তাদের এক জনকে সেই দেশে নিয়ে যাও; সে সেখানে গিয়ে বাস করুক এবং সে লোকদেরকে সেই দেশের আল্লাহ্‌র বিধান শিক্ষা দিক।

28. পরে তারা সামেরিয়া থেকে যে ইমামদের নিয়ে গিয়েছিল, তাদের এক জন এসে বেথেলে বাস করলো এবং কিভাবে মাবুদকে ভয় করতে হয়, তা লোকদেরকে শিখাতে লাগল।

29. তবুও তাদের প্রত্যেক জাতি নিজ নিজ দেবতা তৈরি করলো এবং সামেরীয়েরা উচ্চস্থলীতে যেসব মন্দির নির্মাণ করেছিল, তন্মধ্যে এক এক জাতি যার যার নিবাস-নগরে স্ব স্ব দেবতাকে স্থাপন করলো।

30. এভাবে ব্যাবিলনের লোকেরা সুক্কোৎ-বনোৎ নির্মাণ করলো ও কূথের লোকেরা নের্গল নির্মাণ করলো এবং হমাতের লোকেরা অশীমা নির্মাণ করলো,

31. আর অব্বীয়েরা নিভস ও তর্তক নির্মাণ করলো ও সফর্বীয়েরা সফর্বয়িমের দেবতা অদ্রম্মেলক ও অনম্মেলকের উদ্দেশে যার যার সন্তানদের আগুনে পোড়াত।

32. তারা মাবুদকে ভয় করতো, আবার নিজেদের জন্য নিজেদের মধ্য থেকে উচ্চস্থলীগুলোর ইমামদেরকে নিযুক্ত করতো; তারাই তাদের জন্য উচ্চস্থলীর মন্দিরে উৎসর্গ করতো।

33. তারা মাবুদকেও ভয় করতো এবং যেসব জাতি থেকে আনা হয়েছিল, তাদের বিধান অনুসারে নিজ নিজ দেবতারও সেবা করতো।

34. তারা আজ পর্যন্ত আগের বিধান অনুসারে কাজ করছে; তারা প্রকৃতপক্ষে মাবুদের এবাদত করে না, স্ব স্ব বিধি ও অনুশাসন অনুসারে আচরণ করে না এবং মাবুদ যাঁর নাম ইসরাইল রেখেছিলেন, সেই ইয়াকুবের সন্তানদের দেওয়া তাঁর ব্যবস্থা ও হুকুম অনুসারেও চলে না।

35. বাস্তবিক মাবুদ তাদের সঙ্গে নিয়ম করে এই হুকুম দিয়েছিলেন, তোমরা অন্য দেবতাদের এবাদত করবে না, তাদের কাছে সেজ্‌দা করবে না, তাদের সেবা করবে না, বা তাদের উদ্দেশে কোরবানী করবে না;

36. কিন্তু যিনি মহাপরাক্রম ও বাড়িয়ে দেওয়া বাহু দ্বারা মিসর দেশ থেকে তোমাদেরকে উঠিয়ে এনেছেন, তোমরা সেই মাবুদকেই ভয় করবে, তাঁরই কাছে সেজ্‌দা করবে ও তাঁরই উদ্দেশে কোরবানী করবে।

37. আর তিনি তোমাদের জন্য যেসব বিধি ও অনুশাসন এবং যে শরীয়ত ও হুকুম লিখে দিয়েছেন, সব সময় সেসব যত্নপূর্বক পালন করবে; অন্য দেবতাদের এবাদত করবে না;

38. আর আমি তোমাদের সঙ্গে যে নিয়ম করেছি, তা ভুলে যাবে না এবং অন্য দেবতাদের এবাদত করবে না;

39. কিন্তু তোমাদের আল্লাহ্‌ মাবুদকেই ভয় করবে; তাতে তিনিই তোমাদের সমস্ত দুশমনের হাত থেকে তোমাদেরকে উদ্ধার করবেন।

40. তবুও তারা কথা শুনল না; তাদের আগের বিধান অনুসারে চললো।

41. এভাবে সেই জাতিরা মাবুদকেও ভয় করছে এবং তাদের খোদাই-করা মূর্তির সেবাও করে আসছে; তাদের পূর্বপুরুষেরা যেরকম করতো, তাদের পুত্র পৌত্রেরাও আজ পর্যন্ত সেরকম করছে।