অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24
  25. 25
  26. 26
  27. 27
  28. 28
  29. 29
  30. 30
  31. 31
  32. 32
  33. 33
  34. 34
  35. 35
  36. 36

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

২ খান্দাননামা 6 কিতাবুল মোকাদ্দস (BACIB)

এবাদতখানার উৎসর্গীকরণ

1. তখন সোলায়মান বললেন, মাবুদ বলেছেন যে, তিনি ঘোর অন্ধকারে বাস করবেন।

2. কিন্তু আমি তোমার জন্য একটি বসতিগৃহ নির্মাণ করালাম; এটি চিরকাল তোমার নিবাস-স্থান।

3. পরে বাদশাহ্‌ মুখ ফিরিয়ে সমস্ত ইসরাইল-সমাজকে দোয়া করলেন; আর সমস্ত ইসরাইল-সমাজ দণ্ডায়মান হল।

4. আর তিনি বললেন, মাবুদ ধন্য হোন, ইসরাইলের আল্লাহ্‌; তিনি আমার পিতা দাউদের কাছে নিজের মুখে এই কথা বলেছিলেন এবং নিজের হাত দিয়ে তা সফল করেছেন,

5. যথা, যেদিন আমার লোকদেরকে মিসর দেশ থেকে বের করে এনেছি, সেদিন থেকে আমি আমার নাম স্থাপন ও গৃহ নির্মাণ করার জন্য ইসরাইলের সমস্ত বংশের মধ্যে কোন নগর মনোনীত করি নি; এবং আমার লোক ইসরাইলের নেতা হবার জন্য কোন মানুষকে মনোনীত করি নি।

6. কিন্তু আমার নাম স্থাপনের জন্য আমি জেরুশালেমকে মনোনীত করেছি ও আমার লোক ইসরাইলের নেতা হবার জন্য দাউদকে মনোনীত করেছি।

7. আর ইসরাইলের আল্লাহ্‌ মাবুদের নামের উদ্দেশে একটি গৃহ নির্মাণ করতে আমার পিতা দাউদের মনোবাসনা ছিল।

8. কিন্তু মাবুদ আমার পিতা দাউদকে বললেন, আমার নামের উদ্দেশে একটি গৃহ নির্মাণ করতে তোমার মনোবাসনা হয়েছে; তোমার এরকম মনোবাসনা করা ভালই বটে।

9. তবুও তুমি সেই গৃহ নির্মাণ করবে না, কিন্তু তোমার বংশ থেকে উৎপন্ন পুত্রই আমার নামের উদ্দেশে গৃহ নির্মাণ করবে।

10. মাবুদ এই যে কথা বলেছিলেন, তা সফল করলেন; মাবুদের ওয়াদা অনুসারে আমি আমার পিতা দাউদের পদে অধিষ্ঠিত ও ইসরাইলের সিংহাসনে উপবিষ্ট হয়ে ইসরাইলের আল্লাহ্‌ মাবুদের নামের উদ্দেশে এই গৃহ নির্মাণ করেছি।

11. আর মাবুদ বনি-ইসরাইলদের সঙ্গে যে নিয়ম করেছিলেন, তার আধার সিন্দুক এর মধ্যে রাখলাম।

বাদশাহ্‌ সোলায়মানের মুনাজাত

12. পরে তিনি সমস্ত ইসরাইল-সমাজের সাক্ষাতে মাবুদের কোরবানগাহ্‌র সম্মুখে দাঁড়িয়ে দু’হাত তুললেন;

13. কেননা সোলায়মান পাঁচ হাত লম্বা, পাঁচ হাত চওড়া ও তিন হাত উঁচু ব্রোঞ্জের একটি মঞ্চ নির্মাণ করে প্রাঙ্গণের মধ্যস্থলে রেখেছিলেন; তিনি তার উপরে দাঁড়ালেন, পরে সমস্ত ইসরাইল-সমাজের সম্মুখে হাঁটু পেতে বেহেশতের দিকে দু’হাত তুললেন—

14. আর তিনি বললেন, হে মাবুদ, ইসরাইলের আল্লাহ্‌, বেহেশতে বা দুনিয়াতে তোমার মত আর আল্লাহ্‌ নেই? সর্বান্তঃকরণে যারা তোমার সাক্ষাতে চলে, তোমার সেই গোলামদের পক্ষে তুমি নিয়ম পালন ও অটল মহব্বত প্রকাশ করে থাক;

15. তুমি তোমার গোলাম আমার পিতা দাউদের কাছে যা ওয়াদা করেছিলে, তা পালন করেছ, যা নিজের মুখে বলেছিলে, তা তুমি সিদ্ধ করেছ, যেমন আজ দেখা যাচ্ছে।

16. এখন, হে মাবুদ, ইসরাইলের আল্লাহ্‌, তুমি তোমার গোলাম আমার পিতা দাউদের কাছে যা ওয়াদা করেছিলে তা রক্ষা কর। তুমি বলেছিলে, আমার দৃষ্টিতে ইসরাইলের সিংহাসনে বসতে তোমার (বংশে) লোকের অভাব হবে না, কেবল যদি আমার সাক্ষাতে তুমি যেমন চলেছ, তোমার সন্তানেরা আমার সাক্ষাতে তেমনি চলবার জন্য যার যার পথে সাবধান থাকে।

17. এখন, হে মাবুদ, ইসরাইলের আল্লাহ্‌, তোমার গোলাম দাউদের কাছে যে কথা তুমি বলেছিলে, তা দৃঢ় হোক।

18. কিন্তু আল্লাহ্‌ কি সত্য সত্যিই দুনিয়াতে মানুষের সঙ্গে বাস করবেন? দেখ, বেহেশত ও বেহেশতের বেহেশত তোমাকে ধারণ করতে পারে না, তবে আমার নির্মিত এই গৃহ কি পারবে?

19. তবুও হে মাবুদ, আমার আল্লাহ্‌, তুমি তোমার গোলামের মুনাজাতে ও বিনতিতে মনোযোগ দাও, তোমার গোলাম তোমার কাছে যে কাতরোক্তি ও মুনাজাত করছে, তা শোন।

20. যে স্থানের বিষয়ে তুমি বলেছ যে, তোমার নাম সেই স্থানে রাখবে, সেই স্থানের অর্থাৎ এই গৃহের প্রতি তোমার চোখ দিনরাত উন্মীলিত থাকুক এবং এই স্থানের জন্য তোমার গোলাম যে মুনাজাত করে, তা শুনো।

21. আর তোমার গোলাম ও তোমার লোক ইসরাইল যখন এই স্থানের উদ্দেশে মুনাজাত করবে, তখন তাদের সকল বিনতিতে কান দিও; তোমার নিবাস স্থান থেকে, বেহেশত থেকে তা শুনো ও মাফ করো।

22. কেউ তার প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে গুনাহ্‌ করলে যদি তাকে শপথ করাবার জন্য কোন কসম নিশ্চিত হয়, আর সে এসে এই বাড়িতে তোমার কোরবানগাহ্‌র সম্মুখে সেই কসম খায়,

23. তবে তুমি বেহেশত থেকে তা শুনো এবং তোমার গোলামদের বিচার নিষ্পত্তি করো; দোষীকে দোষী করে তার কাজের ফল তার মাথায় বর্তিও এবং ধার্মিককে ধার্মিক করে তার ধার্মিকতা অনুযায়ী ফল দিও।

24. তোমার লোক ইসরাইল তোমার বিরুদ্ধে গুনাহ্‌ করার দরুন দুশমনের সম্মুখে আহত হবার পর যদি পুনর্বার ফিরে এবং এই বাড়িতে তোমার নামের প্রশংসা-গজল করে তোমার কাছে মুনাজাত ও ফরিয়াদ করে;

25. তবে তুমি বেহেশত থেকে তা শুনো এবং তোমার লোক ইসরাইলের গুনাহ্‌ মাফ করো, আর তাদেরকে ও তাদের পূর্ব-পুরুষদেরকে এই যে দেশ দিয়েছ, সেখানে পুনর্বার তাদেরকে এনো।

26. তোমার বিরুদ্ধে তাদের গুনাহ্‌র দরুন যদি আসমান রুদ্ধ হয়, বৃষ্টি না হয়, আর লোকেরা যদি এই স্থানের জন্য মুনাজাত করে, তোমার নামের প্রশংসা-গজল করে এবং তোমা থেকে দুঃখ পাওয়াতে নিজের নিজের গুনাহ্‌ থেকে ফিরে আসে,

27. তবে তুমি বেহেশতে তা শুনো এবং তোমার গোলামদের ও তোমার লোক ইসরাইলের গুনাহ্‌ মাফ করো ও তাদের গন্তব্য সৎপথ তাদেরকে দেখিয়ে দিও এবং তুমি তোমার লোকদেরকে যে দেশ অধিকার হিসেবে দিয়েছ, তোমার সেই দেশে বৃষ্টি পাঠিয়ে দিও।

28. দেশে যদি দুর্ভিক্ষ হয়, মহামারী হয়, শস্যের শোষ বা ম্লানি বা পঙ্গপাল কিংবা কীট হয়, যদি তাদের দুশমনেরা তাদের দেশে নগরে নগরে তাদেরকে অবরোধ করে, যদি কোন বিপদ বা রোগের প্রাদুর্ভাব হয়;

29. তা হলে কোন ব্যক্তি বা তোমার লোক সমস্ত ইসরাইল, যারা প্রত্যেকে যার যার যন্ত্রণা ও মনের কষ্ট জানে এবং এই গৃহের দিকে দু’হাত তুলে কোন মুনাজাত বা ফরিয়াদ করে;

30. তবে তুমি তোমার নিবাসস্থান বেহেশত থেকে তা শুনো এবং মাফ করো এবং প্রত্যেক জনকে নিজ নিজ পথ অনুযায়ী সমস্ত কাজের প্রতিফল দিও— তুমি তো তাদের অন্তঃকরণ জান; কেননা একমাত্র তুমিই বনি-আদমদের অন্তঃকরণ জান—

31. যেন আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে তুমি যে দেশ দিয়েছ, এই দেশে তারা যত দিন জীবিত থাকে, তোমার পথে চলবার জন্য তোমাকে ভয় করে।

32. এছাড়া, তোমার লোক ইসরাইল জাতির নয়, এমন কোন বিদেশী লোক যখন তোমার মহানাম, তোমার শক্তিশালী হাত ও তোমার বাড়িয়ে দেওয়া বাহুর উদ্দেশে দূর দেশ থেকে আসবে, যখন তারা এসে এই গৃহের জন্য মুনাজাত করবে,

33. তখন তুমি বেহেশত থেকে, তোমার নিবাস-স্থান থেকে তা শুনো; এবং সেই বিদেশী লোক তোমার কাছে যা কিছু মুনাজাত করবে, সেই অনুসারে করো; যেন তোমার লোক ইসরাইলের মত দুনিয়ার সমস্ত জাতি তোমার নাম জানতে পারে ও তোমাকে ভয় করে এবং তারা যেন জানতে পায় যে, আমার নির্মিত এই গৃহের উপরে তোমারই নাম কীর্তিত।

34. তুমি তোমার লোকদেরকে কোন পথে প্রেরণ করলে, যদি তারা তাদের শত্রুদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে বের হয় এবং তোমার মনোনীত এই নগর ও তোমার নামের জন্য আমার নির্মিত গৃহের উদ্দেশে তোমার কাছে মুনাজাত করে;

35. তবে তুমি বেহেশত থেকে তাদের মুনাজাত ও ফরিয়াদ শুনো এবং তাদের বিচার নিষ্পত্তি করো।

36. তারা যদি তোমার বিরুদ্ধে গুনাহ্‌ করে — কেননা গুনাহ্‌ না করে, এমন কোন মানুষ নেই — এবং তুমি যদি তাদের প্রতি ক্রুদ্ধ হয়ে দুশমনের হাতে তাদেরকে তুলে দাও ও দুশমনেরা তাদেরকে বন্দী করে দূরস্থ কিংবা নিকটস্থ কোন দেশে নিয়ে যায়;

37. তবুও যে দেশে তাদের বন্দী হিসেবে নেওয়া হয়েছে, সেই দেশে যদি মনে মনে বিবেচনা করে ও ফেরে, তাদের বন্দীত্বের দেশে তোমার কাছে ফরিয়াদ করে যদি বলে, আমরা গুনাহ্‌ করেছি, অপরাধী হয়েছি ও দুষ্টামি করেছি;

38. এবং যে দেশে বন্দীরূপে নীত হয়েছে, সেই বন্দীত্বের দেশে যদি সমস্ত অন্তঃকরণ ও সমস্ত প্রাণের সঙ্গে তোমার কাছে ফিরে আসে এবং তুমি তাদের পূর্বপুরুষদেরকে যে দেশ দিয়েছ, তাদের সেই দেশের উদ্দেশে, তোমার মনোনীত নগর ও তোমার নামের জন্য আমার নির্মিত গৃহের জন্য যদি মুনাজাত করে;

39. তবে তুমি বেহেশত থেকে, তোমার বাসস্থান থেকে তাদের মুনাজাত ও ফরিয়াদ শুনো এবং তাদের বিচার নিষ্পত্তি করো; আর তোমার যে লোকেরা তোমার বিরুদ্ধে গুনাহ্‌ করেছে, তাদেরকে মাফ করো।

40. এখন, হে আমার আল্লাহ্‌, আরজ করি, এই স্থানে যে মুনাজাত হবে, তার প্রতি যেন তোমার চোখ ও কান খোলা থাকে।

41. হে মাবুদ আল্লাহ্‌, এখন তুমি উঠে, তুমি ও তোমার শক্তির সিন্দুক সহ তোমার বিশ্রাম-স্থানে গমন কর। হে মাবুদ আল্লাহ্‌, তোমার ইমামেরা উদ্ধারের পোশাক পরুক ও তোমার সাধুরা মঙ্গলে আনন্দ করুক।

42. হে মাবুদ আল্লাহ্‌, তুমি তোমার অভিষিক্ত লোকের মুখ ফিরিয়ে দিও না তোমার গোলাম দাউদের প্রতি কৃত অটল মহব্বত স্মরণ কর।