অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24
  25. 25
  26. 26
  27. 27
  28. 28
  29. 29
  30. 30
  31. 31
  32. 32
  33. 33
  34. 34
  35. 35
  36. 36

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

২ খান্দাননামা 32 কিতাবুল মোকাদ্দস (BACIB)

আশেরিয়ার বাদশাহ্‌ সন্‌হেরীবের আক্রমণ

1. এসব কাজ ও বিশ্বস্ত আচরণের পরে আসেরিয়ার বাদশাহ্‌ সন্‌হেরীব এসে এহুদা দেশে প্রবেশ করলেন এবং প্রাচীর-বেষ্টিত নগরগুলোর বিরুদ্ধে শিবির স্থাপন করে সেসব ভেঙে ফেলতে মনস্থ করলেন।

2. যখন হিষ্কিয় দেখলেন, সন্‌হেরীব এসেছেন, আর তিনি জেরুশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য উন্মুখ হয়েছেন,

3. তখন তিনি তাঁর নেতৃবর্গ ও শক্তিশালী লোকদের সঙ্গে নগরের বাইরে অবস্থিত ফোয়ারাগুলোর পানি বন্ধ করার মন্ত্রণা করলেন এবং তাঁরা তাঁর সাহায্য করলেন।

4. অতএব অনেক লোক একত্র হয়ে সমস্ত ফোয়ারা ও দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত স্রোত বন্ধ করে দিল। তারা বললো আসেরিয়ার বাদশাহ্‌রা এসে কেন অনেক পানি পাবে?

5. আর তিনি নিজেকে শক্তিশালী করে সমস্ত ভগ্ন প্রাচীর গেঁথে উচ্চগৃহের সমান করে উঁচু করলেন, আবার তার বাইরে আর একটি প্রাচীর নির্মাণ করলেন ও দাউদ নগরস্থ মিল্লো দৃঢ় করলেন এবং প্রচুর অস্ত্র শস্ত্র ও ঢাল প্রস্তুত করলেন।

6. আর তিনি লোকদের উপর সেনাপতিদেরকে নিযুক্ত করলেন এবং নগরদ্বারের চকে তাঁর কাছে তাদেরকে একত্র করে এই উৎসাহজনক কথা বললেন,

7. তোমরা বলবান হও, সাহস কর, আসেরিয়ার বাদশাহ্‌ ও তাঁর সঙ্গী সমস্ত লোক-সমাগমের সম্মুখে ভয় পেয়ো না কিংবা নিরাশ হোয়ো না; কারণ তাঁর সহায়ের চেয়ে আমাদের সহায় মহান।

8. তাঁর সহায় মানুষের বাহুবল, কিন্তু আমাদের সাহায্য ও আমাদের পক্ষে যুদ্ধ করতে আমাদের আল্লাহ্‌ মাবুদ আমাদের সহায়। তখন লোকেরা এহুদার বাদশাহ্‌ হিষ্কিয়ের কথার উপর নির্ভর করলো।

9. এর পরে আসেরিয়ার বাদশাহ্‌ সন্‌হেরীব যখন সৈন্যসামন্তের সঙ্গে লাখীশ অবরোধ করেন, তখন জেরুশালেমে এহুদার বাদশাহ্‌ হিষ্কিয়ের কাছে ও জেরুশালেমে উপস্থিত সমস্ত এহুদার কাছে তাঁর গোলামেরা দ্বারা এই কথা বলে পাঠালেন;

10. আসেরিয়ার বাদশাহ্‌ সন্‌হেরীব এই কথা বলেন, তোমরা কিসের উপর নির্ভর করছো যে, অবরোধ হওয়া জেরুশালেমের বাস করছো?

11. হিষ্কিয় কি ক্ষুধা ও পিপাসায় মেরে ফেলবার জন্য তোমাদেরকে বিভ্রান্ত করছে না? সে বলছে, আমাদের আল্লাহ্‌ মাবুদ আমাদেরকে আসেরিয়ার বাদশাহ্‌র হাত থেকে উদ্ধার করবেন।

12. ঐ হিষ্কিয়ই কি তাঁর উচ্চস্থলী ও সমস্ত কোরবানগাহ্‌ দূর করে নি? এবং তোমাদেরকে একই কোরবানগাহ্‌র সম্মুখে সেজ্‌দা করতে ও তারই উপরে ধূপ জ্বালাতে হবে,’ এই হুকুম কি এহুদা ও জেরুশালেমকে দেয় নি?

13. আমি ও আমার পূর্বপুরুষেরা আমরা অন্যান্য দেশস্থ সমস্ত লোক-সমাজের প্রতি যা করেছি, তোমরা কি তা জান না? সেসব দেশের জাতিদের দেবতারা কি কোনভাবে আমার হাত থেকে নিজ নিজ দেশ উদ্ধার করতে সমর্থ হয়েছে?

14. আমার পূর্বপুরুষেরা যেসব জাতিকে নিঃশেষে বিনাশ করেছেন, তাদের সমস্ত দেবতার মধ্যে কে নিজের লোকদেরকে আমার হাত থেকে উদ্ধার করতে পেরেছিল? তবে তোমাদের আল্লাহ্‌ আমার হাত থেকে যে তোমাদেরকে উদ্ধার করতে পারে, এ কি সম্ভব?

15. অতএব হিষ্কিয় তোমাদেরকে ভ্রান্ত না করুক ও এভাবে বিভ্রান্ত না করুক; তোমরা তাকে বিশ্বাস করো না; কেননা আমার হাত থেকে ও আমার পূর্বপুরুষদের হাত থেকে নিজের লোকদেরকে উদ্ধার করতে কোন জাতির কিংবা রাজ্যের কোন দেবতারই সাধ্য হয় নি; তবে তোমাদের আল্লাহ্‌ কি তোমাদেরকে আমার হাত থেকে উদ্ধার করবে?

16. আর বাদশাহ্‌র গোলামেরা মাবুদ আল্লাহ্‌ ও তার গোলাম হিষ্কিয়ের বিরুদ্ধে আরও বেশি কথা বললো।

17. আর তিনি ইসরাইলের আল্লাহ্‌ মাবুদকে উপহাস করার ও তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলবার জন্য এরকম পত্রও লিখলেন, অন্যান্য দেশীয় জাতিদের দেবতারা যেমন আমার হাত থেকে নিজ নিজ লোকদের উদ্ধার করে নি, তেমনি হিষ্কিয়ের আল্লাহ্‌ও তাঁর লোকদেরকে আমার হাত থেকে উদ্ধার করবে না।

18. আর জেরুশালেমের যে লোকেরা প্রাচীরের উপরে ছিল, তাদেরকে ভয় দেখাবার ও বিচলিত করার জন্য তারা অতি উচ্চৈঃস্বরে ইহুদী ভাষায় তাদের কাছে চিৎকার করতে লাগল; যেন নগর হস্তগত করতে পারে।

19. দুনিয়ার জাতিদের যে দেবতারা মানুষের হাতের তৈরি, তাদের বিষয়ে কথা বলবার মত তারা জেরুশালেমের আল্লাহ্‌র বিষয়ে কথা বললো।

আশেরিয়ার বাদশাহ্‌ সন্‌হেরীবের পরাজয় ও মৃত্যু

20. পরে এসব কারণের জন্য বাদশাহ্‌ হিষ্কিয় ও আমোজের পুত্র নবী ইশাইয়া মুনাজাত করলেন ও বেহেশতের কাছে কান্নাকাটি করলেন।

21. তখন মাবুদ এক জন ফেরেশতা প্রেরণ করলেন; তিনি আসেরিয়ার বাদশাহ্‌র শিবিরের মধ্যে সমস্ত বলবান বীর, প্রধান লোক ও সেনাপতিকে উচ্ছেদ করলেন; তাতে সন্‌হেরীব লজ্জিত হয়ে নিজের দেশে ফিরে গেলেন। পরে তিনি তাঁর দেবালয়ে প্রবেশ করলে তাঁর নিজের সন্তানেরা সেই স্থানে তলোয়ার দ্বারা তাঁকে হত্যা করলো।

22. এভাবে মাবুদ হিষ্কিয় ও জেরুশালেম-নিবাসীদেরকে আসেরিয়ার বাদশাহ্‌ সন্‌হেরীবের হাত থেকে ও আর সকলের হাত থেকে নিস্তার করলেন এবং সমস্ত দিকে তাদেরকে রক্ষা করলেন।

23. তাতে অনেক লোক জেরুশালেমে মাবুদের উদ্দেশে নৈবেদ্য আনলো এবং এহুদার বাদশাহ্‌ হিষ্কিয়ের কাছে বহুমূল্য দ্রব্য আনলো; তাতে সেই সময় থেকে তিনি সকল জাতির দৃষ্টিতে উন্নত হলেন।

বাদশাহ্‌ হিষ্কিয়ের অসুস্থতা

24. ঐ সময়ে হিষ্কিয়ের সাংঘাতিক অসুস্থ হয়ে পড়লো, আর তিনি মাবুদের কাছে মুনাজাত করলেন; তাতে মাবুদ তাঁকে জবাব দিলেন ও তাঁকে একটি অদ্ভুত লক্ষণ জানালেন।

25. কিন্তু হিষ্কিয় যে উপকার পেয়েছিলেন সেই অনুসারে প্রতিদান করলেন না, কারণ তাঁর মন গর্বিত হয়েছিল; অতএব তাঁর এবং এহুদার ও জেরুশালেমের উপরে ক্রোধ উপস্থিত হল।

26. তখন হিষ্কিয় তাঁর মনের গর্ব বুঝে নিজেকে অবনত করলেন, তিনি ও জেরুশালেম-নিবাসীরা তা করলেন। সেজন্য হিষ্কিয়ের সময়ে মাবুদের গজব তাদের উপরে নেমে আসল না।

বাদশাহ্‌ হিষ্কিয়ের ধন-সম্পদ ও কাজ

27. হিষ্কিয়ের অতি প্রচুর ধন ও প্রতাপ ছিল, তিনি তাঁর নিজের জন্য রূপা, সোনা, মণি, সুগন্ধি দ্রব্য, ঢাল ও সমস্ত রকম মনোহর পাত্রের কোষাগার প্রস্তুত করলেন,

28. আর শস্য, আঙ্গুর-রস ও তেলের জন্য ভাণ্ডার এবং বিভিন্ন রকম পশুর ঘর ও ভেড়ার পালের খোঁয়াড় করলেন।

29. আর তিনি তাঁর নিজের জন্য নানা নগর ও গোমেষাদির অনেক পশুধন প্রস্তুত করলেন, যেহেতু আল্লাহ্‌ তাঁকে অতি প্রচুর ধন দিয়েছিলেন।

30. এই হিষ্কিয় গীহোনের পানির উচ্চতর মুখ বন্ধ করে সরল পথে দাউদ-নগরের পশ্চিম পাশে সেই পানি নামিয়ে এনেছিলেন। আর হিষ্কিয় তাঁর সকল কাজে কৃতকার্য হলেন।

31. কিন্তু তাঁর দেশে যে অদ্ভুত লক্ষণ দেখান হয়েছিল, তার বিবরণ জিজ্ঞাসা করতে ব্যাবিলনের কর্মকর্তারা দূতদেরকে পাঠালে আল্লাহ্‌ তাঁর পরীক্ষা করার জন্য, তাঁর মনে কি আছে সেসব জানবার জন্য তাঁকে ত্যাগ করেছিলেন।

32. হিষ্কিয়ের অবশিষ্ট কাজের বৃত্তান্ত ও তাঁর ভাল কাজের বিবরণ, দেখ, আমোজের পুত্র নবী ইশাইয়ার দর্শন-কিতাবে লেখা আছে; তা এহুদা ও ইসরাইলের বাদশাহ্‌দের ইতিহাস-পুস্তকের অন্তর্গত।

33. পরে হিষ্কিয় তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রাগত হলেন, আর লোকেরা দাউদ-সন্তানদের কবরস্থানের উপরের অংশে তাঁকে দাফন করলো এবং তাঁর মরণকালে সমস্ত এহুদা ও জেরুশালেম-নিবাসীরা তাঁকে সম্মান দেখাল। পরে তাঁর পুত্র মানশা তাঁর পদে বাদশাহ্‌ হলেন।