অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24
  25. 25
  26. 26
  27. 27
  28. 28
  29. 29
  30. 30
  31. 31

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

১ শামুয়েল 18 কিতাবুল মোকাদ্দস (BACIB)

যোনাথনের সঙ্গে হযরত দাউদের বন্ধুত্ব

1. তালুতের সঙ্গে তাঁর কথা শেষ হলে যোনাথনের প্রাণ দাউদের প্রাণের প্রতি আসক্ত হল এবং যোনাথন তাঁর প্রাণের মতই তাঁকে ভালবাসতে লাগলেন।

2. আর তালুত ঐ দিনে তাঁকে গ্রহণ করলেন, তাঁর পিতার বাড়িতে ফিরে যেতে দিলেন না।

3. আর যোনাথন ও দাউদ একটি নিয়ম করলেন, কেননা যোনাথন তাঁকে প্রাণতুল্য ভালবাসলেন।

4. আর যোনাথন তাঁর কোর্তা খুলে দাউদকে দিলেন আর তাঁর যুদ্ধের সাজ-পোশাক, এমন কি, নিজের তলোয়ার, ধনুক ও কোমরবন্ধনীও দিলেন।

5. পরে তালুত দাউদকে যে স্থানেই প্রেরণ করতেন, দাউদ সেই স্থানে যেতেন ও বুদ্ধিপূর্ববক চলতেন, এজন্য তালুত সৈন্যদের উপরে সেনাপতি পদে তাঁকে নিযুক্ত করলেন, আর তা সমস্ত লোকের এবং তালুতের গোলামদের দৃষ্টিতেও ভাল মনে হল।

6. পরে লোকেরা ফিরে আসলে যখন দাউদ ফিলিস্তিনীদের আঘাত করে ফিরে আসছিলেন, তখন বাদশাহ্‌ তালুতের সঙ্গে সাক্ষাত করতে ইসরাইলের সমস্ত নগর থেকে স্ত্রীলোকেরা তম্বুরাধ্বনি, আনন্দ গীত ও ত্রিতন্ত্রীবাদ্য বাদ্য সহকারে গান ও নৃত্য করতে করতে বের হয়ে এল।

7. সেই স্ত্রী-লোকেরা অভিনয় করে একে একে গান করে বললো,তালুত মারলেন হাজার হাজার,আর দাউদ মারলেন অযুত অযুত।

8. এতে তালুত ভীষণ ক্রুদ্ধ হলেন, তিনি এই কথায় অসন্তুষ্ট হয়ে বললেন, ওরা দাউদের বিষয়ে অযুত অযুতের কথা বললো ও আমার বিষয়ে কেবল হাজার হাজারের কথা বললো; এতে রাজত্ব ছাড়া সে আর কি পাবে?

9. সেদিন থেকে তালুত দাউদের উপরে দৃষ্টি রাখলেন।

দাউদের প্রতি তালুতের ঈর্ষা

10. পরের দিন আল্লাহ্‌র কাছ থেকে একটি দুষ্ট রূহ্‌ সবলে তালুতের উপরে এল এবং তিনি বাড়ির মধ্যে প্রলাপ বকতে লাগলেন, আর দাউদ প্রত্যেক দিন যেমন করতেন, তেমনি বাদ্য বাজাচ্ছিলেন; তখন তালুতের হাতে তাঁর বর্শা ছিল।

11. তালুত সেই বর্শা নিক্ষেপ করলেন, বললেন, আমি দাউদকে দেয়ালের সঙ্গে গেঁথে ফেলব; কিন্তু দাউদ দু’বার তাঁর সম্মুখ থেকে সরে গেলেন।

12. আর তালুত দাউদকে ভয় করতে লাগলেন, কারণ মাবুদ দাউদের সহবর্তী ছিলেন, কিন্তু তালুতকে ত্যাগ করেছিলেন।

13. সেজন্য তালুত তাঁর কাছ থেকে তাঁকে দূর করে দিলেন ও সহস্র্রপতি পদে নিযুক্ত করলেন; তাতে তিনি লোকদের সাক্ষাতে ভিতরে ও বাইরে গমনাগমন করতে লাগলেন।

14. আর দাউদ তাঁর সারা পথ বুদ্ধিপূর্বক চলতেন এবং মাবুদ তাঁর সহবর্তী ছিলেন।

15. তিনি বেশ বুদ্ধিপূর্বক চলছেন দেখে তালুত তাঁকে ভয়ের চোখে দেখতে লাগলেন।

16. কিন্তু সমস্ত ইসরাইল ও এহুদার লোকেরা দাউদকে ভালবাসত, কেননা তিনি তাদের সাক্ষাতে ভিতরে ও বাইরে গমনাগমন করতেন।

হযরত দাউদের সঙ্গে মিখলের বিয়ে

17. পরে তালুত দাউদকে বললেন, দেখ, আমার জ্যেষ্ঠা কন্যা মেরবকে আমি তোমার সঙ্গে বিয়ে দেব; তুমি কেবল আমার পক্ষে শক্তিশালী হয়ে মাবুদের জন্য যুদ্ধ কর। কারণ তালুত বললেন, আমার হাত তার উপরে না উঠুক, কিন্তু ফিলিস্তিনীদের হাত তার উপরে উঠুক।

18. আর দাউদ তালুতকে বললেন, আমি কে এবং আমার প্রাণ কি, ইসরাইলের মধ্যে আমার পিতার গোষ্ঠীই বা কি যে, আমি বাদশাহ্‌র জামাতা হই?

19. কিন্তু তালুতের কন্যা মেরবকে দাউদের সঙ্গে বিয়ে দেবার সময় উপস্থিত হলে তাকে মহোলাতীয় অদ্রীয়েলের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হল।

20. পরে তালুতের কন্যা মীখল দাউদকে মহব্বত করতে লাগলেন; তখন লোকেরা তালুতকে তা জানালে তিনি তাতে সন্তুষ্ট হলেন।

21. তালুত বললেন, আমি তাকে সেই কন্যা দেব; সে তাঁর ফাঁদস্বরূপ হোক ও ফিলিস্তিনীদের হাত তাঁর উপরে উঠুক। অতএব তালুত দাউদকে বললেন, তুমি আজ দ্বিতীয়বার আমার জামাতা হও।

22. পরে তালুত তাঁর গোলামদের হুকুম দিলেন, তোমরা গোপনে দাউদের সঙ্গে আলাপ করে এই কথা বল, দেখ, তোমার প্রতি বাদশাহ্‌ সন্তুষ্ট এবং তাঁর সমস্ত গোলাম তোমাকে ভালবাসে; অতএব এখন তুমি বাদশাহ্‌র জামাতা হও।

23. তালুতের গোলামেরা এই কথা দাউদের কর্ণগোচর করলো। দাউদ বললেন, বাদশাহ্‌র জামাতা হওয়া কি তোমাদের কাছে লঘু বিষয় মনে হয়? আমি তো দরিদ্র লোক, তাচ্ছিল্যের পাত্র।

24. পরে তালুতের গোলামেরা তাঁকে সংবাদ দিয়ে বললো, দাউদ এই রকম কথা বলেন।

25. তালুত বললেন, তোমরা দাউদকে এই কথা বল, বাদশাহ্‌ কোন পণ চান না, কেবল বাদশাহ্‌র দুশমনদের প্রতিশোধের জন্য ফিলিস্তিনীদের এক শত লিঙ্গাগ্রত্বক্‌ চান। তালুত মনে করলেন, ফিলিস্তিনীদের হাত দিয়ে দাউদকে নিপাত করা যাবে।

26. পরে তাঁর গোলামেরা দাউদকে সেই কথা জানালে দাউদ রাজ-জামাতা হতে তুষ্ট হলেন। তখনও কাল সমপূর্ণ হয় নি;

27. দাউদ তাঁর লোকদের সঙ্গে উঠে গিয়ে দুই শত ফিলিস্তিনীকে হত্যা করলেন এবং বাদশাহ্‌র জামাতা হবার জন্য দাউদ পূর্ণ সংখ্যা অনুসারে তাদের লিঙ্গাগ্রত্বক্‌ এনে বাদশাহ্‌কে দিলেন; পরে তালুত তাঁর সঙ্গে তাঁর কন্যা মীখলের বিয়ে দিলেন।

28. আর তালুত বুঝতে পারলেন যে, মাবুদ দাউদের সহবর্তী এবং তালুতের কন্যা মীখল তাঁকে মহব্বত করেন।

29. তাতে তালুত দাউদের বিষয়ে আরও ভয় পেলেন, আর তালুত সব সময়ই দাউদের দুশমন থাকলেন।

30. পরে ফিলিস্তিনীদের নেতৃবর্গ যুদ্ধ করবার জন্য বের হতে লাগলেন; কিন্তু যতবার বের হলেন, ততবার তালুতের গোলামদের মধ্যে দাউদ সবচেয়ে বেশি বুদ্ধিপূর্বক চললেন, তাতে তাঁর নাম অতিশয় সম্মানিত হল।