অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

১ বাদশাহ্‌নামা 12 কিতাবুল মোকাদ্দস (BACIB)

বাদশাহ্‌ রহবিয়ামের বিরুদ্ধে ইসরাইলের বিদ্রোহ

1. রহবিয়াম শিখিমে গেলেন; কেননা তাঁকে বাদশাহ্‌ করার জন্য সমস্ত ইসরাইল শিখিমে উপস্থিত হয়েছিল।

2. আর যখন নবাটের পুত্র ইয়ারাবিম এই বিষয় শুনলেন; [কারণ তিনি তখনও মিসরে ছিলেন, বাদশাহ্‌ সোলায়মানের সম্মুখ থেকে সেখানে পালিয়ে গিয়েছিলেন; এবং তিনি মিসরে বাস করছিলেন; আর লোকেরা দূত পাঠিয়ে তাঁকে ডেকে আনলো;]

3. তখন ইয়ারাবিম ও সমস্ত ইসরাইল-সমাজ রহবিয়ামের কাছে এসে এই কথা বললেন,

4. আপনার পিতা আমাদের উপর দুঃসহ জোয়াল চাপিয়ে দিয়েছেন, অতএব আপনার পিতা আমাদের উপরে যে কঠিন গোলামীর কাজ ও ভারী জোয়াল চাপিয়েছেন আপনি তা লঘু করুন, করলে আমরা আপনার গোলামী করবো।

5. তিনি তাদের বললেন, এখন চলে যাও, তিন দিন পর আবার আমার কাছে এসো। তাতে লোকেরা চলে গেল।

6. পরে বাদশাহ্‌ রহবিয়াম, তাঁর পিতা সোলায়মানের জীবনকালে যে প্রাচীন লোকেরা তাঁর সেবা করতেন, তাঁদের সঙ্গে মন্ত্রণা করলেন, বললেন, আমি ঐ লোকদের কি জবাব দেব? তোমরা কি মন্ত্রণা দাও?

7. তাঁরা তাঁকে বললেন, যদি আপনি আজ ঐ লোকদের সেবক হয়ে ওদের সেবা করেন এবং ওদের উত্তর দেন ও ভাল কথা বলেন, তবে ওরা সব সময় আপনার সেবক হয়ে থাকবে।

8. কিন্তু তিনি ঐ বৃদ্ধদের দেওয়া মন্ত্রণা ত্যাগ করে, তাঁর বয়স্য যে যুবকেরা যারা তাঁর সঙ্গে বড় হয়েছিল এবং তখন তাঁর সেবা করতো, তাদের সঙ্গে মন্ত্রণা করলেন।

9. তিনি তাদের বললেন, ঐ লোকেরা বলছে, আপনার পিতা আমাদের উপরে যে যোঁয়াল চাপিয়েছেন তা লঘু করুন, এখন আমরা ওদের কি জবাব দেব? তোমরা কি মন্ত্রণা দাও?

10. তাঁর বয়স্য যুবকেরা জবাবে বললো, যে লোকেরা আপনাকে বলছে, আপনার পিতা আমাদের উপরে ভারী জোয়াল চাপিয়েছেন, আপনি আমাদের পক্ষে তা লঘু করুন, তাদের এই কথা বলুন, আমার কনিষ্ঠ আঙ্গুল আমার পিতার কোমরের চেয়েও মোটা।

11. এখন, আমার পিতা তোমাদের উপরে ভারী যোঁয়াল চাপিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু আমি তোমাদের যোঁয়াল আরও ভারী করবো; আমার পিতা তোমাদের কশা দ্বারা শাস্তি দিতেন, কিন্তু আমি তোমাদের বৃশ্চিক দ্বারা শাস্তি দেব।

12. পরে ‘তৃতীয় দিনে আমার কাছে ফিরে এসো;’ বাদশাহ্‌র এই কথানুসারে ইয়ারাবিম এবং সমস্ত লোক তৃতীয় দিনে রহবিয়ামের কাছে উপস্থিত হলেন।

13. আর বাদশাহ্‌ লোকদের কঠিন জবাব দিলেন; বৃদ্ধ নেতারা তাঁকে যে মন্ত্রণা দিয়েছিলেন, তিনি তা ত্যাগ করলেন;

14. আর সেই যুবকদের মন্ত্রণানুযায়ী কথা তাদের বললেন; তিনি বললেন, আমার পিতা তোমাদের যোঁয়াল ভারী করেছিলেন, কিন্তু আমি তোমাদের যোঁয়াল আরও ভারী করবো; আমার পিতা তোমাদের কশা দ্বারা শাস্তি দিতেন, কিন্তু আমি তোমাদেরকে বৃশ্চিক দ্বারা শাস্তি দেব।

15. এভাবে বাদশাহ্‌ লোকদের কথায় কান দিলেন না; কেননা শীলোনীয় অহিয়ের দ্বারা মাবুদ নবাটের পুত্র ইয়ারাবিমকে যে কথা বলেছিলেন, তা অটল রাখার জন্য মাবুদ থেকে এই ঘটনা হল।

16. যখন সমস্ত ইসরাইল দেখলো, বাদশাহ্‌ তাদের কথায় কান দিলেন না, তখন লোকেরা বাদশাহ্‌কে এই উত্তর দিল, দাউদে আমাদের কি অংশ? ইয়াসির পুত্রে আমাদের কোন অধিকার নেই; হে ইসরাইল তোমাদের তাঁবুতে যাও; দাউদ! এখন তুমি নিজের কুল দেখ। পরে ইসরাইল লোকেরা যার যার তাঁবুতে চলে গেল।

17. তবুও যে সমস্ত বনি-ইসরাইল এহুদার সকল নগরে বাস করতো, রহবিয়াম সেসব নগরে রাজত্ব করতে থাকলেন।

18. পরে রহবিয়াম বাদশাহ্‌ তাঁর অধঃস্তন গোলামদের নেতা অদোরামকে পাঠালেন; কিন্তু সমস্ত ইসরাইল তাকে পাথর মারল, তাতে তাঁর মৃত্যু হল। আর বাদশাহ্‌ রহবিয়াম জেরুশালেমে পালাবার জন্য শীঘ্র গিয়ে রথে উঠলেন।

19. এভাবে ইসরাইল দাউদের কুলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলো, আজ পর্যন্ত সেই ভাবেই আছে।

ইয়ারাবিম ইসরাইলের বাদশাহ্‌ হন

20. যখন সমস্ত ইসরাইল শুনতে পেল যে ইয়ারাবিম ফিরে এসেছেন, তখন লোক পাঠিয়ে তাঁকে তাদের সভায় ডেকে আনাল এবং সমস্ত ইসরাইলের বাদশাহ্‌ করলো; কেবল এহুদা-বংশ ছাড়া আর কোন বংশ দাউদ-কুলের অনুগামী থাকলো না।

21. জেরুশালেমে উপস্থিত হওয়ার পর রহবিয়াম এহুদার সমস্ত কুল ও বিন্‌ইয়ামীন-বংশকে, এক লক্ষ আশি হাজার মনোনীত যোদ্ধাকে ইসরাইল-কুলের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য সোলায়মানের পুত্র রহবিয়ামের অধীনে রাজ্য ফিরিয়ে আনবার জন্য একত্র করলেন।

22. কিন্তু আল্লাহ্‌র লোক শময়িয়ের কাছে আল্লাহ্‌র এই কালাম নাজেল হল,

23. তুমি সোলায়মানের পুত্র এহুদার বাদশাহ্‌ রহবিয়াম, এহুদার ও বিন্‌ইয়ামীনের সমস্ত কুল এবং অবশিষ্ট লোকদেরকে বল,

24. মাবুদ এই কথা বলেন, তোমরা যাত্রা করো না, তোমাদের ভাইদের সঙ্গে বনি-ইসরাইলদের সঙ্গে যুদ্ধ করো না; প্রত্যেকে যার যার বাড়িতে ফিরে যাও, কেননা এই ঘটনা আমা থেকে হল। অতএব তারা মাবুদের কালাম মেনে মাবুদের হুকুম অনুসারে ফিরে গেল।

বাদশাহ্‌ ইয়ারাবিমের মূর্তিপূজা

25. পরে ইয়ারাবিম পর্বতময় আফরাহীম প্রদেশস্থ শিখিম নির্মাণ করে সেখানে বাস করলেন; সেই স্থান থেকে যাত্রা করে পনূয়েল নির্মাণ করলেন।

26. আর ইয়ারাবিম মনে মনে বললেন, এবার হয়তো রাজ্য আবার দাউদ-কুলের হাতে ফিরে যাবে।

27. এই লোকেরা যদি জেরুশালেমে মাবুদের গৃহে কোরবানী করতে যায়, তবে এদের অন্তর এদের প্রভু এহুদার বাদশাহ্‌ রহবিয়ামের প্রতি ফিরবে; আর এরা আমাকে হত্যা করে পুনর্বার এহুদার বাদশাহ্‌ রহবিয়ামের পক্ষ হবে।

28. অতএব বাদশাহ্‌ মন্ত্রণা করে সোনার দু’টি বাছুর তৈরি করালেন; আর তিনি লোকদেরকে বললেন, জেরুশালেমে যাওয়া তোমাদের পক্ষে কোন কাজের বিষয় নয়, হে ইসরাইল, দেখ, এই তোমার দেবতা, যিনি মিসর দেশ থেকে তোমাকে বের করে এনেছেন।

29. তিনি তাদের একটা বেথেলে স্থাপন করলেন, আর একটা দানে রাখলেন।

30. এই ব্যাপারটা তাদের পক্ষে গুনাহ্‌স্বরূপ হয়ে দাঁড়াল, কেননা তার একটার পূজা করার জন্য বৈথেল ও অন্যটার পূজা করার জন্য লোকেরা দান পর্যন্তও যেতে লাগল।

31. পরে তিনি কতকগুলো উচ্চস্থলীতে বাড়ি নির্মাণ করলেন এবং যারা লেবির সন্তান নয়, এসব লোকের মধ্য থেকে ইমাম নিযুক্ত করলেন।

32. আর ইয়ারাবিম অষ্টম মাসের পঞ্চদশ দিনে এহুদাস্থ উৎসবের মত একটি উৎসব নির্ধারণ করলেন; এবং কোরবানগাহ্‌র কাছে উঠে গেলেন; তিনি বেথেলেও এরকম করলেন, নিজের তৈরি বাছুরের মূর্তির কাছে কোরবানী করলেন এবং তাঁর তৈরি উচ্চস্থলীগুলোর ইমামদেরকে বেথেলে রাখলেন।

33. তিনি অষ্টম মাসের, যে মাস তিনি পরিকল্পনা করেছিলেন, সেই মাসের পঞ্চদশ দিনে তাঁর তৈরি কোরবানগাহ্‌র কাছে গেলেন, আর তিনি ইসরাইল-সন্তানদের জন্য উৎসব নির্ধারণ করলেন এবং ধূপদাহের জন্য কোরবানগাহ্‌র কাছে গেলেন।