অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24
  25. 25
  26. 26
  27. 27
  28. 28
  29. 29
  30. 30
  31. 31
  32. 32
  33. 33
  34. 34
  35. 35
  36. 36

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

শুমারী 22 কিতাবুল মোকাদ্দস (BACIB)

বাদশাহ্‌ বালাক ও বালামের বিবরণ

1. পরে বনি-ইসরাইলরা যাত্রা করে জেরিকোর নিকটস্থ জর্ডানের ওপারে মোয়াবের উপত্যকায় শিবির স্থাপন করলো।

2. আর ইসরাইল আমোরীয়দের প্রতি যা কিছু করেছিল, সেসব সিপ্পোরের পুত্র বালাক দেখেছিলেন।

3. বনি-ইসরাইলরা সংখ্যায় অনেক ছিল বলে মোয়াব ভীষণ ভয় পেল; তাদের দেখে মোয়াবীয়দের হৃদয় ভয়ে গলে গেল।

4. পরে মোয়াব মাদিয়ানের প্রাচীন লোকদের বললো, গরু যেমন মাঠের ঘাস খেয়ে শেষ করে দেয়, তেমনি এই জন-সমাজ আমাদের চারদিকের সমস্ত কিছুই খেয়ে শেষ করে দেবে। সেই সময় সিপ্পোরের পুত্র বালাক মোয়াবের বাদশাহ্‌ ছিলেন।

5. অতএব তিনি বিয়োরের পুত্র বালামকে ডেকে আনতে তার স্বজাতীয় লোকদের দেশে (ফোরাত) নদী তীরে অবস্থিত পাথোর নগরে দূত পাঠিয়ে তাকে বললেন, দেখুন, মিসর থেকে এক জাতি বের হয়ে এসেছে, দেখুন, তারা ভূতল আচ্ছন্ন করে আমার সম্মুখে অবস্থান করেছে।

6. এখন নিবেদন করি, আপনি এসে আমার জন্য সেই লোকদের বদদোয়া দিন; কেননা আমার চেয়ে তারা বলবান। হয় তো আমি তাদেরকে আঘাত করে দেশ থেকে দূর করে দিতে পারব; কেননা আমি জানি আপনি যাকে দোয়া করেন সে দোয়া লাভ করে ও যাকে বদদোয়া দেন সে বদদোয়াগ্রস্ত হয়।

7. পরে মোয়াবের প্রাচীন ও মাদিয়ানের প্রাচীন ব্যক্তিবর্গ মন্ত্রের পুরস্কার হাতে নিয়ে প্রস্থান করলো এবং বালামের কাছে উপস্থিত হয়ে বালাকের কথা তাকে বললো।

8. সে তাদেরকে বললো, তোমরা এই স্থানে রাত্রি যাপন কর; পরে মাবুদ আমাকে যা বলবেন, তদনুযায়ী আমি তোমাদেরকে বলবো; তাতে মোয়াবের কর্মকর্তারা বালামের সঙ্গে রাত্রিবাস করলো।

9. পরে আল্লাহ্‌ বালামের কাছে উপস্থিত হয়ে বললেন, তোমার সঙ্গে এই লোকেরা কারা?

10. তাতে বালাম আল্লাহ্‌কে বললো, মোয়াবের বাদশাহ্‌ সিপ্পোরের পুত্র বালাক আমার কাছে বলে পাঠিয়েছেন;

11. দেখ, মিসর থেকে বের হয়ে আসা ঐ জাতি ভূতল আচ্ছন্ন করেছে। এখন তুমি এসে আমার পক্ষ হয়ে তাদেরকে বদদোয়া দাও, হয়তো আমি তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে তাদেরকে দূর করে দিতে পারবো।

12. তাতে আল্লাহ্‌ বালামকে বললেন, তুমি তাদের সঙ্গে যেও না, সেই জাতিকে বদদোয়া দিও না, কেননা তারা দোয়াযুক্ত।

13. পরে বালাম খুব ভোরে উঠে বালাকের কর্মকর্তাদেরকে বললো, তোমরা স্বদেশে চলে যাও, কেননা তোমাদের সঙ্গে আমার যাত্রায় মাবুদ অসম্মত হয়েছেন।

14. তাতে মোয়াবের কর্মকর্তারা উঠে বালাকের কাছে গিয়ে বললো, আমাদের সঙ্গে আসতে বালাম অসম্মত হয়েছেন।

15. পরে বালাক আবার তাদের চেয়ে বহুসংখ্যক ও সম্ভ্রান্ত অন্য কর্মকর্তাদেরকে প্রেরণ করলেন।

16. তারা বালামের কাছে এসে তাকে বললো, সিপ্পোরের পুত্র বালাক এই কথা বলেন, আরজ করি, আমার কাছে আসতে আপনি কোনমতেই দ্বিধা করবেন না।

17. কেননা আমি আপনাকে অতিশয় সম্মানিত করবো; আপনি আমাকে যা যা বলবেন, আমি সবই করবো। অতএব আরজ করি, আপনি এসে আমার পক্ষে সেই লোকদেরকে বদদোয়া দিন।

18. তখন বালাম বালাকের গোলামদের জবাব দিল, যদি বালাক রূপা ও সোনায় পরিপূর্ণ তার বাড়িখানা আমাকে দেন, তবুও আমি অল্প বা বেশি কিছু করার জন্য আমার আল্লাহ্‌ মাবুদের হুকুম লঙ্ঘন করতে পারব না।

19. এখন আরজ করি, তোমরাও এই স্থানে রাত্রি যাপন কর, মাবুদ আমাকে আবার যা বলবেন তা আমি জেনে নেবো।

20. পরে আল্লাহ্‌ রাতের বেলা বালামের কাছে এসে তাকে বললেন, ঐ লোকেরা যদি তোমাকে ডাকতে এসে থাকে, তুমি উঠ, তাদের সঙ্গে যাও; কিন্তু আমি তোমাকে যা বলবো, কেবল তা-ই তুমি করবে।

21. তাতে বালাম খুব ভোরে উঠে তার গাধী সাজিয়ে মোয়াবের কর্মকর্তাদের সঙ্গে গমন করলো।

বালাম, গাধা ও ফেরেশতা

22. পরে তার গমনে আল্লাহ্‌র ক্রোধ প্রজ্বলিত হল এবং মাবুদের ফেরেশতা তার পথ অবরোধ করে পথের মধ্যে দাঁড়ালেন। সে তার গাধীতে চড়ে যাচ্ছিল এবং তার দুই জন গোলাম তার সঙ্গে ছিল।

23. সেই গাধী দেখলো, মাবুদের ফেরেশতা উন্মুক্ত তলোয়ার হাতে নিয়ে পথের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন। অতএব গাধী পথ ছেড়ে ক্ষেতে নামলো; তাতে বালাম গাধীকে পথে আনবার জন্য প্রহার করলো।

24. পরে মাবুদের ফেরেশতা দু’টি আঙ্গুর-ক্ষেতের গলিপথে দাঁড়ালেন, এই পাশে প্রাচীর এবং অন্য পাশে প্রাচীর ছিল।

25. তখন গাধীটি মাবুদের ফেরেশতাকে দেখে প্রাচীরে গা ঘেঁষে গেল, আর প্রাচীরে বালামের পায়ে ঘর্ষণ লাগল; তাতে সে আবার তাকে প্রহার করলো।

26. পরে মাবুদের ফেরেশতা আরও কিঞ্চিৎ অগ্রসর হয়ে, ডানে বা বামে ফিরবার পথ নেই, এমন একটি সঙ্কীর্ণ স্থানে দাঁড়ালেন।

27. তখন গাধীটি মাবুদের ফেরেশতাকে দেখে নিচে ভূমিতে বসে পড়লো; তাতে বালামের ক্রোধ প্রজ্বলিত হলে সে গাধীটিকে লাঠি দিয়ে প্রহার করলো।

28. তখন মাবুদ গাধীটির মুখ খুলে দিলেন এবং সে বালামকে বললো, আমি তোমার কি করলাম যে, তুমি তিনবার আমাকে প্রহার করলে?

29. বালাম গাধীটিকে বললো, তুমি আমাকে বিদ্রূপ করেছ; আমার হাতে যদি তলোয়ার থাকতো, তবে আমি এখনই তোমাকে হত্যা করতাম।

30. পরে গাধী বালামকে বললো, তুমি জন্ম থেকে আজ পর্যন্ত যার উপরে চড়ে থাক, আমি কি তোমার সেই গাধী নই? আমি কি তোমার প্রতি এমন ব্যবহার করে থাকি? সে বললো, না।

31. তখন মাবুদ বালামের চোখ খুলে দিলেন, তাতে সে দেখলো, মাবুদের ফেরেশতা উন্মুক্ত তলোয়ার হাতে নিয়ে পথের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন; তখন সে মাথা নত করে উবুড় হয়ে পড়লো।

32. তখন মাবুদের ফেরেশতা তাকে বললেন, তুমি তিনবার তোমার গাধীটিকে কেন প্রহার করলে? দেখ, আমি তোমার বিপক্ষ হিসেবে বের হয়েছি, কেননা আমার সাক্ষাতে তুমি বিপথে যাচ্ছ;

33. আর গাধীটি আমাকে দেখে এই তিনবার আমার সম্মুখ থেকে ফিরলো; সে যদি আমার সম্মুখ থেকে না ফিরতো, তবে আমি নিশ্চয়ই তোমাকে হত্যা করতাম, আর ওকে জীবিত রাখতাম।

34. তাতে বালাম মাবুদের ফেরেশতাকে বললো, আমি গুনাহ্‌ করেছি; কেননা আপনি যে আমার বিপরীতে পথে দাঁড়িয়ে আছেন, তা আমি বুঝতে পারি নি, কিন্তু এখন যদি এতে আপনার অসন্তোষ হয়, তবে আমি ফিরে যাই।

35. তাতে মাবুদের ফেরেশতা বালামকে বললেন, ঐ লোকদের সঙ্গে যাও, কিন্তু আমি যে কথা তোমাকে বলবো, তুমি কেবল তা-ই বলবে। পরে বালাম বালাকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে গমন করলো।

36. বালাম এসেছে শুনে বালাক তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে মোয়াবের নগরে গমন করলেন। সেই নগরটি দেশের সীমার প্রান্তস্থিত অর্ণোনের সীমায় অবস্থিত।

37. আর বালাক বালামকে বললেন, আমি আপনাকে ডেকে আনতে কি যথাযথ সম্মানপূর্বক লোক পাঠাই নি? আপনি আমার কাছে কেন আসেন নি? আপনাকে সম্মানিত করতে আমি কি সত্যিই অসমর্থ?

38. তাতে বালাম বালাককে বললো, দেখুন, আমি আপনার কাছে আসলাম, কিন্তু এখনও কোন কথা বলার কি আমার ক্ষমতা আছে? আল্লাহ্‌ আমার মুখে যে কালাম দেবেন, শুধু তা-ই বলবো।

39. পরে বালাম বালাকের সঙ্গে গমন করলো, আর তাঁরা কিরিয়ৎ হুষোতে উপস্থিত হলেন।

40. আর বালাক কতকগুলো গরু ও ভেড়া জবেহ্‌ করে বালাম ও তার সঙ্গী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন।