অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24
  25. 25
  26. 26
  27. 27
  28. 28
  29. 29
  30. 30
  31. 31
  32. 32
  33. 33
  34. 34
  35. 35
  36. 36

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

শুমারী 11 কিতাবুল মোকাদ্দস (BACIB)

লোকদের বচসা ও দণ্ড

1. আর লোকেরা বচসাকারীদের মত মাবুদের কর্ণগোচরে অভিযোগ করতে লাগল; আর মাবুদ তা শুনলেন ও এতে তাঁর ক্রোধ প্রজ্বলিত হয়ে উঠলো; তাতে তাদের মধ্যে মাবুদের আগুন জ্বলে উঠে শিবিরের প্রান্তভাগ গ্রাস করতে লাগল।

2. তখন লোকেরা মূসার কাছে কান্নাকাটি করতে লাগল; তাতে মূসা মাবুদের কাছে মুনাজাত করলে সেই আগুন নিভে গেল।

3. তখন তিনি ঐ স্থানের নাম রাখলেন তবেরা [জ্বলন], কেননা মাবুদের আগুন তাদের মধ্যে জ্বলেছিল।

4. আর তাদের মধ্যে যেসব বিদেশী লোক ছিল, তারা খাবারের লোভে পাগল হয়ে উঠলো; আর বনি-ইসরাইলও পুনর্বার কান্না-কাটি করে বলতে লাগল, ভোজন করার জন্য কে আমাদের গোশ্‌ত দেবে?

5. আমরা মিসর দেশে বিনামূল্যে যে যে মাছ খেতাম সেগুলোর কথা এবং সেখানকার শশা, তরমুজ, পিঁয়াজ, সব্‌জি-পিঁয়াজ ও রসুনের কথা মনে পড়ছে।

6. এখন আমাদের প্রাণ শুকিয়ে যাচ্ছে, কিছুই নেই; আমাদের সম্মুখে এই মান্না ছাড়া আর কিছু নেই।

7. —ঐ মান্না ছিল ধনিয়া বীজের মত ও তা দেখতে ছিল গুগগুলের মত।

8. লোকেরা ঘুরে ঘুরে তা কুড়াতো এবং যাঁতায় পিষে কিংবা উখ্‌লিতে চূর্ণ করে একটি পাত্রে সিদ্ধ করতো ও তা দিয়ে পিঠা প্রস্তুত করতো; তার স্বাদ ছিল তেল দিয়ে তৈরি করা পিঠার মত।

9. রাত্রে শিবিরের উপরে শিশির পড়লে ঐ মান্না তার উপরে পড়ে থাকতো।

10. মূসা লোকদের কান্না শুনলেন, তারা গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে প্রত্যেকে নিজ নিজ তাঁবুর দরজার কাছে কাঁদছিল; আর এতে মাবুদের ক্রোধ অতিশয় প্রজ্বলিত হল এবং মূসাও অসন্তুষ্ট হলেন।

11. তখন মূসা মাবুদকে বললেন, তুমি কি জন্য তোমার গোলামকে এত কষ্ট দিচ্ছ? কি জন্যই বা আমি তোমার অনুগ্রহ লাভ করি নি, যার ফলে তুমি এসব লোকের ভার আমার উপরে দিয়েছ?

12. আমি কি এই সমস্ত লোক গর্ভে ধারণ করেছি? আমি কি এদেরকে প্রসব করেছি? সেজন্য তুমি এদের পূর্বপুরুষদের কাছে যে দেশের বিষয়ে কসম খেয়েছিলে, সেই দেশ পর্যন্ত আমাকে কি দুগ্ধপোষ্য শিশু বহনকারী পালকের মত এদেরকে বুকে করে বহন করতে বলছো?

13. এই সমস্ত লোককে দেবার জন্য আমি কোথায় গোশ্‌ত পাব? এরা তো আমার কাছে কান্নাকাটি করে বলছে, আমাদেরকে গোশ্‌ত দাও, আমরা খাব।

14. একাকী এত লোকের ভার সহ্য করা আমার অসাধ্য; কেননা তা আমার শক্তির অতিরিক্ত।

15. তুমি যদি আমার প্রতি এরকম ব্যবহার কর, তবে আরজ করি, আমি তোমার দৃষ্টিতে যদি অনুগ্রহ লাভ করে থাকি, আমাকে একবারে মেরে ফেলো; আমি যেন আমার দুর্গতি না দেখি।

সত্তর জন প্রাচীন

16. তখন মাবুদ মূসাকে বললেন, তুমি যাদেরকে লোকদের প্রাচীন ও নেতা বলে জান, ইসরাইলের এমন সত্তরজন প্রাচীন লোককে সংগ্রহ কর। তাদেরকে জমায়েত-তাঁবুর কাছে আন; তারা তোমার সঙ্গে সেই স্থানে দাঁড়াবে।

17. পরে আমি সেই স্থানে নেমে তোমার সঙ্গে কথা বলবো এবং তোমার উপরে যে রূহ্‌ অবস্থিতি করেন, তাঁর কিছু পরিমাণ নিয়ে তাদের উপরে অবস্থিতি করাব, তাতে তুমি যেন একাকী লোকদের ভার বহন না কর, এজন্য তারা তোমার সঙ্গে লোকদের ভার বহন করবে।

18. আর তুমি লোকদেরকে বল, তোমরা আগামী-কালের জন্য নিজদেরকে পাক-পবিত্র কর, গোশ্‌ত ভোজন করতে পাবে; কেননা তোমরা মাবুদের কাছে কান্নাকাটি করেছ, বলেছ, ‘আমাদেরকে কে গোশ্‌ত ভোজন করতে দেবে? বরং মিসর দেশে আমরা ভাল ছিলাম;’ অতএব মাবুদ তোমাদেরকে গোশ্‌ত দেবেন, তোমরা খাবে।

19. এক দিন বা দুই দিন বা পাঁচ দিন বা দশ দিন বা বিশ দিন তা খাবে, এমন নয়;

20. সমপূর্ণ এক মাস পর্যন্ত, যতক্ষণ তা তোমরা বমন করে না ফেল ও তাতে তোমাদের অরুচি না হয়, ততক্ষণ খাবে; কেননা তোমরা তোমাদের মধ্যবর্তী মাবুদকে অগ্রাহ্য করেছ এবং তাঁর সম্মুখে কান্নাকাটি করে এই কথা বলেছ, ‘আমরা কেন মিসর থেকে বের হয়ে এসেছি?’

21. তখন মূসা বললেন, আমি যে লোকদের মধ্যে আছি, তারা ছয় লক্ষ পদাতিক; আর তুমি বলছো, আমি তাদেরকে সমপূর্ণ এক মাস খাওয়ার জন্য গোশ্‌ত দেব।

22. তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে খাওয়াবার জন্য কি ভেড়ার পাল ও গরুর পাল মারতে হবে? না তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে খাওয়াবার জন্য সমুদ্রের সমস্ত মাছ সংগ্রহ করতে হবে?

23. মাবুদ মূসাকে বললেন, মাবুদের কুদরত কি এতই কম? তোমার কাছে আমার কালাম ফলবে কি না, এখন দেখবে।

24. তখন মূসা বাইরে গিয়ে মাবুদের সমস্ত কথা লোকদের বললেন এবং তাদের প্রাচীনদের মধ্যে সত্তর জনকে একত্র করে তাঁবুর চারপাশে উপস্থিত করলেন।

25. আর মাবুদ মেঘে নেমে তাঁর সঙ্গে কথা বললেন এবং যে রূহ্‌ তাঁর উপরে ছিলেন, তাঁর কিছু পরিমাণ নিয়ে সেই সত্তর জন প্রধান ব্যক্তিদের উপরে অবস্থিতি করালেন; তাতে রূহ্‌ তাঁদের উপরে অবস্থিতি করলে তাঁরা ভবিষ্যদ্বাণী বললেন, কিন্তু তারপর আর বললেন না।

26. কিন্তু শিবিরের মধ্যে দু’জন অবশিষ্ট ছিলেন, একজনের নাম ইল্‌দদ, অপরজন মেদদ; রূহ্‌ তাদের উপরে অবস্থিতি করলেন; তাঁরা ঐ উল্লিখিত লোকদের মধ্যে ছিলেন বটে, কিন্তু বাইরে তাঁবুর কাছে যান নি; তাঁরা শিবিরের মধ্যে ভবিষ্যদ্বাণী বলতে লাগলেন।

27. তাতে এক জন যুবক দৌড়ে গিয়ে মূসাকে বললো, ইল্‌দদ ও মেদদ শিবিরে ভবিষ্যদ্বাণী বলতে শুরু করছে।

28. তখন নূনের পুত্র ইউসা, মূসার পরিচারক, যিনি তাঁর এক জন মনোনীত লোক, তিনি বললেন, হে আমার মালিক মূসা, তাদেরকে বারণ করুন।

29. মূসা তাঁকে বললেন, তুমি কি আমার পক্ষে ঈর্ষা করছো? মাবুদের সকল লোক নবী হোক ও মাবুদ তাদের উপরে তাঁর রূহ্‌ দান করুন।

30. পরে মূসা ও ইসরাইলের প্রাচীনবর্গরা শিবিরে প্রস্থান করলেন।

ভারুই পাখি

31. পরে মাবুদের কাছ থেকে বায়ু বের হয়ে সমুদ্র থেকে ভারুই পাখি এনে শিবিরের উপরে ফেললো; শিবিরের চারদিকে এপাশে এক দিনের পথ, ওপাশে এক দিনের পথ পর্যন্ত ফেললো, সেগুলো ভূমির উপরে দুই হাত উঁচু হয়ে রইলো।

32. লোকেরা সেসব দিনরাত ও পরদিন সমস্ত দিন ভারুই পাখি সংগ্রহ করলো; তাদের মধ্যে কেউ দশ হোমরের কম সংগ্রহ করলো না; পরে নিজেদের জন্য শিবিরের চারদিকে তা ছড়িয়ে রাখল।

33. কিন্তু সেই গোশ্‌ত চিবাবার আগেই লোকদের প্রতি মাবুদের ক্রোধ প্রজ্বলিত হল; আর মাবুদ লোকদেরকে প্রচণ্ড মহামারী দ্বারা আঘাত করলেন।

34. আর [মূসা] সেই স্থানের নাম কিব্রোৎ-হত্তাবা [লোভীদের কবর] রাখলেন, কেননা সেই স্থানে তারা লোভীদেরকে কবর দিল।

35. কিব্রোৎ-হত্তাবা থেকে লোকেরা হৎসেরোতে যাত্রা করলো এবং তারা হৎসেরোতে অবস্থান গ্রহণ করলো।