অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

যোয়েল 2 কিতাবুল মোকাদ্দস (BACIB)

1. তোমরা সিয়োনে তূরী বাজাও, আমার পবিত্র পর্বতে সিংহনাদ কর, দেশ-নিবাসী সকলেই কেঁপে উঠুক; কেননা মাবুদের দিন আসছে, হ্যাঁ, সেই দিন সন্নিকট।

2. তা অন্ধকার ও ঘোর অন্ধকারের দিন, মেঘের ও ঘন অন্ধকারের দিন, পর্বতমালার উপরে অরুণের মত তা ব্যাপ্ত হচ্ছে। বলবতী একটি মহাজাতি; তার মত জাতি যুগের আরম্ভ থেকে হয় নি এবং তারপর পুরুষানুক্রমে বছর-পর্যায়েও হবে না।

3. তাদের আগে আগুন গ্রাস করে, পিছনে বহ্নি-শিখা জ্বলে; তাদের সম্মুখে দেশ যেন আদন বাগান, তাদের পিছনে ধ্বংসপ্রাপ্ত মরুভূমি, তা থেকে কিছুই রক্ষা পায় নি।

4. তাদের আকার ঘোড়ার আকৃতির মত এবং তারা ঘোড়সওয়ারদের মত ধাবমান হয়।

5. তাদের লম্ফের আওয়াজ পর্বতশৃঙ্গের উপরে রথের শব্দের মত, নাড়া পোড়ানো আগুনের শিখার শব্দের মত; তারা যুদ্ধের জন্য শ্রেণীবদ্ধ শক্তিশালী জাতির মত।

6. তাদের সম্মুখে জাতিরা যন্ত্রণাগ্রস্ত, সকলেরই মুখ কালিমাযুক্ত হয়।

7. তারা বীরের মত দৌড়ায়, যোদ্ধাদের মত প্রাচীরে ওঠে, প্রত্যেকে নিজ নিজ পথে অগ্রসর হয়, নিজেদের পথ জটিল করে না।

8. তারা এক জন অন্যের উপরে চাপাচাপি করে না; সকলেই নিজ নিজ পথে অগ্রসর হয় এবং তলোয়ারের উপরে পড়লেও আহত হয় না।

9. তারা নগরের উপর লাফ দেয়, প্রাচীরের উপরে দৌড়ায়, বাড়ির মধ্যে ওঠে, চোরের মত জানালা দিয়ে প্রবেশ করে।

10. তাদের সম্মুখে দুনিয়া কাঁপে, আকাশমণ্ডল কমপমান হয়, চন্দ্র ও সূর্য অন্ধকারময় হয়, নক্ষত্রগুলো নিজ নিজ আলো দেওয়া বন্ধ করে দেয়।

11. মাবুদ নিজের সৈন্যসামন্তের আগে তাঁর কণ্ঠস্বর শোনাচ্ছেন; কেননা তাঁর বাহিনী বিরাট বড়; যারা তাঁর হুকুম মান্য করে তারা বলবান। কেননা মাবুদের দিন মহৎ ও অতি ভয়ানক; আর কে তা সহ্য করতে পারে?

12. কিন্তু, মাবুদ বলেন, এখনও তোমরা সমস্ত অন্তঃকরণের সঙ্গে এবং রোজা, কান্নাকাটি ও মাতম সহকারে আমার কাছে ফিরে এসো।

13. আর নিজ নিজ কাপড় না ছিঁড়ে অন্তঃকরণ ছিঁড় এবং তোমাদের আল্লাহ্‌ মাবুদের কাছে ফিরে এসো, কেননা তিনি কৃপাময় ও স্নেহশীল ক্রোধে ধীর ও অটল মহব্বতে মহান এবং অমঙ্গলের বিষয়ে অনুশোচনা করেন।

14. কে জানে যে, তিনি ফিরে অনুশোচনা করবেন না এবং তাঁর পিছনে দোয়া, অর্থাৎ তোমাদের আল্লাহ্‌ মাবুদের উদ্দেশে শস্য-উৎসর্গ ও পেয়-নৈবেদ্য রেখে যাবেন না?

15. তোমরা সিয়োনে তূরী বাজাও, পবিত্র রোজা নির্ধারণ কর, একটি বিশেষ মাহ্‌ফিল আহ্বান কর;

16. লোকদের একত্র কর, পবিত্র সমাজ নির্ধারণ কর, প্রাচীনদেরকে আহ্বান কর, বালক বালিকাদের ও দুগ্ধপোষ্য শিশুদেরকে একত্র কর; বর তার বাসগৃহ থেকে, কন্যা তার অন্তঃপুর থেকে বের হোক।

17. বারান্দার ও কোরবানগাহ্‌র মধ্যস্থানে মাবুদের পরিচারক ইমামেরা কান্নাকাটি করুক, তারা বলুক,হে মাবুদ, তোমার লোকদের প্রতি মমতা কর,তোমার অধিকারকে উপহাসের বিষয় করো না;তাদের বিষয়ে জাতিদেরকে গল্প করতে দিও না,লোকজন কেন বলবে যে, ‘ওদের আল্লাহ্‌ কোথায়?’

আল্লাহ্‌র রহম, তাঁর সেবকদের মঙ্গল

18. তখন মাবুদ তাঁর দেশের জন্য উদ্যোগী হলেন ও তাঁর লোকদের প্রতি রহম করলেন।

19. আর মাবুদ জবাব দিলেন, তাঁর লোকদের বললেন, দেখ, আমি তোমাদের কাছে শস্য, আঙ্গুর-রস ও তেল পাঠিয়েছি, তোমরা তাতে তৃপ্ত হবে; এবং আমি জাতিদের মধ্যে তোমাদেরকে আর উপহাসের পাত্র করবো না।

20. বরং আমি তোমাদের কাছ থেকে উত্তর দেশীয় সৈন্য দূর করবো এবং তাকে শুকনো ও ধ্বংসপ্রাপ্ত দেশে তাড়িয়ে দেব, পূর্ব সমুদ্রের দিকে তার অগ্রভাগ ও পশ্চিম সমুদ্রের দিকে তার পশ্চাদ্ভাগ ফেলে দেব; আর তার দুর্গন্ধ ও পূতিগন্ধ উঠবে, কারণ সে মহৎ মহৎ কাজ করেছে।

21. হে দেশ, ভয় করো না, উল্লসিত হও, আনন্দ কর, কেননা মাবুদ মহৎ মহৎ কাজ করেছেন।

22. হে ক্ষেতের পশুরা, ভয় করো না, কেননা মরুভূমিস্থ চারণভূমি সবুজ হয়ে উঠছে, গাছ ফলবান হচ্ছে, ডুমুর গাছ ও আঙ্গুরলতা নিজ নিজ ফল দিচ্ছে।

23. আর হে সিয়োন-সন্তানেরা, তোমরা উল্লসিত হও, তোমাদের আল্লাহ্‌ মাবুদে আনন্দ কর, কেননা তিনি তোমাদেরকে যথাপরিমাণে অগ্রিম বৃষ্টি দিলেন এবং প্রথমত তোমাদের জন্য প্রথম ও শেষ বর্ষার পানি বর্ষান করলেন।

24. এভাবে খামারগুলো শস্যে পরিপূর্ণ হবে, আঙ্গুর-রস ও তেলে কুণ্ডগুলো উথলে উঠবে।

25. আর পঙ্গপাল, পতঙ্গ, ঘুর্ঘুরিয়া ও শূককীট— আমি যে আমার মহাসৈন্য তোমাদের কাছে পাঠিয়েছি, তারা যেসব বছরের শস্যাদি খেয়েছে, আমি তা পরিশোধ করে তোমাদের দেব।

26. তোমরা প্রচুর খাদ্য ভোজন করে তৃপ্ত হবে; এবং তোমাদের আল্লাহ্‌ মাবুদের নামের প্রশংসা করবে, যিনি তোমাদের প্রতি আশ্চর্য ব্যবহার করেছেন; আর আমার লোকেরা কখনও লজ্জিত হবে না।

27. তাতে তোমরা জানবে, আমি ইসরাইলের মধ্যবর্তী এবং আমি তোমাদের আল্লাহ্‌ মাবুদ, অন্য কেউ নেই এবং আমার লোকেরা কখনও লজ্জিত হবে না।

মাবুদের রূহের অবতরণ

28. আর তারপর এরকম ঘটবে,আমি সকল মানুষের উপরে আমার রূহ্‌ সেচন করবো,তাতে তোমাদের পুত্রকন্যাদের ভবিষ্যদ্বাণী বলবেতোমাদের প্রাচীনেরা স্বপ্ন দেখবে,তোমাদের যুবকেরা দর্শন পাবে;

29. আর সেই সময়ে আমি গোলাম-বাঁদীদের উপরে,আমার রূহ্‌ সেচন করবো।

30. আর আমি আসমানে ও দুনিয়াতে অদ্ভুত লক্ষণ দেখাব;রক্ত, আগুন ও ধোঁয়ার স্তম্ভ দেখাব।

31. মাবুদের ঐ মহৎ ও ভয়ঙ্কর দিনের আগমনের আগেসূর্য অন্ধকার ও চন্দ্র রক্ত হয়ে যাবে।

32. আর যে কেউ মাবুদের নামে ডাকবে, সেই রক্ষা পাবে;কারণ মাবুদের কালাম অনুসারে সিয়োন পর্বতেও জেরুশালেমে রক্ষাপ্রাপ্ত দল থাকবেএবং পলাতক সকলের মধ্যে এমন লোক থাকবে,যাদেরকে মাবুদ ডাকবেন।