অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24
  25. 25
  26. 26
  27. 27
  28. 28
  29. 29
  30. 30
  31. 31
  32. 32
  33. 33
  34. 34
  35. 35
  36. 36
  37. 37
  38. 38
  39. 39
  40. 40
  41. 41
  42. 42
  43. 43
  44. 44
  45. 45
  46. 46
  47. 47
  48. 48
  49. 49
  50. 50

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

পয়দায়েশ 42 কিতাবুল মোকাদ্দস (BACIB)

হযরত ইউসুফের ভাইদের মিসরে যাত্রা

1. আর ইয়াকুব দেখলেন যে, মিসর দেশে শস্য আছে, তাই ইয়াকুব তাঁর পুত্রদেরকে বললেন, তোমরা এক জন অন্যজনের দিকে তাকিয়ে আছ কেন?

2. তিনি আরও বললেন, দেখ, আমি শুনলাম, মিসরে শস্য আছে, তোমরা সেখানে যাও, আমাদের জন্য শস্য ক্রয় করে আন; তা হলে আমরা বাঁচবো, মরবো না।

3. পরে ইউসুফের দশ জন ভাই শস্য ক্রয় করতে মিসরে গেলেন।

4. কিন্তু ইয়াকুব ইউসুফের সহোদর বিন্‌ইয়ামীনকে ভাইদের সঙ্গে পাঠালেন না; কেননা তিনি বললেন, পাছে এর বিপদ ঘটে।

5. যারা মিসর দেশে গিয়েছিল, তাদের মধ্যে ইসরাইলের পুত্ররাও শস্য কিনবার জন্য গেলেন, কেননা কেনান দেশেও দুর্ভিক্ষ হয়েছিল।

6. সেই সময় ইউসুফই ঐ দেশের শাসনকর্তা ছিলেন, তিনিই দেশীয় সমস্ত লোকের কাছে শস্য বিক্রি করছিলেন; অতএব ইউসুফের ভাইয়েরা তাঁর কাছে গিয়ে ভূমিতে উবুড় হয়ে সম্মান দেখালেন।

7. তখন ইউসুফ তাঁর ভাইদেরকে দেখে চিনলেন, কিন্তু তাঁদের কাছে অপরিচিত লোকের মত ব্যবহার করলেন ও কর্কশভাবে তাঁদের সঙ্গে কথা বললেন। তিনি তাঁদেরকে বললেন, তোমরা কোথা থেকে এসেছো? তাঁরা বললেন, কেনান দেশ থেকে খাদ্যদ্রব্য কিনতে এসেছি।

8. বাস্তবিক ইউসুফ তাঁর ভাইদেরকে চিনলেন, কিন্তু তাঁরা তাঁকে চিনতে পারলেন না।

9. ইউসুফ তাঁদের বিষয়ে যে যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তা তাঁর স্মরণ হল; আর তিনি তাঁদেরকে বললেন, তোমরা গুপ্তচর, দেশের অরক্ষিত স্থানগুলো দেখতে এসেছ।

10. তাঁরা বললেন, না, মালিক, আপনার এই গোলামেরা খাদ্যদ্রব্য কিনতে এসেছে;

11. আমরা সকলে এক পিতার সন্তান; আমরা সৎ লোক, আপনার এই গোলামেরা গুপ্তচর নয়।

12. কিন্তু তিনি তাঁদেরকে বললেন, না, না, তোমরা দেশের অরক্ষিত স্থানগুলো দেখতে এসেছ।

13. তাঁরা বললেন, আপনার এই গোলামেরা বারো ভাই, কেনান দেশ-নিবাসী একজনের পুত্র; দেখুন, আমাদের ছোট ভাই এখন পিতার কাছে আছে এবং এক জন নেই।

14. তখন ইউসুফ তাঁদেরকে বললেন, আমি যে তোমাদেরকে বললাম, তোমরা গুপ্তচর, তা-ই বটে।

15. এতেই তোমাদের পরীক্ষা হয়ে যাবে; আমি ফেরাউনের প্রাণের কসম দিয়ে বলছি, তোমাদের ছোট ভাই এখানে না আসলে তোমরা এই স্থান থেকে বের হতে পারবে না।

16. তোমাদের এক জনকে পাঠিয়ে তোমাদের সেই ভাইকে আনাও, তোমরা বন্দী থাকো; এভাবে তোমাদের কথার পরীক্ষা হবে; তোমরা সত্যবাদী কি না, তা জানা যাবে; নতুবা আমি ফেরাউনের প্রাণের কসম খেয়ে বলছি, তোমরা অবশ্যই গুপ্তচর।

17. পরে তিনি তাঁদেরকে তিন দিন কারাগারে বন্দী করে রাখলেন।

18. পরে তৃতীয় দিনে ইউসুফ তাঁদেরকে বললেন, এক কাজ কর, তাতে বাঁচবে; আমি আল্লাহ্‌কে ভয় করি।

19. তোমরা যদি সৎলোক হও, তবে তোমাদের এক ভাই এই কারাগারে বন্দী থাকুক; তোমরা নিজ নিজ বাড়ির দুর্ভিক্ষের জন্য শস্য নিয়ে যাও;

20. পরে তোমাদের ছোট ভাইকে আমার কাছে এনো; এভাবে তোমাদের কথা প্রমাণিত হলে তোমরা মারা যাবে না। তাঁরা তা-ই করলেন।

21. আর তাঁরা একে অপরকে বললেন, নিশ্চয়ই আমরা আমাদের ভাইয়ের বিষয়ে অপরাধী, কেননা সে আমাদের কাছে বিনতি করলে আমরা তার প্রাণের কষ্ট দেখেও তা শুনি নি; এজন্য আমাদের উপর এই সঙ্কট উপস্থিত হয়েছে।

22. তখন রূবেণ উত্তরে তাঁদের বললেন, আমি না তোমাদেরকে বলেছিলাম, বালকটির বিরুদ্ধে গুনাহ্‌ করো না কিন্তু তোমরা তা শোন নি; দেখ, এখন তার রক্তেরও হিসাব দিতে হচ্ছে।

23. কিন্তু ইউসুফ যে তাঁদের এই কথা বুঝতে পারলেন তা তাঁরা জানতে পারলেন না, কেননা দোভাষী দ্বারা উভয় পক্ষের মধ্যে কথাবার্তা হচ্ছিল।

24. তখন তিনি তাঁদের কাছ থেকে সরে গিয়ে কাঁদলেন; পরে ফিরে এসে তাঁদের সঙ্গে কথা বললেন ও তাঁদের মধ্যে শিমিয়োনকে ধরে তাঁদের সাক্ষাতেই বাঁধলেন।

25. পরে ইউসুফ তাঁদের সমস্ত বস্তায় শস্য ভরতে, প্রত্যেক জনের বস্তায় টাকা ফিরিয়ে দিতে ও তাঁদেরকে পাথেয় দ্রব্য দিতে হুকুম দিলেন; আর তাঁদের জন্য তা-ই করা হল।

হযরত ইউসুফের ভাইদের কেনানে ফিরে আসা

26. পরে তাঁরা নিজ নিজ গর্দভের উপরে শস্য চাপিয়ে সেই স্থান থেকে প্রস্থান করলেন।

27. কিন্তু পান্থনিবাসে যখন এক জন তাঁর গাধাকে আহার দিতে বস্তা খুললেন, তখন বস্তার মুখেই নিজের টাকা দেখতে পেলেন।

28. তাতে তিনি ভাইদের বললেন, আমার টাকা ফিরেছে; দেখ, আমার বস্তাতেই রয়েছে। তখন তাঁদের প্রাণ উড়ে গেল ও সকলে ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে বললেন, আল্লাহ্‌ আমাদের প্রতি এ কি করলেন?

29. পরে তাঁরা কেনান দেশে তাঁদের পিতা ইয়াকুবের কাছে উপস্থিত হলেন ও তাঁদের প্রতি যা যা ঘটেছিল, সেই সমস্ত তাঁকে জানালেন,

30. বললেন, যে ব্যক্তি সেই দেশের শাসনকর্তা, তিনি আমাদের সঙ্গে কর্কশ ভাবে কথা বললেন, আর দেশ অনুসন্ধানকারী গুপ্তচর মনে করলেন।

31. আমরা তাঁকে বললাম, আমরা সৎলোক, গুপ্তচর নই;

32. আমরা বারো ভাই, সকলেই এক পিতার সন্তান; কিন্তু এক জন নেই এবং ছোটটি এখন কেনান দেশে পিতার কাছে আছে।

33. তখন সেই ব্যক্তি, সেই দেশের শাসনকর্তা আমাদেরকে বললেন, এতেই জানতে পারব যে তোমরা সৎলোক; তোমাদের এক ভাইকে আমার কাছে রেখে তোমাদের অনাহারক্লিষ্ট পরিবারের জন্য শস্য নিয়ে যাও।

34. পরে তোমাদের ছোট ভাইকে আমার কাছে নিয়ে এসো, তাতে বুঝতে পারব যে, তোমরা গুপ্তচর নও, তোমরা সৎ লোক; আর আমি তোমাদের ভাইকে তোমাদের কাছে ফিরিয়ে দেব এবং তোমরা দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারবে।

35. পরে তাঁরা বস্তা থেকে শস্য ঢাললে, প্রত্যেকে নিজ নিজ ছালায় নিজ নিজ টাকার থলি পেলেন। তখন সেসব টাকার থলি দেখে তাঁরা ও তাঁদের পিতা ভয় পেলেন।

36. আর তাঁদের পিতা ইয়াকুব বললেন, তোমরা আমাকে পুত্রহীন করেছ; ইউসুফ নেই, শিমিয়োন নেই, আবার বিন্‌-ইয়ামীনকেও নিয়ে যেতে চাইছো; এই সমস্তই আমার প্রতি ঘটছে।

37. তখন রূবেণ তাঁর পিতাকে বললেন, আমি যদি তোমার কাছে তাকে ফিরিয়ে না আনি, তবে আমার দুই পুত্রকে খুন করো; আমার হাতে তাকে দাও; আমি তোমার কাছে তাকে পুনর্বার এনে দেব।

38. তখন তিনি বললেন, আমার পুত্র তোমাদের সঙ্গে যাবে না, কেননা তার সহোদর মারা গেছে, সে একাই বেঁচে আছে। তোমরা যে পথে যাবে, সেই পথে যদি এর কোন বিপদ ঘটে তবে শোকে এই বৃদ্ধ অবস্থায় তোমরা আমাকে পাতালে নামিয়ে দেবে।