অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24
  25. 25
  26. 26
  27. 27
  28. 28
  29. 29
  30. 30
  31. 31
  32. 32
  33. 33
  34. 34
  35. 35
  36. 36
  37. 37
  38. 38
  39. 39
  40. 40
  41. 41
  42. 42
  43. 43
  44. 44
  45. 45
  46. 46
  47. 47
  48. 48
  49. 49
  50. 50

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

পয়দায়েশ 30 কিতাবুল মোকাদ্দস (BACIB)

1. রাহেলা যখন দেখলেন, তিনি ইয়াকুবের জন্য কোন সন্তান জন্ম দিতে পারেন নি, তখন তিনি বোনের প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে ইয়াকুবকে বললেন, আমাকে সন্তান দাও, নতুবা আমি মরবো।

2. তাতে রাহেলার প্রতি ইয়াকুব ভীষণ রেগে গিয়ে বললেন, আমি কি আল্লাহ্‌র প্রতিনিধি? তিনিই তোমাকে গর্ভফল দিতে অস্বীকার করেছেন।

3. তখন রাহেলা বললেন, দেখ, আমার বাঁদী বিল্‌হা আছে, ওর কাছে গমন কর, যেন সে পুত্র প্রসব করে আমার কোলে দেয় এবং তার দ্বারা আমিও পুত্রবতী হই।

4. এই বলে তিনি তাঁর সঙ্গে নিজের বাঁদী বিল্‌হার বিয়ে দিলেন।

5. তখন ইয়াকুব তার কাছে গমন করলেন, আর বিল্‌হা গর্ভবতী হয়ে ইয়াকুবের জন্য পুত্র প্রসব করলো।

6. তখন রাহেলা বললেন, আল্লাহ্‌ আমার বিচার করলেন এবং আমার মুনাজাত শুনে আমাকে পুত্র দিলেন; অতএব তিনি তার নাম দান (বিচার) রাখলেন।

7. পরে রাহেলার বাঁদী বিল্‌হা পুনর্বার গর্ভধারণ করে ইয়াকুবের জন্য দ্বিতীয় পুত্র প্রসব করলো।

8. তখন রাহেলা বললেন, আমি বোনের সঙ্গে আল্লাহ্‌ সম্বন্ধীয় মল্লযুদ্ধ করে জয়লাভ করলাম; আর তিনি তার নাম নপ্তালি (মল্লযুদ্ধ) রাখলেন।

9. পরে নিজের গর্ভনিবৃত্তি হয়েছে বুঝতে পেরে লেয়া নিজের বাঁদী সিল্পাকে ইয়াকুবের সঙ্গে বিয়ে দিলেন।

10. তাতে লেয়ার বাঁদী সিল্পা ইয়াকুবের জন্য একটি পুত্র প্রসব করলো।

11. তখন লেয়া বললেন, সৌভাগ্য জন্ম লাভ করলো; আর তার নাম গাদ (সৌভাগ্য) রাখলেন।

12. পরে লেয়ার বাঁদী সিল্পা ইয়াকুবের জন্য দ্বিতীয় পুত্র প্রসব করলো।

13. তখন লেয়া বললেন, আমি সুখী, যুবতীরা আমাকে সুখী বলবে; আর তিনি তার নাম আশের (ধন্য) রাখলেন।

14. আর গম কাটবার সময়ে রূবেণ বাইরে গিয়ে ক্ষেতে দূদাফল পেয়ে তার মা লেয়াকে এনে দিল; তাতে রাহেলা লেয়াকে বললেন, তোমার পুত্র যে দূদাফল এনেছে তা থেকে আমাকে কয়েকটা দাও।

15. তাতে তিনি বললেন, তুমি আমার স্বামীকে হরণ করেছ, এটা কি তুচ্ছ করার মত বিষয়? আমার পুত্রের দূদাফলও কি হরণ করবে? তখন রাহেলা বললেন, তবে তোমার পুত্রের দূদাফলের পরিবর্তে তিনি আজ রাতে তোমার সঙ্গে শয়ন করবেন।

16. পরে সন্ধ্যাকালে ক্ষেত থেকে ইয়াকুবের আসবার সময়ে লেয়া বাইরে তাঁর কাছে গিয়ে বললেন, আমার কাছে আসতে হবে, কেননা আমি আমার পুত্রের দূদাফল দিয়ে তোমাকে ভাড়া করেছি; তাই সেই রাতে তিনি তাঁর সঙ্গে শয়ন করলেন।

17. আর আল্লাহ্‌ লেয়ার মুনাজাত শুনলেন আর তিনি গর্ভবতী হয়ে ইয়াকুবের জন্য পঞ্চম পুত্র প্রসব করলেন।

18. তখন লেয়া বললেন, আমি স্বামীকে আমার বাঁদী দিয়েছিলাম, তার বেতন আল্লাহ্‌ আমাকে দিলেন; আর তিনি তার নাম ইষাখর্‌ (বেতন) রাখলেন।

19. পরে লেয়া পুনর্বার গর্ভধারণ করে ইয়াকুবের জন্য ষষ্ঠ পুত্র প্রসব করলেন।

20. তখন লেয়া বললেন, আল্লাহ্‌ আমাকে উত্তম যৌতুক দিলেন, এখন আমার স্বামী আমার সঙ্গে বাস করবেন, কেননা আমি তাঁর জন্য ছয়টি পুত্র প্রসব করেছি; আর তিনি তার নাম সবূলূন (বাস) রাখলেন।

21. তারপর তাঁর একটি কন্যা জন্মগ্রহণ করলো, আর তিনি তার নাম দীণা রাখলেন।

22. আর আল্লাহ্‌ রাহেলাকে স্মরণ করলেন, আল্লাহ্‌ তাঁর মুনাজাত শুনলেন, তাঁর গর্ভ মুক্ত করলেন।

23. তখন তাঁর গর্ভ হলে তিনি পুত্র প্রসব করে বললেন, আল্লাহ্‌ আমার দুর্নাম হরণ করেছেন।

24. আর তিনি তার নাম ইউসুফ (বৃদ্ধি) রাখলেন, বললেন, মাবুদ আমাকে আরও একটি পুত্র দিন।

হযরত ইয়াকুবের বেতন

25. আর রাহেলার গর্ভে ইউসুফ জন্মগ্রহণ করলে পর ইয়াকুব লাবনকে বললেন, আমাকে বিদায় করুন, আমি স্বস্থানে, নিজের দেশে, প্রস্থান করি;

26. আমি যাদের জন্য আপনার গোলামীর কাজ করেছি, আমার সেই স্ত্রীদের ও সন্তানদের আমাকে দিন ও আমাকে চলে যেতে দিন; কেননা আমি যেভাবে পরিশ্রম করে আপনার গোলামী করেছি, তা আপনি জানেন।

27. তখন লাবন তাঁকে বললেন, আমি যদি তোমার দৃষ্টিতে অনুগ্রহ পেয়ে থাকি তবে থাক; কেননা আমি অনুভবে জানলাম, তোমার অনুরোধে মাবুদ আমাকে দোয়া করলেন।

28. তিনি আরও বললেন, তোমার বেতন স্থির করে আমাকে বলো, আমি দেব।

29. তখন ইয়াকুব তাঁকে বললেন, আমি যেভাবে আপনার গোলামীর কাজ করেছি এবং আমার কাছে আপনার যেরকম পশুধন হয়েছে তা আপনি জানেন।

30. কেননা আমার আসবার আগে আপনার অল্প সম্পত্তি ছিল, এখন বৃদ্ধি পেয়ে প্রচুর হয়েছে; আমার যত্নে মাবুদ আপনাকে দোয়া করেছেন; কিন্তু আমি নিজের পরিবারের জন্য কবে সঞ্চয় করবো?

31. তাতে লাবন বললেন, আমি তোমাকে কি দেব? ইয়াকুব বললেন, আপনি আমাকে আর কিছুই না দিয়ে যদি আমার জন্য এক কাজ করেন তবে আমি আপনার পশুদেরকে পুনর্বার চরাব ও পালন করবো।

32. আজ আমি আপনার সমস্ত পশুপালের মধ্য দিয়ে যাবো; আমি ভেড়াগুলোর মধ্যে বিন্দুচিহ্নিত, বড় বড় ছাপযুক্ত ও কালো রংয়ের এবং ছাগলগুলোর মধ্যে বড় বড় ছাপযুক্ত ও বিন্দুচিহ্নিতগুলোকে পৃথক করবো; সেগুলো আমার বেতন হবে।

33. এর পরে আপনি যখন আমার বেতন যাচাই করার জন্য আসবেন, তখন আমার ধার্মিকতা আমার পক্ষে উত্তর দেবে; ফলত ছাগলগুলোর মধ্যে বিন্দু-চিহ্নিত, বা বড় বড় ছাপযুক্ত ছাড়া ও ভেড়াগুলোর মধ্যে কালো ছাড়া যা থাকবে, সেগুলো আমার চুরির মাল বলে গণ্য হবে।

34. তখন লাবন বললেন, দেখ, তোমার কথা অনুসারেই হোক।

35. পরে তিনি সেদিন রেখাঙ্কিত ও বড় বড় ছাপযুক্ত ছাগলগুলো এবং বিন্দুচিহ্নিত ও বড় বড় ছাপযুক্ত, যাতে যাতে কিঞ্চিৎ সাদা রংয়ের ছিল, এমন ছাগীগুলো এবং কালো রংয়ের ভেড়াগুলো পৃথক করে তাঁর পুত্রদের হাতে দিলেন,

36. এবং নিজের ও ইয়াকুবের মধ্যে তিন দিনের পথ ব্যবধান রাখলেন। এরপর ইয়াকুব লাবনের অবশিষ্ট পশুপাল চরাতে লাগলেন।

37. ইয়াকুব লিব্‌নী, লুস ও আর্মোণ গাছের সরস ডাল কেটে তার ছাল খুলে কাঠের সাদা রেখা বের করলেন।

38. পরে যে স্থানে পশুপাল পানি পান করার জন্য আসে, সেই স্থানে পালের সম্মুখে চৌবাচ্চার মধ্যে ঐ ছালশূন্য রেখাবিশিষ্ট ডালগুলো রাখতে লাগলেন; তাতে পানি পান করার সময়ে তারা গর্ভধারণ করতো।

39. আর সেই ডালের কাছে তাদের গর্ভধারণের ফলে রেখাঙ্কিত ও বিন্দুচিহ্নিত ও বড় বড় ছাপযুক্ত বাচ্চা জন্মগ্রহণ করতো।

40. পরে ইয়াকুব সেসব বাচ্চা পৃথক করতেন এবং লাবনের রেখাঙ্কিত ও কালো রংয়ের ভেড়ার প্রতি ভেড়ীগুলোর দৃষ্টি রাখতেন; এভাবে তিনি লাবনের পালের সঙ্গে না রেখে নিজের পালকে পৃথক করতেন।

41. আর বলবান সমস্ত পশু যেন ডালের কাছে গর্ভধারণ করে, এজন্য চৌবাচ্চার মধ্যে পশুদের সম্মুখে ঐ ডাল রাখতেন;

42. কিন্তু দুর্বল পশুদের সম্মুখে রাখতেন না। তাতে দুর্বল পশুগুলো লাবনের ও বলবান পশুগুলো ইয়াকুবের হত।

43. আর ইয়াকুব খুব ধনী হয়ে উঠলেন। তাঁর পশু ও গোলাম-বাঁদী এবং উট ও গাধা ছিল যথেষ্ট।