অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24
  25. 25
  26. 26
  27. 27
  28. 28
  29. 29
  30. 30
  31. 31
  32. 32
  33. 33
  34. 34

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

দ্বিতীয় বিবরণ 9 কিতাবুল মোকাদ্দস (BACIB)

অবাধ্যতা এবং বিদ্রোহের ফল

1. হে ইসরাইল, শোন, তুমি তোমার থেকে মহান ও বলবান জাতিদেরকে, আকাশ ছোঁয়া প্রাচীরে বেষ্টিত বড় বড় নগর অধিকারচ্যুত করতে আজ জর্ডান পার হয়ে যাচ্ছ;

2. সেই জাতি শক্তিশালী ও দীর্ঘকায়, তারা অনাকীয়দের সন্তান; তুমি তাদেরকে জান, আর তাদের বিষয়ে তুমি তো এই কথা শুনেছ যে, অনাকীয়দের সম্মুখে কে দাঁড়াতে পারে?

3. কিন্তু আজ তুমি এই কথা জেনে রাখ যে, তোমার আল্লাহ্‌ মাবুদ নিজে ধ্বংসকারী আগুনের মত তোমার আগে আগে যাচ্ছেন। তিনি তাদেরকে সংহার করবেন, তাদেরকে তোমার সম্মুখে নত করবেন; তাতে মাবুদ তোমাকে যেমন বলেছেন, তেমনি তুমি তাদেরকে অধিকারচ্যুত করবে ও শীঘ্র বিনষ্ট করবে।

4. তোমার আল্লাহ্‌ মাবুদ যখন তোমার সম্মুখ থেকে তাদেরকে তাড়িয়ে দেবেন, তখন মনে মনে এমন ভেবো না যে, আমার ধার্মিকতার জন্যই মাবুদ আমাকে এই দেশ অধিকার করাতে এনেছেন। বাস্তবিক সেই জাতিদের নাফরমানীর জন্যই মাবুদ তাদেরকে তোমার সম্মুখে অধিকারচ্যুত করবেন।

5. তোমার ধার্মিকতা কিংবা হৃদয়ের সরলতার জন্য তুমি যে তাদের দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ, তা নয়; কিন্তু সেই জাতিদের নাফরমানীর জন্য এবং তোমার পূর্বপুরুষ ইব্রাহিম, ইস্‌হাক ও ইয়াকুবের কাছে কসম খেয়ে যে ওয়াদা করেছিলেন তা সফল করার অভিপ্রায়ে তোমার আল্লাহ্‌ মাবুদ তোমার সম্মুখে তাদেরকে অধিকারচ্যুত করবেন।

6. অতএব জেনো যে, তোমার আল্লাহ্‌ মাবুদ যে তোমার ধার্মিকতার জন্য অধিকার হিসেবে তোমাকে এই উত্তম দেশ দেবেন, তা নয়; কেননা তুমি অবাধ্য জাতি।

7. তুমি মরুভূমির মধ্যে তোমার আল্লাহ্‌ মাবুদকে যেরকম অসন্তুষ্ট করেছিলে, তা স্মরণে রেখো, ভুলে যেও না; মিসর দেশ থেকে বের হয়ে আসার দিন থেকে এই স্থানে আগমন পর্যন্ত তোমরা মাবুদের বিরুদ্ধাচারী হয়ে আসছ।

8. তোমরা হোরেবেও মাবুদকে অসন্তুষ্ট করেছিলে এবং মাবুদ ক্রুদ্ধ হয়ে তোমাদেরকে বিনাশ করতে উদ্যত হয়েছিলেন।

9. যখন আমি সেই দুই পাথরের ফলক, অর্থাৎ তোমাদের সঙ্গে মাবুদের কৃত শরীয়তের দুই পাথরের ফলক গ্রহণ করার জন্য পর্বতে উঠেছিলাম, তখন চল্লিশ দিন ও চল্লিশ রাত পর্বতে অবস্থান করেছিলাম, কোন রুটি ভোজন বা পানি পান করি নি।

10. আর মাবুদ আমাকে আল্লাহ্‌র আঙ্গুল দ্বারা লেখা সেই দু’টি পাথরের ফলক দিয়েছিলেন; পর্বতে জমায়েত হবার দিনে আগুনের মধ্য থেকে মাবুদ তোমাদেরকে যা যা বলেছিলেন, সেসব কালাম ঐ দু’টি পাথরের ফলকে লেখা ছিল।

11. সেই চল্লিশ দিন ও চল্লিশ রাতের শেষে মাবুদ ঐ দু’টি পাথর-ফলক অর্থাৎ শরীয়তের পাথর-ফলক আমাকে দিলেন।

12. আর মাবুদ আমাকে বললেন, উঠ, এই স্থান থেকে শীঘ্র নেমে যাও; কেননা তোমার যে লোকদেরকে তুমি মিসর থেকে বের করে এনেছ, তারা ভ্রষ্ট হয়েছে; আমার নির্দেশিত পথ থেকে শীঘ্রই বিপথগামী হয়েছে, নিজেদের জন্য ছাঁচে ঢালা একটি মূর্তি তৈরি করেছে।

13. মাবুদ আমাকে আরও বললেন, আমি এই লোকদেরকে দেখেছি, আর দেখ, এরা অবাধ্য জাতি;

14. তুমি আমার কাছ থেকে সরে যাও, আমি এদেরকে বিনষ্ট করে আসমানের নিচ থেকে এদের নাম মুছে ফেলবো; আর আমি তোমার মধ্য থেকে এদের চেয়ে বলবান ও বড় জাতি সৃষ্টি করবো।

15. তখন আমি ফিরে পর্বত থেকে নেমে এলাম, পর্বত আগুনে জ্বলছিল। তখন আমার দুই হাতে শরীয়তের দু’খানি পাথর-ফলক ছিল।

16. পরে আমি দৃষ্টিপাত করলাম, আর দেখ, তোমরা তোমাদের আল্লাহ্‌ মাবুদের বিরুদ্ধে গুনাহ্‌ করেছিলে, নিজেদের জন্য ছাঁচে ঢালা একটি বাছুর তৈরি করেছিলে; মাবুদের নির্দেশিত পথ থেকে শীঘ্রই বিপথগামী হয়েছিলে।

17. তাতে আমি সেই দু’খানি পাথর-ফলক ধরে আমার দুই হাত থেকে ফেলে তোমাদের সাক্ষাতে ভেঙ্গে ফেললাম।

18. আর তোমরা মাবুদের দৃষ্টিতে যা মন্দ, তা করে যে গুনাহ্‌ করেছিলে, তাঁর অসন্তোষজনক তোমাদের সেসব গুনাহ্‌র জন্য আমি আগের মত চল্লিশ দিন ও চল্লিশ রাত মাবুদের সম্মুখে উবুড় হয়ে রইলাম, কোন রুটি ভোজন বা পানি পান করি নি।

19. কেননা মাবুদ তোমাদেরকে বিনষ্ট করতে এমন ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন যে আমি তাঁর ক্রোধের প্রচণ্ডতায় ভীষণ ভয় পেয়েছিলাম, কিন্তু এবারেও মাবুদ আমার ফরিয়াদ শুনলেন।

20. আর মাবুদ হারুনকে বিনষ্ট করার জন্য তাঁর উপরে অতিশয় ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন, কিন্তু আমি সেই সময়ে হারুনের জন্যও মুনাজাত করলাম।

21. আর তোমাদের গুনাহ্‌, সেই যে বাছুর তোমরা তৈরি করেছিলে, তা নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দিলাম ও যে পর্যন্ত তা ধূলির মত মিহি না হল সেই পর্যন্ত পিষে উত্তমরূপে চূর্ণ করলাম; পরে পর্বত থেকে বয়ে আসা পানির স্রোতে তার ধূলি নিক্ষেপ করলাম।

22. আর তোমরা তবিয়েরাতে, মঃসাতে ও কিব্রোৎহত্তাবাতে মাবুদকে অসন্তুষ্ট করলে।

23. তারপর মাবুদ যে সময়ে কাদেশ-বর্ণেয় থেকে তোমাদেরকে প্রেরণ করে বললেন, তোমরা উঠে যাও, আমি তোমাদেরকে যে দেশ দিয়েছি, তা অধিকার কর; সেই সময় তোমরা তোমাদের আল্লাহ্‌ মাবুদের হুকুমের বিরুদ্ধাচারী হলে, তাতে বিশ্বাস করলে না ও তাঁর কথায় কান দিলে না।

24. তোমাদের সঙ্গে আমার পরিচয়-দিন থেকে তোমরা মাবুদের বিরুদ্ধাচারী হয়ে আসছো।

25. যাহোক, আমি উবুড় হয়ে রইলাম; ঐ চল্লিশ দিন ও চল্লিশ রাত আমি মাবুদের সম্মুখে উবুড় হয়ে রইলাম; কেননা মাবুদ তোমাদেরকে বিনষ্ট করার কথা বলেছিলেন।

26. আর আমি মাবুদের কাছে এই মুনাজাত করলাম, হে আল্লাহ্‌ মালিক, তুমি আপনার অধিকারস্বরূপ যে লোকদেরকে তোমার মহত্বে মুক্ত করেছ ও শক্তিশালী হাত দিয়ে মিসর থেকে বের করে এনেছ, তাদেরকে বিনষ্ট করো না।

27. তোমার গোলাম ইব্রাহিম, ইস্‌হাক ও ইয়াকুবকে স্মরণ কর; এই লোকদের কঠিনতার, নাফরমানীর ও গুনাহ্‌র প্রতি দৃষ্টিপাত করো না;

28. পাছে তুমি আমাদেরকে যে দেশ থেকে বের করে এনেছ, সেই দেশীয় লোকেরা এই কথা বলে, মাবুদ ওদেরকে যে দেশ দিতে ওয়াদা করেছিলেন, সেই দেশে নিয়ে যেতে পারেন নি এবং তাদেরকে ঘৃণা করেছেন বলেই তিনি মরুভূমিতে হত্যা করার জন্য তাদেরকে বের করে এনেছেন।

29. এরাই তো তোমার লোক ও তোমার অধিকার; এদেরকে তুমি তোমার মহাশক্তি ও বাড়িয়ে দেওয়া বাহু দ্বারা বের করে এনেছ।