অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

দানিয়াল 8 কিতাবুল মোকাদ্দস (BACIB)

ভেড়া ও ছাগল বিষয়ক দর্শন

1. বেল্‌শৎসর বাদশাহ্‌র রাজত্বের তৃতীয় বছরে আমি দানিয়াল প্রথম দর্শনের পরে আর একটি দর্শন পেলাম।

2. আমি দর্শনক্রমে দৃষ্টিপাত করতে করতে দেখলাম, যেন আমি ইলাম প্রদেশস্থ শূশন রাজপ্রাসাদে আছি; আরও দেখলাম, যেন আমি ঊলয় নদীর তীরে আছি।

3. পরে আমি চোখ তুলে দেখলাম, আর দেখ, নদীর সম্মুখে একটি ভেড়া দাঁড়িয়ে আছে, তার দু’টি শিং এবং সেই শিং দু’টি উঁচু, কিন্তু একটি অন্যটির চেয়ে বেশি উঁচু; ও যেটি বেশি উঁচু, সেটি পিছনে উৎপন্ন হয়েছে।

4. আমি দেখলাম, ঐ ভেড়া পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণ দিকে শিং দিয়ে আঘাত করলো, তার সম্মুখে কোন জন্তু দাঁড়াতে পারল না এবং তার হাত থেকে উদ্ধার করতে পারে, এমন কেউ ছিল না, আর সে স্বেচ্ছামত কাজ করতো, আর আত্মগরিমা করতো।

5. আমি এই বিষয় বিবেচনা করছিলাম, আর দেখ, পশ্চিম দিক থেকে একটি ছাগল সমস্ত দুনিয়া পার হয়ে আসল, ভূমি স্পর্শ করলো না; আর সেই ছাগলের দুই চোখের মধ্যস্থানে স্পষ্ট একটা শিং ছিল।

6. পরে দুই শিংবিশিষ্ট যে ভেড়াকে আমি দেখেছিলাম, নদীর সম্মুখে দাঁড়িয়ে আছে, তার কাছে এসে সে ভয়ংকর বেগে তার দিকে দৌড়ে গেল।

7. আর আমি দেখলাম, সে ভেড়ার কাছে আসল এবং তার উপর ক্রোধে উত্তেজিত হল এবং ভেড়াকে আঘাত করলো ও তার দু’টি শিং ভেঙ্গে ফেললো, তার সম্মুখে দাঁড়াবার শক্তি ঐ ভেড়ার আর রইলো না; আর সে তাকে ভূমিতে ফেলে দিয়ে পায়ে দলতে লাগল; তার হাত থেকে ঐ ভেড়াটিকে উদ্ধার করে, এমন কেউ ছিল না।

8. পরে ঐ ছাগলটি অতিশয় আত্মগরিমা করলো, কিন্তু বলবান হওয়ার পর সেই বিশাল শিং ভেঙ্গে গেল এবং তার স্থানে আসমানের চার বায়ুর দিকে চারটি বিলক্ষণ শিং সৃষ্টি হল।

9. আর তাদের একটির মধ্য থেকে খুব ছোট একটি শিং সৃষ্টি হল, সেটি দক্ষিণ ও পূর্ব দিকে এবং সেই শোভিত দেশের দিকে অতিশয় বৃদ্ধি পেতে লাগল।

10. আর সে আসমানের বাহিনী পর্যন্ত বৃদ্ধি পেল এবং সেই বাহিনী ও তারাগুলোর কিছু অংশ ভূমিতে ফেলে দিল এবং পদতলে দলতে লাগল।

11. সে বাহিনীপতির বিপক্ষেও আত্মগরিমা করলো ও তাঁর উদ্দেশ্যে দেওয়া নিত্য নৈবেদ্য অপহরণ করলো এবং তাঁর পবিত্র স্থান নিপাতিত হল।

12. আর অধর্মের কারণে নিত্য কোরবানীর বিরুদ্ধে একটি বাহিনী তার হাতে দেওয়া হল এবং সে সত্যকে ভূমিতে নিপাত করলো এবং কাজ করলো ও কৃতকার্য হল।

13. পরে আমি এক জন পবিত্র ব্যক্তিকে কথা বলতে শুনলাম এবং যিনি কথা বলছিলেন, তাঁকে আর এক জন পবিত্র ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলেন, সেই নিত্য কোরবানীর অপহরণ ও সেই ধ্বংসজনক অধর্ম, দলিত হবার জন্য পবিত্র স্থানের ও বাহিনীর সমর্পণ সম্বন্ধীয় দর্শন কত দিনের জন্য?

14. তিনি তাঁকে বললেন, দুই হাজার তিন শত সন্ধ্যা ও সকাল বেলার জন্য; পরে পবিত্র স্থানের পক্ষে বিচার নিষ্পত্তি হবে।

শেষকাল বিষয়ক দর্শন ও এর তাৎপর্য

15. আমি দানিয়াল এরকম দর্শন পাবার পর তা বুঝবার চেষ্টা করলাম; আর দেখ, পুরুষাকৃতি এক ব্যক্তি আমার সম্মুখে এসে দাঁড়ালেন;

16. এবং আমি ঊলয়ের তীর থেকে মানুষের স্বর শুনলাম, সেই স্বর ডেকে বললো, জিবরাইল, একে দর্শনের তাৎপর্য বুঝিয়ে দাও।

17. তাতে আমি যে স্থানে দাঁড়িয়েছিলাম, তিনি সেই স্থানের কাছে আসলেন; তিনি আসলে পর আমি ভীষণ ভয় পেলাম, উবুড় হয়ে পড়লাম; কিন্তু তিনি আমাকে বললেন, হে মানুষের সন্তান, বুঝে নাও, কারণ এই দর্শন শেষকাল-বিষয়ক।

18. যখন তিনি আমার সঙ্গে আলাপ করলেন, তখন আমি গভীর নিদ্রায় ভূমিতে উবুড় হয়ে পড়লাম; কিন্তু তিনি আমাকে স্পর্শ করে স্বস্থানে দাঁড় করালেন।

19. আর তিনি বললেন, দেখ, ক্রোধের শেষ দিকে যা ঘটবে, তা তোমাকে জানাই, কেননা এ নিরূপিত শেষকালের কথা।

20. তুমি দুই শিংবিশিষ্ট যে ভেড়া দেখলে, সে মাদীয় ও পারসীক বাদশাহ্‌।

21. আর সেই লোমশ ছাগল গ্রীস দেশের বাদশাহ্‌ এবং তার দুই চোখের মধ্যস্থানে যে বড় শিং, সে প্রথম বাদশাহ্‌।

22. আর তার ভেঙ্গে পরা ও তার পরিবর্তে আর চারটি শিং উৎপন্ন হওয়া, এর মর্ম এই, সেই জাতি থেকে চারটি রাজ্য উৎপন্ন হবে, কিন্তু তার মত পরাক্রম-বিশিষ্ট হবে না।

23. তাদের রাজ্য পরবর্তীকালে গুনাহের মাত্রা পূর্ণ হলে দেখতে ভীষণ চেহারার ও গূঢ়বাক্য বলা এক জন বাদশাহ্‌র সৃষ্টি হবে।

24. সে শক্তিতে পরাক্রান্ত হবে, কিন্তু শক্তিতে বলে নয় এবং সে আশ্চর্যভাবে বিনাশ করবে; আর কৃতকার্য হবে, কাজ সফল করবে এবং শক্তিমান ও পবিত্র লোকদেরকে বিনাশ করবে।

25. তার চালাকির জন্য সে তার হাতে চাতুরী সফল করবে; সে মনে মনে আত্মগরিমা করবে ও নিশ্চিন্ত অবস্থাপন্ন অনেককে বিনষ্ট করবে এবং অধিপতিদের অধিপতির বিরুদ্ধে দাঁড়াবে। শেষে সে ধ্বংস হবে, কিন্তু মানুষের শক্তিতে নয়।

26. আর সন্ধ্যা ও সকাল বেলার বিষয়ে কথিত দর্শন সত্য; কিন্তু তুমি এই দর্শন মুদ্রাঙ্কিত কর, কেননা এ অনেক দিনের কথা।

27. আর আমি দানিয়াল কিছু দিন ক্লান্ত ও অসুস্থ ছিলাম, তারপর উঠে বাদশাহ্‌র কাজ করলাম; আর সেই দর্শনে চমৎকৃত হলাম, কিন্তু কেউ তা বুঝতে পারল না।