অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

ইউসা 10 কিতাবুল মোকাদ্দস (BACIB)

সূর্য থেমে রইল

1. জেরুশালেমের বাদশাহ্‌ অদোনী-সিদ্দিক যখন শুনতে পেলেন, ইউসা অয় অধিকার করে নিঃশেষে বিনষ্ট করেছেন, জেরিকো ও সেই স্থানের বাদশাহ্‌র প্রতি যেমন করেছিলেন, অয়ের ও সেই স্থানের বাদশাহ্‌র প্রতিও তেমনি করেছেন এবং গিবিয়োন-নিবাসীরা ইসরাইলের সঙ্গে সন্ধি করে তাদের সঙ্গে আছে;

2. তখন বাদশাহ্‌ ও তাঁর লোকেরা ভীষণ ভয় পেল, কেননা গিবিয়োন নগর রাজধানীর মত বড় এবং অয়ের চেয়েও বড়, আর সেই স্থানের সমস্ত লোক ছিল বলবান।

3. আর জেরুশালেমের বাদশাহ্‌ অদোনী-সিদ্দিক হেবরনের বাদশাহ্‌ হোহম, যর্মূতের বাদশাহ্‌ পিরাম, লাখীশের বাদশাহ্‌ যাফিয়ের ও ইগ্লোনের বাদশাহ্‌ দবীরের কাছে দূত পাঠিয়ে এই কথা বললেন;

4. আমার কাছে উঠে আসুন, আমাকে সাহায্য করুন, চলুন আমরা গিবিয়োনীয়দের আঘাত করি; কেননা তারা ইউসা ও বনি-ইসরাইলদের সঙ্গে সন্ধি করেছে।

5. অতএব আমোরীয়দের ঐ পাঁচ বাদশাহ্‌, অর্থাৎ জেরুশালেমের বাদশাহ্‌, হেবরনের বাদশাহ্‌, যর্মূতের বাদশাহ্‌, লাখীশের বাদশাহ্‌ ও ইগ্লোনের বাদশাহ্‌ তাদের সমস্ত সৈন্যকে এক স্থানে জমায়েত করলেন এবং উঠে গিয়ে গিবিয়োনের সম্মুখে শিবির স্থাপন করে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলেন।

6. তাতে গিবিয়োনীয়েরা গিলগলস্থিত শিবিরে ইউসার কাছে লোক পাঠিয়ে বললো, আপনার এই গোলামদের ত্যাগ করবেন না, শীঘ্র এসে আমাদের নিস্তার ও সাহায্য করুন, কেননা পর্বতময় প্রদেশবাসী আমোরীয়দের সমস্ত বাদশাহ্‌ আমাদের বিরুদ্ধে জমায়েত হয়েছেন।

7. তখন ইউসা সমস্ত যোদ্ধা ও সমস্ত বলবান বীর সঙ্গে নিয়ে গিলগল থেকে যাত্রা করলেন।

8. তখন মাবুদ ইউসাকে বললেন, তুমি তাদের ভয় করো না; কেননা আমি তোমার হাতে তাদের তুলে দিয়েছি, তাদের কেউ তোমার সম্মুখে দাঁড়াতে পারবে না।

9. পরে ইউসা হঠাৎ তাদের কাছে উপস্থিত হলেন; তিনি সমস্ত রাত গিলগল থেকে উপরের দিকে উঠছিলেন।

10. তখন মাবুদ ইসরাইলের সাক্ষাতে তাদের আতংকিত করলেন, তাতে তিনি গিবিয়োনে মহাসংহারে তাদের সংহার করে বৈৎ-হোরোণের আরোহণ পথ দিয়ে তাদের তাড়া করলেন এবং অসেকা ও মক্কেদা পর্যন্ত তাদের আঘাত করলেন।

11. আর ইসরাইলের সম্মুখ থেকে পলায়নকালে যখন তারা বৈৎ-হোরোণের অবরোহণ-পথে ছিল, তখন মাবুদ অসেকা পর্যন্ত আসমান থেকে তাদের উপরে বড় বড় শিলা বর্ষণ করলেন, তাতে তারা মারা পড়লো; বনি-ইসরাইল যত না লোক তলোয়ার দ্বারা হত্যা করলো, তার চেয়েও বেশি লোক শিলার আঘাতে মারা পড়লো।

12. সেই সময়ে যেদিন মাবুদ বনি-ইসরাইলদের হাতে আমোরীয়দের তুলে দেন, সেদিন ইউসা মাবুদের কাছে নিবেদন করলেন; আর তিনি ইসরাইলের সাক্ষাতে বললেন, সূর্য, তুমি স্থগিত হও গিবিয়োনে, আর চন্দ্র, তুমি অয়ালোন উপত্যকাতে।

13. তখন সূর্য স্থগিত হল ও চন্দ্র স্থির থাকলো, যতক্ষণ সেই জাতি দুশমনদের উপর প্রতিশোধ না নিল। এই কথা কি যাশের গ্রন্থে লেখা নেই? আর আসমানের মধ্যস্থানে সূর্য স্থির থাকলো, অস্ত গমন করতে প্রায় সমপূর্ণ এক দিন বিলম্ব করলো।

14. তার আগে বা পরে মাবুদ যে মানুষের আবেদনে এভাবে মনযোগ দিয়েছেন, এমন আর কোন দিন হয় নি; কেননা মাবুদ ইসরাইলের পক্ষে যুদ্ধ করছিলেন।

15. পরে ইউসা সমস্ত ইসরাইলকে সঙ্গে নিয়ে গিলগলস্থ শিবিরে ফিরে আসলেন।

পাঁচ জন বাদশাহ্‌র পরাজয়

16. আর ঐ পাঁচ জন বাদশাহ্‌ পালিয়ে গিয়ে মক্কেদার গুহাতে লুকিয়েছিলেন।

17. পরে সেই পাঁচ জন বাদশাহ্‌কে মক্কেদার গুহাতে লুকানো অবস্থায় পাওয়া গেছে, এই সংবাদ ইউসাকে দেওয়া হল।

18. ইউসা বললেন, তোমরা সেই গুহার মুখে কয়েকখানা বড় বড় পাথর গড়িয়ে দিয়ে সেটা পাহারা দেবার জন্য কয়েকজন লোক নিযুক্ত কর।

19. কিন্তু তোমরা নিজেরা বিলম্ব করো না, দুশমনদের পিছনে ধাবমান হও ও তাদের সৈন্যদের পিছন দিক থেকে আঘাত কর, তাদের নিজ নিজ নগরে প্রবেশ করতে দিও না; কেননা তোমাদের আল্লাহ্‌ মাবুদ তাদেরকে তোমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন।

20. পরে ইউসা ও বনি-ইসরাইল তাদের সর্বনাশ পর্যন্ত নির্দয়ভাবে তাদের সংহার করলেন, ওদের কতিপয় মাত্র অবশিষ্ট লোক পালিয়ে প্রাচীর-বেষ্টিত কোন কোন নগরে প্রবেশ করলো।

21. পরে সমস্ত লোক মক্কেদায় ইউসার কাছে শিবিরে সহিসালামতে ফিরে এল; বনি-ইসরাইলদের কারো বিরুদ্ধে কোন কথা বলতে সাহস পেল না।

22. পরে ইউসা বললেন, তোমরা ঐ গুহার মুখ খুলে সেখান থেকে সেই পাঁচ জন বাদশাহ্‌কে বের করে আমার কাছে আন।

23. তারা তা-ই করলো, ফলত জেরুশালেমের বাদশাহ্‌, হেবরনের বাদশাহ্‌, যর্মূতের বাদশাহ্‌, লাখীশের বাদশাহ্‌ ও ইগ্লোনের বাদশাহ্‌, এই পাঁচ বাদশাহ্‌কে সেই গুহা থেকে বের করে তাঁর কাছে আনলো।

24. এভাবে তারা ঐ বাদশাহ্‌দেরকে ইউসার কাছে আনলে ইউসা ইসরাইলের সমস্ত পুরুষকে ডাকলেন এবং যারা তাঁর সঙ্গে যুদ্ধে গিয়েছিল তাদের সেনাপতিদের বললেন, তোমরা কাছে এসো, এই বাদশাহ্‌দের ঘাড়ে পা রাখ; তাতে তারা কাছে এসে তাদের ঘাড়ে পা রাখল।

25. আর ইউসা তাদের বললেন, ভয় করো না ও নিরাশ হয়ো না, বলবান হও ও সাহস কর; কেননা তোমরা যে দুশমনদের সঙ্গে যুদ্ধ করবে, তাদের সকলের প্রতি মাবুদ এইরূপ করবেন।

26. পরে ইউসা আঘাত করে সেই পাঁচ বাদশাহ্‌কে হত্যা করলেন ও তাঁদের লাশ পাঁচটি গাছে টাঙ্গিয়ে দিলেন; তাতে তাঁরা সন্ধ্যাকাল পর্যন্ত তাঁদের লাশ গাছে টাঙ্গান রইলো।

27. পরে সূর্যাস্তের সময়ে লোকেরা ইউসার হুকুমে তাঁদের লাশ গাছ থেকে নামিয়ে যে গুহাতে তাঁরা লুকিয়ে ছিলেন সেই গুহায় নিক্ষেপ করলো ও গুহার মুখটা বড় বড় পাথর দিয়ে ঢেকে রাখল; তা আজও রয়েছে।

28. আর সেই দিনে ইউসা মক্কেদা অধিকার করলেন এবং মক্কেদা ও সেই স্থানের বাদশাহ্‌কে তলোয়ারের দ্বারা আঘাত করলেন; সেই স্থানের সমস্ত প্রাণীকে সম্পূর্ণ বিনষ্ট করলেন, কাউকেও অবশিষ্ট রাখলেন না; যেমন জেরিকোর বাদশাহ্‌র প্রতি করেছিলেন, মক্কেদার বাদশাহ্‌র প্রতিও ঠিক তা-ই করলেন।

29. পরে যিহেশূয় সমস্ত ইসরাইলকে সঙ্গে করে মক্কেদা থেকে লিবনাতে গিয়ে লিবনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলেন।

30. তাতে মাবুদ লিবনা ও সেই স্থানের বাদশাহ্‌কে ইসরাইলের হাতে তুলে দিলেন; তারা লিবনা ও সেই স্থানের সমস্ত প্রাণীকে তলোয়ারের দ্বারা আঘাত করলো, তার মধ্যে কাউকেও অবশিষ্ট রাখল না; যেমন জেরিকোর বাদশাহ্‌র প্রতি করেছিল, সেই স্থানের বাদশাহ্‌র প্রতিও তেমনি করলো।

31. পরে ইউসা সমস্ত ইসরাইলকে সঙ্গে নিয়ে লিবনা থেকে লাখীশে গিয়ে তার বিরুদ্ধে শিবির স্থাপন করে যুদ্ধ করলেন।

32. আর মাবুদ লাখীশকে ইসরাইলের হাতে তুলে দিলেন ও তারা দ্বিতীয় দিনে তা অধিকার করে যেমন লিবনার প্রতি করেছিল, তেমনি লাখীশ ও সেই স্থানের সমস্ত প্রাণীকে তলোয়ার দ্বারা আঘাত করলো।

33. সেই সময়ে গেষরের বাদশাহ্‌ হোরম লাখীশের সহায়তা করতে এসেছিলেন; আর ইউসা তাঁকে ও তাঁর লোকদের আঘাত করলেন; তাঁর কাউকেও অবশিষ্ট রাখলেন না।

34. পরে ইউসা সমস্ত ইসরাইলকে সঙ্গে নিয়ে লাখীশ থেকে ইগ্লোনে যাত্রা করলেন, আর তারা সেই স্থানের সম্মুখে শিবির স্থাপন করে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলো।

35. আর সেদিন তা হস্তগত করে, যেমন লাখীশের প্রতি করেছিল, তেমনি তলোয়ারের দ্বারা আঘাত করে সেদিন সেই স্থানের সমস্ত প্রাণীকে নিঃশেষে বিনষ্ট করলো।

36. পরে ইউসা সমস্ত ইসরাইলকে সঙ্গে নিয়ে ইগ্লোন থেকে হেবরনে যাত্রা করলেন, আর তারা তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলো।

37. আর তা অধিকার করে সেই নগর ও সেই স্থানের বাদশাহ্‌ ও অধীন সমস্ত নগর ও সমস্ত প্রাণীকে তলোয়ার দ্বারা আঘাত করলো; যেমন তিনি ইগ্লোনের প্রতি করেছিলেন, তেমনি কাউকেও অবশিষ্ট রাখলেন না; হেবরন ও সেই স্থানের সমস্ত প্রাণীকে নিঃশেষে বিনষ্ট করলেন।

38. পরে ইউসা ফিরে এসে সমস্ত ইসরাইলকে সঙ্গে নিয়ে দবীরে এসে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলেন।

39. আর সেই নগর ও সেই স্থানের বাদশাহ্‌কে ও অধীন সমস্ত নগর অধিকার করে তলোয়ারের আঘাতে সেই স্থানের সমস্ত প্রাণীকে নিঃশেষে বিনষ্ট করলো; তিনি কাউকেও অবশিষ্ট রাখলেন না; যেমন তিনি হেবরনের প্রতি এবং লিবনার ও সেই স্থানের বাদশাহ্‌র প্রতি করেছিলেন, দবীরের ও সেই স্থানের বাদশাহ্‌র প্রতিও ঠিক তা-ই করলেন।

40. এভাবে ইউসা সমস্ত দেশ, পর্বতময় প্রদেশ, দক্ষিণ অঞ্চল, নিম্নভূমি ও পর্বত-পার্শ্ব এবং সেসব অঞ্চলের সমস্ত বাদশাহ্‌কে আঘাত করলেন, কাউকেও অবশিষ্ট রাখলেন না; তিনি ইসরাইলের আল্লাহ্‌ মাবুদের হুকুম অনুসারে শ্বাসবিশিষ্ট সকলকেই নিঃশেষে বিনষ্ট করলেন।

41. এভাবে ইউসা কাদেশ-বর্ণেয় থেকে গাজা পর্যন্ত তাদের এবং গিবিয়োন পর্যন্ত গোশনের সমস্ত দেশকে আঘাত করলেন।

42. ইউসা এই সমস্ত দেশ ও বাদশাহ্‌দেরকে একই সময়ে হস্তগত করলেন, কারণ ইসরাইলের আল্লাহ্‌ মাবুদ ইসরাইলের পক্ষে যুদ্ধ করছিলেন।

43. পরে ইউসা সমস্ত ইসরাইলকে সঙ্গে নিয়ে গিলগলে অবস্থিত শিবিরে ফিরে আসলেন।