অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24
  25. 25
  26. 26
  27. 27
  28. 28
  29. 29
  30. 30
  31. 31
  32. 32
  33. 33
  34. 34
  35. 35
  36. 36

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

২ খান্দাননামা 25 Kitabul Mukkadas (MBCL)

এহুদার বাদশাহ্‌ অমৎসিয়

1. অমৎসিয় পঁচিশ বছর বয়সে বাদশাহ্‌ হয়েছিলেন এবং ঊনত্রিশ বছর জেরুজালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মায়ের নাম ছিল যিহোয়দ্দন; তিনি ছিলেন জেরুজালেম শহরের মেয়ে।

2. মাবুদের চোখে যা ভাল অমৎসিয় তা-ই করতেন তবে সমস্ত মন দিয়ে করতেন না।

3. রাজ্যটা শক্তভাবে তাঁর অধীনে আনবার পর যে কর্মচারীরা বাদশাহ্‌কে, অর্থাৎ তাঁর বাবাকে হত্যা করেছিল তাদের তিনি হত্যা করলেন।

4. কিন্তু তিনি তাদের ছেলেদের হত্যা করলেন না বরং মূসার কিতাবে যে শরীয়ত লেখা ছিল সেইমতই কাজ করলেন। সেই কিতাবে মাবুদের এই হুকুম লেখা ছিল, “ছেলেমেয়েদের গুনাহের জন্য বাবাকে কিংবা বাবার গুনাহের জন্য ছেলেমেয়েদের হত্যা করা চলবে না, কিন্তু প্রত্যেককেই তার নিজের গুনাহের জন্য মরতে হবে।”

5. অমৎসিয় এহুদার সমস্ত লোককে ডেকে একত্র করে বংশ অনুসারে সমস্ত এহুদা ও বিন্‌ইয়ামীনের লোকদের মধ্য থেকে হাজার সৈন্যের সেনাপতিদের ও শত সৈন্যের সেনাপতিদের অধীনে রাখলেন। তিনি বিশ বছর কিংবা তারও বেশী বয়সের লোকদের গণনা করে দেখলেন যে, যুদ্ধে যাবার জন্য তিন লক্ষ উপযুক্ত লোক রয়েছে যারা বর্শা ও ঢাল ব্যবহার করতে জানে।

6. তিনি তিন হাজার ন’শো কেজি রূপা দিয়ে ইসরাইল থেকে এক লক্ষ যোদ্ধা ভাড়া করলেন।

7. কিন্তু আল্লাহ্‌র একজন বান্দা এসে তাঁকে বললেন, “হে মহারাজ, ইসরাইলের এই সৈন্যদল আপনার সংগে যেন না যায়, কারণ মাবুদ ইসরাইলের সংগে, অর্থাৎ আফরাহীমের কারও সংগে নেই।

8. যদি আপনি তাদের নিয়ে যান তবে সাহসের সংগে যুদ্ধ করলেও শত্রুর কাছে আল্লাহ্‌ আপনাকে পরাজিত করবেন, কারণ সাহায্য করবার অথবা পরাজিত করবার ক্ষমতা আল্লাহ্‌র আছে।”

9. তখন অমৎসিয় আল্লাহ্‌র বান্দাকে বললেন, “এই ইসরাইলীয় সৈন্যদের জন্য আমি যে তিন হাজার ন’শো কেজি রূপা দিয়েছি তার কি হবে?”জবাবে আল্লাহ্‌র বান্দা বললেন, “আল্লাহ্‌ আপনাকে তাঁর চেয়েও বেশী দিতে পারেন।”

10. তখন অমৎসিয় আফরাহীম থেকে তাঁর কাছে আসা সৈন্যদলকে বিদায় করে তাদের বাড়ী পাঠিয়ে দিলেন। সেই সৈন্যেরা এহুদার লোকদের উপর ভয়ংকর রেগে আগুন হয়ে নিজের দেশে ফিরে গেল।

11. অমৎসিয় মনে সাহস নিয়ে লবণ উপত্যকায় তাঁর সৈন্যদলকে পরিচালনা করলেন। সেখানে তিনি সেয়ীরের দশ হাজার লোককে হত্যা করলেন।

12. এহুদার সৈন্যেরা আরও দশ হাজার লোককে জীবিত ধরে পাহাড়ের চূড়ায় নিয়ে গিয়ে সেখান থেকে নীচে ফেলে দিল। এতে তারা সবাই একেবারে থেঁৎলে গেল।

13. এদিকে যে সৈন্যদের অমৎসিয় যুদ্ধ করতে না দিয়ে ফেরৎ পাঠিয়েছিলেন তারা সামেরিয়া থেকে বৈৎ-হোরণ পর্যন্ত এহুদার সব গ্রাম ও শহর আক্রমণ করল। তারা তিন হাজার লোককে হত্যা করল এবং অনেক জিনিস লুট করে নিয়ে গেল।

14. অমৎসিয় ইদোমীয়দের হত্যা করে ফিরে আসবার সময় সেয়ীরের লোকদের মূর্তিগুলো সংগে করে নিয়ে আসলেন। সেগুলোকে তিনি নিজের দেব-দেবী হিসাবে স্থাপন করে তাদের পূজা করতে ও তাদের উদ্দেশে ধূপ জ্বালাতে লাগলেন।

15. এতে অমৎসিয়ের উপর মাবুদের রাগ জ্বলে উঠল। তিনি একজন নবীকে তাঁর কাছে পাঠিয়ে দিলেন। সেই নবী বললেন, “ঐ লোকদের যে দেবতারা আপনার হাত থেকে তাদের লোকদের উদ্ধার করতে পারে নি আপনি কেন তাদের সাহায্য চাইলেন?”

16. নবীর কথা শেষ না হতেই বাদশাহ্‌ তাঁকে বললেন, “আমরা কি বাদশাহ্‌র পরামর্শদাতা হিসাবে তোমাকে নিযুক্ত করেছি? তুমি থাম, নইলে তোমাকে মেরে ফেলা হবে।”এতে সেই নবী থামলেন, তবুও বললেন, “আমি জানি, আপনি এই কাজ করেছেন এবং আমার পরামর্শে কান দেন নি বলে আল্লাহ্‌ আপনাকে ধ্বংস করাই ঠিক করেছেন।”

17. পরে এহুদার বাদশাহ্‌ অমৎসিয় তাঁর মন্ত্রীদের সংগে পরামর্শ করে যেহূর নাতি, অর্থাৎ যিহোয়াহসের ছেলে ইসরাইলের বাদশাহ্‌ যিহোয়াশের কাছে বলে পাঠালেন, “আসুন, আমরা যুদ্ধের জন্য মুখোমুখি হই।”

18. কিন্তু ইসরাইলের বাদশাহ্‌ জবাবে এহুদার বাদশাহ্‌কে বলে পাঠালেন, “লেবাননের এক শিয়ালকাঁটা লেবাননেরই এরস গাছের কাছে বলে পাঠাল, ‘আমার ছেলের সংগে আপনার মেয়ের বিয়ে দিন।’ তারপর লেবাননের একটা বুনো জন্তু এসে সেই শিয়ালকাঁটাকে পায়ে মাড়িয়ে দিল।

19. ‘ইদোমকে হারিয়ে দিয়েছি,’ মনে মনে এই কথা ভেবে আপনি অহংকারে ফুলে উঠেছেন। এখন আপনি নিজের ঘরে থাকুন। কেন বিপদ ডেকে আনবেন এবং তার সংগে ডেকে আনবেন নিজের ও এহুদার ধ্বংস?”

20. কিন্তু অমৎসিয় সেই কথায় কান দিলেন না। এটা আল্লাহ্‌ থেকে হল, কারণ লোকেরা ইদোমের দেব-দেবীদের সাহায্য চেয়েছিল বলে আল্লাহ্‌ যিহোয়াশের হাতে তাদের তুলে দিতে চেয়েছিলেন।

21. সেইজন্য ইসরাইলের বাদশাহ্‌ যিহোয়াশ তাদের আক্রমণ করলেন। তিনি এবং এহুদার বাদশাহ্‌ অমৎসিয় এহুদার বৈৎ-শেমশে একে অন্যের মুখোমুখি হলেন।

22. ইসরাইলের কাছে এহুদা সম্পূর্ণভাবে হেরে গেল এবং প্রত্যেকে নিজের নিজের বাড়ীতে পালিয়ে গেল।

23. ইসরাইলের বাদশাহ্‌ যিহোয়াশ বৈৎ-শেমসে অহসিয়ের নাতি, অর্থাৎ যোয়াশের ছেলে এহুদার বাদশাহ্‌ অমৎসিয়কে বন্দী করলেন। তারপর যিহোয়াশ জেরুজালেমে গিয়ে সেখানকার দেয়ালটার আফরাহীম-দরজা থেকে কোণার দরজা পর্যন্ত প্রায় চারশো হাত লম্বা একটা অংশ ভেংগে দিলেন।

24. আল্লাহ্‌র ঘরের যত সোনা-রূপা ও জিনিসপত্রের ভার ওবেদ-ইদোমের উপর ছিল তা সমস্তই তিনি নিয়ে নিলেন। এছাড়া তিনি রাজবাড়ীর ধন-সম্পদ ও জামিন হিসাবে কতগুলো লোককে নিয়ে সামেরিয়াতে ফিরে গেলেন।

25. ইসরাইলের বাদশাহ্‌ যিহোয়াহসের ছেলে যিহোয়াশের মৃত্যুর পরে এহুদার বাদশাহ্‌ যোয়াশের ছেলে অমৎসিয় আরও পনেরো বছর বেঁচে ছিলেন।

26. অমৎসিয়ের অন্যান্য সমস্ত কাজের কথা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত “এহুদা ও ইসরাইলের বাদশাহ্‌দের ইতিহাস” নামে বইটিতে লেখা আছে।

27. অমৎসিয় মাবুদের পথে চলা থেকে সরে গেলে পর লোকেরা জেরুজালেমে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করল। এতে তিনি লাখীশে পালিয়ে গেলেন, কিন্তু লোকেরা লাখীশে লোক পাঠিয়ে সেখানে তাঁকে হত্যা করল।

28. তাঁর লাশ ঘোড়ার পিঠে করে এনে এহুদার শহরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সংগে দাফন করা হল।