অধ্যায়

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4
  5. 5
  6. 6
  7. 7
  8. 8
  9. 9
  10. 10
  11. 11
  12. 12
  13. 13
  14. 14
  15. 15
  16. 16
  17. 17
  18. 18
  19. 19
  20. 20
  21. 21
  22. 22
  23. 23
  24. 24
  25. 25
  26. 26
  27. 27
  28. 28
  29. 29
  30. 30
  31. 31

ওল্ড টেস্টামেন্ট

নববিধান

১ শামুয়েল 28 Kitabul Mukkadas (MBCL)

বাদশাহ্‌ তালুত নিরাশ হলেন

1. দাউদ সিক্লগে থাকবার সময় ফিলিস্তিনীরা বনি-ইসরাইলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য সৈন্য জমায়েত করল। তখন আখীশ দাউদকে বললেন, “তুমি নিশ্চয় বুঝতে পারছ যে, তোমাকে ও তোমার লোকদের সৈন্যদলে যোগ দিয়ে আমার সংগে যেতে হবে।”

2. দাউদ বললেন, “ভাল, আপনি নিজেই দেখতে পাবেন আপনার গোলাম কি করতে পারে।”আখীশ বললেন, “খুব ভাল। আমি তোমাকে সারা জীবনের জন্য আমার দেহরক্ষীর পদে নিযুক্ত করব।”

3. এর আগেই শামুয়েল ইন্তেকাল করেছিলেন, আর বনি-ইসরাইলরা সবাই তাঁর জন্য শোক প্রকাশ করে তাঁকে তাঁর নিজের শহর রামাতে দাফন করেছিল। যারা মৃত লোকের রূহের সংগে কথাবার্তা বলে এবং যারা ভূতের সংগে সম্বন্ধ রাখে তালুত দেশ থেকে এমন সব লোকদের বের করে দিয়েছিলেন।

4. ফিলিস্তিনীরা একসংগে জমায়েত হয়ে শূনেমে গিয়ে ছাউনি ফেলল। এদিকে তালুতও সমস্ত ইসরাইলীয় সৈন্যদের জমায়েত করে নিয়ে গিলবোয় পাহাড়ে গিয়ে ছাউনি ফেললেন।

5. ফিলিস্তিনীদের সৈন্যসংখ্যা দেখে তালুত ভয় পেলেন আর তাঁর বুক ভীষণভাবে কেঁপে উঠল।

6. তিনি কি করবেন তা মাবুদের কাছে জানতে চাইলেন, কিন্তু মাবুদ তাঁকে কোনভাবেই জবাব দিলেন না- স্বপ্ন দিয়েও না, ঊরীম দিয়েও না কিংবা নবীদের দিয়েও না।

7. তালুত তখন তাঁর কর্মচারীদের বললেন, “তোমরা এমন একজন স্ত্রীলোকের খোঁজ কর, যে মৃত লোকের রূহের সংগে কথাবার্তা বলতে পারে, যেন তার কাছে গিয়ে আমি জিজ্ঞাসা করতে পারি আমি কি করব।”তারা বলল, “ঐন্‌দোরে ঐরকম একজন স্ত্রীলোক আছে।”

8. এই কথা শুনে তালুত অন্যরকম কাপড়-চোপড় পরে নিজের পরিচয় গোপন করে রাতের বেলায় দু’জন লোককে সংগে নিয়ে সেই স্ত্রীলোকের কাছে গেলেন। তিনি সেই স্ত্রীলোকটিকে বললেন, “তুমি মন্ত্র পড়ে মৃত লোকের রূহের সংগে যোগাযোগ করে আমি যাঁর নাম করব তাঁকে এখানে তুলে আন।”

9. তখন স্ত্রীলোকটি তাঁকে বলল, “তালুত এই সব ব্যাপারে যা করেছেন তা আপনার নিশ্চয়ই অজানা নেই। যারা মৃত লোকের রূহের সংগে কথা বলে বা ভূতের সংগে সম্বন্ধ রাখে এমন সব লোকদের তিনি দেশ থেকে দূর করে দিয়েছেন। তাহলে কেন আপনি আমার জন্য এমন একটা ফাঁদ পাতছেন যা আমার মৃত্যু ঘটাবে?”

10. তালুত তখন মাবুদের নামে কসম খেয়ে বললেন, “আল্লাহ্‌র কসম যে, এর জন্য তোমার উপর কোন শাস্তি আসবে না।”

11. তখন স্ত্রীলোকটি তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, “আমি তাহলে আপনার জন্য কাকে তুলে আনব?”তালুত বললেন, “শামুয়েলকে আন।”

12. পরে শামুয়েলকে দেখতে পেয়ে স্ত্রীলোকটি চিৎকার করে তালুতকে বলল, “আপনি আমাকে কেন ঠকালেন? আপনিই তো তালুত।”

13. বাদশাহ্‌ তাকে বললেন, “তোমার কোন ভয় নেই; তুমি কি দেখতে পাচ্ছ?”স্ত্রীলোকটি বলল, “আমি দেখতে পাচ্ছি, একজন দেবতা মাটির তলা থেকে উঠে আসছেন।”

14. তালুত জিজ্ঞাসা করলেন, “তিনি দেখতে কেমন?”সে বলল, “একজন বুড়ো লোক উঠে আসছেন; তাঁর গায়ে রয়েছে লম্বা পোশাক।”এতে তালুত বুঝতে পারলেন যে, তিনি শামুয়েল। তিনি মাটিতে উবুড় হয়ে পড়ে সালাম জানালেন।

15. শামুয়েল তালুতকে বললেন, “কেন তুমি আমাকে তুলে নিয়ে এসে বিরক্ত করলে?”তালুত বললেন, “আমি খুব বিপদে পড়েছি। এদিকে ফিলিস্তিনীরা আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে আর ওদিকে আল্লাহ্‌ আমাকে ছেড়ে চলে গেছেন। তিনি আর আমার ডাকে সাড়া দেন না- নবীদের মধ্য দিয়েও দেন না, স্বপ্নের মধ্য দিয়েও দেন না। সেইজন্য এখন আমার কি করা উচিত তা জানবার জন্য আপনাকে ডাকিয়ে এনেছি।”

16. শামুয়েল বললেন, “মাবুদই যখন তোমাকে ছেড়ে তোমার বিপক্ষে গেছেন তখন আমাকে আর জিজ্ঞাসা করছ কেন?

17. তিনি আমাকে দিয়ে যা বলিয়েছিলেন তা-ই করেছেন। তোমার রাজ্য তিনি তোমার হাত থেকে কেড়ে নিয়ে তোমার জাতি-ভাই দাউদকে দিয়েছেন।

18. তুমি মাবুদের কথা শোন নি এবং আমালেকীয়দের বিরুদ্ধে তাঁর যে ভীষণ রাগ তা তোমার কাজের মধ্য দিয়ে প্রকাশ কর নি, সেইজন্য তিনি আজ তোমার প্রতি এই রকম করেছেন।

19. মাবুদ ফিলিস্তিনীদের হাতে তোমাকে এবং তোমার সংগে বনি-ইসরাইলদের তুলে দেবেন। কাল তুমি ও তোমার ছেলেরা আমার সংগে থাকবে। তিনি ইসরাইলের সৈন্যদলকেও ফিলিস্তিনীদের হাতে তুলে দেবেন।”

20. শামুয়েলের কথা শুনে তালুত খুব ভয় পেয়ে তখনই মাটিতে লম্বা হয়ে পড়ে গেলেন। সারা দিন ও সারা রাত কিছু না খাওয়ার দরুন তাঁর শরীরে কোন শক্তি রইল না।

21. সেই স্ত্রীলোকটি তালুতের কাছে গিয়ে দেখল যে, তিনি ভীষণ ভয় পেয়েছেন। তাই সে বলল, “দেখুন, আপনার বাঁদী আপনার হুকুম পালন করেছেন। আপনি আমাকে যা করতে বলেছিলেন প্রাণ হাতে করে আমি তা করেছি।

22. এখন আপনিও দয়া করে আপনার বাঁদীর একটা কথা শুনুন। আমি আপনার সামনে কিছু খাবার রাখব। আপনি তা খেলে পর পথ চলবার শক্তি পাবেন।”

23. কিন্তু তালুত রাজী না হয়ে বললেন, “না, আমি খাব না।” কিন্তু তাঁর লোকেরা সেই স্ত্রীলোকটির সংগে তাঁকে খুব সাধাসাধি করতে লাগল। শেষে তিনি তাদের কথা শুনলেন এবং মাটি থেকে উঠে খাটে বসলেন।

24. সেই স্ত্রীলোকটির ঘরে মোটা-সোটা একটা বাছুর ছিল। সে তাড়াতাড়ি করে সেটা জবাই করল আর কিছু ময়দা নিয়ে মেখে খামিহীন রুটি তৈরী করল।

25. তারপর তালুত ও তাঁর লোকদের সামনে সে তা আনল এবং তাঁরা তা খেলেন। পরে রাত থাকতেই তাঁরা উঠে সেখান থেকে চলে গেলেন।